Ajker Patrika

বিদায় আকাশ দানব

মইনুল হাসান, ফ্রান্স
বিদায় আকাশ দানব

কিংবদন্তি সুপার জাম্বো জেট বোয়িং ৭৪৭ বিদায় নিতে যাচ্ছে।

এ বছরের ৩১ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কমার্শিয়াল এয়ারপ্লানেসের তৈরি শেষ সুপার জাম্বো জেট বোয়িংটি হস্তান্তর করা হয়েছে এটলাস এয়ার কোম্পানির কাছে।

সবার চোখ ধাঁধিয়ে প্রথম জাম্বো জেটটি কারখানা থেকে বের হয়েছিল ১৯৬৮ সালে। অতিকায় আকৃতি দেখে অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যে এমন দানব আকাশে উড়বে এবং অনায়াসে পাঁচ শর বেশি যাত্রী নিয়ে ঘণ্টায় ৯০০ কিলোমিটার বা ৫৬০ মাইলের বেশি গতিতে দেশ থেকে দেশে ঘুরে বেড়াবে। অথচ পৃথিবীকে চমকে দিয়ে ১৯৬৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বিমানটি প্রথম নীল আকাশে পাখা মেলেছিল। ১৯৬৯ সালের ২ মার্চ ফরাসি এবং ইংরেজরা মিলে আকাশে উড়িয়েছিল কনকর্ড, বিশ্বের দ্রুততম যাত্রীবাহী বিমান, গতি ঘণ্টায় ২ হাজার ১৭৯ কিলোমিটার বা ১ হাজার ৩৫৪ মাইল। আর সেই বছরের ২০ জুলাই মানুষ প্রথম চাঁদে পা রেখেছিল।

মানুষ আকাশে ওড়ার ইচ্ছা স্বপ্নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেনি, স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে অনেকের সঙ্গে অরভিল এবং উইলবার রাইট—এই দুই ভাইয়ের নাম ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে। ১৯০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর তাঁদের বানানো বিমানে চতুর্থবারের চেষ্টায় ৫৯ সেকেন্ডে ২৬০ মিটার উড়তে সক্ষম হয়েছিলেন।

সেই শুরু। তারপর পৃথিবীর প্রথম এয়ারলাইন আত্মপ্রকাশ করে ফ্লোরিডার সেন্ট পিটার্সবার্গে। ১৯১৪ সালের প্রথম দিনটি থেকে শুরু হয় বিশ্বের প্রথম নিয়মিত বাণিজ্যিক বিমানযাত্রা।

নতুন করে আর তৈরি হবে না বোয়িং এয়ারক্রাফটআর ২ মে ১৯৫২ তারিখে ব্রিটিশ ওভারসিজ এয়ারক্রাফট করপোরেশনের ৪৪ আসনের প্রথম জেট বিমানটি লন্ডন থেকে যাত্রা শুরু করে পৌঁছে গিয়েছিল জোহানেসবার্গে। তাই বলা যায়, বিমান বা জেটচালিত বিমানের ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়।

তবে ষাটের দশকের শুরুতে জাম্বো জেটের ভাবনা ছিল এক অসম্ভব কল্পনা, অতি উচ্চাভিলাষী ভাবনা। আর এমন ভাবনা ও পরিকল্পনার পুরোধা ব্যক্তি ছিলেন জো সাটার (১৯২১-২০১৬)। সে সময়ে তাঁর পরিকল্পনায় যাঁরা বাদ সেধেছিলেন, তাঁদের প্রধান যুক্তি ছিল, এমন অতিকায় বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের জন্য বিশ্বের বিমানবন্দরগুলো উপযোগী নয়। জো সব বাধা উপেক্ষা করে ‘সুপার জাম্বো জেট’কে পৃথিবীর সব সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাই তাঁকে বলা হয় ‘বোয়িং ৭৪৭-এর জনক’।

বিমান ভ্রমণে নতুন যুগের সূচনা করলেন জো সাটার। পর্যটনশিল্পের প্রসারে বোয়িং ৭৪৭-এর ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। সাধারণের জন্য দূরদেশ ভ্রমণকে অনেকটা সাধ্যের মধ্যে এনে দিয়েছিল এই বিমান। প্রায় ৫৫ বছরে মোট ১ হাজার ৫৭৪টি বিমান তৈরি করা হয়েছে এবং আজ পর্যন্ত এ বিমানে ৩৫ লাখের বেশি যাত্রী আকাশভ্রমণের স্বাদ পেয়েছেন। শেষ বিমানটি হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি বিমানের ইতিহাসের একটি উজ্জ্বল অধ্যায়ের অবসান হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত