Ajker Patrika

জমি নিয়ে বিরোধে কিশোর আলিফকে হত্যা, দাবি মায়ের

নড়াইল প্রতিনিধি 
নিহত ছেলে আমিনুর রহমান ওরফে আলিফের ছবি হাতে মা রজিনা খাতুন। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহত ছেলে আমিনুর রহমান ওরফে আলিফের ছবি হাতে মা রজিনা খাতুন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাবা প্রতিবন্ধী হওয়ায় কিশোর বয়সেই সংসারের হাল ধরেছিল আমিনুর রহমান ওরফে আলিফ (১৫)। নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের ছোট মিতনা গ্রামের প্রতিবন্ধী কেনায়েত বিশ্বাসের ছেলে আলিফ ভ্যান চালিয়ে মা-বাবাসহ পরিবারের খরচ চালাত। ওই গ্রামের কেনায়েতের কেনা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে তাঁর ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আলিফের মা মোছা. রজিনা খাতুন।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে তুলারামপুর ইউনিয়নের চাঁচড়া গ্রামের বাহারুল বিশ্বাসের ছেলে মিনারুল বিশ্বাস (২২), হাফিজুর মোল্যার ছেলে হৃদয় মোল্যা (২২) ও অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন আলিফকে হত্যার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্র করেন। আলিফকে ভ্যানে করে হিজলডাঙ্গা, মুলিয়া ও বাহিরগ্রাম এলাকায় ঘোরানো হয়। বাহিরগ্রামে হৃদয় মোল্যার মামার বাড়িতে ভ্যান রেখে ওই রাতেই দেবভোগ গ্রামের নির্জন স্থানে নিয়ে আলিফকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ ডোবার কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে গুম করার চেষ্টা করা হয়।

পরদিন ৪ অক্টোবর আসামিরা ভ্যানের ব্যাটারি খুলে নড়াইল শহরের রূপগঞ্জ এলাকায় বিক্রি করে। ভ্যানটি রেখে দেওয়া হয় হৃদয়ের মামার বাড়ি বাহিরগ্রামে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভ্যান, ব্যাটারি এবং আলিফের টাচ মোবাইল উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ৫ অক্টোবর মিনারুল ও পরে হৃদয় মোল্যাকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে পুলিশ। নিহত আলিফের মা রজিনা খাতুন ৬ অক্টোবর থানায় হত্যা মামলা করেন। দুই আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে আলিফকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

আলিফের মা রজিনা খাতুন বলেন, বসতবাড়ির ৩০ শতক জমির মূল্য পরিশোধ করলেও দলিল না দেওয়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে তাঁর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। দুজন গ্রেপ্তার হলেও বাকিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তিনি প্রধান উপদেষ্টা, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র‍্যাবসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত ও জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

এ বিষয়ে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘ছোট মিতনা গ্রামের আলিফ হত্যা মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তারের পর তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে। অন্য কেউ জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...