Ajker Patrika

গাইবান্ধার ৫টি আসন: দুর্গ দখলে মরিয়া দুই দল

  • জাতীয় পার্টি এখনো প্রার্থী ঘোষণা না করায় প্রচারেও নেই।
  • মাঠে নেমেছেন বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীরা। চলছে জনসংযোগ।
আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
আনিসুজ্জামান খান, ডা. জিয়াউল ইসলাম, ডা. মইনুল হাসান সাদিক, ফারুক আলম সরকার, ডা. আবদুর রহিম, আবদুল করিম, মো. আবদুল ওয়ারেছ ও নজরুল ইসেলাম। ছবি: সংগৃহীত
আনিসুজ্জামান খান, ডা. জিয়াউল ইসলাম, ডা. মইনুল হাসান সাদিক, ফারুক আলম সরকার, ডা. আবদুর রহিম, আবদুল করিম, মো. আবদুল ওয়ারেছ ও নজরুল ইসেলাম। ছবি: সংগৃহীত

সাতটি উপজেলা নিয়ে গাইবান্ধায় সংসদীয় আসন ৫টি। একসময় আসন ৫টি জাতীয় পার্টি (জাপা) ও আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। গত বছর গণ-অভ্যুত্থানের পর পাল্টে গেছে প্রেক্ষাপট। ফলে আসনগুলো দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপি ও জামায়াত। দলীয় প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে প্রচারেও নেমেছে দল দুটি। জাতীয় পার্টি (জাপা) এখনো প্রার্থী ঘোষণা না করায় প্রচারেও নেই। ফলে প্রচার এখনো প্রচার জমে ওঠেনি।

বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকেরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গণসংযোগ চালাচ্ছেন। কর্মিসভা করছেন। দলীয় বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন মানুষের কাছে। দলীয় প্রতীকে ভোট চাইছেন, চাইছেন দোয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচার চালানো হচ্ছে প্রার্থীদের পক্ষে।

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে ১৯৭৩ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) প্রার্থী দুবার, জাপা ছয়বার, বিএনপি একবার, জামায়াত একবার, স্বতন্ত্র একবার ও মুসলিম লীগ-আইডিএল প্রার্থী একবার বিজয়ী হন। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জেলা বিএনপির সহসভাপতি চিকিৎসক জিয়াউল ইসলামকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। তিনি প্রার্থী হিসেবে নতুন মুখ। তাঁর সঙ্গে লড়বেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাজেদুর রহমান।

গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ছয়বার, জাপা দুবার, বিএনপি একবার, স্বতন্ত্র প্রার্থী তিনবার বিজয়ী হন। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী বারবার কারাভোগ করা আনিসুজ্জামান খানকে। তিনি বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির গ্রাম সরকারবিষয়ক সম্পাদক। জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে তিনি প্রভাবশালী প্রার্থী। আনিসুজ্জামান খান বলেন, ‘গত তিনটি নির্বাচনে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এ কারণে এবার গণসংযোগের সময় প্রচুর সাড়া পাচ্ছি। ঐক্যবদ্ধভাবে নেতা-কর্মীরা ধানের শীষের পক্ষে কাজ করছেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট হলে আমার জয় সুনিশ্চিত।’

একই আসনে জামায়াতও প্রভাবশালী প্রার্থী দিয়েছে। এখানে জামায়াতের প্রার্থী জেলা জামায়াতের আমির ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল করিম সরকার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ইউপি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালে অনেক উন্নয়ন করেছি। বিগত সরকারের আমলে বিনা দোষে ২৬ মাস কারাভোগ করেছি। এতে আমার ও দলের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’

গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর) আসনে এ পর্যন্ত ১২টি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী চারবার, জাপা ছয়বার ও বিএনপি প্রার্থী দুইবার বিজয়ী হন। এখানে জেলা বিএনপির সভাপতি ও চিকিৎসক মইনুল হাসান সাদিককে দলীয় প্রার্থী দেওয়া হয়। এখানে জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে (লেবু মাওলানা) দলীয় প্রার্থী দিয়েছে জামায়াত। মইনুল হাসান সাদিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চিকিৎসক হওয়ার সুবাদে দুই উপজেলায় আমার প্রচুর জনপ্রিয়তা আছে। এ ছাড়া দলীয় নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে আমার পক্ষে কাজ করছেন। বিজয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’

গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে ১২টি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী চারবার, জাপা তিনবার, বিএনপি তিনবার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী দুইবার বিজয়ী হন। এ আসনে বিএনপির প্রয়াত সংসদ সদস্য আবদুল মোত্তালিব আকন্দের ছেলে শামীম কাওছার লিংকনকে দলীয় প্রার্থী মনোনীত করা হয়েছে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। বাবার মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য মো. আবদুর রহিম। তিনি চিকিৎসক হওয়ার সুবাদে এলাকায় তাঁর বেশ সুপরিচিতি ও জনপ্রিয়তা রয়েছে।

গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনে এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ প্রার্থী পাঁচবার, জাপা পাঁচবার, বিএনপি একবার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী একবার বিজয়ী হন। এই আসনে জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও ব্যবসায়ী ফারুক আলম সরকার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। জামায়াত মনোনীত প্রার্থী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মো. আবদুল ওয়ারেছ।

এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সহসভাপতি নাহিদুজ্জামান নিশাদ। এ প্রসঙ্গে ফারুক আলম মুঠোফোনে বলেন, ‘নাহিদুজ্জামানের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁর প্রার্থিতা আমার নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ