Ajker Patrika

স্বেচ্ছায় এগিয়ে গিয়েও তাঁরা নিয়োগে পিছিয়ে

আজাদুল আদনান, ঢাকা
স্বেচ্ছায় এগিয়ে গিয়েও তাঁরা নিয়োগে পিছিয়ে

করোনা মহামারির শুরুর দিকে সবাই যখন ঘরে ঢুকে গিয়েছিলেন, তখন একপ্রকার মৌখিক আহ্বানে সাড়া দিয়ে করোনার নমুনা পরীক্ষার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে এগিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। এর পর থেকে প্রায় দেড় বছর ধরে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারে (এনআইটিইআর) কাজ করে যাচ্ছেন ৫৫ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। কিন্তু তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়নি, তাঁরা বেতনও পান না। আছেন স্বেচ্ছাসেবক হয়ে। তবে দফায় দফায় আশ্বাস দেওয়া হয়েছে তাঁদের। তারপরও চূড়ান্ত হয়নি তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া। এ জন্য এনআইটিইআরকেই দুষছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশে এখন পর্যন্ত প্রতিদিন সর্বাধিক নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে এনআইটিইআরে। গত বছর করোনার প্রকোপ শুরু হলে এনআইটিইআরের তৎকালীন পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান তুষার স্বেচ্ছায় কাজ করার জন্য মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের প্রতি অনুরোধ জানান। তাতে সাড়া দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন এই টেকনোলজিস্টরা। পরে ওই বছরের ৫ জুন এনআইটিইআরের পরিচালক তাঁদের সরকারীকরণের উদ্যোগ নেন। সে সময় এই ল্যাবের ৫৫ জনসহ অন্যান্য কেন্দ্র মিলে ১৮৩ জনের একটি তালিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। অন্যদের চাকরি সরকারীকরণ করা হলেও বঞ্চিত থেকে যান ৫৫ জন।

দ্বিতীয় দফায় ১৭ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পুনরায় তালিকা চাওয়া হয়। এ দফায়ও রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ৫৭ জন নিয়োগ পাওয়ার আদেশ পেলেও আবারও বাদ পড়ে যান তাঁরা। পরপর দুই দফা চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হওয়ায় একই বছরের ২৪ জুলাই আমরণ অনশন শুরু করেন টেকনোলজিস্টরা। পরদিন তৃতীয় দফায় আবারও তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়, তারপরও সুরাহা হয়নি।

সবশেষ চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে এনআইটিইআরের পরিচালকের ফোনালাপের পরিপ্রেক্ষিতে ফের নামের তালিকা পাঠানো হয়। এ দফায় ৫৫ জনকে আউটসোর্সিং নীতিমালা ২০১৮ বিধি ৩ (৮) অনুযায়ী নিয়োগ দিতে প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠায় অধিদপ্তর। ২১ জুন তাঁদের নিয়োগের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। একই সঙ্গে ২৭ হাজার ১৩ টাকা বেতন ধরে ৩০ জুন অর্থ ছাড় করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। তারপরও সেটি এখনো বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, যখন করোনায় মৃত্যুর ভয়ে মানুষ বাইরে আসছিল না, এমনকি সরকারের নিয়োগ পাওয়া লোকজনকেও কাজে আনা যাচ্ছিল না, তখন এগিয়ে আসেন তাঁরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে এসেও মাসের পর মাস বিনা বেতনে কাজ করে যাচ্ছেন। কোনো ছুটি নেই, নেই বেতনও।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষই তাঁদের নিয়োগের ব্যাপারে গড়িমসি করেছে। টেকনোলজিস্টরা যদি কাজ বন্ধ করে দেন তাহলে বিপদ বাড়বে। সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিলে এমনটা হতো না।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত দিনেও তাঁদের নিয়োগ না হওয়াটা দুঃখজনক। এনআইটিইআরের পরিচালককে বলেছি, আপনি নিজে যান, তদবির করেন। যেতে হবে, না গেলে এসব কাজ পড়ে থাকবে। কিন্তু তিনি তা করেননি।’

তবে বিষয়টি ঝুলে নেই বলে দাবি এনআইটিইআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ এহছানুল হকের। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। কিছু কাগজপত্র ও অফিশিয়ালি কাজ থাকে, সেগুলো শেষের পথে। এ মাসেই তাঁদের নিয়োগ হয়ে যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

বিড়াল নির্যাতনের ঘটনায় গ্রামীণফোন ও অ্যারিস্টোফার্মা কেন আলোচনায়

বাগ্‌বিতণ্ডার মধ্যে সাম্যকে ইট ও ধারালো অস্ত্রের আঘাত করা হয়: ডিএমপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত