Ajker Patrika

বরিশালে হেলে পড়েছে ৫তলা ভবন, এলাকায় আতঙ্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ০৬
বরিশাল নগরের বেলতলায় একটি পাঁচতলা ভবন হেলে পড়েছে পাশের চারতলা ভবনের ওপর। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল নগরের বেলতলায় একটি পাঁচতলা ভবন হেলে পড়েছে পাশের চারতলা ভবনের ওপর। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশাল নগরের বেলতলায় একটি পাঁচতলা ভবন হেলে পড়েছে পাশের চারতলা ভবনের ওপর। এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন, শুক্রবারের ভূমিকম্পের পর এ ঘটনা ঘটেছে। এতে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে ওই দুই ভবনের বাসিন্দাসহ আশপাশের মানুষের মধ্যে। স্থানীয় মোতালেব মিয়ার পাঁচতল ভবনটি পাশের সৌদিপ্রবাসী জহির হাওলাদারের নবনির্মিত চারতলা ভবনের ওপর হেলে পড়েছে বলে প্রতিবেশী একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

প্রবাসী জহির হাওলাদারের পুত্র ফাখের হাওলাদার বলেন, ‘রোববার দেখতে পেয়েছি পাশের ভবনটির ওপর থেকে হেলে আমাদের ভবনের ওপর পড়েছে। এতে তাদের ভবনের সেইফটি ট্যাংকের পাইপ ভেঙে গেছে।’ প্রবাসীর শ্বশুর কবির সিকদার বলেন, তাঁরা ২০২৩ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশন থেকে প্ল্যান নিয়ে চারতলা ভবনটি করেছেন। প্ল্যান অনুযায়ী ভবনটি করা হয়েছে।’

অপর দিকে পাঁচতলা ভবনের মালিক মোতালেব মিয়া বলেন, ‘সিটি করপোরেশন থেকে তিনি চারতলার প্ল্যান অনুমোদন নিয়েছেন। পুরো পাঁচতলা করা হয়নি। একপাশে একটি ইউনিট পাঁচতলা করা হয়েছে। ভবনটির পশ্চিম দিকে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে পূর্ব পাশের অংশটি পাশের ভবনের সঙ্গে রয়েছে।’ তাঁর দাবি তাঁদের ভবন নয়, নতুন ভবনটি হেলে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রনি হোসেন বলেন, ‘মোতালেব মিয়ার ভবনের প্রত্যেকটি তলায় ভাড়াটিয়া রয়েছেন। নতুন ভবনটির কাজ চলছে। ওই ভবনের নিচতলায় শুধু প্রবাসীর পরিবার বাস করছেন। ভবনটি হেলে পড়ায় ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।’

এ বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) স্থপতি সাইদুর রহমান জানান, একটি ভবন আরেকটির ওপর হেলে পড়ার খবরটি তাঁরা এরই মধ্যে জেনেছেন। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, ‘ভূমিকম্পের কারণে বরিশাল নগরীতে তেমন প্রতিক্রিয়া হয়নি। কাজের মান খারাপ হওয়ার কারণে হয়তো ভবন হেলে পড়েছে। ভবন দুটি পরিদর্শন করে প্রকৃত কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পরপর তিন ভূমিকম্প, আতঙ্কিত নরসিংদীবাসীর রাত কাটল খোলা আকাশের নিচে

হারুনূর রশিদ, নরসিংদী প্রতিনিধি
ভূমিকম্প আতঙ্কের খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছে বহু মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভূমিকম্প আতঙ্কের খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছে বহু মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

পরপর তিনবার ভূমিকম্পে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোতে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদী। সেখানে কিছু এলাকায় মাটিতে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। পুরো জেলায় এখনো আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে।

গত শনিবার রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত আতঙ্ক ও গুজবের মধ্যে ঘর ছেড়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন জেলার হাজারো মানুষ। রাস্তা, মাঠ, খোলা জায়গা যেখানে নিরাপদ মনে হয়েছে, সেখানেই কেটেছে রাত। নরসিংদী পৌর এলাকার ব্রাহ্মনদী, গাবতলী, পশ্চিম ব্রাহ্মনদী, মাধবদীর এসপি ও গার্লস স্কুল মাঠ, পলাশের পিডিবি ও প্রাণ-আরএফএল মাঠসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে শত শত মানুষকে বাইরে অবস্থান করতে দেখা গেছে। কেউ কলেজ মাঠে, কেউ বাড়ির আঙিনায়, আবার কেউ সড়কের ধারে রাত কাটিয়েছেন।

আজ সোমবার সকালেও মানুষের মাঝে উদ্বেগ ও আতঙ্ক দেখা গেছে। গতকাল রোববার দুপুরে ভূমিকম্প ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন আবারও আহ্বান জানিয়েছেন, কেউ যেন গুজব না ছড়ায়, আর মানুষও যেন গুজবে বিশ্বাস না করেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের বার্তার ওপর ভরসা রাখার অনুরোধ করেছেন তিনি।

তিনটি ভূমিকম্পের দুটিরই উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী। গত শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রিখটার ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী। পরদিন শনিবার সকালে আবার যে ভূমিকম্প হয়, তারও উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী। শুক্রবারের ভূমিকম্পে নরসিংদী জেলায় ৫ জনের প্রাণহানি এবং শতাধিক আহত হন। বিভিন্ন স্থানে ও ভবনে ছোট-বড় ফাটল দেখা গেছে। শনিবার সকাল ৩ দশমিক ৩ মাত্রা এবং শনিবার সন্ধ্যায় ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। সর্বশেষটি উৎপত্তিস্থল ছিল রাজধানীর বাড্ডা।

পরপর ভূমিকম্প, রাতভর আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা সব মিলিয়ে ভয়ের মধ্যে দিন কাটছে নরসিংদীবাসীর। স্থানীয়রা বলেন, শনিবার সন্ধ্যার ভূমিকম্পের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে রাত ১২টার পর বড় আকারের আরেকটি ভূমিকম্প হবে। মুহূর্তেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে শহর ও উপশহরে। ভীতসন্ত্রস্ত মানুষ ঘর ছেড়ে রাস্তায় ও খোলা জায়গায় বেরিয়ে পড়েন।

শনিবার দিবাগত রাতভর আতঙ্ক, খোলা আকাশের নিচে থেকেছেন বহু মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শনিবার দিবাগত রাতভর আতঙ্ক, খোলা আকাশের নিচে থেকেছেন বহু মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ব্রাহ্মনদীর বাসিন্দা রাশেদুল করিম বলেন, ‘ভবন কাঁপতে দেখে ছোট বাচ্চা নিয়ে বাইরে বের হই। গুজব শুনে আর ঘরে ঢুকতে সাহস হয়নি। রাতটা খোলা জায়গাতেই কাটিয়েছি।’

গাবতলীর মো. কবীর হোসেন বলেন, ‘এবারের ভূমিকম্পে গাবতলীতে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে। সেই ভয় মানুষকে মাঠে ঠেলে দিয়েছে। শনিবার রাতে আমাদের সবাই মাঠে থাকলেও আমি একাই বাড়িতে ছিলাম। অনেকেই রাত আড়াইটায়, কেউ ভোরে বাড়ি ফেরেন।’

খোলা মাঠে রাত কাটানো যুবক সুমন মিয়া বলেন, ‘শুনেছি পুরোনো ভবনগুলো ঝুঁকিতে। তাই পরিবার নিয়ে বাইরে থাকাই নিরাপদ মনে হয়েছে।’

পলাশের সাংবাদিক মো. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘রাত ১১টার পর ওয়াপদা গেট এলাকায় মানুষ কাঁথা-বালিশ নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। পলাশ বাজারেও একই দৃশ্য—অনেকে পিডিবির মাঠে রাত কাটান।’

শনিবার দিবাগত পুরোটাই জেগে ছিল নরসিংদীর মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শনিবার দিবাগত পুরোটাই জেগে ছিল নরসিংদীর মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাধবদীর বাসিন্দা জাকির হোসেন রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে শিশুসন্তান নিয়ে রাস্তায় হাঁটছিলেন। তিনি বলেন, ‘কে জানে গুজব না গজব! কিছুই বোঝার মতো অবস্থা নেই।’

তাঁর সঙ্গে থাকা নীরব বলেন, ‘আটতলা ভবনে থাকি। টিনের ঘর নিরাপদ ভেবে খালার বাসায় যাচ্ছি।’

কলেজপাড়ার গৃহবধূ সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘পরপর তিনবার ভূমিকম্প! মনে হচ্ছিল বড় কিছু হয়ে যাবে। তাই নিচতলায় নেমে থাকি। বাচ্চারা আতঙ্কে কাঁদছিল।’

শনিবার সন্ধ্যার পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কলেজপাড়া ও ব্রাহ্মনদী বালুরচরে ঘনবসতিতে গড়ে ওঠা অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে আরও আতঙ্ক ছড়ানো হয়।

এ বিষয়ে সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আকরাম হোসেন বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কোনো নোটিশ পাইনি। সিদ্ধান্ত হলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হবে।’

ভূমিকম্পের পরপরই জেলা প্রশাসন সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার শুরু করেছে। গুজবে কান না দিতে সকলকে অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গুজব ছড়াবেন না, গুজবে বিশ্বাস করবেন না। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত ও সহায়তা দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে গভীর রাতে চোর সন্দেহে ৪ জনকে গণপিটুনি, একজনের মৃত্যু

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৫
ফরিদপুরের নগরকান্দায় গভীর রাতে চোর দাবি করে চার যুবককে গণপিটুনি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফরিদপুরের নগরকান্দায় গভীর রাতে চোর দাবি করে চার যুবককে গণপিটুনি। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের নগরকান্দায় গভীর রাতে চার যুবক গণপিটুনির শিকার হয়েছে। তাঁদের মধ্যে শাহীন শিকদার (২৮) নামে একজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তাঁরা ভ্যান চুরি করতে এসেছিলেন।

গতকাল রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের দেবীনগর গ্রামের চৌরাস্তা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক একই ইউনিয়নের গজগাহ গ্রামের মোস্তফা শিকদারের ছেলে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন ডাঙ্গী ইউনিয়নের মাশাউজান গ্রামের মোস্তফা শেখের ছেলে সুমন শেখ (২০), শ্রাঙ্গাল গ্রামের জাকির মাতুব্বরের ছেলে পারভেজ মাতুব্বর (২১) ও অজ্ঞাতনামা একজন। তাঁদের উদ্ধার করে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

এলাকাবাসী জানান, কয়েক দিন ধরে গ্রামের অনেকের বাড়িতে ভ্যানসহ বিভিন্ন মালামাল চুরির ঘটনা ঘটছে। গতকাল দিবাগত রাতে ভ্যানচালক আক্তার ফকিরের বাড়িতে ভ্যান চুরি করতে যান পাঁচ যুবক। বিষয়টি টের পেয়ে আক্তার ফকির তাঁদের ধাওয়া দেন এবং তাঁর চিৎকারে গ্রামের শতাধিক মানুষ বেরিয়ে এসে তাঁদের আটক করেন।

এ সময় একজন পালিয়ে গেলেও চারজনকে বেধড়ক মারধর করেন এলাকাবাসী। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। শাহীন শিকদারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জয়দেব কুমার সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, হাসপাতালে তিনজন চিকিৎসাধীন, তাঁরা শঙ্কামুক্ত।

জানতে চাইলে ভ্যানচালক আক্তার ফকির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কয়েক দিন আমাদের গ্রামে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটছে। এ জন্য রাতে গ্রামের মানুষ ঠিকমতো ঘুমাইতেছিল না। গত রাতে মাত্রই ঘুমাতে গেছি, তখনই আমার ভ্যানের শিকল ধরে টান দেওয়ার শব্দ শুনে বের হয়ে দেখি চোরের দল। তখন চিৎকার দিলে গ্রামের হাজার হাজার মানুষ দাবড়াইয়ে ধরে ফেলে।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফ ইকবাল (দায়িত্বরত নগরকান্দা সার্কেল) বলেন, ‘স্থানীয়রা আমাদের জানিয়েছে, তারা একটি বাড়িতে ভ্যান চুরি করতে গিয়েছিল। পরে গ্রামের লোকজন জড়ো হয়ে তাদের মারধর করে এবং একজন মারা গেছে। ঘটনাটি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। নিহতের পরিবার অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বেরোবিতে র‍্যাগিং: আহত ১ শিক্ষার্থীকে মেডিকেলে ভর্তি, তদন্ত কমিটি গঠন

বেরোবি সংবাদদাতা
আহত শিক্ষার্থী দীন ইসলাম (বাঁয়ে) ও অভিযুক্ত মামুন। ছবি: সংগৃহীত
আহত শিক্ষার্থী দীন ইসলাম (বাঁয়ে) ও অভিযুক্ত মামুন। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) হলের ছাদে র‍্যাগিং ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় তৎক্ষণাৎ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন।

জানা গেছে, গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১২টায় বিজয় ২৪ ছাত্র হলের ছাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ’২৩-২৪ সেশনের (১৬ ব্যাচ) শিক্ষার্থীরা একই বিভাগের ’২৪-২৫ সেশনের (১৭ ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের ডাকে। একপর্যায়ে ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মামুন ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীন ইসলামকে মারধর করে। এতে ঘটনাস্থলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই শিক্ষার্থী।

পরে জানতে পেরে হলের শিক্ষার্থীরা আহত ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

জানতে চাইলে আহত শিক্ষার্থী দীন ইসলাম বলেন, ‘আমি কানে কিছু শুনতে পারতেছি না, মামুন ভাই সরাসরি কানে থাপ্পড় মারছে। গতকালকেও ডেকেছিল, আমি মানি নাই জন্য, আজ আমাকে কানে থাপ্পড় মেরেছে।’

বিষয়টি স্বীকার করে মামুন বলেন, ‘আসলে আমি ওভাবে ওর গায়ে হাত তুলিনি ও একটু বেশি করে বলতেছে।’ এ বিষয়ে বেরোবি প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘আমরা তৎক্ষণাৎ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যেন রিপোর্ট দাখিল করে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জমি নিয়ে বিরোধে কিশোর আলিফকে হত্যা, দাবি মায়ের

নড়াইল প্রতিনিধি 
নিহত ছেলে আমিনুর রহমান ওরফে আলিফের ছবি হাতে মা রজিনা খাতুন। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহত ছেলে আমিনুর রহমান ওরফে আলিফের ছবি হাতে মা রজিনা খাতুন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাবা প্রতিবন্ধী হওয়ায় কিশোর বয়সেই সংসারের হাল ধরেছিল আমিনুর রহমান ওরফে আলিফ (১৫)। নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের ছোট মিতনা গ্রামের প্রতিবন্ধী কেনায়েত বিশ্বাসের ছেলে আলিফ ভ্যান চালিয়ে মা-বাবাসহ পরিবারের খরচ চালাত। ওই গ্রামের কেনায়েতের কেনা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে তাঁর ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আলিফের মা মোছা. রজিনা খাতুন।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে তুলারামপুর ইউনিয়নের চাঁচড়া গ্রামের বাহারুল বিশ্বাসের ছেলে মিনারুল বিশ্বাস (২২), হাফিজুর মোল্যার ছেলে হৃদয় মোল্যা (২২) ও অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন আলিফকে হত্যার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্র করেন। আলিফকে ভ্যানে করে হিজলডাঙ্গা, মুলিয়া ও বাহিরগ্রাম এলাকায় ঘোরানো হয়। বাহিরগ্রামে হৃদয় মোল্যার মামার বাড়িতে ভ্যান রেখে ওই রাতেই দেবভোগ গ্রামের নির্জন স্থানে নিয়ে আলিফকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ ডোবার কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে গুম করার চেষ্টা করা হয়।

পরদিন ৪ অক্টোবর আসামিরা ভ্যানের ব্যাটারি খুলে নড়াইল শহরের রূপগঞ্জ এলাকায় বিক্রি করে। ভ্যানটি রেখে দেওয়া হয় হৃদয়ের মামার বাড়ি বাহিরগ্রামে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভ্যান, ব্যাটারি এবং আলিফের টাচ মোবাইল উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ৫ অক্টোবর মিনারুল ও পরে হৃদয় মোল্যাকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে পুলিশ। নিহত আলিফের মা রজিনা খাতুন ৬ অক্টোবর থানায় হত্যা মামলা করেন। দুই আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে আলিফকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

আলিফের মা রজিনা খাতুন বলেন, বসতবাড়ির ৩০ শতক জমির মূল্য পরিশোধ করলেও দলিল না দেওয়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে তাঁর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। দুজন গ্রেপ্তার হলেও বাকিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তিনি প্রধান উপদেষ্টা, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র‍্যাবসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত ও জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

এ বিষয়ে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘ছোট মিতনা গ্রামের আলিফ হত্যা মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তারের পর তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে। অন্য কেউ জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত