Ajker Patrika

দেশে টিকা উৎপাদন: সরকারের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় চীন

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশে টিকা উৎপাদন: সরকারের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় চীন

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ কোম্পানি সিনোফার্মের দেড় কোটি ডোজ কোভিড টিকা কেনার চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে ৩ জুলাই প্রথম চালানে ২০ লাখ ডোজ এসেছে। আর উপহার হিসেবে এসেছে সিনোফার্মের ১১ লাখ ডোজ টিকা। এ ছাড়া গত মাসে চীনা কোম্পানি সিনোভ্যাকের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ। দেশে সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাকের টিকার যৌথ উৎপাদনের কথাবার্তাও চলছে। 

আজ সোমবার এক অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা উপ রাষ্ট্রদূত হুয়ালং ইয়ান বলেছেন, কোভিড টিকা উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছে চীন। 

অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ চায়না অ্যালামনাই চীনের কমিউনিস্ট দলের শত বছর পূর্তি উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল সেমিনারে হুয়ালং ইয়ান আরও বলেন, চীনের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশিদের জন্য সবচেয়ে সহজলভ্য দর প্রস্তাব করেছে। আমরা যা চিন্তা করেছিলাম তার থেকেও কম দর। 

টিকার যৌথ উৎপাদনের বিষয়ে তিনি বলেন, সিনোফার্ম প্রস্তুত। সিনোভ্যাকও প্রস্তুত। যৌথ উৎপাদনের জন্য ইনসেপ্টার (ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড) বেশ ভালো ও অত্যাধুনিক অবকাঠামো রয়েছে। এখন আমরা বাংলাদেশের সরকারের সবুজ সংকেতের জন্য অপেক্ষা করছি। সবকিছু প্রস্তুত রয়েছে। চীন প্রস্তুত। 

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা চীনা টিকা ও চীনে ফেরার ব্যাপারে অগ্রাধিকার পাবে বলেও উল্লেখ করেন হুয়ালং ইয়ান। চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফেরার ব্যাপারে বাংলাদেশে অবস্থিত চীনা দূতাবাস কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশের শিক্ষার্থীরাই এ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। 

হুয়ালং ইয়ান বলেন, এখনই অন্য কোনো দেশের শিক্ষার্থীদের চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এটি কেবল বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নয়, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্য শিক্ষার্থীরাও ফিরতে পারছে না। কেউই চীনে যেতে পারছে না। করোনা যেভাবে আঘাত করছে তাতে আমি খুব দ্রুতই এ অবস্থার পরিবর্তনের ব্যাপারে আশাবাদী হতে পারছি না। এমন মহামারি এর আগে আমরা কখনো দেখিনি। কাজেই প্রতিটি দেশই ব্যাপক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। চীন ও চীনা দূতাবাস কাজ করছে। যখনই ভালো সময় আসবে চীনা টিকা ও চীনে ফেরার ব্যাপারে বাংলাদেশি বন্ধু ও শিক্ষার্থীরা অবশ্যই অগ্রাধিকার পাবে। 

এদিকে আজ বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চীন থেকে টিকা আমদানির বিষয়ে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেন, টিকার বিস্তারিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। চীনের সরকারের কোনো আপত্তি নেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটাই নিশ্চিত করেছে। জাপান থেকে টিকা পাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আশাবাদী। টিকা আসবে। তবে কী পরিমাণ করবে তা বলেনি। কোভ্যাক্সের আওতায় টিকা আসবে। 

উল্লেখ্য, টিকার বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্সের আওতায় জাপানের কাছ থেকে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২৫ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার প্রত্যাশা করছে বলে গত ৭ জুলাই জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। 

আজ এ ব্যাপারে তিনি বলেন, জাপান ও ইউরোপের টিকাগুলো কোভ্যাক্সের আওতায় সাহায্য পাচ্ছি। কিন্তু অর্থ দিয়ে চীন ও ভারত থেকে। ভবিষ্যতে রাশিয়ার থেকে আনার চেষ্টায় রয়েছি। রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। 

চীনের উদ্যোগে দক্ষিণ এশিয়ার ছয় দেশ নিয়ে করোনা মোকাবিলায় সহযোগিতায় ভারত না থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেন, চীন বলেছে যে, এতে আপাতত ছয়টি দেশ এসেছে। তবে এটি উন্মুক্ত। ভারতকেও তারা অনুরোধ করেছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত