Ajker Patrika

‘সরকারের নৈতিক এবং রাজনৈতিক পরাজয় হয়েছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘কোটা আন্দোলনসহ অন্যান্য আন্দোলন হলো রোগের উপসর্গ মাত্র, রোগটা হলো ব্যাপক, গুরুতর ও ভয়াবহ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ ছাত্ররা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছে। আমরা ভোটাধিকার ও মৌলিক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। ভোটাধিকার না থাকার কারণে সরকারের কোনো জবাবদিহি নেই। এ জন্য তারা বল প্রয়োগের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছে।’ 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সুজন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেছেন। 

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমাদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠাসহ সকল সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। তা না হলে বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার থাকবে না।’ 
 
দেশে চলমান আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নিয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ও সুজনের নির্বাহী সদস্য রোবায়েত ফেরদৌস বলেছেন, এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারের নৈতিক এবং রাজনৈতিক পরাজয় নিশ্চিত হয়েছে। 

রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘৫২ এর ভাষা আন্দোলনে ১২ জন মারা গিয়েছেন। আমরা এই আন্দোলনকে সাংস্কৃতিক না একটি রাজনৈতিক আন্দোলন বলি। মানুষের যে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ছিল ৪৭ থেকে ৫২ পর্যন্ত সব ধরনের মানুষ সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করেছে। ২০২৪ সালে গণ-অভ্যুত্থান হয়ে গেছে। তার রেশ এখনো চলছে। এর মধ্য দিয়ে সরকারের নৈতিক এবং রাজনৈতিক পরাজয় নিশ্চিত হয়েছে।’ 

রোবায়েত ফেরদৌস আরও বলেন, ৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থানে মাত্র ৬১ জন মানুষ মারা গেছে। ২০২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানে ৬৯ এর থেকে চারগুণ বেশি মানুষ মারা গেছে। গণ-অভ্যুত্থানের চরিত্র কাকে বলে? যেখানে সমস্ত শ্রেণি-পেশার মানুষ থাকে। এখানে শিশু, নারী, সাংবাদিক, ডাক্তার, প্রকৌশলী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষেরা অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। 

তিনি বলেন, ‘আমরা বিএনপিকে দেখেছি ব্যর্থ হয়েছে। জামায়াতকে দেখেছি, জাতীয় পার্টিকে দেখেছি ব্যর্থ হয়েছে। সমস্ত রাজনৈতিক দল যারা ব্যর্থ হয়েছে, তাঁদের সবাইকে না বলতে হবে। তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা আমাদের দেখাচ্ছে কীভাবে নতুন সংবিধান লিখতে হয়। নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি করতে হবে।’ 

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও পরিবেশ সংগঠন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বিরাজমান সংকট নিরসনে সরকারের দিক থেকে কোনো আন্তরিক ও কার্যকর প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে না। এত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে যে তা ক্ষমা করার কোনো সুযোগ নেই। এবার যদি বিচার না পাই, তাহলে হয়তো বাংলাদেশ থেকে বিচার শব্দটা একবারেই ওঠে যাবে। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার জাতিসংঘের মাধ্যমে বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের চুপ হয়ে যাওয়ার বা সান্ত্বনা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’ 

সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। তিনি নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তদন্ত এবং দায়ীদের বিচার; নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা; সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া; লেজুড়বৃত্তির ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা; গণতান্ত্রিক অধিকারসহ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করাসহ ১০ দফা দাবি জানান। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—সুজনের সহ-সম্পাদক জাকির হোসেন, জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেন, ঢাকা মহানগর কমিটির সম্পাদক জুবাইরুল হক নাহিদ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত