জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে, সে প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করলে প্রথমেই বলতে হবে, বাংলার রাজনীতিক, লেখক-বুদ্ধিজীবী কেউই বাংলাকে দেশটির একক রাষ্ট্রভাষা হিসেবে দাবি করেননি। পাকিস্তান রাষ্ট্রটি বিশেষ ভৌগোলিক-সাংস্কৃতিক বাস্তবতার কারণে একক রাষ্ট্রভাষার দেশ হিসেবে পরিচিত হতে পারে না।
তাই পুবে-পশ্চিমের দুই অংশের জন্য দুটি আলাদা রাষ্ট্রভাষার প্রস্তাবও করা হয়েছিল।
১৯৪৭ সালের ৩ আগস্ট ‘পূর্ব-পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ নামে বেগম পত্রিকায় একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন ‘মিসেস এ হক’ নামের একজন নারী। আসলে প্রবন্ধটি লিখেছিলেন আবদুল হক। তিনি এ প্রবন্ধে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার অগ্রাধিকারের কথা বলেন। এবং পশ্চিম পাকিস্তানের অধিবাসীদের সুবিধা বা স্বার্থের কথা ভেবে বাংলার পাশাপাশি উর্দুকেও রাষ্ট্রভাষা করার কথা বলেন।
ওই নিবন্ধে লেখা হয়, ‘সুইজারল্যান্ড, কানাডা প্রভৃতি দেশে একাধিক ভাষা রাষ্ট্রভাষা রূপে গৃহীত হয়েছে, পাকিস্তানেরও গ্রহণ না করার কোনো কারণ নেই।’
এই একই কথা বাংলার চিন্তাবিদদের অনেকেই বলেছেন। একাধিক রাষ্ট্রভাষার দেশ হিসেবে তাঁরা এর সঙ্গে বেলজিয়াম, সোভিয়েত ইউনিয়নের নামও যোগ করেছিলেন।
বাংলা না উর্দু, সে আলোচনার বিশদে যাওয়ার আগে বাঙালি মুসলমান চিন্তকদের একটি অংশ যে সে সময় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, সে কথাও বলা দরকার। বাংলা শিক্ষার বিরোধিতা করে সে সময় ‘আল এসলাম’, ‘ইসলাম প্রচারক’, ‘ইসলাম দর্শন’ ‘শরিয়তে ইসলাম’সহ বেশ কিছু পত্রপত্রিকা তাদের সম্পাদকীয় নীতিনির্ধারণ করেছিল। তাদের প্রকাশিত লেখা ছিল রক্ষণশীল চেতনায় জারিত।
‘ইসলাম প্রচারক’-এ বাংলা ভাষার বিরোধিতা করে লেখা হয়, ‘যে সকল অভিভাবক স্ব স্ব সন্তানদিগকে প্রথমেই ইংরাজি বা বাঙ্গালা শিক্ষা করতে দেন, তাঁহারা নিজের হাতে নিজের পায়ে কুঠারাঘাত করেন—ইহা স্বতঃসিদ্ধ। এই স্থানেই বিষবৃক্ষের উৎপত্তি।’
মাওলানা আকরম খাঁ ১৩২৫ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সম্মেলনে সভাপতির ভাষণে বলেছিলেন, ‘মুছলমানের জাতীয়তা সম্পূর্ণ ধর্মগত। বিশ্বের সকল মুছলমান মিলিয়া এক অভিন্ন ও অভেদ্য জাতি। কোনো মহাদেশের বা কোনো প্রদেশের মুছলমানদের দ্বারা কথিত ভাষা সেই সকল স্থানীয় মুছলমানের জাতীয় ভাষা বলিয়া গৃহীত হইতে পারে না। মুছলমানের জাতীয় ভাষা যে আরবি, এ কথা ভুলিলে মুছলমানের সর্বনাশ হইবে।’
এই সময়কার বাঙালি মুসলমান চিন্তকদের মধ্যে যাঁরা বাংলার ব্যাপারে দোদুল্যমান ছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ বলেছেন, বাংলার সঙ্গে আরবি আর উর্দু চর্চা অব্যাহত রাখার কথা। কেউ কেউ বলেছেন, বাংলা ভাষায় প্রচুর পরিমাণে আরবি ফারসি উর্দু শব্দ ঢোকানোর কথা। কেউ কেউ বাংলা ভাষা থেকে হিন্দু-পুরাণ বা হিন্দুধর্মবিষয়ক শব্দ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিতে চেয়েছেন।
তবে ভাষা ও শব্দের ব্যবহারে মধ্যপন্থী ও উদারপন্থীরাও সে সময় ভাষা বিতর্কে অবদান রেখেছেন। সে কথাই বলা হবে এবার।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে, সে প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করলে প্রথমেই বলতে হবে, বাংলার রাজনীতিক, লেখক-বুদ্ধিজীবী কেউই বাংলাকে দেশটির একক রাষ্ট্রভাষা হিসেবে দাবি করেননি। পাকিস্তান রাষ্ট্রটি বিশেষ ভৌগোলিক-সাংস্কৃতিক বাস্তবতার কারণে একক রাষ্ট্রভাষার দেশ হিসেবে পরিচিত হতে পারে না।
তাই পুবে-পশ্চিমের দুই অংশের জন্য দুটি আলাদা রাষ্ট্রভাষার প্রস্তাবও করা হয়েছিল।
১৯৪৭ সালের ৩ আগস্ট ‘পূর্ব-পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ নামে বেগম পত্রিকায় একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন ‘মিসেস এ হক’ নামের একজন নারী। আসলে প্রবন্ধটি লিখেছিলেন আবদুল হক। তিনি এ প্রবন্ধে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার অগ্রাধিকারের কথা বলেন। এবং পশ্চিম পাকিস্তানের অধিবাসীদের সুবিধা বা স্বার্থের কথা ভেবে বাংলার পাশাপাশি উর্দুকেও রাষ্ট্রভাষা করার কথা বলেন।
ওই নিবন্ধে লেখা হয়, ‘সুইজারল্যান্ড, কানাডা প্রভৃতি দেশে একাধিক ভাষা রাষ্ট্রভাষা রূপে গৃহীত হয়েছে, পাকিস্তানেরও গ্রহণ না করার কোনো কারণ নেই।’
এই একই কথা বাংলার চিন্তাবিদদের অনেকেই বলেছেন। একাধিক রাষ্ট্রভাষার দেশ হিসেবে তাঁরা এর সঙ্গে বেলজিয়াম, সোভিয়েত ইউনিয়নের নামও যোগ করেছিলেন।
বাংলা না উর্দু, সে আলোচনার বিশদে যাওয়ার আগে বাঙালি মুসলমান চিন্তকদের একটি অংশ যে সে সময় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, সে কথাও বলা দরকার। বাংলা শিক্ষার বিরোধিতা করে সে সময় ‘আল এসলাম’, ‘ইসলাম প্রচারক’, ‘ইসলাম দর্শন’ ‘শরিয়তে ইসলাম’সহ বেশ কিছু পত্রপত্রিকা তাদের সম্পাদকীয় নীতিনির্ধারণ করেছিল। তাদের প্রকাশিত লেখা ছিল রক্ষণশীল চেতনায় জারিত।
‘ইসলাম প্রচারক’-এ বাংলা ভাষার বিরোধিতা করে লেখা হয়, ‘যে সকল অভিভাবক স্ব স্ব সন্তানদিগকে প্রথমেই ইংরাজি বা বাঙ্গালা শিক্ষা করতে দেন, তাঁহারা নিজের হাতে নিজের পায়ে কুঠারাঘাত করেন—ইহা স্বতঃসিদ্ধ। এই স্থানেই বিষবৃক্ষের উৎপত্তি।’
মাওলানা আকরম খাঁ ১৩২৫ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সম্মেলনে সভাপতির ভাষণে বলেছিলেন, ‘মুছলমানের জাতীয়তা সম্পূর্ণ ধর্মগত। বিশ্বের সকল মুছলমান মিলিয়া এক অভিন্ন ও অভেদ্য জাতি। কোনো মহাদেশের বা কোনো প্রদেশের মুছলমানদের দ্বারা কথিত ভাষা সেই সকল স্থানীয় মুছলমানের জাতীয় ভাষা বলিয়া গৃহীত হইতে পারে না। মুছলমানের জাতীয় ভাষা যে আরবি, এ কথা ভুলিলে মুছলমানের সর্বনাশ হইবে।’
এই সময়কার বাঙালি মুসলমান চিন্তকদের মধ্যে যাঁরা বাংলার ব্যাপারে দোদুল্যমান ছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ বলেছেন, বাংলার সঙ্গে আরবি আর উর্দু চর্চা অব্যাহত রাখার কথা। কেউ কেউ বলেছেন, বাংলা ভাষায় প্রচুর পরিমাণে আরবি ফারসি উর্দু শব্দ ঢোকানোর কথা। কেউ কেউ বাংলা ভাষা থেকে হিন্দু-পুরাণ বা হিন্দুধর্মবিষয়ক শব্দ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিতে চেয়েছেন।
তবে ভাষা ও শব্দের ব্যবহারে মধ্যপন্থী ও উদারপন্থীরাও সে সময় ভাষা বিতর্কে অবদান রেখেছেন। সে কথাই বলা হবে এবার।
দেশের সংবিধান, পুলিশ, স্থানীয় সরকার, নির্বাচন, বিচারব্যবস্থাসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কারের নানা আলাপ হয়েছে, হচ্ছে। কিন্তু এই সময়ে অর্থনৈতিক সংস্কার নিয়ে খুব বেশি কিছু করা হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারেরই গঠন করা শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১১ ঘণ্টা আগেঈশ্বরকে এখনো বুঝে উঠতে পারিনি আমরা। এ কারণে মানবদেহ থাকলেও মনুষ্যত্ব, মানবিকতা নেই কিংবা মানুষ হয়ে উঠতে পারিনি। ঈশ্বরকে বোঝার জন্য আমরা দায়বদ্ধ নই, যদিও আমাদের দায়বদ্ধতার প্রসঙ্গটি এখানে আসার কথা ছিল না। শব্দটি প্রযোজ্য নয় এখানে। কিন্তু জন্ম, মৃত্যু ও ধর্মকে পুঁজি করে এক অদৃশ্য নাগপাশে বাঁধা পড়ে
১১ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ ও কার্যপরিধি নিয়ে রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজে আলোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়েছে। এক অংশ মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকার শুধু নির্বাচন পরিচালনার জন্য যথেষ্ট নয়; বিচার বিভাগে সংস্কার, হাসিনা সরকারের হত্যা-নির্যাতন, গুম-খুন ও দুর্নীতির বিচার, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষকরণসহ নানা
১১ ঘণ্টা আগেঢাকা শহরে পরিবহনের অব্যবস্থাপনার কারণে নগরবাসী কাহিল অনেক আগে থেকেই। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যানজটের অসহনীয় যন্ত্রণা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বর্তমান সরকারের কিছু উদ্যোগ গ্রহণের কারণে মানুষ আশার আলো দেখতে পেলেও সময়ের সঙ্গে সেই আশাও নিরাশায় পরিণত হয়েছে। মূলত পরিবহনমালিক ও নেতাদের অসহযোগিতার কারণে
১১ ঘণ্টা আগে