বিভুরঞ্জন সরকার
একূল ভাঙে ওকূল গড়ে, এই তো নদীর খেলা। ভাঙাগড়া শুধু নদীর খেলা নয়, রাজনৈতিক দলেও এই খেলা অনেক সময় দেখা যায়। প্রতিষ্ঠার পর ভাঙেনি বা এক দল ছেড়ে অন্য দলে যায়নি– এমন কোনো নজির আমাদের দেশের রাজনীতিতে নেই। আওয়ামী লীগ ভেঙেছে, বিএনপি ভেঙেছে, জাতীয় পার্টি ভেঙেছে, কমিউনিস্ট পার্টি ভেঙেছে। জামায়াতে ইসলামী আনুষ্ঠানিকভাবে না ভাঙলেও দল ছেড়ে কেউ কেউ পৃথক দল গঠন করেছেন। ভাঙন শুধু বড় দলের ঘটনা নয়, ছোট দলও ভাঙে।
এই কথাগুলো হঠাৎ কেন বলছি? এখন তো রাজনৈতিক অঙ্গনে দল ভাঙার কোনো খবর নেই। বরং আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এখন চলছে ঐক্য গড়ার চেষ্টা। ক্ষমতাসীন দল যেমন, তেমনি ক্ষমতাপ্রত্যাশী দলও ছোট ছোট দলগুলোকে কাছে টেনে নিজের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে শুধু সমমনাদের নিয়ে টানাটানি চলছে, তা নয়, বিপরীত মেরুতে চলাদেরও পক্ষে রাখার জন্য উদ্যোগ-চেষ্টার খবর গণমাধ্যমে ছাপা হচ্ছে। আবার গুজব হিসেবেও বাজারে নানা কথা ভাসছে।
এর মধ্যেই ব্যতিক্রমী এক খবর—দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
হঠাৎ কী হলো, যার জন্য কাছে টানার মওসুমে শওকত মাহমুদের মতো বিএনপির একটি শক্ত খুঁটিকে উপড়ে ফেলল দলটির হাইকমান্ড? বিএনপি নেতারা সরকার পতনের আন্দোলনে আছে। দলটি শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার ঢক্কানিনাদ করে চলছে। এমন প্রচার চালানো হচ্ছে যে সরকারের পতন হলো বলে! কোনো এক সুবেহ-সাদিকে শোনা যাবে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে, আওয়ামী লীগের নেতারা ও সরকারের মন্ত্রীরা দলে দলে দেশত্যাগ করেছেন! কিন্তু না, এই দৃশ্য বিএনপির কল্পনায় থাকতে পারে, বাস্তবে ঘটবে বলে মনে হয় না। আওয়ামী লীগের কিছু বদনাম আছে, নেতা-মন্ত্রীরা কেউ কেউ জনবিচ্ছিন্ন হয়েছেন, কিন্তু আওয়ামী লীগের মাথায় ঢাল হিসেবে আছেন শেখ হাসিনা। আমরা যে যত নিন্দা-সমালোচনাই করি না কেন, শেখ হাসিনাকে টেক্কা দেওয়ার অবস্থায় এখন বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক নেতার নেই। তাছাড়া দেশের সাধারণ মানুষও এখনো শেখ হাসিনার ওপরই নির্ভর করতে ভরসা রাখেন।
সে জন্য বিএনপি নেতারা প্রকাশ্যে যা-ই বলুন না কেন, আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভেতরে ভেতরে তাঁদের অনেকের মধ্যেই এক ধরনের অস্থিরতা ও চাঞ্চল্য আছে। নেতাদের মধ্যেও আছে অসন্তোষ এবং অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতা। শওকত মাহমুদকে দল থেকে বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে দলের ভেতরের সংকটেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কথা বলা হলেও তা স্পষ্ট করা হয়নি। তিনি নাকি শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করেছেন। এই ‘শৃঙ্খলাবিরোধী’ কাজ আসলে কী?
সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ১৬ মার্চ রাজধানী বনানীর এক হোটেলে ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির এক সুধী সমাবেশ ও নৈশভোজের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিএনপির সন্দেহের সৃষ্টি হয়। সংগঠনটির আহ্বায়ক বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার এবং সদস্যসচিব বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নৈশভোজের আয়োজনের বিষয়টি বিএনপির হাইকমান্ড বা সিনিয়র পর্যায়ের কোনো নেতাকে জানানো হয়নি। যে কারণে এই অনুষ্ঠানের ওপর দলটির বিভিন্ন পর্যায় থেকে তীক্ষ্ণ নজর ছিল। শওকত মাহমুদের ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতাকে ফোন করে অনুষ্ঠানে না যেতে বলা হয় দলের পক্ষ থেকে। যাঁরা নৈশভোজে আমন্ত্রিত ছিলেন, পরে তাঁরা অংশ নেননি। এমনকি আমন্ত্রিত অতিথিদের নজরদারি করতে দুই সাবেক ছাত্রনেতাকে সেখানে পাঠানো হয়, যাঁদের মধ্যে একজন অনুষ্ঠানের ভিডিও ধারণ করেন। আর অন্যজন সরাসরি লাইভে বিএনপির শীর্ষ নেতাকে দেখান।
বনানীর হোটেলে সুধী সমাবেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অন্তত ২৬ নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল দলের একজন ভাইস চেয়ারম্যান ও অঙ্গসংগঠনের একজন শীর্ষ নেতাকে ফোকাস করা। কিন্তু তাঁরা দলের হাইকমান্ডকে বিষয়টি আগেই জানিয়ে দেন এবং সেখানে অংশ নেবেন না বলেও নিশ্চিত করেন।
এই অনুষ্ঠানে অর্থের উৎস নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিএনপির কাছে নাকি তথ্য রয়েছে, এর পেছনে একটি শক্তি কাজ করছে। এর আগেও নানা তৎপরতায় তাদের নাম এসেছে। এখন আবারও নতুন করে কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। বিএনপির নেতৃত্ব ও আন্দোলন নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করাই হলো তাদের মূল উদ্দেশ্য। এর সঙ্গে বিএনপির কিছু নেতা ছাড়াও বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও কিছু পেশাজীবী নেতা জড়িত আছেন। যাঁরা ফেব্রুয়ারিতেও থাইল্যান্ডে গোপন বৈঠক করেছেন বলেও তথ্য আছে। এর সঙ্গে জড়িত বিএনপির ১১ জন কেন্দ্রীয় নেতার বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছেন দুজন ভাইস চেয়ারম্যান, দুজন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, পাঁচজন সম্পাদক ও সহসম্পাদক এবং সহযোগী অঙ্গসংগঠনের দুজন নেতা।
২০ মার্চ বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় বনানী হোটেলের অনুষ্ঠান নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। সেখানে নেতারা বলেন, গত বছরের এপ্রিলে পেশাজীবী সমাজের ব্যানারে একটি সমাবেশ ডেকে সরকার পতনের ডাক দিয়েছিলেন। সেই পটভূমিতে তখন ওই সমাবেশের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক ছিল না। এর আগে ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বরও হাইকমান্ডকে না জানিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে একটি মিছিল বের করে মুক্তাঙ্গনে গিয়ে অবস্থান নেন। দুই কর্মসূচির নেতৃত্বেই ছিলেন শওকত মাহমুদ। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে ‘সরকার পরিবর্তন আন্দোলন’-এর সঙ্গে যুক্ত থাকা বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তাকে দুবার শোকজ করা হলেও এসব থেকে তিনি বের হতে পারেননি।
সভায় বলা হয়, যেখানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাচনে বিজয়ী হলে রাজপথে আন্দোলনে থাকা দলগুলো নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের কথা ঘোষণা করেছেন, সেখানে ইনসাফ কায়েম কমিটির ব্যানারে শওকত মাহমুদ তাঁর প্রস্তাবনায় অন্তর্বর্তীকালীন একটি জাতীয় সরকার গঠনের দাবি করেছেন। শুধু তাই নয়, প্রস্তাবনায় জাতীয় সরকার গঠনের পর সেই সরকারকে বাংলাদেশের নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং তার অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়। দলের পদে থেকে ভিন্ন ব্যানারে শীর্ষ নেতার সিদ্ধান্তকে অমান্য করেছেন তিনি।
জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির ব্যানারে যে অনুষ্ঠান হয়েছে, সেখানে একাধিক অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা ছিলেন, যাঁদের শওকত মাহমুদের আগের দুই বিতর্কিত কর্মসূচিতেও দেখা গেছে। আগে ক্ষমা করা হলেও এখন ব্যবস্থা নেওয়া না হলে দলে ভিন্ন মেসেজ যেতে পারে মনে করে স্থায়ী কমিটির সবার মতামতের ভিত্তিতে শওকত মাহমুদকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগেও দুবার শওকত মাহমুদকে শোকজ করেছিল বিএনপি। সর্বশেষ ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সংগঠনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের জন্য তাঁকে শোকজ করা হয়েছিল। সেই সময় শোকজের জবাবে সন্তষ্ট হওয়ায় তাঁকে ক্ষমা করে দলটি।
বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে সিনিয়র সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি ছিলেন।
বহিষ্কারের সিদ্ধান্তকে দুঃখজনক উল্লেখ করেছেন শওকত মাহমুদ। দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ। সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলে আমাকে সপ্তাহে চার দিন আদালতে যেতে হতো না। এত মামলাও হতো না। এর বাইরে এ মুহূর্তে কিছু বলতে চাই না।’
অনেক দিন ধরেই বিএনপি শওকত মাহমুদকে সন্দেহের চোখে দেখায় দলীয়ভাবে তাঁকে এ্রড়িয়ে চলা হয়।। এবার দল থেকে বহিষ্কারের কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে দলটি সন্দেহের তালিকায় থাকা অন্য নেতাদের এই বার্তা দিল যে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে কেউ দলের ভেতর ষড়যন্ত্র বা ভাঙন ধরানোর পরিকল্পনা করলে এমন পরিণতিই ভোগ করতে হবে।
বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, দলকে ভাঙা এবং জাতীয়তাবাদী শক্তির মধ্যে অবিশ্বাস ও বিভাজন বাড়াতে অনেক দিন ধরে একটি মহল সক্রিয়। আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ওই মহল আবারও তৎপর হয়েছে, যাদের মূল লক্ষ্য সরকারের উদ্দেশ্য হাসিল। তারা দীর্ঘদিন থেকে বিএনপির মূল নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে দলে ও জোটে বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। নানা কারণে ক্ষুব্ধ ও হতাশ নেতাদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নিজেদের সঙ্গে ভেড়াচ্ছে। দল ও জোটের এমন অন্তত ৪০ নেতার সঙ্গে বিভিন্ন সময় দেশে-বিদেশে বৈঠক হয় ওই মহলের। সর্বশেষ গত জানুয়ারিতেও বিদেশে এমন বৈঠক হয়েছে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন প্রচার আছে যে নানা কারণে ক্ষুব্ধ বিএনপির অনেকেই দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন। এমনও শোনা যায়, ১০ ডিসেম্বরের ঢাকার সমাবেশকে কেন্দ্র করে তারেক রহমানের সঙ্গে স্থায়ী কমিটির দু-একজন সদস্য তর্কে জড়িয়েছিলেন।
নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করা সম্ভব নয় বলে জানালে তারেক তাঁদের ‘কাওয়ার্ড’ বলে মন্তব্য করলে স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য তারেককে দেশে ফিরে সাহসের পরিচয় দিতে বলেছিলেন। তারেক যেভাবে হুকুম দিয়ে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন, সেটা নিয়েও সিনিয়রদের মধ্যে ক্ষোভ আছে। একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, ম্যাডামের সামনে কথা বলা যেত, তর্কবিতর্কও করা যেত, কিন্তু তারেকের সামনে কোনো কথা বলা যায় না। সবাইকে বিনা প্রশ্নে তাঁর কথা মানতে হবে, নির্দেশ পালন করতে পারবে। তারেক নিজের মতো করে দল গোছাতে গিয়ে দলের ভেতরে অনৈক্যের বীজ বপন করেছেন।
শওকত মাহমুদ তারেকের স্বেচ্ছাচারিতার শিকার বলে মনে করা হচ্ছে। তারেকের প্রতি শতভাগ আনুগত্য নেই এমন কে বা কারা এরপর তাঁর টার্গেট হবেন, সে প্রশ্নও উঠছে। বিএনপির ভেতরের খবরাখবর রাখেন এমন কেউ কেউ বলেছেন, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন কিংবা দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিনও যেকোনো সময় বিএনপি থেকে বহিষ্কার হতে পারেন। তাঁদের সঙ্গে তারেকের সম্পর্ক মধুর নয়।
এখন দেখার বিষয়, সরকারের পতনের আন্দোলন করার জন্য মিত্র খোঁজা, নাকি নিজ দলের ঐক্য ও সংহতি রক্ষা করা—কোনটা ঠাঁই পায় বিএনপির অগ্রাধিকার তালিকায়?
লেখক: জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
একূল ভাঙে ওকূল গড়ে, এই তো নদীর খেলা। ভাঙাগড়া শুধু নদীর খেলা নয়, রাজনৈতিক দলেও এই খেলা অনেক সময় দেখা যায়। প্রতিষ্ঠার পর ভাঙেনি বা এক দল ছেড়ে অন্য দলে যায়নি– এমন কোনো নজির আমাদের দেশের রাজনীতিতে নেই। আওয়ামী লীগ ভেঙেছে, বিএনপি ভেঙেছে, জাতীয় পার্টি ভেঙেছে, কমিউনিস্ট পার্টি ভেঙেছে। জামায়াতে ইসলামী আনুষ্ঠানিকভাবে না ভাঙলেও দল ছেড়ে কেউ কেউ পৃথক দল গঠন করেছেন। ভাঙন শুধু বড় দলের ঘটনা নয়, ছোট দলও ভাঙে।
এই কথাগুলো হঠাৎ কেন বলছি? এখন তো রাজনৈতিক অঙ্গনে দল ভাঙার কোনো খবর নেই। বরং আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এখন চলছে ঐক্য গড়ার চেষ্টা। ক্ষমতাসীন দল যেমন, তেমনি ক্ষমতাপ্রত্যাশী দলও ছোট ছোট দলগুলোকে কাছে টেনে নিজের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে শুধু সমমনাদের নিয়ে টানাটানি চলছে, তা নয়, বিপরীত মেরুতে চলাদেরও পক্ষে রাখার জন্য উদ্যোগ-চেষ্টার খবর গণমাধ্যমে ছাপা হচ্ছে। আবার গুজব হিসেবেও বাজারে নানা কথা ভাসছে।
এর মধ্যেই ব্যতিক্রমী এক খবর—দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
হঠাৎ কী হলো, যার জন্য কাছে টানার মওসুমে শওকত মাহমুদের মতো বিএনপির একটি শক্ত খুঁটিকে উপড়ে ফেলল দলটির হাইকমান্ড? বিএনপি নেতারা সরকার পতনের আন্দোলনে আছে। দলটি শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার ঢক্কানিনাদ করে চলছে। এমন প্রচার চালানো হচ্ছে যে সরকারের পতন হলো বলে! কোনো এক সুবেহ-সাদিকে শোনা যাবে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে, আওয়ামী লীগের নেতারা ও সরকারের মন্ত্রীরা দলে দলে দেশত্যাগ করেছেন! কিন্তু না, এই দৃশ্য বিএনপির কল্পনায় থাকতে পারে, বাস্তবে ঘটবে বলে মনে হয় না। আওয়ামী লীগের কিছু বদনাম আছে, নেতা-মন্ত্রীরা কেউ কেউ জনবিচ্ছিন্ন হয়েছেন, কিন্তু আওয়ামী লীগের মাথায় ঢাল হিসেবে আছেন শেখ হাসিনা। আমরা যে যত নিন্দা-সমালোচনাই করি না কেন, শেখ হাসিনাকে টেক্কা দেওয়ার অবস্থায় এখন বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক নেতার নেই। তাছাড়া দেশের সাধারণ মানুষও এখনো শেখ হাসিনার ওপরই নির্ভর করতে ভরসা রাখেন।
সে জন্য বিএনপি নেতারা প্রকাশ্যে যা-ই বলুন না কেন, আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভেতরে ভেতরে তাঁদের অনেকের মধ্যেই এক ধরনের অস্থিরতা ও চাঞ্চল্য আছে। নেতাদের মধ্যেও আছে অসন্তোষ এবং অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতা। শওকত মাহমুদকে দল থেকে বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে দলের ভেতরের সংকটেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কথা বলা হলেও তা স্পষ্ট করা হয়নি। তিনি নাকি শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করেছেন। এই ‘শৃঙ্খলাবিরোধী’ কাজ আসলে কী?
সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ১৬ মার্চ রাজধানী বনানীর এক হোটেলে ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির এক সুধী সমাবেশ ও নৈশভোজের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিএনপির সন্দেহের সৃষ্টি হয়। সংগঠনটির আহ্বায়ক বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার এবং সদস্যসচিব বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নৈশভোজের আয়োজনের বিষয়টি বিএনপির হাইকমান্ড বা সিনিয়র পর্যায়ের কোনো নেতাকে জানানো হয়নি। যে কারণে এই অনুষ্ঠানের ওপর দলটির বিভিন্ন পর্যায় থেকে তীক্ষ্ণ নজর ছিল। শওকত মাহমুদের ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতাকে ফোন করে অনুষ্ঠানে না যেতে বলা হয় দলের পক্ষ থেকে। যাঁরা নৈশভোজে আমন্ত্রিত ছিলেন, পরে তাঁরা অংশ নেননি। এমনকি আমন্ত্রিত অতিথিদের নজরদারি করতে দুই সাবেক ছাত্রনেতাকে সেখানে পাঠানো হয়, যাঁদের মধ্যে একজন অনুষ্ঠানের ভিডিও ধারণ করেন। আর অন্যজন সরাসরি লাইভে বিএনপির শীর্ষ নেতাকে দেখান।
বনানীর হোটেলে সুধী সমাবেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অন্তত ২৬ নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল দলের একজন ভাইস চেয়ারম্যান ও অঙ্গসংগঠনের একজন শীর্ষ নেতাকে ফোকাস করা। কিন্তু তাঁরা দলের হাইকমান্ডকে বিষয়টি আগেই জানিয়ে দেন এবং সেখানে অংশ নেবেন না বলেও নিশ্চিত করেন।
এই অনুষ্ঠানে অর্থের উৎস নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিএনপির কাছে নাকি তথ্য রয়েছে, এর পেছনে একটি শক্তি কাজ করছে। এর আগেও নানা তৎপরতায় তাদের নাম এসেছে। এখন আবারও নতুন করে কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। বিএনপির নেতৃত্ব ও আন্দোলন নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করাই হলো তাদের মূল উদ্দেশ্য। এর সঙ্গে বিএনপির কিছু নেতা ছাড়াও বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও কিছু পেশাজীবী নেতা জড়িত আছেন। যাঁরা ফেব্রুয়ারিতেও থাইল্যান্ডে গোপন বৈঠক করেছেন বলেও তথ্য আছে। এর সঙ্গে জড়িত বিএনপির ১১ জন কেন্দ্রীয় নেতার বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছেন দুজন ভাইস চেয়ারম্যান, দুজন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, পাঁচজন সম্পাদক ও সহসম্পাদক এবং সহযোগী অঙ্গসংগঠনের দুজন নেতা।
২০ মার্চ বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় বনানী হোটেলের অনুষ্ঠান নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। সেখানে নেতারা বলেন, গত বছরের এপ্রিলে পেশাজীবী সমাজের ব্যানারে একটি সমাবেশ ডেকে সরকার পতনের ডাক দিয়েছিলেন। সেই পটভূমিতে তখন ওই সমাবেশের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক ছিল না। এর আগে ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বরও হাইকমান্ডকে না জানিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে একটি মিছিল বের করে মুক্তাঙ্গনে গিয়ে অবস্থান নেন। দুই কর্মসূচির নেতৃত্বেই ছিলেন শওকত মাহমুদ। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে ‘সরকার পরিবর্তন আন্দোলন’-এর সঙ্গে যুক্ত থাকা বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তাকে দুবার শোকজ করা হলেও এসব থেকে তিনি বের হতে পারেননি।
সভায় বলা হয়, যেখানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাচনে বিজয়ী হলে রাজপথে আন্দোলনে থাকা দলগুলো নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের কথা ঘোষণা করেছেন, সেখানে ইনসাফ কায়েম কমিটির ব্যানারে শওকত মাহমুদ তাঁর প্রস্তাবনায় অন্তর্বর্তীকালীন একটি জাতীয় সরকার গঠনের দাবি করেছেন। শুধু তাই নয়, প্রস্তাবনায় জাতীয় সরকার গঠনের পর সেই সরকারকে বাংলাদেশের নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং তার অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়। দলের পদে থেকে ভিন্ন ব্যানারে শীর্ষ নেতার সিদ্ধান্তকে অমান্য করেছেন তিনি।
জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির ব্যানারে যে অনুষ্ঠান হয়েছে, সেখানে একাধিক অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা ছিলেন, যাঁদের শওকত মাহমুদের আগের দুই বিতর্কিত কর্মসূচিতেও দেখা গেছে। আগে ক্ষমা করা হলেও এখন ব্যবস্থা নেওয়া না হলে দলে ভিন্ন মেসেজ যেতে পারে মনে করে স্থায়ী কমিটির সবার মতামতের ভিত্তিতে শওকত মাহমুদকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগেও দুবার শওকত মাহমুদকে শোকজ করেছিল বিএনপি। সর্বশেষ ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সংগঠনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের জন্য তাঁকে শোকজ করা হয়েছিল। সেই সময় শোকজের জবাবে সন্তষ্ট হওয়ায় তাঁকে ক্ষমা করে দলটি।
বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে সিনিয়র সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি ছিলেন।
বহিষ্কারের সিদ্ধান্তকে দুঃখজনক উল্লেখ করেছেন শওকত মাহমুদ। দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ। সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলে আমাকে সপ্তাহে চার দিন আদালতে যেতে হতো না। এত মামলাও হতো না। এর বাইরে এ মুহূর্তে কিছু বলতে চাই না।’
অনেক দিন ধরেই বিএনপি শওকত মাহমুদকে সন্দেহের চোখে দেখায় দলীয়ভাবে তাঁকে এ্রড়িয়ে চলা হয়।। এবার দল থেকে বহিষ্কারের কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে দলটি সন্দেহের তালিকায় থাকা অন্য নেতাদের এই বার্তা দিল যে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে কেউ দলের ভেতর ষড়যন্ত্র বা ভাঙন ধরানোর পরিকল্পনা করলে এমন পরিণতিই ভোগ করতে হবে।
বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, দলকে ভাঙা এবং জাতীয়তাবাদী শক্তির মধ্যে অবিশ্বাস ও বিভাজন বাড়াতে অনেক দিন ধরে একটি মহল সক্রিয়। আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ওই মহল আবারও তৎপর হয়েছে, যাদের মূল লক্ষ্য সরকারের উদ্দেশ্য হাসিল। তারা দীর্ঘদিন থেকে বিএনপির মূল নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে দলে ও জোটে বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। নানা কারণে ক্ষুব্ধ ও হতাশ নেতাদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নিজেদের সঙ্গে ভেড়াচ্ছে। দল ও জোটের এমন অন্তত ৪০ নেতার সঙ্গে বিভিন্ন সময় দেশে-বিদেশে বৈঠক হয় ওই মহলের। সর্বশেষ গত জানুয়ারিতেও বিদেশে এমন বৈঠক হয়েছে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন প্রচার আছে যে নানা কারণে ক্ষুব্ধ বিএনপির অনেকেই দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন। এমনও শোনা যায়, ১০ ডিসেম্বরের ঢাকার সমাবেশকে কেন্দ্র করে তারেক রহমানের সঙ্গে স্থায়ী কমিটির দু-একজন সদস্য তর্কে জড়িয়েছিলেন।
নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করা সম্ভব নয় বলে জানালে তারেক তাঁদের ‘কাওয়ার্ড’ বলে মন্তব্য করলে স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য তারেককে দেশে ফিরে সাহসের পরিচয় দিতে বলেছিলেন। তারেক যেভাবে হুকুম দিয়ে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন, সেটা নিয়েও সিনিয়রদের মধ্যে ক্ষোভ আছে। একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, ম্যাডামের সামনে কথা বলা যেত, তর্কবিতর্কও করা যেত, কিন্তু তারেকের সামনে কোনো কথা বলা যায় না। সবাইকে বিনা প্রশ্নে তাঁর কথা মানতে হবে, নির্দেশ পালন করতে পারবে। তারেক নিজের মতো করে দল গোছাতে গিয়ে দলের ভেতরে অনৈক্যের বীজ বপন করেছেন।
শওকত মাহমুদ তারেকের স্বেচ্ছাচারিতার শিকার বলে মনে করা হচ্ছে। তারেকের প্রতি শতভাগ আনুগত্য নেই এমন কে বা কারা এরপর তাঁর টার্গেট হবেন, সে প্রশ্নও উঠছে। বিএনপির ভেতরের খবরাখবর রাখেন এমন কেউ কেউ বলেছেন, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন কিংবা দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিনও যেকোনো সময় বিএনপি থেকে বহিষ্কার হতে পারেন। তাঁদের সঙ্গে তারেকের সম্পর্ক মধুর নয়।
এখন দেখার বিষয়, সরকারের পতনের আন্দোলন করার জন্য মিত্র খোঁজা, নাকি নিজ দলের ঐক্য ও সংহতি রক্ষা করা—কোনটা ঠাঁই পায় বিএনপির অগ্রাধিকার তালিকায়?
লেখক: জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
মনজিল মোরসেদ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র অ্যাডভোকেট। তিনি ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ’ (এইচআরপিবি)-এর প্রেসিডেন্ট। জনস্বার্থে এ পর্যন্ত তিনি ২২৫টির বেশি মামলা করে মানবাধিকার ও পরিবেশ সংরক্ষণে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন।
১৪ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকেই দ্রুত নির্বাচন এবং অন্তর্বর্তী সরকার যাতে বেশি দিন ক্ষমতায় না থাকে, সে বিষয়ে সোচ্চার বিএনপি। এমনকি সরকার যেসব প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, সেগুলোও নির্বাচিত সরকার ছাড়া বাস্তবায়ন করা যাবে না বলে দলটি মনে করে।
১৪ ঘণ্টা আগেজয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলায় যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে, সে ঘটনায় আর যাই হোক আক্কেলের কোনো পরিচয় দেখা যাচ্ছে না। সোজা কথায়, এটা বেআক্কেলি কর্মকাণ্ড। জয়পুরহাট ও রংপুরের নারী ফুটবল দলের মধ্যে ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়েছিল ২৯ জানুয়ারি।
১৪ ঘণ্টা আগেজুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) যে তদন্ত করেছে, ২৭ জানুয়ারি সে তদন্তের ৫৫ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এইচআরডব্লিউর একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে...
২ দিন আগে