Ajker Patrika

খুনোখুনিতে চট্টগ্রামের ১৬ থানায় বালু ব্যবসা বন্ধ

  • বালুমহাল নিয়ে বিরোধে আইনশৃঙ্খলার অবনতি।
  • বাবলা হত্যাকাণ্ডের পর নিষেধাজ্ঞা পুলিশের।
  • নির্বাচনের আগপর্যন্ত বহাল থাকবে এ নিষেধাজ্ঞা।
  • বিপাকে ব্যবসায়ীসহ নির্মাণকাজ-সংশ্লিষ্টরা।
সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম 
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের ১৬ থানায় কর্ণফুলী নদীতে বালু উত্তোলন, বিক্রি ও পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। চাঁদাবাজি, সংঘর্ষ ও খুনের মতো ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। নিষেধাজ্ঞা না মেনে বালু বিক্রি বা পরিবহনের ঘটনায় ধরা পড়লে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এতে করে বিপাকে পড়ছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও ঠিকাদারেরা।

গত এক বছরে চট্টগ্রাম নগরী এবং রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ায় বিভিন্ন ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই রাজনীতিসংশ্লিষ্ট। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, এসব হত্যাকাণ্ডের বেশির ভাগই ঘটেছে বালুমহালের বিরোধের জেরে।

আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন মাস নগরের ১৬টি থানা এলাকায় বালু উত্তোলন, বিক্রি ও পরিবহন বন্ধ রাখতে সংশ্লিষ্ট সব থানার ওসিকে নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ। দেড় সপ্তাহ আগে দেওয়া তাঁর ওই নির্দেশ বাস্তবায়নে কাজ করছে পুলিশ। সিএমপির উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, চাঁদাবাজি, গুলিবর্ষণ ও খুনোখুনির ঘটনায় অরাজক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে বালু ব্যবসা বন্ধ রাখা হয়েছে।

নগরের বায়েজিদ থানার খোন্দকারপাড়ায় ৫ নভেম্বর বিএনপির নেতা এরশাদউল্লাহর নির্বাচনী গণসংযোগের সময় প্রতিপক্ষের গুলিতে মারা যান সরোয়ার হোসেন বাবলা। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, বালুমহাল, পাথর ব্যবসাসহ পূর্ববিরোধের জেরে তাঁকে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যেই বালু ব্যবসা বন্ধের নির্দেশনা আসে।

গত ৭ অক্টোবর হাটহাজারীর মদুনাঘাট এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন বিএনপির নেতা আবদুল হাকিম। এ ঘটনায়ও রাউজানকেন্দ্রিক বালুমহালের বিষয়টি সামনে আসে। ১৩ নভেম্বর খুন হন রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সহসভাপতি আবদুল মান্নান। এর আগে ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিওতে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। গত বছর নগরের চান্দগাঁও থানার শমসেরপাড়া এলাকায় দিনদুপুরে খুন হন ছাত্রলী গর্মী আফতাব উদ্দিন তাহসিন। ওই হত্যাকাণ্ডেও ইট ও বালু ব্যবসার বিরোধের যোগসূত্র পাওয়ার কথা জানায় পুলিশ। বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফতাব উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, চট্টগ্রাম নগরী ও এর বাইরে দুটি উপজেলায় গত কয়েক মাসে একাধিক খুনের ঘটনায় মূল বিরোধ ছিল বালুমহালকেন্দ্রিক।

জানা গেছে, ১৬ থানায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও মূলত বালু ব্যবসা হয় কর্ণফুলী নদীসংলগ্ন সিএমপির তিন থানা বাকলিয়া, চান্দগাঁও ও কর্ণফুলীতে। বাকলিয়া থানার নতুন ব্রিজ, ক্ষেতচর এবং চান্দগাঁও থানার কালুরঘাট ও মোহরা এলাকায় রয়েছে একাধিক বালুমহাল ও বালু বিক্রয়কেন্দ্র। শুধু কালুরঘাটেই বড় আকারের ৩-৪টি বালুমহাল ও বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। ছোট আকারের বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে আরও ডজনখানেক।

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা প্রকল্পে নালা নির্মাণকাজে যুক্ত এক ঠিকাদার জানান, আগে যেখানে প্রতি ঘনফুট বালুর দাম ছিল ১৬-১৭ টাকা, সেখানে বর্তমানে ২৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আগে যত্রতত্র বালু পাওয়া যেত। কিন্তু এখন কোথাও বালু বিক্রি হচ্ছে না। কিনতে গেলে ট্রাকসহ থানায় নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। গোপনে কিছু জায়গায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আপাতত সেসব স্থান থেকে সংগ্রহ করে কাজ চালিয়ে নিচ্ছি।’

নগরের কালুরঘাটের বালু ব্যবসায়ী মো. ফারুক আজম বাদশা বলেন, ‘কালুরঘাট ও নতুন ব্রিজে দুই সপ্তাহ ধরে বালু ব্যবসা বন্ধ। এতে আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছি।’ কালুরঘাটে একটি বালু বিক্রয়কেন্দ্র পরিচালনা করেন মো. হাসান। তিনি বলেন, ‘শুনেছি নতুন ব্রিজের বালুমহাল নিয়ে ঝামেলায় খুনোখুনি হয়েছে। তার বিস্তারিত জানা নেই। কিন্তু এখন আমরা যারা ছোট ব্যবসায়ী তাঁদের পেটে লাথি পড়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রংপুরের মিঠাপুকুর: চাল বিতরণে ২ দলের নেতা, ২৮ বস্তা উধাও

রংপুর প্রতিনিধি
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সচিবের নামে বরাদ্দের ডিও থাকলেও চাল বিতরণের দায়িত্ব পান স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতা। এতে হতদরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ করা ২৮ বস্তা চাল রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যায়। বিষয়টি প্রকাশ পেলে এলাকায় ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডিলার না থাকায় লতিবপুর ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণের জন্য ডিও করা হয় ইউপির সচিবের নামে। কিন্তু ১৪, ১৬ ও ১৭ নভেম্বর ১৫ টাকা কেজির চাল বিতরণ করেন স্থানীয় বিএনপির নেতা আমিনুল ইসলাম ও জামায়াতের নেতা সামসুল হক। পরে হিসাব মেলাতে গিয়ে দেখা যায়, ২৮ বস্তা চাল নেই।

জানতে চাইলে লতিবপুর ইউপির সচিব জেসমিন আরা জুঁথী বলেন, ‘আমরা শুধু কাগজ-কলমে। চাল বিতরণে যাঁরা ছিলেন তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতের নেতা। দুজনকে চিনি-আমিনুল ইসলাম (বিএনপি) আর সামসুল (জামায়াত)। বিষয়টি নিয়ে ১৯ নভেম্বর রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসকের সঙ্গে বসা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, যে আসবে তাকে চাল দেওয়া হবে, আর কেউ না পেলে তাকে টাকা দেওয়া হবে।’

ইউপি সচিব আরও বলেন, ‘ডিলারের মাধ্যমে চাল বিতরণ হওয়ার কথা। কিন্তু ৫ আগস্টের পর ডিলার না থাকায় এভাবে চাল বিতরণ করতে হয়েছে। ডিলার না থাকায় বিএনপি-জামায়াতের নেতারা চাল বিতরণের দায়িত্ব নেন।’

অভিযুক্ত মিঠাপুকুর থানা কৃষক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টির সমাধান করা হয়েছে। হিসাবের গরমিল ঠিক করা হয়েছে। সবাই চাল পেয়েছে। এ নিয়ে লেখালেখি না করলেই ভালো।’ লতিবপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সহসভাপতি সামসুল হকের সঙ্গে কয়েকবার ফোনে যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও লতিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক আব্দুল হামিদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘কাগজ-কলমে চালের ঘাটতি থাকলেও যারা পায়নি, তাদের সবাইকে চাল বুঝিয়ে দেওয়া হবে। যারা আসছে, তাদের বলে দিচ্ছি, চাল না পেলে এসে নিয়ে যান। সমস্যা হচ্ছে উপকারভোগীরা কেউ আমাদের কাছে আসে না।’

সচিবের নামে ডিও থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে কেন চাল বিতরণ করা হলো, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ডিলার নিয়োগ বন্ধ থাকায় উপজেলা কমিটি রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেয়। এখানে প্রায় ৫ লাখ টাকার বিষয় জড়িত ছিল। রাজনৈতিক নেতারাই টাকা দিয়ে চাল উত্তোলন করেন। যদিও ডিও সচিব বা প্রশাসন কর্মকর্তার নামে করা হয়, বিতরণ হয় তাঁদের (রাজনৈতিক নেতাদের) সমন্বয়ে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাইবান্ধার ৫টি আসন: দুর্গ দখলে মরিয়া দুই দল

  • জাতীয় পার্টি এখনো প্রার্থী ঘোষণা না করায় প্রচারেও নেই।
  • মাঠে নেমেছেন বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীরা। চলছে জনসংযোগ।
আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
আনিসুজ্জামান খান, ডা. জিয়াউল ইসলাম, ডা. মইনুল হাসান সাদিক, ফারুক আলম সরকার, ডা. আবদুর রহিম, আবদুল করিম, মো. আবদুল ওয়ারেছ ও নজরুল ইসেলাম। ছবি: সংগৃহীত
আনিসুজ্জামান খান, ডা. জিয়াউল ইসলাম, ডা. মইনুল হাসান সাদিক, ফারুক আলম সরকার, ডা. আবদুর রহিম, আবদুল করিম, মো. আবদুল ওয়ারেছ ও নজরুল ইসেলাম। ছবি: সংগৃহীত

সাতটি উপজেলা নিয়ে গাইবান্ধায় সংসদীয় আসন ৫টি। একসময় আসন ৫টি জাতীয় পার্টি (জাপা) ও আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। গত বছর গণ-অভ্যুত্থানের পর পাল্টে গেছে প্রেক্ষাপট। ফলে আসনগুলো দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপি ও জামায়াত। দলীয় প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে প্রচারেও নেমেছে দল দুটি। জাতীয় পার্টি (জাপা) এখনো প্রার্থী ঘোষণা না করায় প্রচারেও নেই। ফলে প্রচার এখনো প্রচার জমে ওঠেনি।

বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকেরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গণসংযোগ চালাচ্ছেন। কর্মিসভা করছেন। দলীয় বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন মানুষের কাছে। দলীয় প্রতীকে ভোট চাইছেন, চাইছেন দোয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচার চালানো হচ্ছে প্রার্থীদের পক্ষে।

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে ১৯৭৩ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) প্রার্থী দুবার, জাপা ছয়বার, বিএনপি একবার, জামায়াত একবার, স্বতন্ত্র একবার ও মুসলিম লীগ-আইডিএল প্রার্থী একবার বিজয়ী হন। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জেলা বিএনপির সহসভাপতি চিকিৎসক জিয়াউল ইসলামকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। তিনি প্রার্থী হিসেবে নতুন মুখ। তাঁর সঙ্গে লড়বেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাজেদুর রহমান।

গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ছয়বার, জাপা দুবার, বিএনপি একবার, স্বতন্ত্র প্রার্থী তিনবার বিজয়ী হন। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী বারবার কারাভোগ করা আনিসুজ্জামান খানকে। তিনি বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির গ্রাম সরকারবিষয়ক সম্পাদক। জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে তিনি প্রভাবশালী প্রার্থী। আনিসুজ্জামান খান বলেন, ‘গত তিনটি নির্বাচনে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এ কারণে এবার গণসংযোগের সময় প্রচুর সাড়া পাচ্ছি। ঐক্যবদ্ধভাবে নেতা-কর্মীরা ধানের শীষের পক্ষে কাজ করছেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট হলে আমার জয় সুনিশ্চিত।’

একই আসনে জামায়াতও প্রভাবশালী প্রার্থী দিয়েছে। এখানে জামায়াতের প্রার্থী জেলা জামায়াতের আমির ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল করিম সরকার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ইউপি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালে অনেক উন্নয়ন করেছি। বিগত সরকারের আমলে বিনা দোষে ২৬ মাস কারাভোগ করেছি। এতে আমার ও দলের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’

গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর) আসনে এ পর্যন্ত ১২টি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী চারবার, জাপা ছয়বার ও বিএনপি প্রার্থী দুইবার বিজয়ী হন। এখানে জেলা বিএনপির সভাপতি ও চিকিৎসক মইনুল হাসান সাদিককে দলীয় প্রার্থী দেওয়া হয়। এখানে জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে (লেবু মাওলানা) দলীয় প্রার্থী দিয়েছে জামায়াত। মইনুল হাসান সাদিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চিকিৎসক হওয়ার সুবাদে দুই উপজেলায় আমার প্রচুর জনপ্রিয়তা আছে। এ ছাড়া দলীয় নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে আমার পক্ষে কাজ করছেন। বিজয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’

গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে ১২টি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী চারবার, জাপা তিনবার, বিএনপি তিনবার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী দুইবার বিজয়ী হন। এ আসনে বিএনপির প্রয়াত সংসদ সদস্য আবদুল মোত্তালিব আকন্দের ছেলে শামীম কাওছার লিংকনকে দলীয় প্রার্থী মনোনীত করা হয়েছে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। বাবার মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য মো. আবদুর রহিম। তিনি চিকিৎসক হওয়ার সুবাদে এলাকায় তাঁর বেশ সুপরিচিতি ও জনপ্রিয়তা রয়েছে।

গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনে এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ প্রার্থী পাঁচবার, জাপা পাঁচবার, বিএনপি একবার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী একবার বিজয়ী হন। এই আসনে জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও ব্যবসায়ী ফারুক আলম সরকার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। জামায়াত মনোনীত প্রার্থী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মো. আবদুল ওয়ারেছ।

এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সহসভাপতি নাহিদুজ্জামান নিশাদ। এ প্রসঙ্গে ফারুক আলম মুঠোফোনে বলেন, ‘নাহিদুজ্জামানের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁর প্রার্থিতা আমার নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেরানীগঞ্জে গ্যাসের আগুনে পুড়ল তিনটি টিনের ঘর

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা
আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানার হযরতপুর ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামে গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপের লিকেজ থেকে আগুনে পুড়েছে তিনটি টিনের ঘর।

রোববার (২৩ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় বাড়ির তিন ব্যক্তি আহত হন।

জানা গেছে, স্থানীয় আহমদ আলীর তিন ছেলে জাহাঙ্গীর, আকাশ ও সজিবের ঘর ও ঘরে থাকা আসবাব আগুনে পুড়ে গেছে।

আগুন লাগার পর স্থানায়ীরা এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বাড়ির মালিক আহমদ আলী জানান, আমার ছেলেদের সব শেষ হয়ে গেল। আমরা এখন থাকব কোথায়। খোলা আকাশ ছাড়া আমাদের কোনো ব্যবস্থা নেই। আল্লাহ ছাড়া আর কিছুই রইল না।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যানকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৯ বিয়ে করা মুফতি কাসেমী নারী নির্যাতন মামলায় গ্রেপ্তার

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ২৪
মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী। ছবি: সংগৃহীত
মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার কেরানীগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরোর প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমীকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ রোববার (২৩ নভেম্বর) বেলা ৩টার দিকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন শাক্তা ইউনিয়নের আটিবাজার এলাকা থেকে উপপরিদর্শক শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী ৯টি বিয়ে করেছেন। চার বউ বর্তমানে রয়েছে। তিনজন তাঁকে ডিভোর্স দিয়েছেন এবং দুজনের ব্যাপারে সঠিক তথ্য দিতে পারেননি।

ওসি আরও বলেন, সাবেক এক স্ত্রীর পক্ষে তাঁর মামি আন্না পারভিন গতকাল কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। এ মামলার পর আটিবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামুনুর রশিদ কাসেমীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, মামুনুর রশিদ কাসেমী এক নারীকে বিয়ে করার পর সংসার করেন। পরে তালাক দেন। পরে আবার বিয়ে করবেন বলে ওই নারীকে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ অক্টোবর কাসেমী তাঁর হেফাজতে রেখে লাগাতার ধর্ষণ করেন এবং পরে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত