Ajker Patrika

বিজ্ঞপ্তির পর আপত্তি, ডেসটিনির রফিকুল আমীনের দল ফের পর্যালোচনায়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রফিকুল আমীন । ছবি: সংগৃহীত
রফিকুল আমীন । ছবি: সংগৃহীত

বাছাই চূড়ান্ত শেষে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আপত্তি আসায় ডেসটিনি গ্রুপের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের গড়া দল বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে ফের পর্যালোচনায় রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আজ মঙ্গলবার বিকেলে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ এসব কথা জানান।

ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, নিবন্ধনের জন্য ১৪৩টি রাজনৈতিক দল আবেদন করেছিল। প্রথম পর্যায়েই ১২১টি আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। বাকি ২২টি দলকে বাছাই করা হয়। এর মধ্যে এনসিপি, বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্ক্সবাদী) বাছাই চূড়ান্ত করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

এনসিপি ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্ক্সবাদী) নিবন্ধন চূড়ান্ত করে গতকাল সোমবার রাতে গেজেট প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আম জনগণ পার্টির বিরুদ্ধে আপত্তি এসেছে জানিয়ে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, এনসিপি ও বাসদ (মার্ক্সবাদী) দলের বিরুদ্ধে কোনো আপত্তি পাওয়া যায়নি। তাই তাদের নিবন্ধন চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। আর আম জনগণ পার্টির বিষয়ে আপত্তি থাকায় পর্যালোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আরও বলেন, রিভিউয়ের জন্য আবেদন করা সাতটি দল নিয়ে পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। সাতটি দল হলো বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (শাহজাহান সিরাজ), জাতীয় জনতা পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, আমজনতার দল ও জনতার দল।

শেষ মুহূর্তে নিবন্ধন পেলে এসব দল সুবিধাবঞ্চিত হবে কি না, জানতে চাইলে সচিব বলেন, যদি কেউ শেষ মুহূর্তে নিবন্ধন পায়, তাহলে তারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পাবে না, এটা বাস্তবতা।

সংলাপে জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, বিষয়টি আগামীকাল বুধবার জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত আনা: ভারত এখন চাপে পড়বে

  • মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় জোর বাড়বে হাসিনাকে ফেরত চাওয়ায়।
  • সহায়ক হবে দুই দেশের মধ্যে হওয়া বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি।
  • বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত চুক্তির ফাঁকফোকর বের করার চেষ্টা করবে।
  • ইন্টারপোলে নোটিশ জারির প্রক্রিয়া শুরু: প্রসিকিউটর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন থেকে তাঁকে ফেরত দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে। তবে বিষয়টি খুব বেশি আমল দেয়নি ভারত। কিন্তু শেখ হাসিনা এখন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত। ফলে বাংলাদেশ এখন তাঁকে আরও জোর দিয়ে চাইতে পারবে। তার ওপর দুই দেশের মধ্যে বন্দিবিনিময় চুক্তি থাকায় শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়া নিয়ে চাপে পড়বে ভারত।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত সোমবার শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের পরপরই অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে। যদিও ওই দিন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ বিবেচনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভারত সর্বদা সেই লক্ষ্যে সকল অংশীদারের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে সম্পৃক্ত থাকবে। কিন্তু শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ওই বিবৃতিতে কিছুই বলেনি দিল্লি।

শেখ হাসিনাকে ফেরাতে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে চিঠি চালাচালি শুরু হবে বলে মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমদ। গতকাল মঙ্গলবার তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন তো পরিস্থিতির কিছু পরিবর্তন হয়েছে। আগে ছিল অভিযুক্ত (শেখ হাসিনা), এখন তাঁর বিরুদ্ধে রায় হয়েছে। তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এখন নতুন করে আবার চাইতে হবে। বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে চাইতে পারি। তবে আমাদের হাতে এমন কোনো অস্ত্র নেই যে ভারতকে বাধ্য করতে পারি।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিন তিনি দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। শেখ হাসিনা ছাড়াও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালসহ দলটির অনেক নেতা-কর্মী দেশটিতে আশ্রয়ে আছেন। মানবতা-বিরোধী অপরাধের মামলার বিচারকাজ শুরু হলে শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেয় বাংলাদেশ সরকার। তবে তাতে সাড়া মেলেনি। তা নিয়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর দেশে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে আরও বেশি দাবি উঠেছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৩ সালে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি সই হয়, যা ২০১৬ সালে সংশোধিত হয়েছে। এ চুক্তি দুই দেশের মধ্যে পলাতক আসামিদের দ্রুত এবং সহজে বিনিময়ের জন্য করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত বা ফেরার আসামি এবং বন্দীদের একে অপরের কাছে হস্তান্তর করবে ভারত ও বাংলাদেশ।

এই চুক্তির কথা উল্লেখ করে সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান বলেন, যেকোনো দ্বিপক্ষীয় চুক্তি কতটা কার্যকর হবে, সেটা নির্ভর করে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কী রকম, তার ওপর। কোনো চুক্তিই চূড়ান্ত হয় না, এটাই বাস্তবতা। যেহেতু আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কারণে। গত বছর থেকে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য অনুরোধ করা হলেও ভারতের দিক থেকে কোনো সাড়া দেওয়া হয়নি। অনুমান করা যায়, এবারও সাড়া দেবে না।

ভারতীয় বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, দেশটি থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত নেওয়া সহজ হবে না। দেশটির ওপি জিন্দাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত সোমবার দিল্লিতে জার্মানির গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে বলেন, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ অনেক দিন ধরে ফেরত চাইছে। ভারত দিচ্ছে না। এখন রায়ের পর সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে ভারত তার অবস্থান বদলাবে, এটা মনে হয় না।

ভারতের দিক থেকে ‘না’ বলার অনেক উপায় আছে মন্তব্য করে শ্রীরাধা দত্ত বলেন, সাজাপ্রাপ্ত বন্দী প্রত্যর্পণের জন্য দুই দেশের মধ্যে চুক্তি থাকলেও তাতে অনেক ফাঁকফোকর আছে। ভারত সরকারের আইন বিশেষজ্ঞরা তা নিশ্চয় খতিয়ে দেখবেন।

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের আমন্ত্রণে কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের (সিএসসি) জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সম্মেলনে যোগ দিতে গতকাল ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে গেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। সেখানে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে খলিলুর রহমানের বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে। যেখানে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে সূত্র বলছে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি (খলিলুর রহমান) ভারতের সঙ্গে কথা বলতে পারেন বা বিষয়টি উপস্থাপন করতে পারেন। সেখান থেকে হয়তো আলোচনার সূত্রপাত হতে পারে। কিন্তু বিষয়টি কঠিন। সহজে সমাধান হবে বলে মনে করি না।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এখন বাংলাদেশের দিক থেকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে যে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ে সুবিচার হয়েছে। তাহলে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর দাবিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পাশে পাওয়া যেতে পারে। সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘রায়ে সুবিচার হয়েছে, এটি প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। তা হলে ভারত একটা চাপের মধ্যে পড়তে পারে।’

ইন্টারপোলে নোটিশ জারির প্রক্রিয়া শুরু: প্রসিকিউটর

সাজা পরোয়ানা মূলে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে নোটিশ জারির জন্য আবেদনের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম। গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এটা ইন্টারপোলে যাবে।

গাজী তামিম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল ৩০ দিনের মধ্যে আপিল না করলে আপিলের সুযোগ থাকবে না। যদি তাঁরা ৩০ দিনের মধ্যে আপিল না করেন, তাহলে তাঁরা গ্রেপ্তার হলে রায় কার্যকর হবে। যেসব আইনে আপিলের সময়সীমা বর্ণনা করা নেই, সেসব আইনের আপিলের সময়সীমা নির্ধারণ হয় তামাদি আইন অনুযায়ী। তামাদি আইন অনুযায়ী আপিলের সময়সীমা নির্ধারণ হলে সময় পার হলেও বিলম্ব মার্জনার সুযোগ আছে। কিন্তু বিশেষ আইনগুলোতে যেখানে তামাদির সময় বলা আছে, ওই সময় পার হলে বিলম্ব মার্জনার কোনো সুযোগ নেই।

প্রসিকিউটর তামিম বলেন, এই রায়ের একটি সার্টিফায়েড কপি ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন পাবে এবং একটি সার্টিফায়েড কপি এই মামলায় যে আসামি উপস্থিত ছিলেন তিনি পাবেন। যে আসামিরা পলাতক আছেন, তাঁরা যদি ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করেন অথবা গ্রেপ্তার হন, তাহলে তাঁরাও পাবেন। এ ছাড়া রায়ের আরেকটি কপি ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মানে ঢাকার জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হবে কার্যকর করার জন্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিচারে সম্পদ বাজেয়াপ্ত: শেখ হাসিনা, কামালের সম্পদ কাগজে-কলমে মাত্র কয়েক কোটির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৩: ৫৮
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অস্থাবর-স্থাবর মিলিয়ে সম্পদ রয়েছে প্রায় ৪ কোটি ৩২ লাখ টাকার। একই অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ১৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে।

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া) আসন থেকে শেখ হাসিনা এবং ঢাকা-১২ আসন থেকে আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রার্থী হয়ে জয়ী হন। ওই নির্বাচনে তাঁদের জমা দেওয়া হলফনামায় সম্পদের এই হিসাব দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি সম্পদ বাজেয়াপ্তেরও রায় দেন।

শেখ হাসিনা তাঁর হলফনামায় সম্পদের বিবরণে উল্লেখ করেছেন, কৃষি খাত থেকে তিনি বার্ষিক আয় করেন ৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক জামানত থেকে আয় করেন ২৫ লাখ টাকা। চাকরির ঘরে উল্লেখ করেছেন, সম্মানী ভাতা পেয়েছেন ১৩ লাখ ৮০ হাজার; নির্বাচনী এলাকার খরচ পেয়েছেন ১ লাখ ৮ হাজার টাকা; নির্বাচনী এলাকার অফিস খরচ বাবদ পেয়েছেন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এফডিআর (স্থায়ী আমানত) এবং ব্যাংক সুদ ও রয়্যালটি থেকে পেয়েছেন ৫৫ লাখ ২৫ হাজার ৩৪৬ টাকা।

অস্থাবর সম্পদে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেছেন, নগদ টাকা আছে ২৮ হাজার ৫০০ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ২ কোটি ৩৮ লাখ ৯৮ হাজার ৬০৭ টাকা। সঞ্চয়পত্রে ২৫ লাখ আর এফডিআরে দেখিয়েছেন ৫৫ লাখ টাকা।

তিনটি মোটরগাড়ি দেখিয়েছেন; যার মধ্যে একটি উপহার, যার মূল্য জানা নেই। অপর দুটির মূল্য ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ও পাথর নির্মিত অলংকারাদি (পরিমাণ, অর্জনকালীন মূল্যসহ) ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার আসবাবপত্রের বিবরণী দিয়েছেন তিনি।

স্থাবর সম্পদে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেছেন, ১৫ দশমিক ৩ বিঘা কৃষিজমি; যার অর্জনকালীন ক্রয়মূল্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। অকৃষি জমি অংশে উল্লেখ করেছেন, ঢাকার পূর্বাচলে ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রোডের ৯ নম্বর প্লট; যার মূল্য ৩৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। আগের ১ লাখ ৭৫ হাজার। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, তিনতলা ভবনসহ ৬ দশমিক ১০ শতক জমি আছে; (আংশিক) মূল্য ৫ লাখ টাকা।

এদিকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল হলফনামায় আয়ের অংশে উল্লেখ করেছেন, বছরে বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া পান ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। স্ত্রী পান ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। ব্যবসা (অংশীদার ফার্ম) ২৪ লাখ ৬৯ হাজার ৯৯৬ টাকা। স্ত্রী পান ১ কোটি ১ লাখ ৪০ হাজার ১০৯ টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে ১৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩০ টাকা। স্ত্রী পান ৬ লাখ ১১ হাজার ৮৬৪ টাকা। চাকরি/মন্ত্রী হিসেবে প্রাপ্ত বেতন ও ভাতা ২৩ লাখ ২২ হাজার ৫০৪ টাকা। স্ত্রী পান ২ লাখ ৪০ হাজার। অন্যান্য (সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিয়া) মুক্তিযোদ্ধা ও রেমিট্যান্স ১৩ লাখ ১৭ হাজার টাকা। স্ত্রী ফরেন রেমিট্যান্স পান ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

অস্থাবর সম্পদ উল্লেখ করেছেন, নগদ টাকা ৮৪ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৬ টাকা। স্ত্রীর হাতে ছিল ১ কোটি ৭ লাখ ৫৬ হাজার ২২ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৮২ লাখ ৯ হাজার ৯১৩ টাকা। তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৮০ লাখ ৭২ হাজার ৮১৩ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় কোম্পানির শেয়ার (পরিমাণ, অর্জনকালীন মূল্যসহ) ২৩ লাখ ৯৭ হাজার ৭০০ টাকা। স্ত্রীর ২৩ লাখ ১৯ হাজার ৭০০ টাকা। পোস্টাল সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ২ কোটি ১ লাখ ১৩ হাজার ৬৭১ টাকা। স্ত্রীর দেখিয়েছেন ৫৯ লাখ ৩২ হাজার ৭১৪ টাকা। বাস, ট্রাক মোটরগাড়ি ও মোটরসাইকেল ইত্যাদির বিবরণী (পরিমাণ, অর্জনকালীন মূল্যসহ) সংসদ সদস্য কোটায় ৭৩ লাখ ও ৮৮ লাখ ২২ হাজার ৫২৮ টাকা দেখিয়েছেন। স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ও পাথর নির্মিত অলংকার ১০ ভরি। স্ত্রীর দেখিয়েছেন ২০ ভরি। ইলেকট্রনিক সামগ্রী ১ লাখ টাকার। আসবাবপত্র ১ লাখ টাকার। ঋণ বাবদ ব্যবসায় মূলধন (অংশীদার ফার্ম) দেখিয়েছেন ২ কোটি ও ১৯ লাখ ৭৪ হাজার ৩৭৫ টাকা। স্ত্রীর দেখিয়েছেন ১ কোটি ৫৫ লাখ ৩০ হাজার ৫৮১ টাকা।

স্থাবর সম্পদে উল্লেখ করেছেন, কৃষিজমি ১৭১ শতাংশ, যার অর্জনকালীন মূল্য ১ কোটি ৬ লাখ ১১ হাজার ৮৫০ টাকা। ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ অকৃষি জমি, যার অর্জনকালীন মূল্য ৫৮ লাখ ৫০ হাজার। স্ত্রীর ৪ কোটি ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকার দালান। বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্টের অর্জনকালীন মূল্য ১২ লাখ ৯৭ হাজার ৭০০ টাকা। গ্রামের বাড়ি ৮০ লাখ টাকা। স্ত্রীর আছে ৫০ লাখ টাকার বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাজা পরোয়ানা মূলে হাসিনা-কামালের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে নোটিশ জারির আবেদন করা হবে: প্রসিকিউটর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
গাজী এম এইচ তামিম। ছবি: সংগৃহীত
গাজী এম এইচ তামিম। ছবি: সংগৃহীত

সাজা পরোয়ানা মূলে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে নোটিশ জারির জন্য আবেদনের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম। আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এটা ইন্টারপোলে যাবে।

গাজী তামিম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল ৩০ দিনের মধ্যে আপিল না করলে আপিলের সুযোগ থাকবে না। যদি তাঁরা ৩০ দিনের মধ্যে আপিল না করেন, তাহলে তাঁরা গ্রেপ্তার হলে রায় কার্যকর হবে। যেসব আইনে আপিলের সময়সীমা বর্ণনা করা নেই, সেসব আইনের আপিলের সময়সীমা নির্ধারণ হয় তামাদি আইন অনুযায়ী। তামাদি আইন অনুযায়ী আপিলের সময়সীমা নির্ধারণ হলে সময় পার হলেও বিলম্ব মার্জনার সুযোগ আছে। কিন্তু বিশেষ আইনগুলোতে যেখানে তামাদির সময় বলা আছে, ওই সময় পার হলে বিলম্ব মার্জনার কোনো সুযোগ নেই।

প্রসিকিউটর তামিম বলেন, এই রায়ের একটি সার্টিফায়েড কপি ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন পাবে এবং একটি সার্টিফায়েড কপি এই মামলায় যে আসামি উপস্থিত ছিলেন তিনি পাবেন। যে আসামিরা পলাতক আছেন, তাঁরা যদি ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করেন অথবা গ্রেপ্তার হন, তাহলে তাঁরাও পাবেন। এ ছাড়া রায়ের আরেকটি কপি ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মানে ঢাকার জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হবে কার্যকর করার জন্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিল্লি সফরে এক দিন আগেই ঢাকা ছাড়লেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ৩১
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের আমন্ত্রণে কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের (সিএসসি) সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের দিল্লিতে যাওয়ার কথা ছিল আগামীকাল বুধবার। কিন্তু তিনি আজ মঙ্গলবারই ভারতের রাজধানী পৌঁছে গেছেন।

কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর দিল্লিতে পৌঁছেন খলিলুর রহমান। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সচিবালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, সিএসসির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সপ্তম সম্মেলন আগামী বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত হবে। সকালে জোটের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সম্মেলন শুরু হবে। আর মধ্যাহ্নভোজের পর তা শেষ হবে। ওই দিন বিকেলেই খলিলুর রহমানের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এমন এক সময়ে দিল্লিতে গেলেন, যখন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য অনুরোধ করে ভারতকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।

সব মিলিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের দিল্লি অবস্থানকালে তাঁর সঙ্গে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয় কি না, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে এক দিন আগেই তিনি দিল্লি পৌঁছানোয় সামাজিক মাধ্যমে চলছে নানা জল্পনা।

সিএসসিরর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সম্মেলনে যোগ দিতে গত মাসে খলিলুর রহমানকে আমন্ত্রণ জানান অজিত দোভাল। অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের বেশি সময়ে তাকে নিয়ে মাত্র দুজন উপদেষ্টা ভারত করলেন। ফেব্রুয়ারিতে ইন্ডিয়া এনার্জি উইকে অংশ নেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত