Ajker Patrika

কাঠমান্ডুর আশপাশে ৬টি জনপ্রিয় ডে ট্রিপ

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
কাঠমান্ডু ঘোরার ভালো উপায় হলো, আশপাশের ছোট শহর ও গ্রামগুলোতে ভ্রমণ করা। ছবি: ফ্রিপিক
কাঠমান্ডু ঘোরার ভালো উপায় হলো, আশপাশের ছোট শহর ও গ্রামগুলোতে ভ্রমণ করা। ছবি: ফ্রিপিক

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু নিয়ে মানুষের মতামতের অন্ত নেই। কেউ এই শহরের সমৃদ্ধ ইতিহাস, সংস্কৃতি আর শতবর্ষী স্থাপত্য দেখে মুগ্ধ হন। আবার কেউ ধুলাবালু, যানজট আর কোলাহল এড়িয়ে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়েন হিমালয়ের টানে। তবে কাঠমান্ডু ঘোরার ভালো উপায় হলো, আশপাশের ছোট শহর ও গ্রামগুলোতে ভ্রমণ করা। তাতে শহরের ভেতরের ইতিহাস আর বাইরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দুটিই একসঙ্গে পাওয়া যায়।

নাগরকোট: সূর্যাস্ত আর সূর্যোদয়ের অপূর্ব দৃশ্য

হিমালয়ের ওপর সূর্য ওঠা আর ডোবার দৃশ্য নেপালে ভ্রমণের সেরা অভিজ্ঞতাগুলোর একটি। সেই অভিজ্ঞতার জন্য নাগরকোট খুব জনপ্রিয়। এখানে থাকার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে খাবারের জায়গা—সবই সহজে পাওয়া যায়। পরিষ্কার আবহাওয়ার দিনে হোটেল রুমের ব্যালকনি থেকে বা লুকআউট টাওয়ার থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। চাইলে ছোট জলপ্রপাত হাঁটা দূরত্বে দেখে আসা যায়।

যেভাবে যাবেন

কাঠমান্ডু ভ্যালির পূর্ব প্রান্তে নাগরকোট। বাসে যেতে হলে ভক্তপুরে নামতে হয়। সেখান থেকে আরেকটি বাসে নাগরকোট। তাই বেশির ভাগ ভ্রমণকারী প্রাইভেট গাড়ি নেন, যাতে সময়মতো সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় দেখা যায়।

নমোবুদ্ধ: নেপালের পবিত্র বৌদ্ধ তীর্থস্থান

বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কাছে নমোবুদ্ধ অত্যন্ত পবিত্র। প্রচলিত কাহিনি অনুযায়ী, এখানে একসময় বুদ্ধ ক্ষুধার্ত বাঘিনী ও তার শাবকদের নিজের দেহ উৎসর্গ করেছিলেন। সেই স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে আছে ছোট সাদা স্থাপনা। সেখান থেকে হিমালয়ের চমৎকার দৃশ্য দেখা যায়। এ ছাড়া বিশাল থ্রাংগু তাশি ইয়াংৎসে মঠটি দেখার মতো। চাইলে একদিনের সফরে ঘুরে আসা যায়। আবার চাইলে সেখানে থাকতেও পারেন। নমোবুদ্ধ রিসোর্টের আঙিনায় বসে অরগানিক ভেজিটেরিয়ান লাঞ্চ খেতে খেতেও পাহাড় দেখা যায়।

নমোবুদ্ধ থেকে হিমালয়ের চমৎকার দৃশ্য দেখা যায়। ছবি: উইকিপিডিয়া
নমোবুদ্ধ থেকে হিমালয়ের চমৎকার দৃশ্য দেখা যায়। ছবি: উইকিপিডিয়া

যেভাবে যাবেন

কাঠমান্ডু থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে দুই ঘণ্টার দূরত্ব। পথে বানেয়া ও ধুলিখেলে নামতে হতে পারে। লোকাল বাস পাওয়া যায়, তবে ট্যাক্সি বা ভাড়া গাড়ি বেশি আরামদায়ক।

ফারফিং: হিন্দু ও বৌদ্ধ—দুই ধর্মের মিলনস্থল

কাঠমান্ডুর দক্ষিণ প্রান্তের ফারফিং প্রকৃতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের দুর্দান্ত মিশেল। এখানে একদিকে আছে বৌদ্ধদের ধ্যানগুহা, অন্যদিকে অল্প দূরেই আছে বিখ্যাত হিন্দু মন্দির দক্ষিণকালী। ফারফিংয়ে আছে ইয়াংলেশো গুহা, যেখানে গুরু রিনপোচে ধ্যান করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। কাছেই নেওয়ারদের বজ্রযোগিনী মন্দির। আর দক্ষিণে হাঁটলেই পৌঁছে যাওয়া যায় দক্ষিণ কালীমন্দিরে। যেখানে দেবী কালীর উদ্দেশে পশু বলি দেওয়া হয়, বিশেষ করে দশাই উৎসবে।

কাঠমান্ডুর দক্ষিণ প্রান্তের ফারফিং প্রকৃতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের দুর্দান্ত মিশেল। ছবি: উইকিপিডিয়া
কাঠমান্ডুর দক্ষিণ প্রান্তের ফারফিং প্রকৃতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের দুর্দান্ত মিশেল। ছবি: উইকিপিডিয়া

যেভাবে যাবেন

পাটনের লাগাঙ্কেল বাস পার্ক বা কাঠমান্ডুর রন পার্ক থেকে বাসে যাওয়া যায়। সময় লাগে প্রায় দেড় ঘণ্টা। ট্যাক্সি নিলে সময় কম লাগে।

পানাউটি: ঐতিহাসিক নেওয়ার শহরের অদ্ভুত সৌন্দর্য

নেওয়ার সম্প্রদায় অধ্যুষিত ছোট ব্যবসায়িক শহর পানাউটি নেপালের পুরোনো শহরগুলোর একটি। পুরোনো বাজারের দালানগুলো থেকে শুরু করে নদীর ধারে থাকা মন্দির—সবই দেখার মতো। স্থানীয় বিশ্বাস আছে যে পুরো শহরটি একটি বিশাল পাথরের ওপর তৈরি, তাই ভূমিকম্পেও ক্ষতি হয় না। ইন্দ্রেশ্বর মহাদেব প্যাগোডা মন্দিরটি এখানে অবশ্যই দেখার মতো। এটি নেপালের প্রাচীনতম টিকে থাকা প্যাগোডা বলে ধারণা করা হয়।

যেভাবে যাবেন

কাঠমান্ডু থেকে প্রায় দুই ঘণ্টার পথ। চাইলে ট্রেইল ধরে হেঁটে যেতে পারেন। সাঙ্গা পানাউটি কমিউনিটি হাইকিং ট্রেইল অনেক জনপ্রিয়।

চাংগুনারায়ণ: প্রাচীনতম মন্দির ও শান্ত পরিবেশ

ভক্তপুর ঘোরার সময় খুব সহজেই চাংগুনারায়ণ যোগ করা যায়। পাহাড়ের ওপর ছোট এই শহরটি থেকে ভক্তপুর শহর ও দূরের পাহাড় দেখা যায়। পঞ্চম শতকের কিছু অংশসহ নেপালের পুরোনো মন্দির এখানে অবস্থিত। ইউনেসকো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হলেও এখানে ভিড় তুলনামূলক কম। মন্দির ছাড়াও লিভিং ট্রেডিশনস মিউজিয়াম ঘুরে দেখা যেতে পারে। ২০১৫ সালের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখন আবার খুলে গেছে এটি। এখানে নেপালের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী সম্পর্কে জানা যায়।

যেভাবে যাবেন

ভক্তপুর থেকে ট্যাক্সিতে ২০ মিনিটের মতো সময় লাগে। কাঠমান্ডু থেকে গাড়িতে যেতে একটু বেশি সময় লাগে। এখান থেকে নাগরকোট পর্যন্ত হেঁটে বা হাইকিং করেও যাওয়া যায়।

শিবপুরী ন্যাশনাল পার্ক: শহরের কাছেই প্রকৃতি

কাঠমান্ডুর উত্তরের শিবপুরী ন্যাশনাল পার্ক প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য একদম উপযুক্ত। বুধানীলকংঠার ওপরের অংশ থেকে শুরু হয় এই অরণ্য। সেখানে হাঁটার ট্রেইল, মঠ নানাবাড়ি আর পরিষ্কার দিনে শহরের দুর্দান্ত দৃশ্য পাওয়া যায়। এর জনপ্রিয় রুট হলো বুধানীলকংঠা থেকে নেগি গোম্পা হয়ে শিবপুরী শিখর বা বাগদ্বার পর্যন্ত। এরপর চাইলে শিবপুরীর চূড়া (৮ হাজার ৯৬৩ ফুট) পর্যন্ত উঠতে পারেন।

যেভাবে যাবেন

কাঠমান্ডুর বিভিন্ন জায়গা থেকে বুধানীলকংঠা যাওয়ার বাস পাওয়া যায়। সাঝা যাতায়াতের সবুজ বাসও যায়। সেখান থেকে পার্কের প্রবেশদ্বার অল্প দূর।

সূত্র: লোনলি প্ল্যানেট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফ্রিজে শীতের ফল ও সবজি সংরক্ষণের উপায়

ফিচার ডেস্ক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সঠিক উপায়ে সংরক্ষণ করতে পারলে শীতের ফল ও সবজি ৮ থেকে ১০ দিন ফ্রিজে তাজা থাকবে। জেনে নিন উপায়।

গাজর

ধুয়ে বোঁটার অংশ কেটে ফেলে জিপ লক ব্যাগে টিস্যু পেপার বিছিয়ে তারপর গাজর রাখুন। এভাবে রাখলে ফ্রিজে ১০ থেকে ১৫ দিন গাজর ভালো থাকবে।

ফুলকপি

ডাঁটা ও পাতা কেটে ফেলে দিন। এবার ফুলগুলো পেপার টাওয়েলে মুড়ে জিপ লক ব্যাগে করে ফ্রিজে রাখুন। এক সপ্তাহ ভালো থাকবে।

পেঁয়াজপাতা

পেঁয়াজপাতার গোড়ার অংশ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। একটি পাত্রে অল্প পানি নিয়ে তাতে গোড়ার অংশ ভিজিয়ে ফ্রিজে রাখুন। এক সপ্তাহ নিশ্চিন্ত। তবে চেষ্টা করুন যত দ্রুত সম্ভব রান্না করে ফেলার।

কমলালেবু

জিপ লক ব্যাগে কমলালেবু ফ্রিজে রাখুন। অনেক দিন ভালো থাকবে।

সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলার আদরে গড়া অগ্রহায়ণের পিঠাপুলি

ছন্দা ব্যানার্জি
বাংলার আদরে গড়া অগ্রহায়ণের পিঠাপুলি

এখন সারা বছর পিঠা তৈরি হলেও একটা সময় হেমন্ত ঋতু আসার সঙ্গে সঙ্গে পিঠা ও পায়েসের সময় এসে যেত। শীত পিঠার প্রধান মৌসুম। তবে তার প্রস্তুতি শুরু হয় হেমন্তে।

আমাদের স্থানীয় খাবারগুলোর মধ্যে পিঠা বেশ প্রাচীন খাবার। পিঠার বয়স কত, তা ঠিক করে বলা কঠিন। সিন্ধু সভ্যতার সময়ও পিঠাজাতীয় খাদ্য ছিল। তাই ৫ হাজার বছর বা তার বেশি পিঠার বয়স। পিঠার ইতিহাস বলে বৈদিক যুগে যবের গুঁড়া গুড় দিয়ে মেখে সেঁকা হতো। আরেকটি ছিল অপূপ। যবের গুঁড়া খামি করে চাটুতে ঘি মেখে সরু চাকলির মতো করে ভাজা।

পিঠা বাঙালির বিশেষ প্রীতি ও শ্রদ্ধার বস্তু। অগ্রহায়ণ মাসে বাড়িতে ধান আসে, তা থেকে চাল হয়। তারপর নতুন চাল, দুধ, গুড়, ফলমূল একসঙ্গে মেখে দেবতার উদ্দেশে নিবেদন করা হয়। আর পৌষের শেষ দিন অর্থাৎ পৌষসংক্রান্তিতে হয় পিঠার পর্ব।

পিঠা নানা রকম। মূল উপকরণ চালের গুঁড়া, নারকেল, তিল, ময়দা, গুড় বা চিনি। মিষ্টি উপকরণ হিসেবে চিনি অর্বাচীন বা নতুন জিনিস। আগে গুড়, নারকেল, তিল—এসব দিয়েই পিঠা বানানো হতো।

‘ঠাকুরমার ঝুলি’র ‘কাঁকনমালা-কাঞ্চনমালা’ গল্পের যা ‘আস্কে’ পিঠা অন্য জায়গায় তা গুড় পিঠা নামে বেঁচে আছে। এই আস্কে পিঠা খুব পুরোনো। দেখতে অনেকটা দক্ষিণি ইডলির মতো। বিশেষ ধরনের মাটির সরায় তৈরি হয় আস্কে পিঠা। এরই রকমফের চিতই পিঠা।

তবে আস্কে পিঠা তৈরি হয় যে চালের গুঁড়া দিয়ে, তা সেদ্ধ নাকি আতপ চালের, এ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। সে যাই হোক, ‘উসুম আঁচে আস্কে পিঠে, কড়া আঁচে পুলি’—এই হলো এর রেসিপির মূল সূত্র। আস্কে বানানোর সময় উনুন বা গ্যাসের আঁচ খেয়াল রাখতে হবে। এ পিঠা গুড় দিয়ে খাওয়া হয়। কিন্তু চিতই পিঠা গুড়, সবজি, মাংস সবকিছু দিয়ে খাওয়া যায়।

পুলিপিঠা মূলত সেদ্ধ ও ভাপা পিঠা। এখন সেটা ভাজা পিঠাও বটে। এতে যে পুর থাকে, সেটি প্রধানত গুড় বা নারকেলের পাক, তিল ও গুড়ের পাক অথবা ক্ষীর ও চিনির পাক দিয়ে তৈরি হয়। সবজি ও আলু পোস্তর পুরও বহুল প্রচলিত।

একই পিঠার হাজার রকম নামও হয়। পুলিপিঠার শুধু পুর বদলে দিলেই নামও বদলে যেতে পারে। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতেও এ রকম পিঠার সন্ধান পাওয়া যায়। পিঠা পার্বণে ঠাকুরবাড়ির রান্নাঘরে সরু চাকলি, সেদ্ধ পিঠা, ভাপা পিঠা, বাটাসাপটা, পাটিসাপটা, চিড়ের পুলি, রাঙা আলুর পুলি, গোল আলুর পুলি, চুষি পিঠে, কড়াইশুঁটির পুলি, মুগের পুলি, আঁদোসা, রসবড়া, গুড় পিঠা, ছানার পুলি, ক্ষীরের পুলি, দুধ দিয়ে চুষি পিঠা, ময়দার সাপটা পুলি, গোল পিঠা, কচুর পিঠা, লাউয়ের পুলি হতো। প্রজ্ঞা সুন্দরী দেবীর লেখায় আমরা এসবের খোঁজ পাই।

গুড়-নারকেল, তিল, চালের গুঁড়া একসঙ্গে মেখে কলাপাতায় মুড়ে পাতুরির মতো ভাপানো পিঠাও অনেকে ছোটবেলায় খেয়েছেন। গ্রামের দিকে কাঁঠালপাতা ঠোঁয়ার মতো মুড়ে তাল মাখা ঢেলে ঠোঁয়ার মুখটা কাঁঠালপাতা দিয়ে বন্ধ করে, হাঁড়িতে পানি দিয়ে ফুটিয়ে সেই হাঁড়ির মুখে একটা কাপড় পেতে, তার ওপর পাতাগুলো রেখে ভাপানো হতো এই পিঠা।

এরই একটু রকমফেরে বিক্রমপুরের বিখ্যাত বিবিখানা পিঠা। এর সঙ্গে কেকের অনেকখানি মিল রয়েছে, তবে এটি কেক নয়। তা ছাড়া, চাল ও ময়দা মিশিয়ে বা ময়দার জায়গায় বিউলি ডাল বা মাষকলাই ব্যবহার করে শেষ পাতে পাটিসাপটা কিন্তু অসাধারণ। এর পুর হবে নারকেল, গুড়, তিল বা খোয়ার মসলা। তার সঙ্গে একটু জায়ফল গুঁড়া, কুচোনো কিশমিশ দিয়ে দিতে পারেন।

চালের গুঁড়া আর বিউলির ডাল বেটে একসঙ্গে মিশিয়ে লবণ মৌরি দিয়ে পাতলা ব্যাটার করে দোসার মতো করে ভাজা। জিনিসটা নোনতা কিন্তু অনুপানটি পাতলা গুড়। কেবল এটা নয়, বেশির ভাগ পিঠার অনুষঙ্গ গুড়। পাতলা খেজুর বা একতারের আখের গুড়।

একসময় ফ্রিজের প্রচলন ছিল না বলে লুচি, পায়েস ও পিঠা বাসি থাকত। তার ছিল ভিন্নতর স্বাদ। এখন লেফট ওভার হিসেবে সবটাই ফ্রিজে গিয়ে পিঠা তার সেই ‘বাসিত্ব’ হারিয়ে ফেলেছে। তাই হারিয়ে গেছে দুধে বা খেজুর রসে চুবানো বাসি পিঠার স্বাদ। এই শীতে একবার সেটা চেখে দেখবেন নাকি?

ছন্দা ব্যানার্জি, রন্ধনশিল্পী ও খাদ্যবিষয়ক লেখক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: একদিকে প্রেম ডাকছে, অন্যদিকে পুরোনো বন্ধুর বকেয়া পাওনার মেসেজ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ৩২
আজকের রাশিফল: একদিকে প্রেম ডাকছে, অন্যদিকে পুরোনো বন্ধুর বকেয়া পাওনার মেসেজ

মেষ

আজ আপনার এনার্জি থাকবে তুঙ্গে, ঠিক যেন গরম তেলে ভাজা পকোড়া। দুপুরে অফিসের বস এমন একটা কঠিন কাজ দেবেন, যা দেখে মনে হবে আপনি মঙ্গল গ্রহ থেকে আসা অ্যালিয়েনদের ভাষা অনুবাদ করছেন। রাগ সামলান, কারণ রাগের মাথায় আজ কাউকে কিছু বলতে গেলে, ভুল করে নিজের পাসওয়ার্ড ফাঁস করে দিতে পারেন। সন্ধ্যাবেলা প্রিয় খাবার অর্ডার করুন, কারণ আজকের দিনে শান্তি পেতে এর চেয়ে ভালো পথ আর নেই। সাবধান! হাঁটার সময় ভুল করে রাস্তার কুকুরকে ‘বস’ ডেকে বসতে পারেন!

বৃষ

আজ আর্থিক দিকে স্থিতিশীলতা দেখা যেতে পারে, তবে শর্ত একটাই—অনলাইন শপিং সাইটে ঢোকা চলবে না! যদি ভুল করে ঢুকে যান, তবে একটা দরকারি জিনিসের বদলে পনেরোটা অদ্ভুত জিনিস কিনে ফেলবেন। প্রেমের ক্ষেত্রে, সঙ্গী আপনার জন্য হয়তো দারুণ কিছু সারপ্রাইজ প্ল্যান করছেন। সেটা মোজা বা পুরোনো ডিভিডি না হলেই আপনি সন্তুষ্ট হবেন। কর্মক্ষেত্রে সামান্য অলসতা কাজ করতে পারে; নিজেকে বলুন, ‘আমি রোবট নই, আমি শুধু প্রোটোটাইপ।’

মিথুন

দ্বৈত ব্যক্তিত্ব আজ এমনভাবে কাজ করবে যে, নিজেই কনফিউজড হয়ে যাবেন। একবার ভাববেন কফি খাবেন, পরমুহূর্তেই ভাববেন ডায়েটে আছেন। জরুরি সিদ্ধান্তগুলো আজ ‘টস’ করে নিন, অন্তত দায়টা ভাগ হবে। পাড়ার কেউ এসে একটা অদ্ভুত দায়িত্ব দিতে পারে; হাসি মুখে রাজি হয়ে যাবেন না, কারণ সেটা হয়তো হতে পারে তার পোষা টিয়াপাখির জন্য খেলনা! আজ ভুলেও ফেসবুকে পুরোনো প্রেমিক/প্রেমিকার প্রোফাইল চেক করবেন না, কারণ সেখানে নতুন করে কিছু বিষাদের সন্ধান পেতে পারেন।

কর্কট

অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা আজ আপনার শত্রু। কেউ সামান্য মজার ছলে কিছু বললেও মনে হতে পারে এটি ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার’ ভাঙার চেয়েও গুরুতর বিষয়। নিজেকে শান্ত রাখতে সিনেমা দেখুন—তবে এমন সিনেমা দেখুন যেখানে কেউ কাঁদে না (যদিও পাওয়া কঠিন হবে)। সন্ধ্যায় রান্নাঘরে ভুল করে লবণ আর চিনি গুলিয়ে ফেলার রেকর্ড গড়তে পারেন। ভালোবাসার মানুষকে সামান্য স্পেস দিন, নতুবা তিনি আপনাকে রিমোট কন্ট্রোল মনে করে বসতে পারেন, যা দিয়ে তিনি চ্যানেল বদলাতে চান।

সিংহ

আত্মবিশ্বাস আজ এতটাই বেশি থাকবে যে, ভুল করে গুগলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেন, অথবা ভাববেন আপনি একা হাতে পৃথিবীর সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে নিজের আইডিয়াগুলো এমনভাবে পেশ করুন যেন আপনি কোনো হলিউড মুভির হিরো। তবে মনে রাখবেন, সবার মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করতে গিয়ে ভুল করে যেন বসের চেয়ারে বসে না পড়েন! বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে গিয়ে দেখবেন, আপনার সব গল্পই অন্য কেউ আগেই বলে দিচ্ছে। হতাশ হবেন না, আপনিই আসল শো-স্টপার।

কন্যা

সবকিছু নিখুঁত করার স্বভাব আজ আপনাকে ভোগাবে। অফিসের ফাইল থেকে শুরু করে আলুর চিপসের প্যাকেট—সবেতেই ভুল খুঁজবেন। দুপুরের লাঞ্চের সময় একটু রিল্যাক্স করুন, নতুবা চামচ বা প্লেটে ময়লা খুঁজে বের করতে গিয়ে লাঞ্চই শেষ হয়ে যাবে। আজ স্বাস্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা হতে পারে; ভুলেও গুগলে কোনো রোগের লক্ষণ খুঁজবেন না, নতুবা গুগল আপনাকে কালকেই মহাকাশে পাঠাতে চাইবে। নিজের পারফেকশনিস্ট স্বভাবকে আজ একটু ছুটি দিন।

তুলা

জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা আজ পুরোপুরি ব্যর্থ হতে পারে। একদিকে প্রেম ডাকছে, অন্যদিকে পুরোনো বন্ধুর বকেয়া টাকার মেসেজ আসছে। এই পরিস্থিতিতে কাকে ‘হ্যাঁ’ আর কাকে ‘না’ বলবেন, সেটা ঠিক করতে আজকের দিনটি কেটে যাবে। দিনের শেষে আপনি বুঝতে পারবেন, আপনি কাউকেই ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলতে পারেননি, শুধু ‘হুম’ বলে কাটিয়ে দিয়েছেন। সন্ধ্যার দিকে একটা অদ্ভুত পোশাক পরার শখ হতে পারে, সামলে নিন। আপনার ‘ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট’ দেখে সবাই সার্কাসের টিকিট কাটতে চাইতে পারে।

বৃশ্চিক

আপনার রহস্যময়তা আজ চরমে উঠবে। নীরবতা দেখে সবাই মনে করতে পারে আপনি কোনো বড় ষড়যন্ত্রের প্ল্যান কষছেন, কিন্তু আসলে ভাবছেন ফ্রিজে আর কটা আইসক্রিম আছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আজ কারও কাছ থেকে একটা পুরোনো পাওনা টাকা পেতে পারেন, কিন্তু সেই টাকা দিয়ে কী করবেন, সেটা নিয়ে ভাবতেই দুপুর কাবার। সন্ধ্যায় ইন্টিউশন বলবে, আপনার রান্না করা ডালটা খারাপ হয়ে গেছে, কিন্তু আসলে সেটা খুবই সুস্বাদু। কাউকে সন্দেহ করার আগে একবার নিশ্চিত হন, সে সত্যিই আপনার শেষ চিপসটা চুপিসারে খেয়ে নিয়েছে কিনা।

ধনু

আজ ভ্রমণের নেশা পেয়ে বসবে। মনে হবে সব ফেলে অচেনা কোনো দ্বীপে চলে যাই। কিন্তু বাস্তবের রুটিন আপনাকে মনে করিয়ে দেবে, পাসপোর্ট আর টিকিট কেনার মতো টাকা নেই। কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত আশাবাদী হওয়ার কারণে ছোটখাটো ভুল হতে পারে, তাই ‘সব ঠিক হয়ে যাবে’ মন্ত্র জপার আগে একবার চেক করুন। বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টায় আজকের দিনটি ভরে থাকবে, আর সবার চেয়ে জোকস বলার চেষ্টা করে ফেল করতে পারেন। আপনার অ্যাডভেঞ্চারের গল্পগুলো কাল্পনিক রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

মকর

ক্যারিয়ারের প্রতি মনোযোগ আজ এতটাই বেশি থাকবে যে, ভুল করে নিজের পোষা বিড়ালকেও একটা অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে বসতে পারেন। বস আপনার কাজে খুশি হবেন, কিন্তু সহকর্মীরা ভাববেন, আপনি বুঝি অফিসের সমস্ত কফি একাই পান করছেন। আজ আপনার কোনো গোপন শখ ফাঁস হতে পারে, যেমন—মাঝরাতে কার্টুন দেখা বা পুরোনো বাংলা গান গাওয়া। চিন্তা করবেন না, এটা আপনাকে আরও বেশি মানবিক করে তুলবে।

কুম্ভ

আজ মাথায় অদ্ভুত সব আইডিয়া আসবে। যেমন—কীভাবে ডিম ছাড়া ওমলেট বানানো যায় বা কীভাবে খালি পায়ে দৌড়ানো যায়। আপনার এই ব্যতিক্রমী চিন্তাগুলো হয়তো কাজে লাগবে না, কিন্তু বন্ধুদের হাসাতে সাহায্য করবে। সামাজিক মাধ্যমে আজ এমন একটা পোস্ট করবেন, যা নিয়ে বন্ধুরা ব্যাপক মজা করবে। আর্থিক দিক থেকে আজ সাবধান থাকুন; কোনো নতুন বা আজব ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে যাবেন না।

মীন

আজ দিবা-স্বপ্ন দেখতে ব্যস্ত থাকবেন। ক্লাসের মাঝে, মিটিংয়ের মাঝে বা খাবার টেবিলে—সব সময়ই স্বপ্নের জগতে বিচরণ করবেন। বাস্তবতা আপনাকে ধাক্কা দিতে পারে, বিশেষ করে যখন আপনার ফোন বাজবে। সৃজনশীল কাজ, যেমন ছবি আঁকা বা কবিতা লেখায় মনোযোগ দিলে ভালো ফল পাবেন। তবে কবিতা লিখতে গিয়ে ভুল করে বসের ই-মেইল অ্যাড্রেসে পাঠিয়ে দিলে বিপদ! সহানুভূতিশীল স্বভাবের কারণে আজ কেউ এসে তার জীবনের সব দুঃখের গল্প আপনার কাছে বলে যাবে, এবং আপনাকে কেবল শুনে যেতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাবড়ি পাটিসাপটা

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ২৬
রাবড়ি পাটিসাপটা

শীত আসছে। নতুন চালে তৈরি হবে দারুণ সব পিঠাপুলি। ঐতিহ্যবাহী পিঠাগুলো তো ভাজা হবেই, সে সঙ্গে দু-একটি নতুন ধরনের পিঠা তৈরি করে চমকে দিন পরিবারের মানুষদের। আপনাদের জন্য রইল তেমনি একটি পিঠার রেসিপি। রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন ‘সেরা রাঁধুনি ১৪২৭’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানারআপ ও রন্ধনশিল্পী মরিয়ম হোসেন নূপুর

ব্যাটারের জন্য: চালের গুঁড়া ১ কাপ, ময়দা ১ কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ, গুঁড়া দুধ ২ টেবিল চামচ, লবণ সামান্য, গুড় ৪ থেকে ৫ টেবিল চামচ, পানি প্রয়োজনমতো।

পুরের জন্য: জ্বাল দেওয়া দুধ ১ কাপ, গুঁড়া দুধ ১ কাপ, চিনি পরিমাণমতো, ঘি ২ চা-চামচ, চালের গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, সুজি ১ টেবিল চামচ।

রাবড়ি তৈরি জন্য

দুধ ১ লিটার, ঘি ১ টেবিল চামচ, এলাচ গুঁড়া সামান্য, চিনি ৮ টেবিল চামচ, বাদামকুচি সাজানোর জন্য।

প্রণালি

ব্যাটারের সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে ব্লেন্ড করে এবং পুরের সব উপকরণ জ্বাল দিয়ে ঘন করে নিন। তারপর প্যানে ব্যাটার দিয়ে পাতলা রুটি তৈরি করে তাতে পুর দিয়ে ভাঁজ করে পিঠা বানিয়ে নিন।

পাত্রে ঘি দিয়ে তাতে ১ লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে অর্ধেক করে নিন। চিনি জ্বাল দিয়ে ক্যারামেল তৈরি করে দুধে মিশিয়ে দিন। তারপর এলাচ গুঁড়া দিয়ে নামিয়ে নিন।

এবারে পাটিসাপটা পিঠার ওপর রাবড়ি আর বাদামকুচি সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত