সম্পাদকীয়
ঐতিহ্যবাহী যশোর ইনস্টিটিউটের সেই জৌলুশ আর নেই। এ প্রতিষ্ঠানটি ব্রিটিশ ভারতের সময়ে গড়ে ওঠা একটি ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, যা একসময় শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং ক্রীড়াঙ্গনে অসামান্য ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু আজ এটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। গত রোববার আজকের পত্রিকায় এ নিয়ে যে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে, তা সাহিত্য-সংস্কৃতি অনুরাগী মানুষকে একটু কষ্ট দেবে বটে।
যশোরের নামকরা এ প্রতিষ্ঠানটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তৎকালীন যশোরের নড়াইলের নামকরা আইনজীবী ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব যদুনাথ মজুমদার রায়বাহাদুর। তিনি ১৯২৮ সালে যশোর পাবলিক লাইব্রেরি, নিউ আর্য থিয়েটার এবং টাউন ক্লাবকে একত্র করে গড়ে তোলেন যশোরের সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র ‘যশোর ইনস্টিটিউট’।
প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম শাখা টাউন ক্লাব। এই ক্লাব গঠনের উদ্দেশ্য ছিল শহর-গ্রাম থেকে সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা। পাকিস্তান আমল এবং বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরেও এখান থেকে নামকরা খেলোয়াড় তৈরি হয়েছে। কিন্তু এখন তো এখানে প্রতিভা বিকাশের কোনো সুযোগই নেই। এখন ক্লাবটি নিজস্ব খেলোয়াড় তৈরি করার পরিবর্তে ভাড়াটে খেলোয়াড় নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। এমনকি শহরের শিশুদের জন্য বিনোদনমূলক এবং ক্রীড়াবিষয়ক কার্যক্রমও বন্ধ করা হয়েছে।
একসময় যশোর ইনস্টিটিউটের পাঠাগারটি ছিল জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রবিন্দু। অথচ বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, বর্তমানে এখানে বই কেনার চেয়ে তাসের প্যাকেট কিনতে বেশি অর্থ ব্যয় করা হয়! প্রতিবছর টাউন ক্লাবে তাসের প্যাকেট কেনার জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হলেও পাঠাগারের বই কেনার জন্য এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা নেই। এটি কেবল আর্থিক অপব্যবহার নয়, এটি প্রতিষ্ঠানটির মৌলিক উদ্দেশ্য এবং ঐতিহ্যের প্রতি অবজ্ঞার চূড়ান্ত উদাহরণ।
যশোর ইনস্টিটিউটের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ হলো, তারা কয়েক বছর আগে বিদেশি একটি সংস্থা থেকে লক্ষাধিক টাকার পুরোনো আসবাবপত্র কিনেছিল। অপ্রয়োজনে এ কাজটি কেন করা হয়েছিল, সেই প্রশ্ন সচেতন সদস্যদের।
অর্থ ও ব্যবস্থাপনার অনিয়ম প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীদের জীবনেও প্রভাব ফেলছে। ২৬ জন কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে সময়মতো বেতন পাচ্ছেন না। মাসের প্রথম সপ্তাহে বেতন দেওয়ার বদলে তা ২০ তারিখ পর্যন্ত বিলম্বিত হচ্ছে। এই ধরনের আর্থিক অব্যবস্থাপনা কেবল কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করছে না, এটি প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমকেও ব্যাহত করছে।
এ প্রতিষ্ঠানটি স্বয়ংসম্পূর্ণ। এটির কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সরকার বা কারও মুখাপেক্ষী হওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু নেতৃত্বের অবহেলার কারণে প্রতিষ্ঠানটি তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। এর বর্তমান অবস্থা কেবল প্রতিষ্ঠানটিরই নয়, বরং আমাদের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের অবক্ষয়েরও প্রতিফলন। তাই এটির অব্যবস্থাপনার ত্রুটি দূর করার দায়িত্ব এর পরিচালনা কমিটির ওপরই বর্তায়। সঠিক পরিকল্পনা ও সক্রিয় উদ্যোগের মাধ্যমে যশোর ইনস্টিটিউট তার হারানো গৌরব ফিরে পেতে পারে এবং আবারও জ্ঞানচর্চা ও সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে। এ ব্যাপারে বর্তমান নেতৃত্ব উদ্যোগী হবেন, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
ঐতিহ্যবাহী যশোর ইনস্টিটিউটের সেই জৌলুশ আর নেই। এ প্রতিষ্ঠানটি ব্রিটিশ ভারতের সময়ে গড়ে ওঠা একটি ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, যা একসময় শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং ক্রীড়াঙ্গনে অসামান্য ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু আজ এটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। গত রোববার আজকের পত্রিকায় এ নিয়ে যে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে, তা সাহিত্য-সংস্কৃতি অনুরাগী মানুষকে একটু কষ্ট দেবে বটে।
যশোরের নামকরা এ প্রতিষ্ঠানটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তৎকালীন যশোরের নড়াইলের নামকরা আইনজীবী ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব যদুনাথ মজুমদার রায়বাহাদুর। তিনি ১৯২৮ সালে যশোর পাবলিক লাইব্রেরি, নিউ আর্য থিয়েটার এবং টাউন ক্লাবকে একত্র করে গড়ে তোলেন যশোরের সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র ‘যশোর ইনস্টিটিউট’।
প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম শাখা টাউন ক্লাব। এই ক্লাব গঠনের উদ্দেশ্য ছিল শহর-গ্রাম থেকে সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা। পাকিস্তান আমল এবং বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরেও এখান থেকে নামকরা খেলোয়াড় তৈরি হয়েছে। কিন্তু এখন তো এখানে প্রতিভা বিকাশের কোনো সুযোগই নেই। এখন ক্লাবটি নিজস্ব খেলোয়াড় তৈরি করার পরিবর্তে ভাড়াটে খেলোয়াড় নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। এমনকি শহরের শিশুদের জন্য বিনোদনমূলক এবং ক্রীড়াবিষয়ক কার্যক্রমও বন্ধ করা হয়েছে।
একসময় যশোর ইনস্টিটিউটের পাঠাগারটি ছিল জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রবিন্দু। অথচ বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, বর্তমানে এখানে বই কেনার চেয়ে তাসের প্যাকেট কিনতে বেশি অর্থ ব্যয় করা হয়! প্রতিবছর টাউন ক্লাবে তাসের প্যাকেট কেনার জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হলেও পাঠাগারের বই কেনার জন্য এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা নেই। এটি কেবল আর্থিক অপব্যবহার নয়, এটি প্রতিষ্ঠানটির মৌলিক উদ্দেশ্য এবং ঐতিহ্যের প্রতি অবজ্ঞার চূড়ান্ত উদাহরণ।
যশোর ইনস্টিটিউটের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ হলো, তারা কয়েক বছর আগে বিদেশি একটি সংস্থা থেকে লক্ষাধিক টাকার পুরোনো আসবাবপত্র কিনেছিল। অপ্রয়োজনে এ কাজটি কেন করা হয়েছিল, সেই প্রশ্ন সচেতন সদস্যদের।
অর্থ ও ব্যবস্থাপনার অনিয়ম প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীদের জীবনেও প্রভাব ফেলছে। ২৬ জন কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে সময়মতো বেতন পাচ্ছেন না। মাসের প্রথম সপ্তাহে বেতন দেওয়ার বদলে তা ২০ তারিখ পর্যন্ত বিলম্বিত হচ্ছে। এই ধরনের আর্থিক অব্যবস্থাপনা কেবল কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করছে না, এটি প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমকেও ব্যাহত করছে।
এ প্রতিষ্ঠানটি স্বয়ংসম্পূর্ণ। এটির কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সরকার বা কারও মুখাপেক্ষী হওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু নেতৃত্বের অবহেলার কারণে প্রতিষ্ঠানটি তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। এর বর্তমান অবস্থা কেবল প্রতিষ্ঠানটিরই নয়, বরং আমাদের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের অবক্ষয়েরও প্রতিফলন। তাই এটির অব্যবস্থাপনার ত্রুটি দূর করার দায়িত্ব এর পরিচালনা কমিটির ওপরই বর্তায়। সঠিক পরিকল্পনা ও সক্রিয় উদ্যোগের মাধ্যমে যশোর ইনস্টিটিউট তার হারানো গৌরব ফিরে পেতে পারে এবং আবারও জ্ঞানচর্চা ও সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে। এ ব্যাপারে বর্তমান নেতৃত্ব উদ্যোগী হবেন, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে এক বিশেষ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, যেখানে একটি অভ্যুত্থানোত্তর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে রয়েছে এবং পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র একধরনের অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা ও বৈষম্যের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। আশা করা হয়েছিল, অরাজনৈতিক সরকারের বাজেটে
২ ঘণ্টা আগেসংবাদপত্রের পাতায় প্রকাশিত কোনো কোনো শিরোনাম ও সংবাদ বিশেষ আগ্রহ নিয়ে পড়তে চান পাঠক। আজকের পত্রিকায় ৩১ মে প্রকাশিত প্রধান শিরোনাম, ‘৬ মাসের টানাটানিতে ভোট’ শীর্ষক সংবাদটি সম্পর্কে আমাকে একজন সম্পাদক ফোন করে প্রশংসা করলেন। আমি বুঝতে পারলাম শিরোনামটি যথেষ্ট প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভোট নিয়ে জনগণের আগ
১ দিন আগেঈদ—এই শব্দটির সঙ্গে অগণিত মানুষের হৃদয়ে যে অনুভব জাগে, তা আনন্দ, উৎসব আর মিলনের। ঘরে ঘরে নতুন জামা, সুস্বাদু খাবার, কোলাকুলি আর রঙিন খুশির চিত্র যেন ঈদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে সেই পরিচিত দৃশ্যের বাইরে যে একটা বড় প্রশ্ন থেকে যায়, তা হলো—ঈদ কি সবার জন্য একরকম? ঈদের দিন কি সকলের মুখেই সমান হাসি? ঈদের আনন
১ দিন আগে১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঈদ এসেছিল। সেই ঈদের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে একটা বিশেষ নাটক লিখেছিলাম। যুদ্ধরত শিল্পীদের অভিনয়ে সমৃদ্ধ হয়ে নাটকটি প্রচারিত হয়েছিল ঈদের আগের দিন। নাটকটির নাম ছিল ‘চান্দের তলোয়ার’। ঈদের চাঁদ সাধারণত আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। খুশির এই ঈদের বড় প্রতীক হলো চাঁদ।
১ দিন আগে