নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশে এক-এগারোর পুনরাবৃত্তির শঙ্কা তুলে ধরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের রাজনৈতিক সমঝোতার প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপির দুঃশাসনের কারণে এক-এগারো ঘটেছিল। এবার ঘাবড়ানোর কিছু নেই। আমরা আছি না? কোনো চিন্তা নেই।’
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে জাপার সংসদ সদস্যের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে অস্থিরতাকে কেন্দ্র ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল, যা এক-এগারোর সরকার হিসেবেই পরিচিত। এ প্রসঙ্গ টেনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা জানি, আজকে কিন্তু এক-এগারো। … দেশের যে পরিস্থিতি আমরা জানি, আমাদের দেশে প্রজ্ঞাবান নেতা আছে, অনুধাবনের ক্ষমতা—এক-এগারো আসবে না আবার। তবু আমার জিজ্ঞাসা—সব পক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার লক্ষ্যে পা বাড়ানোর বোধ হয় এখনই সময়। আপনি কী মনে করেন?’
জবাবে বিএনপির দুঃশাসন, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, ভুয়া ভোটার সৃষ্টির কারণে এক-এগারো এসেছিল মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঘাবড়ানোর কিছুই নেই, এতটুকু বলতে পারি। ঘাবড়াবেন না, আমরা আছি না? কোনো চিন্তা নেই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের বিজয় অনিবার্য জেনে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছিল। ২০১৮ সালে তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে মনোনয়ন-বাণিজ্য করে। মাঝপথে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায় এবং নির্বাচন নিয়ে নানা অপপ্রচার চালাতে থাকে। তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পেরেছে। কিন্তু জনগণের আস্থা, বিশ্বাস আওয়ামী লীগের ওপরে আছে।
সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিটি নির্বাচন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই মানুষ ভোটটা শান্তিতে দিতে পারছে। এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ করার দরকার নেই। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়, কারণ তারা জানে, আওয়ামী লীগ যে ওয়াদা দেয় তা রাখে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা নির্বাচনকে কলুষিত করেছে,, নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে, মানুষের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে, যারা মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে, তারাই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে।’
বিএনপির অতীতের আন্দোলনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকারে যখন আছি, জনগণের জানমাল রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। এমন কোনো শক্তি তৈরি হয়নি, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইয়ুব খান, জিয়াউর রহমান, এইচ এম এরশাদ, খালেদা জিয়া—সবাই আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পারেনি। ভবিষ্যতেও পারবে না। আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে।
গণফোরামের মোকাব্বিরকে প্রধানমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ
মেগা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটাকে অমূলক আখ্যায়িত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে চালেঞ্জে ছুড়ে দিয়ে কোথায়, কত দুর্নীতি হয়েছে, তা স্পষ্ট করতে বলছেন। স্পষ্ট করে বললে তার জবাবও তিনি দেবেন বলে উল্লেখ করেন।
সম্পূরক প্রশ্নে মোকাব্বির খান মেগা প্রকল্প, কুইক রেন্টালসহ বিভিন্ন খাতে দুর্নীতির অভিযোগ করেন। মোকাব্বির খান বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিতে আজকের সংকটে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধই কেবল দায়ী নয়, আমাদের অভ্যন্তরীণ অনেক বিষয় আছে। আর্থিক খাতে বিশৃঙ্খলা, মেগা প্রকল্পগুলোতে ব্যাপক দুর্নীতি, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার, ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক লুটপাট এবং বিদ্যুৎ খাতে কুইক রেন্টালের ইনডেমনিটি—এগুলো অনেক কিছুই দায়ী। এর ফলাফল কী হয়েছে? ডলার সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা আজ দুর্বিষহ। প্রধানমন্ত্রী এই সত্যতা স্বীকার করে ব্যবস্থা নেন বলে তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।
জবাবে মোকাব্বির খানের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনে হচ্ছে, আমাদের সংসদ সদস্য বিরোধী দলে শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু যেসব অভিযোগ তিনি এনেছেন, তা সম্পূর্ণ অমূলক। তিনি মেগা প্রকল্প নিয়ে কথা বলেছেন। এই মেগা প্রকল্পের সুবিধাভোগী কারা? এ দেশের সাধারণ মানুষ। এই মেগা প্রকল্প অন্য কোনো সরকার করতে পারেনি, আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে। পদ্মা সেতু সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে আমরা করেছি। মেট্রোরেল—এটাও সাধারণ মানুষের যোগাযোগের জন্য। মেট্রোরেলে চলে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অল্প সময়ে আসতে পারছে স্বল্প খরচে। এটা সাধারণ মানুষ ভোগ করছে। সংসদ সদস্য অনেক অর্থশালী ও সম্পদশালী, গাড়িতে চড়েন—ওনার এসব সমস্যা জানার কথা নয়।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, মাননীয় স্পিকার, আপনার মাধ্যমে মাননীয় সম্পূরক প্রশ্নকর্তাকে আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি—কোথায়, কত দুর্নীতি হয়েছে। সেই কথাটা তাঁকে এখানে স্পষ্ট বলতে হবে। যার জবাব আমি দেব।
মোকাব্বির খানের উদ্দেশে সংসদ নেতা আরও বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য বাংলাদেশের নাগরিক। ওনার একটা সেকেন্ড হোমও আছে। সেই সেকেন্ড হোম যেখানে অর্থাৎ ইংল্যান্ডে বিদ্যুতের দাম কত শতাংশ বেড়েছে। সেখানে বিদ্যুতের দাম দেড় শ পার্সেন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে ভোগ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখানে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা হয়। নির্দেশনা নিয়ে তা মনিটরিং করা হয়। নিয়মের ব্যত্যয় হলে জরিমানা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো সেই অবস্থায় নয়।
কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে সরকার মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারছে বলে জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, বড় বড় মহারথী আমাদের দুর্নীতির খোঁজ পায়নি। সেখানে কিছু লোক ভাঙা রেকর্ডের মতো বলেই যাচ্ছেন কুইক রেন্টাল, কুইক রেন্টাল। সব বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হতো, আওয়ামী লীগ সরকার এসে যতগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে, সেই সবগুলো যদি বন্ধ করে দিই। কী অবস্থা হবে আপনাদের? বলেন? কয়েক দিন মাত্র লোডশেডিং দিয়েছিলাম, তাই চারদিকে হাহাকার। সেই লোডশেডিং যাতে না হয়, সে জন্য কুইক রেন্টাল আবার চালু রাখতে হয়েছে। নিজেরা ভোগ করবেন আর বলার সময়ে অভিযোগ করবেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না। কাজেই যারা এর পরে বেশি বললেন, তাদের বিদ্যুৎ চাওয়াটা বন্ধ করে দেব। তখন দেখি কী হয়?
সরকারি দলের এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ব্যবসায়ী, যারা ভোগ্যপণ্যের ব্যবসা করে। আসলে এটা খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয়, রোজা-উৎসব বা চাহিদার সময়ে তারা যে করে হোক দাম বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পৃথিবীর অন্য দেশে দেখি উৎসব পার্বণে দাম কমায়। আমাদের এখানে উল্টো কাণ্ড। শুধু তা-ই নয়, অনেক সময় তারা পণ্য আমদানি করতেও ঢিলেমি করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিনিসের দাম ও চাহিদা বাড়িয়ে তারা ব্যবসা করতে চায়। এটা আসলে অমানবিক। যারা মজুতদারি, কালোবাজারি, এলসি খোলা নিয়ে দুই নম্বরি করবে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি এবং নেব। প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা আমরা নেব। মানুষের কষ্ট যেন না হয়, সেদিকে আমরা দৃষ্টি দেব।
প্রধানমন্ত্রী পানি, বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাসসহ সবকিছু ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানান। যত কম ব্যবহার করা যায়। যত সাশ্রয় করা যায়; যারা সাশ্রয়ী হবেন, তাদের বিলও কম আসবে। এতে মানুষের জীবনযাত্রাও সহজ হবে।
আহসানুল ইসলাম টিটুর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভোগ্যপণ্য কেউ মজুতদারি করলে তাঁর বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। রমজান মাসে যে পণ্যগুলো প্রয়োজন, তার দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। মানুষ রোজার সময় যেন কষ্ট না পায়। ওই সময় যে পণ্যগুলো একান্তভাবে প্রয়োজনীয়, তা যেন জনগণ যথাযথভাবে পায়, তার জন্য এসব পণ্য আমদানির এলসি খোলার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভোগ্যপণ্য আমদানির এলসি খুলতে কোনো রকম সমস্যা হচ্ছে না। মনিটরিংরে মাধ্যমে পণ্যের যোগ্য মূল্যে এলসি খোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেউ এটা নিয়ে অন্য রকম কিছু করতে গেলে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কেউ মজুত করার চেষ্টা করলেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশে এক-এগারোর পুনরাবৃত্তির শঙ্কা তুলে ধরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের রাজনৈতিক সমঝোতার প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপির দুঃশাসনের কারণে এক-এগারো ঘটেছিল। এবার ঘাবড়ানোর কিছু নেই। আমরা আছি না? কোনো চিন্তা নেই।’
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে জাপার সংসদ সদস্যের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে অস্থিরতাকে কেন্দ্র ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল, যা এক-এগারোর সরকার হিসেবেই পরিচিত। এ প্রসঙ্গ টেনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা জানি, আজকে কিন্তু এক-এগারো। … দেশের যে পরিস্থিতি আমরা জানি, আমাদের দেশে প্রজ্ঞাবান নেতা আছে, অনুধাবনের ক্ষমতা—এক-এগারো আসবে না আবার। তবু আমার জিজ্ঞাসা—সব পক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার লক্ষ্যে পা বাড়ানোর বোধ হয় এখনই সময়। আপনি কী মনে করেন?’
জবাবে বিএনপির দুঃশাসন, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, ভুয়া ভোটার সৃষ্টির কারণে এক-এগারো এসেছিল মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঘাবড়ানোর কিছুই নেই, এতটুকু বলতে পারি। ঘাবড়াবেন না, আমরা আছি না? কোনো চিন্তা নেই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের বিজয় অনিবার্য জেনে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছিল। ২০১৮ সালে তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে মনোনয়ন-বাণিজ্য করে। মাঝপথে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায় এবং নির্বাচন নিয়ে নানা অপপ্রচার চালাতে থাকে। তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পেরেছে। কিন্তু জনগণের আস্থা, বিশ্বাস আওয়ামী লীগের ওপরে আছে।
সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিটি নির্বাচন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই মানুষ ভোটটা শান্তিতে দিতে পারছে। এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ করার দরকার নেই। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়, কারণ তারা জানে, আওয়ামী লীগ যে ওয়াদা দেয় তা রাখে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা নির্বাচনকে কলুষিত করেছে,, নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে, মানুষের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে, যারা মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে, তারাই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে।’
বিএনপির অতীতের আন্দোলনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকারে যখন আছি, জনগণের জানমাল রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। এমন কোনো শক্তি তৈরি হয়নি, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইয়ুব খান, জিয়াউর রহমান, এইচ এম এরশাদ, খালেদা জিয়া—সবাই আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পারেনি। ভবিষ্যতেও পারবে না। আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে।
গণফোরামের মোকাব্বিরকে প্রধানমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ
মেগা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটাকে অমূলক আখ্যায়িত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে চালেঞ্জে ছুড়ে দিয়ে কোথায়, কত দুর্নীতি হয়েছে, তা স্পষ্ট করতে বলছেন। স্পষ্ট করে বললে তার জবাবও তিনি দেবেন বলে উল্লেখ করেন।
সম্পূরক প্রশ্নে মোকাব্বির খান মেগা প্রকল্প, কুইক রেন্টালসহ বিভিন্ন খাতে দুর্নীতির অভিযোগ করেন। মোকাব্বির খান বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিতে আজকের সংকটে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধই কেবল দায়ী নয়, আমাদের অভ্যন্তরীণ অনেক বিষয় আছে। আর্থিক খাতে বিশৃঙ্খলা, মেগা প্রকল্পগুলোতে ব্যাপক দুর্নীতি, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার, ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক লুটপাট এবং বিদ্যুৎ খাতে কুইক রেন্টালের ইনডেমনিটি—এগুলো অনেক কিছুই দায়ী। এর ফলাফল কী হয়েছে? ডলার সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা আজ দুর্বিষহ। প্রধানমন্ত্রী এই সত্যতা স্বীকার করে ব্যবস্থা নেন বলে তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।
জবাবে মোকাব্বির খানের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনে হচ্ছে, আমাদের সংসদ সদস্য বিরোধী দলে শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু যেসব অভিযোগ তিনি এনেছেন, তা সম্পূর্ণ অমূলক। তিনি মেগা প্রকল্প নিয়ে কথা বলেছেন। এই মেগা প্রকল্পের সুবিধাভোগী কারা? এ দেশের সাধারণ মানুষ। এই মেগা প্রকল্প অন্য কোনো সরকার করতে পারেনি, আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে। পদ্মা সেতু সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে আমরা করেছি। মেট্রোরেল—এটাও সাধারণ মানুষের যোগাযোগের জন্য। মেট্রোরেলে চলে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অল্প সময়ে আসতে পারছে স্বল্প খরচে। এটা সাধারণ মানুষ ভোগ করছে। সংসদ সদস্য অনেক অর্থশালী ও সম্পদশালী, গাড়িতে চড়েন—ওনার এসব সমস্যা জানার কথা নয়।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, মাননীয় স্পিকার, আপনার মাধ্যমে মাননীয় সম্পূরক প্রশ্নকর্তাকে আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি—কোথায়, কত দুর্নীতি হয়েছে। সেই কথাটা তাঁকে এখানে স্পষ্ট বলতে হবে। যার জবাব আমি দেব।
মোকাব্বির খানের উদ্দেশে সংসদ নেতা আরও বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য বাংলাদেশের নাগরিক। ওনার একটা সেকেন্ড হোমও আছে। সেই সেকেন্ড হোম যেখানে অর্থাৎ ইংল্যান্ডে বিদ্যুতের দাম কত শতাংশ বেড়েছে। সেখানে বিদ্যুতের দাম দেড় শ পার্সেন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে ভোগ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখানে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা হয়। নির্দেশনা নিয়ে তা মনিটরিং করা হয়। নিয়মের ব্যত্যয় হলে জরিমানা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো সেই অবস্থায় নয়।
কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে সরকার মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারছে বলে জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, বড় বড় মহারথী আমাদের দুর্নীতির খোঁজ পায়নি। সেখানে কিছু লোক ভাঙা রেকর্ডের মতো বলেই যাচ্ছেন কুইক রেন্টাল, কুইক রেন্টাল। সব বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হতো, আওয়ামী লীগ সরকার এসে যতগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে, সেই সবগুলো যদি বন্ধ করে দিই। কী অবস্থা হবে আপনাদের? বলেন? কয়েক দিন মাত্র লোডশেডিং দিয়েছিলাম, তাই চারদিকে হাহাকার। সেই লোডশেডিং যাতে না হয়, সে জন্য কুইক রেন্টাল আবার চালু রাখতে হয়েছে। নিজেরা ভোগ করবেন আর বলার সময়ে অভিযোগ করবেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না। কাজেই যারা এর পরে বেশি বললেন, তাদের বিদ্যুৎ চাওয়াটা বন্ধ করে দেব। তখন দেখি কী হয়?
সরকারি দলের এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ব্যবসায়ী, যারা ভোগ্যপণ্যের ব্যবসা করে। আসলে এটা খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয়, রোজা-উৎসব বা চাহিদার সময়ে তারা যে করে হোক দাম বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পৃথিবীর অন্য দেশে দেখি উৎসব পার্বণে দাম কমায়। আমাদের এখানে উল্টো কাণ্ড। শুধু তা-ই নয়, অনেক সময় তারা পণ্য আমদানি করতেও ঢিলেমি করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিনিসের দাম ও চাহিদা বাড়িয়ে তারা ব্যবসা করতে চায়। এটা আসলে অমানবিক। যারা মজুতদারি, কালোবাজারি, এলসি খোলা নিয়ে দুই নম্বরি করবে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি এবং নেব। প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা আমরা নেব। মানুষের কষ্ট যেন না হয়, সেদিকে আমরা দৃষ্টি দেব।
প্রধানমন্ত্রী পানি, বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাসসহ সবকিছু ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানান। যত কম ব্যবহার করা যায়। যত সাশ্রয় করা যায়; যারা সাশ্রয়ী হবেন, তাদের বিলও কম আসবে। এতে মানুষের জীবনযাত্রাও সহজ হবে।
আহসানুল ইসলাম টিটুর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভোগ্যপণ্য কেউ মজুতদারি করলে তাঁর বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। রমজান মাসে যে পণ্যগুলো প্রয়োজন, তার দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। মানুষ রোজার সময় যেন কষ্ট না পায়। ওই সময় যে পণ্যগুলো একান্তভাবে প্রয়োজনীয়, তা যেন জনগণ যথাযথভাবে পায়, তার জন্য এসব পণ্য আমদানির এলসি খোলার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভোগ্যপণ্য আমদানির এলসি খুলতে কোনো রকম সমস্যা হচ্ছে না। মনিটরিংরে মাধ্যমে পণ্যের যোগ্য মূল্যে এলসি খোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেউ এটা নিয়ে অন্য রকম কিছু করতে গেলে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কেউ মজুত করার চেষ্টা করলেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অবৈধ অভিবাসন ও মানব পাচার প্রতিরোধ এবং বাংলাদেশ পুলিশের সামর্থ্য বাড়াতে ইতালি সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। উপদেষ্টার সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাঁর অফিসকক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্
২ ঘণ্টা আগেন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (বরখাস্ত) জিয়াউল আহসানের ১৮ কোটি টাকার জমি, বাড়ি ও ফ্ল্যাট ক্রোক এবং ৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিন
২ ঘণ্টা আগেবিসিএসের ভাইভার নম্বর ১০০ থেকে কমিয়ে ৫০ করার চিন্তা করছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পিএসসির সভাকক্ষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এ পরিকল্পনার কথা জানান চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম।
২ ঘণ্টা আগেমন্ত্রিপরিষদ সচিব জাহেদা পারভীনকে শীর্ষ সন্ত্রাসী পরিচয়ে ফোনে হুমকি ও ছেলেকে অপহরণের ভয় দেখানো হয়েছে। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় জিডি হয়েছে। পুলিশ অপরাধী শনাক্তে কাজ করছে।
৩ ঘণ্টা আগে