Ajker Patrika

ভারত থেকে পালিয়ে এসেছেন পাচার হওয়া ৩ কিশোরী, আটকা আরও অনেকেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
Thumbnail image

ঢাকা: দেশ থেকে পাচার হওয়ার ৭৭ দিন পর পালিয়ে ফিরে এসেছেন নৃশংস অত্যাচারের শিকার তিনজন কিশোরী। টিকটক হৃদয়ের মাধ্যমে ২০২১ সালে ১৯ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে পার করা হয় তাঁদের। ভারত থেকে পালিয়ে আসা ভুক্তভোগী এক তরুণী গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানী হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার আইনে ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। সেই মামলার ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মেহেদী হাসান বাবু, মহিউদ্দিন এবং আব্দুল কাদের।

আজ বুধবার সকালে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তেজগাঁও উপ পুলিশ কমিশনার মো: শহীদুল্লাহ। তিনি বলেন, ভারতে পাচার হওয়া এক কিশোরী তিন মাসের নির্মম নির্যাতন ও বন্দিদশা থেকে পালিয়ে দেশে ফিরে আসেন।  গতকাল মঙ্গলবার তিনি হাতিরঝিল থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেছেন ।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ভুক্তভোগীর সঙ্গে টিকটক হৃদয়ের পরিচয় হয় ২০১৯ সালে। টিকটক স্টার বানানোর কথা বলে হৃদয় তাঁকে প্রলুব্ধ করে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নারায়ণগঞ্জের অ্যাডভেঞ্চার ল্যান্ড পার্কে ৭০-৮০ জনকে নিয়ে টিকটকাররা  ঘুরতে যান। পরে ২০২০ সালের আবার তাঁরা ৭০০-৮০০ জন তরুণ - তরুণীকে নিয়ে পুল পার্টির আয়োজন করে হৃদয়। শেষ ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ায় বাউল লালন শাহ মাজারে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে ভুক্তভোগীদের ভারতে পাচার করে হৃদয়। তাঁকে পাচার করতে সাহায্য করেন চক্রের অন্য সদস্যরা।

ডিসি শহীদুল্লাহ বলেন, পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ার পর থেকে পালিয়ে দেশে ফেরা পর্যন্ত তার লোমহর্ষক করুন কাহিনি কল্পনাকেও হার মানায়। ভারতে পাচারের পর ভুক্তভোগীদের বেঙ্গালুরুর আনন্দপুর এলাকায় কয়েকটি বাসায় রাখা হয় । এ সময় ভারতে অবস্থানকালে হাতিরঝিলের কয়েকজন বাংলাদেশি তরুণীকে দেখতে পান। নৃশংস অত্যাচারের এক পর্যায়ে  ভুক্তভোগীসহ আরও ২ জন তরুণী পালিয়ে আসেন।

পুলিশ বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা এক হাজারের বেশি নারীকে সীমান্তবর্তী এলাকায় দিয়ে পাচারের কথা স্বীকার করেছেন।

সম্প্রতি কয়েকজন মিলে বাংলাদেশি তরুণীকে বিবস্ত্র করে যৌন নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত সবাইকে গ্রেপ্তার করে বেঙ্গালুরু পুলিশ। গ্রেপ্তারদের মধ্যে রিফাদুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২৬) নামের ওই যুবক ঢাকার মগবাজার এলাকার বাসিন্দা। নির্যাতনের শিকার মেয়েটিও ঢাকার মগবাজার এই এলাকায় থাকেন।

পুলিশের দাবি, এটি একটি আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের সদস্য। রিফাদুল ইসলাম হৃদয় এ চক্রের অন্যতম সদস্য। বাংলাদেশ, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে এ চক্রের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত রয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) মাধ্যমে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত