আহমেদ শমশের
দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান গত বছরের ২৪ নভেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে নিয়ে স্বজন-বান্ধবেরা একটি সুন্দর স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। ৪ অক্টোবর ‘জীবন নিবেদিত মুক্তির সংগ্রামে: মুনীরুজ্জামান স্মারকগ্রন্থ’টির আনুষ্ঠানিকভাবে মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুনীরুজ্জামানের দীর্ঘদিনের বন্ধু, সহযোদ্ধা সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের বক্তৃতায় ষাটের দশকের স্মৃতিচরণ করে কিছু কথা বলেন। এক উন্মাতাল সময় ছিল ষাটের দশক। ওই দশকে জাতীয়তাবাদী ও বাম রাজনীতির মেলবন্ধনে জনমনে, বিশেষত ছাত্র-তরুণদের মধ্যে যে উদ্দীপনা তৈরি করেছিল, তা-ই শেষ পর্যন্ত বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার দুয়ারে পৌঁছে দিয়েছিল। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল জাগরণের প্রাণকেন্দ্র। ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ নেতৃত্বে তখন চলছিল দিনবদলের প্রস্তুতি।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের উল্লেখ করা একটি তথ্য খুবই আগ্রহোদ্দীপক। মিলিটারি ডিক্টেটর দুঃশাসক আইয়ুব খান ও তার বাঙালি তাঁবেদার মোনায়েম খান ছাত্র আন্দোলন বানচাল এবং পথভ্রষ্ট করার জন্য এনএসএফ নামে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন তৈরি করেছিলেন। এদের কাজ ছিল সশস্ত্র সন্ত্রাসের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলন প্রতিরোধ করা। এই সংগঠনেও মেধাবী ছাত্র ছিলেন না, তা নয়। তবে তাঁরাও মাস্তান প্রকৃতিরই ছিলেন। এর মধ্যে বদি ও সালেক নামের দুই এনএসএফ ক্যাডার মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও মাহফুজ আনামকে (বর্তমানে ডেইলি স্টারের সম্পাদক) একদিন ডেগার বুকে ঠেকিয়ে ভয় দেখিয়েছিলেন। এই বদিই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গৌরবের ভূমিকা পালন করে শহীদ হয়েছেন। ক্র্যাক প্লাটুন নামে যে গেরিলা দল ঢাকা শহরে পাকিস্তানি বাহিনীর ঘুম কেড়ে নিয়েছিল, তারই একজন সদস্য ছিলেন বদি–বদিউল আলম বদি।
১৯৭১ সালের ৮ আগস্ট ফার্মগেট এলাকায় মাত্র দেড় মিনিটের এক দুঃসাহসী অপারেশনে অংশ নেন ক্র্যাক প্লাটুনের মাত্র ছয়জন দুর্ধর্ষ বিচ্ছু যোদ্ধা—বদিউল আলম বদি, হাবিবুল আলম, কামরুল হক স্বপন, আবদুল হালিম জুয়েল, পুলু ও আবদুস সামাদ।
রাত ৮টা ১০ মিনিটে ইস্কাটন থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে তৎকালীন পাকমোটরের ডানে মোড় নিয়ে ধীরগতিতে এগোতে থাকলেন ক্র্যাক প্লাটুনের গেরিলারা। ক্র্যাক প্লাটুনের গেরিলাদের নিয়ে এই গাড়ি তেজকুনীপাড়ার বেশ কিছু রাস্তা ঘুরে হলিক্রস স্কুল পেরিয়ে ফার্মগেটের মুখে থামল। সামাদ গাড়ি থামাতেই বদিউল আলম বদি ক্ষিপ্রগতিতে নেমে এলেন। আর চোখের পলকে অবস্থান নিতেই গর্জে উঠল পাঁচটি স্টেনগান ও চায়নিজ এলএমজি।
কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে উড়ে যায় ফার্মগেট চেকপোস্ট, নিহত হয় বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সৈন্য। মুহূর্তেই গাড়ি নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে যান গেরিলারা। ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের এত কাছে হানাদারদের এভাবে গেরিলাদের গুলিতে নিহত হওয়ার খবর বিশ্বাস করতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জেনারেলদেরও কষ্ট হচ্ছিল। ‘অপারেশন ফার্মগেট’ গেরিলাদের পাশাপাশি অবরুদ্ধ ঢাকাবাসীর মধ্যে সৃষ্টি করেছিল নতুন এক উদ্দীপনা। এর মাত্র কয়েক দিন পরে বদি পাকিস্তানিদের হাতে ধরা পড়েন এবং অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়।
কোনো একটি ঘটনা দিয়ে একজন মানুষকে বিচার করা, মূল্যায়ন করা ঠিক নয়। শহীদ বদি ছাত্রজীবনে তাঁর সাহস ও বীরত্ব ভুল জায়গায় ব্যবহার করলেও ঠিক সময়ে তিনি ঠিক কাজ করে দেশের জন্য জীবন দিয়ে আমাদের চিরঋণী করে গেছেন।
দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান গত বছরের ২৪ নভেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে নিয়ে স্বজন-বান্ধবেরা একটি সুন্দর স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। ৪ অক্টোবর ‘জীবন নিবেদিত মুক্তির সংগ্রামে: মুনীরুজ্জামান স্মারকগ্রন্থ’টির আনুষ্ঠানিকভাবে মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুনীরুজ্জামানের দীর্ঘদিনের বন্ধু, সহযোদ্ধা সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের বক্তৃতায় ষাটের দশকের স্মৃতিচরণ করে কিছু কথা বলেন। এক উন্মাতাল সময় ছিল ষাটের দশক। ওই দশকে জাতীয়তাবাদী ও বাম রাজনীতির মেলবন্ধনে জনমনে, বিশেষত ছাত্র-তরুণদের মধ্যে যে উদ্দীপনা তৈরি করেছিল, তা-ই শেষ পর্যন্ত বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার দুয়ারে পৌঁছে দিয়েছিল। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল জাগরণের প্রাণকেন্দ্র। ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ নেতৃত্বে তখন চলছিল দিনবদলের প্রস্তুতি।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের উল্লেখ করা একটি তথ্য খুবই আগ্রহোদ্দীপক। মিলিটারি ডিক্টেটর দুঃশাসক আইয়ুব খান ও তার বাঙালি তাঁবেদার মোনায়েম খান ছাত্র আন্দোলন বানচাল এবং পথভ্রষ্ট করার জন্য এনএসএফ নামে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন তৈরি করেছিলেন। এদের কাজ ছিল সশস্ত্র সন্ত্রাসের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলন প্রতিরোধ করা। এই সংগঠনেও মেধাবী ছাত্র ছিলেন না, তা নয়। তবে তাঁরাও মাস্তান প্রকৃতিরই ছিলেন। এর মধ্যে বদি ও সালেক নামের দুই এনএসএফ ক্যাডার মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও মাহফুজ আনামকে (বর্তমানে ডেইলি স্টারের সম্পাদক) একদিন ডেগার বুকে ঠেকিয়ে ভয় দেখিয়েছিলেন। এই বদিই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গৌরবের ভূমিকা পালন করে শহীদ হয়েছেন। ক্র্যাক প্লাটুন নামে যে গেরিলা দল ঢাকা শহরে পাকিস্তানি বাহিনীর ঘুম কেড়ে নিয়েছিল, তারই একজন সদস্য ছিলেন বদি–বদিউল আলম বদি।
১৯৭১ সালের ৮ আগস্ট ফার্মগেট এলাকায় মাত্র দেড় মিনিটের এক দুঃসাহসী অপারেশনে অংশ নেন ক্র্যাক প্লাটুনের মাত্র ছয়জন দুর্ধর্ষ বিচ্ছু যোদ্ধা—বদিউল আলম বদি, হাবিবুল আলম, কামরুল হক স্বপন, আবদুল হালিম জুয়েল, পুলু ও আবদুস সামাদ।
রাত ৮টা ১০ মিনিটে ইস্কাটন থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে তৎকালীন পাকমোটরের ডানে মোড় নিয়ে ধীরগতিতে এগোতে থাকলেন ক্র্যাক প্লাটুনের গেরিলারা। ক্র্যাক প্লাটুনের গেরিলাদের নিয়ে এই গাড়ি তেজকুনীপাড়ার বেশ কিছু রাস্তা ঘুরে হলিক্রস স্কুল পেরিয়ে ফার্মগেটের মুখে থামল। সামাদ গাড়ি থামাতেই বদিউল আলম বদি ক্ষিপ্রগতিতে নেমে এলেন। আর চোখের পলকে অবস্থান নিতেই গর্জে উঠল পাঁচটি স্টেনগান ও চায়নিজ এলএমজি।
কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে উড়ে যায় ফার্মগেট চেকপোস্ট, নিহত হয় বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সৈন্য। মুহূর্তেই গাড়ি নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে যান গেরিলারা। ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের এত কাছে হানাদারদের এভাবে গেরিলাদের গুলিতে নিহত হওয়ার খবর বিশ্বাস করতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জেনারেলদেরও কষ্ট হচ্ছিল। ‘অপারেশন ফার্মগেট’ গেরিলাদের পাশাপাশি অবরুদ্ধ ঢাকাবাসীর মধ্যে সৃষ্টি করেছিল নতুন এক উদ্দীপনা। এর মাত্র কয়েক দিন পরে বদি পাকিস্তানিদের হাতে ধরা পড়েন এবং অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়।
কোনো একটি ঘটনা দিয়ে একজন মানুষকে বিচার করা, মূল্যায়ন করা ঠিক নয়। শহীদ বদি ছাত্রজীবনে তাঁর সাহস ও বীরত্ব ভুল জায়গায় ব্যবহার করলেও ঠিক সময়ে তিনি ঠিক কাজ করে দেশের জন্য জীবন দিয়ে আমাদের চিরঋণী করে গেছেন।
অনেকেরই সংশয় ছিল। কারও কিছুটা হালকা, কারও আবার গভীর। কেউ কেউ শঙ্কিতও ছিলেন। দেশের পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তা নিয়ে। এদের সবার সেই সব সংশয় ও শঙ্কা এখন ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। ফলে দেশের শাসনব্যবস্থার গণতান্ত্রিক রূপান্তরকামী সাধারণ মানুষের জন্য তা হয়ে উঠেছে অশনিসংকেত। হ্যাঁ, এই কথাগুলো হচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয়
৭ ঘণ্টা আগেন্যায়বিচার, সংস্কার ও বৈষম্য বিলোপের দাবি থেকে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান সফল হয়েছিল। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে এই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের অনেকেই অপরাধ চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) নেতার উন্মুক্ত চাঁদাবাজির ঘটনা এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
৭ ঘণ্টা আগেআমাদের সর্বসাধারণের মনে একটা প্রশ্ন সব সময়ই ঘুরপাক খায়—ভগবান যেহেতু অজ, তাহলে তাঁর আবার জন্ম কিসের? এই প্রশ্নের উত্তর ভগবান নিজেই গীতায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন। গীতায় ভগবান বলেছেন, তিনি এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা এবং তিনি অজ অর্থাৎ জন্মরহিত হওয়া সত্ত্বেও এই জড়জগতে জন্মগ্রহণ করেন। কেন তিনি জন্মগ্রহণ
৭ ঘণ্টা আগেএকসময় ভরা মৌসুমে এ দেশের সাধারণ মানুষও ইলিশ কিনতে পারত। কিন্তু অনেক বছর থেকে ইলিশ শুধু উচ্চবিত্ত মানুষেরাই কিনতে পারছে। বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় এর আকাশছোঁয়া দামের কারণে এখন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের নাগালের মধ্যে নেই ইলিশ। এখন ভরা মৌসুমে ইলিশের দাম বাড়া নিয়ে ১৫ আগস্ট আজকের পত্রিকায় একটি সংবাদ
৭ ঘণ্টা আগে