শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
উচ্চ আদালতের রায়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরার পথ খুলেছে সম্প্রতি। এই অবস্থায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে, কীভাবে আয়োজন করা যায়, তা নিয়ে সরকারের মধ্যে আলোচনা চলছে। বর্তমান সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তর করে নির্বাচন করা যায় কি না, এ নিয়েও চিন্তাভাবনা আছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে এ ক্ষেত্রে আপিল বিভাগের রায়ের অপেক্ষা করছে তারা।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন ভোট আয়োজন নিয়ে বিশেষ পর্যবেক্ষণ দিলে অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তর করা যাবে। সে ক্ষেত্রে যেদিন থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যাত্রা শুরু হবে, সেদিন থেকে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। বিশেষ পরিস্থিতিতে আপিল বিভাগের রেফারেন্সের আলোকে গত ৮ আগস্ট গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকার। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর ফলে ২০১১ সালে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত হওয়ায় সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, অন্তর্বর্তী সরকার, প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টার পদ বলে কিছু নেই। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারকে আইনি ভিত্তি দিতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।
আইন মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখন আর অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ জারির পথে নেই সরকার। কারণ, গত ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর কিছু অংশ বাতিল ঘোষণা করায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসার পথ তৈরি হয়েছে, সেটিকেই কাজে লাগাতে চায় সরকার। সংসদ না থাকার পরও কীভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কার্যকর করা যায়, সে বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশের খসড়া উপদেষ্টা পরিষদে নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার পর খসড়ার খুঁটিনাটি যাচাইয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়। তবে এ বিষয়ে সরকারের আর কোনো নির্দেশনা নেই। ফলে খসড়াটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পড়ে আছে।
আইন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসার পর কীভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন করা যায়, সেই পথ খুঁজছে সরকার। ওই কর্মকর্তার দাবি, আদালতের নির্দেশনার আলোকে বর্তমান সরকার যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তর হয়, তবে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঠিক করে তার ৯০ দিন আগে এই রূপান্তর ঘটানো হবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ৯০ দিন এবং এই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন করতে হবে।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল আলীম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আদালতের রায়ের আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল হলেও সংবিধানে তা অন্তর্ভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের সুযোগ নেই। সংসদের মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে হবে। তবে সংসদ না থাকায় আদালত এ বিষয়ে আলাদা কোনো পর্যবেক্ষণ দিলে সেটি ভিন্ন বিষয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন আইনজীবী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন করার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণ দিলে অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তর হতে কোনো বাধা থাকবে না। তবে প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের নতুন করে শপথ নিতে হবে কি না, এখনই তা স্পষ্ট করে বলা যাবে না। কারণ, আগে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।
হাইকোর্টের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরার পথ তৈরি হওয়ার পর গত ১৭ ডিসেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছিলেন, হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার সাংবিধানিকভাবেই বৈধ সরকার। এর সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাংঘর্ষিক অবস্থান নেই। কার অধীনে নির্বাচন হবে, ত্রয়োদশ সংশোধনী নিয়ে রিভিউর সিদ্ধান্তের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে। এ ক্ষেত্রে ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায়ের আগে আপিল বিভাগ পরপর দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার অধীনে করার সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। গত তিনটি নির্বাচনে নির্বাচন নয়, ভোট ডাকাতি হয়েছে; যে কারণে আপিল বিভাগের আগের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে বাধা নেই।
উপদেষ্টারা কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেবেন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নেতৃত্বে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা হবে। ওই দলের হয়ে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে বর্তমান সরকারের উপদেষ্টাদের সামনে দুটি পথ রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে উপদেষ্টারা পদত্যাগ না করেও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার আগে পরবর্তী নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার অঙ্গীকার করতে হতো। অন্তর্বর্তী সরকারব্যবস্থায় সেই নিয়ম নেই। অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশের খসড়ায় এমন কোনো বিধান রাখা হয়নি। ফলে কোনো কারণে যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, ওই নির্বাচনে অংশ নিতে হলে বর্তমান উপদেষ্টাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যাত্রা শুরুর আগেই পদত্যাগ করতে হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাঠামো অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে মোট ১১ জন উপদেষ্টা সেই সরকারে থাকবেন। সমন্বয়ক থেকে উপদেষ্টা পরিষদে জায়গা করে নেওয়া তিনজন উপদেষ্টা তাঁদের দলের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যাত্রা শুরুর আগেই তাঁদের পদত্যাগ করতে হবে। তাঁদের সঙ্গে বর্তমান সরকারের আরও ৯ জন উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা পদে মুহাম্মদ ইউনূস এবং ২২ জন উপদেষ্টা এখন সরকারে রয়েছেন।
ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করলে সরকার থেকে বেরিয়ে আসা উচিত বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর প্রতিক্রিয়ায় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, উপদেষ্টাদের কেউ রাজনীতি করলে সরকার থেকে বের হয়েই করবেন।
আইন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তর হলে কোনো আইনি জটিলতা থাকবে না। কারণ, সরকার পতনের পর দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্সের আলোকে রাষ্ট্রপতি এই সরকার গঠন করেছেন। ওটাই হবে অন্তর্বর্তী সরকারের আইনি ভিত্তি।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আগে গত ৬ আগস্ট সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ ভেঙে যাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে যদি প্রধান নির্বাচন কমিশনার মনে করেন, কোনো দৈবদুর্বিপাকের কারণে নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়, তবে নির্বাচন কমিশন আরও ৯০ দিন সময় বাড়াতে পারে। বিশেষ প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ায় এই বিধান আমলে নেওয়া হচ্ছে না। ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়েও এই বিধান মানা হয়নি।
স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে নামেই হোক না কেন, সুপ্রিম কোর্টের মতামতের আলোকে গঠিত বর্তমান সরকারকে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করায় অসুবিধা নেই।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে নির্বাচন করতে হলে ওই সরকারের কাঠামো অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের আকার ছোট করতে হবে কি না, সে বিষয়ে আইনবিদেরা ভালো বলতে পারবেন বলে মত দেন তিনি। নিজাম উদ্দিন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার—যে সরকারের অধীনেই নির্বাচন হোক না কেন, দল গঠনের পর সমন্বয়ক থেকে উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়া তিনজনের আইনগতভাবে সরকারে থাকার কথা না।
উচ্চ আদালতের রায়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরার পথ খুলেছে সম্প্রতি। এই অবস্থায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে, কীভাবে আয়োজন করা যায়, তা নিয়ে সরকারের মধ্যে আলোচনা চলছে। বর্তমান সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তর করে নির্বাচন করা যায় কি না, এ নিয়েও চিন্তাভাবনা আছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে এ ক্ষেত্রে আপিল বিভাগের রায়ের অপেক্ষা করছে তারা।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন ভোট আয়োজন নিয়ে বিশেষ পর্যবেক্ষণ দিলে অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তর করা যাবে। সে ক্ষেত্রে যেদিন থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যাত্রা শুরু হবে, সেদিন থেকে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। বিশেষ পরিস্থিতিতে আপিল বিভাগের রেফারেন্সের আলোকে গত ৮ আগস্ট গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকার। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর ফলে ২০১১ সালে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত হওয়ায় সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, অন্তর্বর্তী সরকার, প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টার পদ বলে কিছু নেই। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারকে আইনি ভিত্তি দিতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।
আইন মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখন আর অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ জারির পথে নেই সরকার। কারণ, গত ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর কিছু অংশ বাতিল ঘোষণা করায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসার পথ তৈরি হয়েছে, সেটিকেই কাজে লাগাতে চায় সরকার। সংসদ না থাকার পরও কীভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কার্যকর করা যায়, সে বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশের খসড়া উপদেষ্টা পরিষদে নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার পর খসড়ার খুঁটিনাটি যাচাইয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়। তবে এ বিষয়ে সরকারের আর কোনো নির্দেশনা নেই। ফলে খসড়াটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পড়ে আছে।
আইন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসার পর কীভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন করা যায়, সেই পথ খুঁজছে সরকার। ওই কর্মকর্তার দাবি, আদালতের নির্দেশনার আলোকে বর্তমান সরকার যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তর হয়, তবে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঠিক করে তার ৯০ দিন আগে এই রূপান্তর ঘটানো হবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ৯০ দিন এবং এই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন করতে হবে।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল আলীম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আদালতের রায়ের আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল হলেও সংবিধানে তা অন্তর্ভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের সুযোগ নেই। সংসদের মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে হবে। তবে সংসদ না থাকায় আদালত এ বিষয়ে আলাদা কোনো পর্যবেক্ষণ দিলে সেটি ভিন্ন বিষয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন আইনজীবী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন করার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণ দিলে অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তর হতে কোনো বাধা থাকবে না। তবে প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের নতুন করে শপথ নিতে হবে কি না, এখনই তা স্পষ্ট করে বলা যাবে না। কারণ, আগে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।
হাইকোর্টের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরার পথ তৈরি হওয়ার পর গত ১৭ ডিসেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছিলেন, হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার সাংবিধানিকভাবেই বৈধ সরকার। এর সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাংঘর্ষিক অবস্থান নেই। কার অধীনে নির্বাচন হবে, ত্রয়োদশ সংশোধনী নিয়ে রিভিউর সিদ্ধান্তের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে। এ ক্ষেত্রে ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায়ের আগে আপিল বিভাগ পরপর দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার অধীনে করার সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। গত তিনটি নির্বাচনে নির্বাচন নয়, ভোট ডাকাতি হয়েছে; যে কারণে আপিল বিভাগের আগের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে বাধা নেই।
উপদেষ্টারা কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেবেন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নেতৃত্বে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা হবে। ওই দলের হয়ে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে বর্তমান সরকারের উপদেষ্টাদের সামনে দুটি পথ রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে উপদেষ্টারা পদত্যাগ না করেও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার আগে পরবর্তী নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার অঙ্গীকার করতে হতো। অন্তর্বর্তী সরকারব্যবস্থায় সেই নিয়ম নেই। অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশের খসড়ায় এমন কোনো বিধান রাখা হয়নি। ফলে কোনো কারণে যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, ওই নির্বাচনে অংশ নিতে হলে বর্তমান উপদেষ্টাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যাত্রা শুরুর আগেই পদত্যাগ করতে হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাঠামো অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে মোট ১১ জন উপদেষ্টা সেই সরকারে থাকবেন। সমন্বয়ক থেকে উপদেষ্টা পরিষদে জায়গা করে নেওয়া তিনজন উপদেষ্টা তাঁদের দলের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যাত্রা শুরুর আগেই তাঁদের পদত্যাগ করতে হবে। তাঁদের সঙ্গে বর্তমান সরকারের আরও ৯ জন উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা পদে মুহাম্মদ ইউনূস এবং ২২ জন উপদেষ্টা এখন সরকারে রয়েছেন।
ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করলে সরকার থেকে বেরিয়ে আসা উচিত বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর প্রতিক্রিয়ায় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, উপদেষ্টাদের কেউ রাজনীতি করলে সরকার থেকে বের হয়েই করবেন।
আইন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তর হলে কোনো আইনি জটিলতা থাকবে না। কারণ, সরকার পতনের পর দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্সের আলোকে রাষ্ট্রপতি এই সরকার গঠন করেছেন। ওটাই হবে অন্তর্বর্তী সরকারের আইনি ভিত্তি।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আগে গত ৬ আগস্ট সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ ভেঙে যাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে যদি প্রধান নির্বাচন কমিশনার মনে করেন, কোনো দৈবদুর্বিপাকের কারণে নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়, তবে নির্বাচন কমিশন আরও ৯০ দিন সময় বাড়াতে পারে। বিশেষ প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ায় এই বিধান আমলে নেওয়া হচ্ছে না। ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়েও এই বিধান মানা হয়নি।
স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে নামেই হোক না কেন, সুপ্রিম কোর্টের মতামতের আলোকে গঠিত বর্তমান সরকারকে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করায় অসুবিধা নেই।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে নির্বাচন করতে হলে ওই সরকারের কাঠামো অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের আকার ছোট করতে হবে কি না, সে বিষয়ে আইনবিদেরা ভালো বলতে পারবেন বলে মত দেন তিনি। নিজাম উদ্দিন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার—যে সরকারের অধীনেই নির্বাচন হোক না কেন, দল গঠনের পর সমন্বয়ক থেকে উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়া তিনজনের আইনগতভাবে সরকারে থাকার কথা না।
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে ভূমধ্যসাগরের উপকূলবর্তী একটি তীর থেকে বিগত দুই দিনে বেশ কয়েকজন অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে জানিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস। তবে সেখানে বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন কি না, সে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তবে সেখানে বিস্তারিত খোঁজ-খবর নিতে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে দায়িত্বশীল পাঠানো
৮ ঘণ্টা আগেতুলনামূলকভাবে অল্প সময়ের মধ্যে বদলি করায় ‘সংক্ষুব্ধ হয়ে’ উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একজন সহকারী পরিচালক (এডি)। কর্মকর্তাদের অনেকেই বলছেন, সরকারি কর্মচারী হিসেবে এ রকম রিট কোনো ভালো নজির নয়। তবে একই সঙ্গে কর্মকর্তাদের কেউ কেউ তাঁর বদলির পেছনে বিশেষ উদ্দেশ্য...
১৫ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশে অবস্থান করা বৈধ-অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছে সরকার। বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বিদেশিদের তালিকা তৈরি করা হবে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশের মাধ্যমে বাড়ির মালিকদের কাছ থেকে বিদেশি নাগরিকদের তথ্য চাওয়া হবে। এরপর অবৈধ বিদেশিদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য...
১৫ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনার সরকার পতনের মধ্য দিয়ে সাংবিধানিক, নির্বাচনব্যবস্থার, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এরপর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। প্রথমে এই সরকারের প্রতি যে সমর্থন ছিল, তা কমে আসতে শুরু করেছে। এই সরকার ক্ষমতায় এসে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি...
১৫ ঘণ্টা আগে