রজত কান্তি রায়, ঢাকা

অথচ তিনি একজন সফল প্রকৌশলী কিংবা একজন ডুবুরিও হতে পারতেন। তাঁর জন্ম হয়েছিল জলের কাছাকাছি, চলনবিল এলাকায়। তিনি এখন পুরোদস্তুর পর্বতারোহী এবং পর্যটক—দুটোই এখন তাঁর নেশা ও পেশা। সম্ভবত তিনিই প্রথম বাংলাদেশি, যিনি পেশা হিসেবে এক্সপেডিশন লিডারের পদ বেছে নিয়েছেন কোনো প্রতিষ্ঠানে।
পাবনার পুরোনো জনপদ চাটমোহর। এখনো এখানকার ভিটেমাটি থেকে পুরোনো গন্ধ পাওয়া যায়। সেই গন্ধ গিয়ে মেশে চলনবিলে। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের ছাইকোলা এলাকায় নেমে ভ্যানে চলনবিলের ঠিক মাঝ দিয়ে যাওয়া যায় চাটমোহর। দুপাশে দিগন্তবিস্তৃত বিল। বর্ষায় সেই বিলে থইথই করে পানি আর শীতে পুরো বিল হয় সবুজ-হলুদের সমুদ্র। চলনের এই রূপ দেখে বড় হয়েছেন আহসানুজ্জামান তৌকির। তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা চাটমোহরের বালুচর গ্রামে। বাবা মো. আকরাম হোসেন ও মা সুলতানা সামিয়া পারভিন।

শিক্ষাজীবনের প্রথম পর্ব শেষ করে ঢাকায় আসেন উচ্চশিক্ষার জন্য। অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি শেষ করেন তৌকির। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করেই ভ্রমণের প্রতি ভালোবাসা জন্মে তাঁর। সেভাবেই ভ্রমণের শুরুটা হয় ২০১৭ সালে। এরপর ধীরে ধীরে দেশের প্রায় সব জেলা ঘোরেন তিনি। কখনো বন্ধুদের সঙ্গে, কখনো একা। এর মধ্যেই ভ্রমণ করেন ভারতের ছয়টি প্রদেশ। এই ভ্রমণগুলো একসময় তাঁকে টেনে নিয়ে যায় পাহাড়ের দিকে। পেয়ে যান পাহাড়ের স্বাদ। দেশের কঠিন ট্রেকগুলোতে হাঁটার পর তিনি হিমালয়ের অনেক ট্রেকে ট্রেকিং করেছেন। এগুলোর মধ্যে আছে এভারেস্ট বেসক্যাম্প ট্রেক, অন্নপূর্ণা বেসক্যাম্প, অন্নপূর্ণা সার্কিট, সান্দাকফু ও গোচেলা ট্রেক।
প্রকৌশলীর নিশ্চিত জীবন ছেড়ে তৌকির বেছে নিয়েছিলেন এক্সপেডিশন লিডারের অনিশ্চিত জীবন।
তবে তৌকিরের পর্বতারোহী হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় রোপ ফোর আয়োজিত মিশন হিমালয় ২০২২ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। সে বছর তিনি চ্যাম্পিয়ন হয়ে এভারেস্ট বেসক্যাম্পে ভ্রমণের সুযোগ পান। সেই ভ্রমণের সময় তাঁর শারীরিক সক্ষমতা বিবেচনা করে রোপ ফোর থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয় ৬ হাজার মিটার পর্বত সামিট করার জন্য। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তৌকিরকে। সেই সূত্রে তিনি ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে হিমালয়ের খুম্বু রিজিওনের ৬ হাজার ১৬৫ মিটার উচ্চতার আইল্যান্ড পিক অভিযান করে সফল হন। এই অভিযানে যাওয়ার আগে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন।
আইল্যান্ড পিকে সফল অভিযান করে ফেরার পর তিনি রোপ ফোর-এ এক্সপেডিশন লিডার হিসেবে যোগ দেন। সেই কাজের সূত্র ধরে ২০২৩ সালে ৬ হাজার ১১৯ মিটারের লবুচে ইস্টসহ নাগার্জুন ও কালাপাথর পর্বত আরোহণ করেন। আহসানুজ্জামান তৌকির প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৬ হাজার মিটারের কোনো পর্বতে বাণিজ্যিকভাবে সফল অভিযান পরিচালনা করেন। সে চূড়াটি ছিল নেপালের ৬ হাজার ১৬৫ মিটার উচ্চতার আইল্যান্ড পিক।

অথচ তিনি একজন সফল প্রকৌশলী কিংবা একজন ডুবুরিও হতে পারতেন। তাঁর জন্ম হয়েছিল জলের কাছাকাছি, চলনবিল এলাকায়। তিনি এখন পুরোদস্তুর পর্বতারোহী এবং পর্যটক—দুটোই এখন তাঁর নেশা ও পেশা। সম্ভবত তিনিই প্রথম বাংলাদেশি, যিনি পেশা হিসেবে এক্সপেডিশন লিডারের পদ বেছে নিয়েছেন কোনো প্রতিষ্ঠানে।
পাবনার পুরোনো জনপদ চাটমোহর। এখনো এখানকার ভিটেমাটি থেকে পুরোনো গন্ধ পাওয়া যায়। সেই গন্ধ গিয়ে মেশে চলনবিলে। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের ছাইকোলা এলাকায় নেমে ভ্যানে চলনবিলের ঠিক মাঝ দিয়ে যাওয়া যায় চাটমোহর। দুপাশে দিগন্তবিস্তৃত বিল। বর্ষায় সেই বিলে থইথই করে পানি আর শীতে পুরো বিল হয় সবুজ-হলুদের সমুদ্র। চলনের এই রূপ দেখে বড় হয়েছেন আহসানুজ্জামান তৌকির। তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা চাটমোহরের বালুচর গ্রামে। বাবা মো. আকরাম হোসেন ও মা সুলতানা সামিয়া পারভিন।

শিক্ষাজীবনের প্রথম পর্ব শেষ করে ঢাকায় আসেন উচ্চশিক্ষার জন্য। অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি শেষ করেন তৌকির। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করেই ভ্রমণের প্রতি ভালোবাসা জন্মে তাঁর। সেভাবেই ভ্রমণের শুরুটা হয় ২০১৭ সালে। এরপর ধীরে ধীরে দেশের প্রায় সব জেলা ঘোরেন তিনি। কখনো বন্ধুদের সঙ্গে, কখনো একা। এর মধ্যেই ভ্রমণ করেন ভারতের ছয়টি প্রদেশ। এই ভ্রমণগুলো একসময় তাঁকে টেনে নিয়ে যায় পাহাড়ের দিকে। পেয়ে যান পাহাড়ের স্বাদ। দেশের কঠিন ট্রেকগুলোতে হাঁটার পর তিনি হিমালয়ের অনেক ট্রেকে ট্রেকিং করেছেন। এগুলোর মধ্যে আছে এভারেস্ট বেসক্যাম্প ট্রেক, অন্নপূর্ণা বেসক্যাম্প, অন্নপূর্ণা সার্কিট, সান্দাকফু ও গোচেলা ট্রেক।
প্রকৌশলীর নিশ্চিত জীবন ছেড়ে তৌকির বেছে নিয়েছিলেন এক্সপেডিশন লিডারের অনিশ্চিত জীবন।
তবে তৌকিরের পর্বতারোহী হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় রোপ ফোর আয়োজিত মিশন হিমালয় ২০২২ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। সে বছর তিনি চ্যাম্পিয়ন হয়ে এভারেস্ট বেসক্যাম্পে ভ্রমণের সুযোগ পান। সেই ভ্রমণের সময় তাঁর শারীরিক সক্ষমতা বিবেচনা করে রোপ ফোর থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয় ৬ হাজার মিটার পর্বত সামিট করার জন্য। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তৌকিরকে। সেই সূত্রে তিনি ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে হিমালয়ের খুম্বু রিজিওনের ৬ হাজার ১৬৫ মিটার উচ্চতার আইল্যান্ড পিক অভিযান করে সফল হন। এই অভিযানে যাওয়ার আগে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন।
আইল্যান্ড পিকে সফল অভিযান করে ফেরার পর তিনি রোপ ফোর-এ এক্সপেডিশন লিডার হিসেবে যোগ দেন। সেই কাজের সূত্র ধরে ২০২৩ সালে ৬ হাজার ১১৯ মিটারের লবুচে ইস্টসহ নাগার্জুন ও কালাপাথর পর্বত আরোহণ করেন। আহসানুজ্জামান তৌকির প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৬ হাজার মিটারের কোনো পর্বতে বাণিজ্যিকভাবে সফল অভিযান পরিচালনা করেন। সে চূড়াটি ছিল নেপালের ৬ হাজার ১৬৫ মিটার উচ্চতার আইল্যান্ড পিক।

প্রতিবছর, অক্টোবরের শেষ শনি ও রোববার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই ছোট্ট নির্জন গ্রামের নৈঃশব্দ্য ভেঙে ভিড় করে বহু মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে দেশ-বিদেশের মরিচপ্রেমীরা এখানে ভিড় করেন—বসে এক মহা মিলনমেলা। ৫৬ বছর ধরে, অর্থাৎ ১৯৬৯ সাল থেকে এমনটাই চলে আসছে। এমন জাঁকজমক আর জমজমাট আয়োজনের কেন্দ্রে আছে এই বিশেষ...
২ ঘণ্টা আগে
যাঁরা প্রতিদিন ওয়ার্কআউট করেন, তাঁদের মনে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়, প্রতিদিনই কি চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত? আবার কী করে চুল বাঁধলে ব্যায়ামের ফলে চুলের গোড়ায় বেশি ঘাম জমবে না, এ নিয়েও অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। আন্তর্জাতিক ‘ভোগ’ ম্যাগাজিন...
৩ ঘণ্টা আগে
শহরের অলিগলিতে এখন কতবেল মাখা বিক্রি হচ্ছে। ঝাল বাড়িয়ে জম্পেশ করে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন থাহলে ঘরেই তৈরি করে নিন জিবে জল আনা কতবেল মাখা। আপনাদের জন্য একটু ভিন্ন স্বাদের কতবেল মাখার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন ‘সেরা রাঁধুনি ১৪২৭’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার্সআপ...
৪ ঘণ্টা আগে
তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা।
৮ ঘণ্টা আগেমইনুল হাসান, ফ্রান্স

ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমে একদম স্পেনের সীমান্ত ঘেঁষে পিরিনিজ পর্বতমালা। এই পর্বতমালার পাদদেশে দুই দেশ মিলিয়ে ছবির মতো বিশাল পাহাড়ি উপত্যকায় প্রাচীনকাল থেকে বসবাস বাস্ক জাতির মানুষেরা। নিজস্ব ভাষা, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ধারক এ জাতির মানুষ নিজেদের বাস্ক হিসেবে পরিচয় দিতেই গর্ববোধ করে।

একদিকে পর্বত, অন্যদিকে অতল অতলান্তিক মহাসাগরের বিশাল জলরাশির মিলে অপার্থিব নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সবটুকু যেন এখানেই ঘনীভূত হয়েছে। এই অঞ্চলেই ফ্রান্সের বাইওন শহর থেকে ২২ কিলোমিটার বা ১৮ মাইল দূরে পর্বতের কোলে আছে নির্জন, নিভৃত ছোট্ট একটি গ্রাম—স্পোলেত।
প্রায় ৪০০ বছর ধরে এই অঞ্চলের মানুষের জীবন, সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে জড়িয়ে আছে একটি বিশেষে জাতের মরিচ। ফরাসি ভাষায় এর নাম দেওয়া হয়েছে, ‘পিমো দ্য স্পোলেত’ অর্থাৎ স্পোলেতের মরিচ। উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা এর একটি খটমটে নাম দিয়েছেন, তা হলো ক্যাপসিকাম অ্যানুয়াম, প্রকরণ গোরিয়া। ১৬ শতকে স্প্যানিশ পরিব্রাজক খুয়ান সেবাস্তিয়ান এলকানো মেক্সিকো থেকে এই মরিচ ইউরোপের নিয়ে আসেন। সেই ১৬৫০ থেকে এই অঞ্চলের কৃষকেরা পিমো দ্য স্পোলেত নামে এই মরিচ চাষ করতে শুরু করেন।

উজ্জ্বল লাল রঙের, চমৎকার ঘ্রাণের, একটু মিষ্টি ও হালকা ঝালের এই বিশেষ জাতের মরিচ প্রথম দিকে শুধু ঔষধি এবং কাঁচা মাংস সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হতো। পরে গোলমরিচের অভাব পূরণে রান্না করা খাদ্যের স্বাদে আলাদা ব্যঞ্জনা আর ঝাঁজের জন্য ব্যবহার হতে শুরু করলে ফরাসি ও স্প্যানিশদের কাছে এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পিমো দ্য স্পোলেতকে ঘিরে গড়ে ওঠে আলাদা মাত্রার রন্ধনকৌলীন্য, এক সমৃদ্ধ ও সম্পূর্ণ ভিন্ন খাদ্যসংস্কৃতি। এই অঞ্চলের জীবন আবর্তিত হয় এই মরিচ ঘিরে। ফ্রান্স ও স্পেনের মানুষ এবং শেফদের খুব প্রিয় এই বিশেষ জাতের মসলা।
প্রতিবছর, অক্টোবরের শেষ শনি ও রোববার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই ছোট্ট নির্জন গ্রামের নৈঃশব্দ্য ভেঙে ভিড় করে বহু মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে দেশ-বিদেশের মরিচপ্রেমীরা এখানে ভিড় করেন—বসে এক মহা মিলনমেলা। ৫৬ বছর ধরে, অর্থাৎ ১৯৬৯ সাল থেকে এমনটাই চলে আসছে। এমন জাঁকজমক আর জমজমাট আয়োজনের কেন্দ্রে আছে এই বিশেষ জাতের মরিচ।

২৫ অক্টোবর শনিবার, সকাল থেকে স্পোলেত গ্রামে ভিড় বাড়তে থাকে। পাহাড়ি পথ ধরে সারি সারি গাড়ির বহর। বিশাল অঙ্গনে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং চলাচলের সুবিধার জন্য সরকারি বাহিনীর সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবকদের দল গলদঘর্ম হচ্ছে। তারপরেও তাদের মুখে হাসির ঝিলিক। আমরাও মিশে গেলাম বহু ভিনদেশির সঙ্গে। বাদকদের দল বাদ্য বাজিয়ে বিয়েবাড়ির আমেজ সৃষ্টি করছিল। বাস্ক তরুণ-তরুণীরা ঐতিহ্যবাহী নাচে মুগ্ধ করছে আগতদের।
অনেকটা উঁচু এক বিশাল জায়গাজুড়ে স্পোলেতের মরিচ এবং মরিচজাত নানান পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন উৎপাদনকারীরা। হাসিমুখে উৎসুক দর্শনার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন তাঁরা। দেখা হলো মসিয়ঁ পিয়ের ডিহার্চের সঙ্গে। তিনি এসেছেন স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে। বহু বছর ধরে তিনি এই মরিচের চাষ করেন এবং তা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করেন নিজ হাতে। তিনি জানালেন, মোট ১০টি গ্রামে এই মরিচের চাষ হয়। ১৫০ জন কৃষক বছরে প্রায় ১০০ টন মরিচ উৎপাদন করেন। আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ফলন হয়। আরও বললেন, ভিটামিনের ভালো উৎস এই মরিচ হজমশক্তি বাড়ায়। ওজন কমাতে, বিপাকে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

আমাদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল দুই মরিচকন্যার—ক্লারা ও রেবেকা। ছবি তুলতে চাইলে মিষ্টি হেসে রাজি হয়ে গেলেন। বাস্ক তরুণী জুলি, তাঁর মরিচ ও মরিচের পণ্য নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন উৎসবে। অনেকের সঙ্গে দেখা হলো, আলাপ হলো। সবাই খুব আন্তরিক।
পরদিন রোববার একই রকম আয়োজন। শেষ হলো পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে। সেরা মরিচ উৎপাদনকারীকে পুরস্কারের মাধ্যমে সম্মানিত করা হয়।

এ বছর, ২০২৫-এ মরিচের তীর্থে এসেছিলেন প্রায় ২৫ হাজার মরিচ ভোক্তা ও ভক্ত। এমন করেই প্রতিবছর মরিচের প্রার্থনাসংগীত দিয়ে শুরু হয় দুদিনব্যাপী জমজমাট উৎসবের। উদ্যাপিত হয় মরিচের রাজধানীতে পৃথিবীর একমাত্র মরিচ উৎসব।

ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমে একদম স্পেনের সীমান্ত ঘেঁষে পিরিনিজ পর্বতমালা। এই পর্বতমালার পাদদেশে দুই দেশ মিলিয়ে ছবির মতো বিশাল পাহাড়ি উপত্যকায় প্রাচীনকাল থেকে বসবাস বাস্ক জাতির মানুষেরা। নিজস্ব ভাষা, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ধারক এ জাতির মানুষ নিজেদের বাস্ক হিসেবে পরিচয় দিতেই গর্ববোধ করে।

একদিকে পর্বত, অন্যদিকে অতল অতলান্তিক মহাসাগরের বিশাল জলরাশির মিলে অপার্থিব নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সবটুকু যেন এখানেই ঘনীভূত হয়েছে। এই অঞ্চলেই ফ্রান্সের বাইওন শহর থেকে ২২ কিলোমিটার বা ১৮ মাইল দূরে পর্বতের কোলে আছে নির্জন, নিভৃত ছোট্ট একটি গ্রাম—স্পোলেত।
প্রায় ৪০০ বছর ধরে এই অঞ্চলের মানুষের জীবন, সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে জড়িয়ে আছে একটি বিশেষে জাতের মরিচ। ফরাসি ভাষায় এর নাম দেওয়া হয়েছে, ‘পিমো দ্য স্পোলেত’ অর্থাৎ স্পোলেতের মরিচ। উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা এর একটি খটমটে নাম দিয়েছেন, তা হলো ক্যাপসিকাম অ্যানুয়াম, প্রকরণ গোরিয়া। ১৬ শতকে স্প্যানিশ পরিব্রাজক খুয়ান সেবাস্তিয়ান এলকানো মেক্সিকো থেকে এই মরিচ ইউরোপের নিয়ে আসেন। সেই ১৬৫০ থেকে এই অঞ্চলের কৃষকেরা পিমো দ্য স্পোলেত নামে এই মরিচ চাষ করতে শুরু করেন।

উজ্জ্বল লাল রঙের, চমৎকার ঘ্রাণের, একটু মিষ্টি ও হালকা ঝালের এই বিশেষ জাতের মরিচ প্রথম দিকে শুধু ঔষধি এবং কাঁচা মাংস সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হতো। পরে গোলমরিচের অভাব পূরণে রান্না করা খাদ্যের স্বাদে আলাদা ব্যঞ্জনা আর ঝাঁজের জন্য ব্যবহার হতে শুরু করলে ফরাসি ও স্প্যানিশদের কাছে এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পিমো দ্য স্পোলেতকে ঘিরে গড়ে ওঠে আলাদা মাত্রার রন্ধনকৌলীন্য, এক সমৃদ্ধ ও সম্পূর্ণ ভিন্ন খাদ্যসংস্কৃতি। এই অঞ্চলের জীবন আবর্তিত হয় এই মরিচ ঘিরে। ফ্রান্স ও স্পেনের মানুষ এবং শেফদের খুব প্রিয় এই বিশেষ জাতের মসলা।
প্রতিবছর, অক্টোবরের শেষ শনি ও রোববার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই ছোট্ট নির্জন গ্রামের নৈঃশব্দ্য ভেঙে ভিড় করে বহু মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে দেশ-বিদেশের মরিচপ্রেমীরা এখানে ভিড় করেন—বসে এক মহা মিলনমেলা। ৫৬ বছর ধরে, অর্থাৎ ১৯৬৯ সাল থেকে এমনটাই চলে আসছে। এমন জাঁকজমক আর জমজমাট আয়োজনের কেন্দ্রে আছে এই বিশেষ জাতের মরিচ।

২৫ অক্টোবর শনিবার, সকাল থেকে স্পোলেত গ্রামে ভিড় বাড়তে থাকে। পাহাড়ি পথ ধরে সারি সারি গাড়ির বহর। বিশাল অঙ্গনে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং চলাচলের সুবিধার জন্য সরকারি বাহিনীর সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবকদের দল গলদঘর্ম হচ্ছে। তারপরেও তাদের মুখে হাসির ঝিলিক। আমরাও মিশে গেলাম বহু ভিনদেশির সঙ্গে। বাদকদের দল বাদ্য বাজিয়ে বিয়েবাড়ির আমেজ সৃষ্টি করছিল। বাস্ক তরুণ-তরুণীরা ঐতিহ্যবাহী নাচে মুগ্ধ করছে আগতদের।
অনেকটা উঁচু এক বিশাল জায়গাজুড়ে স্পোলেতের মরিচ এবং মরিচজাত নানান পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন উৎপাদনকারীরা। হাসিমুখে উৎসুক দর্শনার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন তাঁরা। দেখা হলো মসিয়ঁ পিয়ের ডিহার্চের সঙ্গে। তিনি এসেছেন স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে। বহু বছর ধরে তিনি এই মরিচের চাষ করেন এবং তা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করেন নিজ হাতে। তিনি জানালেন, মোট ১০টি গ্রামে এই মরিচের চাষ হয়। ১৫০ জন কৃষক বছরে প্রায় ১০০ টন মরিচ উৎপাদন করেন। আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ফলন হয়। আরও বললেন, ভিটামিনের ভালো উৎস এই মরিচ হজমশক্তি বাড়ায়। ওজন কমাতে, বিপাকে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

আমাদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল দুই মরিচকন্যার—ক্লারা ও রেবেকা। ছবি তুলতে চাইলে মিষ্টি হেসে রাজি হয়ে গেলেন। বাস্ক তরুণী জুলি, তাঁর মরিচ ও মরিচের পণ্য নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন উৎসবে। অনেকের সঙ্গে দেখা হলো, আলাপ হলো। সবাই খুব আন্তরিক।
পরদিন রোববার একই রকম আয়োজন। শেষ হলো পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে। সেরা মরিচ উৎপাদনকারীকে পুরস্কারের মাধ্যমে সম্মানিত করা হয়।

এ বছর, ২০২৫-এ মরিচের তীর্থে এসেছিলেন প্রায় ২৫ হাজার মরিচ ভোক্তা ও ভক্ত। এমন করেই প্রতিবছর মরিচের প্রার্থনাসংগীত দিয়ে শুরু হয় দুদিনব্যাপী জমজমাট উৎসবের। উদ্যাপিত হয় মরিচের রাজধানীতে পৃথিবীর একমাত্র মরিচ উৎসব।

অথচ তিনি একজন সফল প্রকৌশলী কিংবা একজন ডুবুরিও হতে পারতেন। তাঁর জন্ম হয়েছিল জলের কাছাকাছি, চলনবিল এলাকায়। তিনি এখন পুরোদস্তুর পর্বতারোহী এবং পর্যটক—দুটোই এখন তাঁর নেশা ও পেশা। সম্ভবত তিনিই প্রথম বাংলাদেশি, যিনি পেশা হিসেবে এক্সপেডিশন লিডারের পদ বেছে নিয়েছেন কোনো প্রতিষ্ঠানে।
২৫ জানুয়ারি ২০২৪
যাঁরা প্রতিদিন ওয়ার্কআউট করেন, তাঁদের মনে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়, প্রতিদিনই কি চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত? আবার কী করে চুল বাঁধলে ব্যায়ামের ফলে চুলের গোড়ায় বেশি ঘাম জমবে না, এ নিয়েও অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। আন্তর্জাতিক ‘ভোগ’ ম্যাগাজিন...
৩ ঘণ্টা আগে
শহরের অলিগলিতে এখন কতবেল মাখা বিক্রি হচ্ছে। ঝাল বাড়িয়ে জম্পেশ করে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন থাহলে ঘরেই তৈরি করে নিন জিবে জল আনা কতবেল মাখা। আপনাদের জন্য একটু ভিন্ন স্বাদের কতবেল মাখার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন ‘সেরা রাঁধুনি ১৪২৭’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার্সআপ...
৪ ঘণ্টা আগে
তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা।
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

জিমে ওয়ার্কআউট সেরে বাড়ি ফিরে চুল না ধোয়া পর্যন্ত শান্তি থাকে না। যাঁরা প্রতিদিন ওয়ার্কআউট করেন, তাঁদের মনে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়, প্রতিদিনই কি চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত? আবার কী করে চুল বাঁধলে ব্যায়ামের ফলে চুলের গোড়ায় বেশি ঘাম জমবে না, এ নিয়েও অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। আন্তর্জাতিক ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনের একটি প্রতিবেদনে মিলল এসব প্রশ্নের সমাধান। দেখে নিন একনজরে।
ঢিলেঢালা বেণি করুন

জিম করার সময় অনেকে চুল খোলা রাখেন। এতে করে চুল ভাঙার আশঙ্কা থাকে। আবার যাঁদের মুখে ব্রণ রয়েছে, বারবার চুল মুখে এসে লেগে যাওয়ার ফলে সংক্রমণও হতে পারে। অনেকে আবার খুব টাইট করে উঁচু পনিটেইল করে জিমে যান। তাঁদের চুলের গোড়া বেশি ঘাম জমে। এর ফলে মাথার ত্বকে চুলকানি ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর চেয়ে জিমে যাওয়ার সময় যদি ঢিলেঢালা বেণি বা খোঁপা করে নেওয়া যায়, তাহলে চুলের ভেতর বাতাস চলাচল করতে পারে। এতে চুল খুব বেশি ঘামবে না, আবার চুল ভাঙার আশঙ্কাও থাকবে না।
ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করুন
ঘামের কারণে প্রতিদিন শ্যাম্পু করতে গিয়ে চুল রুক্ষ হয়ে উঠলে ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। ড্রাই শ্যাম্পু স্প্রে করার সময় তালুর এমন জায়গায় স্প্রে করুন যে অংশ বেশি তৈলাক্ত। ড্রাই শ্যাম্পুর বোতল মাথার ত্বক থেকে অন্তত ৯ ইঞ্চি দূরে ধরে স্প্রে করুন। এরপর আঙুলের ডগা দিয়ে মাথার ত্বকে হালকা ম্যাসাজ করে নিন। এতে শ্যাম্পু আরও ভালোভাবে মিশে যাবে। ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করলে সপ্তাহে তিন দিন চুল ধুয়ে নেওয়াই যথেষ্ট।

ভেজা চুলে ব্যায়াম করবেন না
ওয়ার্কআউটের ঠিক আগে গোসল করেছেন? বৃষ্টিতে ভিজে গেছেন? আপনার দিনের ব্যায়াম এখানেই শেষ। কারণ, ভেজা চুলে ব্যায়াম করা ঠিক নয়। ভেজা চুলে ব্যায়াম করার সময় যদি মাথার ত্বক ঘামে, তাহলে চুলের গোড়া নরম হয়ে চুল ঝরে পড়ার আশঙ্কা থাকে। আমাদের চারপাশের দূষণের কারণে বৃষ্টির পানিও ততটা পরিষ্কার নয় এবং এটি আপনার মাথার ত্বকে বসতে দিলে চুলের গোড়ার ক্ষতি এবং খুশকির মতো আরও সমস্যা হতে পারে।
মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখুন
চুলের রুক্ষতা ও শুষ্কতা এড়াতে প্রতিদিন ওয়ার্কআউটের পরে চুল ধুতে নিষেধ করা হয়। তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, না ধোয়া চুল ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের উৎস হতে পারে। এ জন্য মাথার ত্বকের ঘাম মুছে ফেলার জন্য আলাদা তোয়ালে বা টিস্যু ব্যবহার করা জরুরি। যাঁরা ওয়ার্কআউটের পর চুল না ধুয়ে থাকতে পারেন না, তাঁরা সালফেটমুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। প্রতিবার ধোয়ার পর চুলে স্মুথিং সেরাম ব্যবহার করুন।
ব্যায়াম শেষে চুল ছেড়ে বাতাসে শুকাতে হবে
ওয়ার্কআউটের পর চুল বেঁধে রাখবেন। তখন আপনার মাথার ত্বককে শ্বাস নিতে দিতে হবে এবং ওয়ার্কআউটের সময় তৈরি হওয়া আর্দ্রতা বের করে দিতে হবে। ব্যায়াম শেষে মাথার ত্বকে তাপ ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। সে জন্য ড্রায়ার ব্যবহারের পরিবর্তে ফ্যানের বাতাসে চুল শুকানোর চেষ্টা করুন। এ সময় আঙুল দিয়ে চুলের জট ছাড়ানোর পর চওড়া দাঁতের চিরুনি দিয়ে একবার আঁচড়ে নিন। যদি আপনি ব্লো-ড্রায়ার ব্যবহার করতেই চান, তাহলে কুল এয়ার ব্যবহার করুন। এটি আপনার মাথার ত্বকের আর্দ্রতা শুষে নেবে, কিন্তু চুলকে অতিরিক্ত শুষ্ক করবে না।
জেনে রাখা ভালো
ছবি: পেক্সেলস

জিমে ওয়ার্কআউট সেরে বাড়ি ফিরে চুল না ধোয়া পর্যন্ত শান্তি থাকে না। যাঁরা প্রতিদিন ওয়ার্কআউট করেন, তাঁদের মনে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়, প্রতিদিনই কি চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত? আবার কী করে চুল বাঁধলে ব্যায়ামের ফলে চুলের গোড়ায় বেশি ঘাম জমবে না, এ নিয়েও অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। আন্তর্জাতিক ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনের একটি প্রতিবেদনে মিলল এসব প্রশ্নের সমাধান। দেখে নিন একনজরে।
ঢিলেঢালা বেণি করুন

জিম করার সময় অনেকে চুল খোলা রাখেন। এতে করে চুল ভাঙার আশঙ্কা থাকে। আবার যাঁদের মুখে ব্রণ রয়েছে, বারবার চুল মুখে এসে লেগে যাওয়ার ফলে সংক্রমণও হতে পারে। অনেকে আবার খুব টাইট করে উঁচু পনিটেইল করে জিমে যান। তাঁদের চুলের গোড়া বেশি ঘাম জমে। এর ফলে মাথার ত্বকে চুলকানি ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর চেয়ে জিমে যাওয়ার সময় যদি ঢিলেঢালা বেণি বা খোঁপা করে নেওয়া যায়, তাহলে চুলের ভেতর বাতাস চলাচল করতে পারে। এতে চুল খুব বেশি ঘামবে না, আবার চুল ভাঙার আশঙ্কাও থাকবে না।
ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করুন
ঘামের কারণে প্রতিদিন শ্যাম্পু করতে গিয়ে চুল রুক্ষ হয়ে উঠলে ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। ড্রাই শ্যাম্পু স্প্রে করার সময় তালুর এমন জায়গায় স্প্রে করুন যে অংশ বেশি তৈলাক্ত। ড্রাই শ্যাম্পুর বোতল মাথার ত্বক থেকে অন্তত ৯ ইঞ্চি দূরে ধরে স্প্রে করুন। এরপর আঙুলের ডগা দিয়ে মাথার ত্বকে হালকা ম্যাসাজ করে নিন। এতে শ্যাম্পু আরও ভালোভাবে মিশে যাবে। ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করলে সপ্তাহে তিন দিন চুল ধুয়ে নেওয়াই যথেষ্ট।

ভেজা চুলে ব্যায়াম করবেন না
ওয়ার্কআউটের ঠিক আগে গোসল করেছেন? বৃষ্টিতে ভিজে গেছেন? আপনার দিনের ব্যায়াম এখানেই শেষ। কারণ, ভেজা চুলে ব্যায়াম করা ঠিক নয়। ভেজা চুলে ব্যায়াম করার সময় যদি মাথার ত্বক ঘামে, তাহলে চুলের গোড়া নরম হয়ে চুল ঝরে পড়ার আশঙ্কা থাকে। আমাদের চারপাশের দূষণের কারণে বৃষ্টির পানিও ততটা পরিষ্কার নয় এবং এটি আপনার মাথার ত্বকে বসতে দিলে চুলের গোড়ার ক্ষতি এবং খুশকির মতো আরও সমস্যা হতে পারে।
মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখুন
চুলের রুক্ষতা ও শুষ্কতা এড়াতে প্রতিদিন ওয়ার্কআউটের পরে চুল ধুতে নিষেধ করা হয়। তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, না ধোয়া চুল ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের উৎস হতে পারে। এ জন্য মাথার ত্বকের ঘাম মুছে ফেলার জন্য আলাদা তোয়ালে বা টিস্যু ব্যবহার করা জরুরি। যাঁরা ওয়ার্কআউটের পর চুল না ধুয়ে থাকতে পারেন না, তাঁরা সালফেটমুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। প্রতিবার ধোয়ার পর চুলে স্মুথিং সেরাম ব্যবহার করুন।
ব্যায়াম শেষে চুল ছেড়ে বাতাসে শুকাতে হবে
ওয়ার্কআউটের পর চুল বেঁধে রাখবেন। তখন আপনার মাথার ত্বককে শ্বাস নিতে দিতে হবে এবং ওয়ার্কআউটের সময় তৈরি হওয়া আর্দ্রতা বের করে দিতে হবে। ব্যায়াম শেষে মাথার ত্বকে তাপ ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। সে জন্য ড্রায়ার ব্যবহারের পরিবর্তে ফ্যানের বাতাসে চুল শুকানোর চেষ্টা করুন। এ সময় আঙুল দিয়ে চুলের জট ছাড়ানোর পর চওড়া দাঁতের চিরুনি দিয়ে একবার আঁচড়ে নিন। যদি আপনি ব্লো-ড্রায়ার ব্যবহার করতেই চান, তাহলে কুল এয়ার ব্যবহার করুন। এটি আপনার মাথার ত্বকের আর্দ্রতা শুষে নেবে, কিন্তু চুলকে অতিরিক্ত শুষ্ক করবে না।
জেনে রাখা ভালো
ছবি: পেক্সেলস

অথচ তিনি একজন সফল প্রকৌশলী কিংবা একজন ডুবুরিও হতে পারতেন। তাঁর জন্ম হয়েছিল জলের কাছাকাছি, চলনবিল এলাকায়। তিনি এখন পুরোদস্তুর পর্বতারোহী এবং পর্যটক—দুটোই এখন তাঁর নেশা ও পেশা। সম্ভবত তিনিই প্রথম বাংলাদেশি, যিনি পেশা হিসেবে এক্সপেডিশন লিডারের পদ বেছে নিয়েছেন কোনো প্রতিষ্ঠানে।
২৫ জানুয়ারি ২০২৪
প্রতিবছর, অক্টোবরের শেষ শনি ও রোববার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই ছোট্ট নির্জন গ্রামের নৈঃশব্দ্য ভেঙে ভিড় করে বহু মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে দেশ-বিদেশের মরিচপ্রেমীরা এখানে ভিড় করেন—বসে এক মহা মিলনমেলা। ৫৬ বছর ধরে, অর্থাৎ ১৯৬৯ সাল থেকে এমনটাই চলে আসছে। এমন জাঁকজমক আর জমজমাট আয়োজনের কেন্দ্রে আছে এই বিশেষ...
২ ঘণ্টা আগে
শহরের অলিগলিতে এখন কতবেল মাখা বিক্রি হচ্ছে। ঝাল বাড়িয়ে জম্পেশ করে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন থাহলে ঘরেই তৈরি করে নিন জিবে জল আনা কতবেল মাখা। আপনাদের জন্য একটু ভিন্ন স্বাদের কতবেল মাখার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন ‘সেরা রাঁধুনি ১৪২৭’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার্সআপ...
৪ ঘণ্টা আগে
তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা।
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

শহরের অলিগলিতে এখন কতবেল মাখা বিক্রি হচ্ছে। ঝাল বাড়িয়ে জম্পেশ করে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন থাহলে ঘরেই তৈরি করে নিন জিবে জল আনা কতবেল মাখা। আপনাদের জন্য একটু ভিন্ন স্বাদের কতবেল মাখার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন ‘সেরা রাঁধুনি ১৪২৭’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার্সআপ ও রন্ধনশিল্পী মরিয়ম হোসেন নূপুর।
উপকরণ
পাকা কতবেল ১টি, লেবুর রস ১ চা-চামচ, চিনি ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ মিহি কুচি ১টি, লবণ এক চিমটি, বিট লবণ ১ চা-চামচের ৪ ভাগের ১ ভাগ, ধনেপাতাকুচি ১ চা-চামচ, পুদিনাপাতার কুচি আধা চা-চামচ, সরিষার তেল ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি
একটি পাত্রে কতবেল ও লেবুর রস বাদে বাকি উপকরণ একসঙ্গে মেখে নিতে হবে। এরপর মসলার মিশ্রণের সঙ্গে কতবেল আর লেবুর রস দিয়ে মেখে পরিবেশন করতে হবে।

শহরের অলিগলিতে এখন কতবেল মাখা বিক্রি হচ্ছে। ঝাল বাড়িয়ে জম্পেশ করে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন থাহলে ঘরেই তৈরি করে নিন জিবে জল আনা কতবেল মাখা। আপনাদের জন্য একটু ভিন্ন স্বাদের কতবেল মাখার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন ‘সেরা রাঁধুনি ১৪২৭’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার্সআপ ও রন্ধনশিল্পী মরিয়ম হোসেন নূপুর।
উপকরণ
পাকা কতবেল ১টি, লেবুর রস ১ চা-চামচ, চিনি ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ মিহি কুচি ১টি, লবণ এক চিমটি, বিট লবণ ১ চা-চামচের ৪ ভাগের ১ ভাগ, ধনেপাতাকুচি ১ চা-চামচ, পুদিনাপাতার কুচি আধা চা-চামচ, সরিষার তেল ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি
একটি পাত্রে কতবেল ও লেবুর রস বাদে বাকি উপকরণ একসঙ্গে মেখে নিতে হবে। এরপর মসলার মিশ্রণের সঙ্গে কতবেল আর লেবুর রস দিয়ে মেখে পরিবেশন করতে হবে।

অথচ তিনি একজন সফল প্রকৌশলী কিংবা একজন ডুবুরিও হতে পারতেন। তাঁর জন্ম হয়েছিল জলের কাছাকাছি, চলনবিল এলাকায়। তিনি এখন পুরোদস্তুর পর্বতারোহী এবং পর্যটক—দুটোই এখন তাঁর নেশা ও পেশা। সম্ভবত তিনিই প্রথম বাংলাদেশি, যিনি পেশা হিসেবে এক্সপেডিশন লিডারের পদ বেছে নিয়েছেন কোনো প্রতিষ্ঠানে।
২৫ জানুয়ারি ২০২৪
প্রতিবছর, অক্টোবরের শেষ শনি ও রোববার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই ছোট্ট নির্জন গ্রামের নৈঃশব্দ্য ভেঙে ভিড় করে বহু মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে দেশ-বিদেশের মরিচপ্রেমীরা এখানে ভিড় করেন—বসে এক মহা মিলনমেলা। ৫৬ বছর ধরে, অর্থাৎ ১৯৬৯ সাল থেকে এমনটাই চলে আসছে। এমন জাঁকজমক আর জমজমাট আয়োজনের কেন্দ্রে আছে এই বিশেষ...
২ ঘণ্টা আগে
যাঁরা প্রতিদিন ওয়ার্কআউট করেন, তাঁদের মনে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়, প্রতিদিনই কি চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত? আবার কী করে চুল বাঁধলে ব্যায়ামের ফলে চুলের গোড়ায় বেশি ঘাম জমবে না, এ নিয়েও অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। আন্তর্জাতিক ‘ভোগ’ ম্যাগাজিন...
৩ ঘণ্টা আগে
তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা।
৮ ঘণ্টা আগেরজত কান্তি রায়, ঢাকা

তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা। কুরুলিয়া নদী যেখানে তিতাসের সঙ্গে মিলিত হলো, সেটাই গোকর্ণ গ্রাম তথা এখনকার গোকর্ণ ঘাট—অদ্বৈত মল্লবর্মণের জন্মভিটা। এখন আর বস্তুগত চিহ্ন নেই, আছে স্মৃতি। শোনা গেল, তাঁর দূরসম্পর্কের এক নাতি আছেন সেখানে। আর কেউ নেই। মল্লবাবু বহু আগে তখনকার রাজধানী শহর কলকাতায় চলে গিয়েছিলেন, ভাগ্যের অন্বেষণে। আমরা যেমন এখন দূরদূরান্ত থেকে রাজধানী ঢাকায় এসে ভিড় জমাই।
এখানে নদীর ওপর মস্ত প্রাচীরঘেরা গুদাম। সেটির ছোট ছোট মিনারে বসে আছে তিনটি বালক আর একটি কাক। অদ্বৈত মল্লবর্মণ একদিন সম্ভবত এই বালকদের মতোই ছিলেন—দুরন্ত। অথবা এই বালকেরাই হয়তো তাঁর কিশোর, সুবল, অনন্ত কিংবা বনমালীদের এই প্রজন্মের সংস্করণ।
কেমন ছিল অদ্বৈতের তিতাস? তিনি লিখেছেন, ‘তার কূলজোড়া জল, বুকভরা ঢেউ, প্রাণভরা উচ্ছ্বাস। স্বপ্নের ছন্দে সে বহিয়া যায়। ভোরের হাওয়ায় তার তন্দ্রা ভাঙ্গে, দিনের সূর্য তাকে তাতায়; রাতে চাঁদ ও তাঁরারা তাকে নিয়া ঘুম পাড়াইতে বসে, কিন্তু পারে না।’ বর্ষা থেকে হেমন্ত তিতাস হয়তো তেমনই থাকে। অন্তত হেমন্তের তিতাস দেখে তাই মনে হলো। কিন্তু বছরের বাকি সময় সে যক্ষ্মার রোগী—শুনেছি তার বুকে তখন গরু চরে।
গোকর্ণ ঘাট ছাড়তেই তিতাসের আকার সাগরের মতো! সঙ্গে মিশেছে হাওর। স্থানীয়দের সহায়তা ছাড়া চেনার উপায় নেই—কোনটা হাওর আর কোনটা নদী। এই বিশাল বিস্তারেই বসতি ছিল অদ্বৈত মল্লবর্মণের। নইলে তেমন নভেল লেখা যায়!
আমরা এগিয়ে চলেছি। সূর্য তখনো কুয়াশা আর মেঘের সঙ্গে লড়াই করছে। সকাল আটটাও বাজেনি। আমাদের পাড়ি দিতে হবে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ। তিতাস থেকে বুড়িগঙ্গা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকার সদরঘাট। এত দীর্ঘ পথ এর আগে কখনো পাড়ি দিইনি নৌকায়। ভয়, উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ—সব একসঙ্গে ঘিরে আছে। কারণ, সামনে পাড়ি দিতে হবে মেঘনা—দ্য গ্রেট মেঘনা!
নদীর নাম পাগলা। তিতাসের শরীর থেকে বেরিয়ে ডানে চলে গেছে। এখানে গ্রামের নাম রসুলপুর, রতনপুর ইত্যাদি। নদী থেকে আটপৌরে দৃশ্যের বাইরে গ্রাম বা শহর দেখা যায়। তার একটা মজা আছে। তবে নদীতে বসে জলজ জীবন দেখাই দস্তুর। তাই দেখতে দেখতে আমরা এগিয়ে চলেছি।
পাগলা নদী পেরিয়ে গেলাম। তিতাস এখানে বেশ প্রশস্ত। আমাদের উল্টো দিক থেকে অনেক নৌকা আসছে। গতিতে আমাদের পেছনে ফেলেও এগিয়ে যাচ্ছে অনেক নৌকা। তার বেশির ভাগই মালবাহী। প্রচুর কচুরিপানা। তাতে এখনো ফুল ফোটেনি। কৌতূহলী হয়ে দেখলাম, সেগুলো মূলত ঘের। মাছ ধরার প্রাকৃতিক ব্যবস্থা। ছোট ছোট নৌকায় জেলেরা সেগুলোতে মাছ ধরছে।
আমরা এগিয়ে চলেছি সদরঘাটের দিকে। ইঞ্চি ইঞ্চি করে দূরত্ব কমছে। কমলে কী হবে, এ পথ ফুরোতে সময় লাগবে পাক্কা দশ ঘণ্টা। মোবাইল ফোনের ঘড়ি দেখি—মাত্র ঘণ্টাখানেক এগিয়েছি। শোনা গেল, সামনেই মেঘনা। উত্তেজনার পারদ বাড়ল খানিক।
এই যাত্রার আয়োজন করেছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নদী রক্ষা আন্দোলনের অনন্যসাধারণ সংগঠন ‘তরী’। তাদের দাবি, পুরোনো এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া নৌপথ আবার সচল করতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার? আইইউসিএনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬০ সালে দেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার। পরের তিন দশকে তা কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার কিলোমিটারে। বিআইডব্লিউটিএর তথ্য, ষাটের দশকে নদীপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪ হাজার কিলোমিটার। গত ছয় দশকে তা নেমে এসেছে মাত্র ৬ হাজার কিলোমিটারে। শুকনো মৌসুমে তা-ও কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৩৪৭ কিলোমিটারে। তরীর দাবি, নৌপথগুলো পুনরুদ্ধার করতে হবে, দেশ বাঁচাতে। সেই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ঢাকা থেকে ট্রেনযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সেখান থেকে নৌকাযোগে ঢাকা উদ্দেশে যাত্রা।
জায়গাটা বিশাল। চারদিকে পানি আর পানি। বাল্কহেডের সংখ্যা যেন বেড়ে গেছে হঠাৎ করে। মাছ ধরার নৌকাগুলোর আকারও বদলেছে। বোটের অভিজ্ঞরা জানালেন, আমরা মেঘনায় চলে এসেছি। অর্থাৎ তিতাস পাড়ি দেওয়া শেষ। এখন আমাদের মেঘনা পাড়ি দিতে হবে।
অথই জলে এখানে ভাসছে প্লাস্টিকের তৈরি দিকনির্দেশক। রাতে তাতে বাতি জ্বলে। বড় বড় ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বাল্কহেডে ভরা হচ্ছে। শত শত বাল্কহেড সেই বালু নিয়ে পাড়ি দিচ্ছে বিভিন্ন দিকে। বেশির ভাগের গন্তব্য ঢাকা। আমাদের বোট এগিয়ে চলেছে। মহাসড়কে যেমন বাস-ট্রাক আর ছোট ছোট ব্যক্তিগত গাড়ির সারি থাকে, এখানে বাল্ডহেডের সারিও অনেকটা তেমনই। একটার পেছনে একটা, শত শত! মাঝি দক্ষ হাতে বোট সামলে চলেছেন। মাঝে কদাচিৎ দেখা যাচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকা আর স্পিডবোট। কোথাও ঘাটে বাঁধা দেখলাম পুরোনো এক গয়না নৌকা। একসময় এগুলো নদীপথে দাপিয়ে বেড়াত পণ্য নিয়ে। এখন সে বিগত যৌবনা।
মেঘনা এক পবিত্র নদী। বরাক উপত্যকার সুরমা ও কুশিয়ারা এক হয়ে যে প্রবাহ তৈরি করেছে, তার নাম কালনী। ভাটিতে এর নাম মেঘনা। তাতে এসে মিশেছে হিমালয়ের মানস সরোবরের জল, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র হয়ে। তারও ভাটিতে মেঘনার সঙ্গে মিলেছে পদ্মা। তারপর চলে গেছে সাগরপানে। আমরা এই পদ্মাসঙ্গমের আগেই হাতের ডানে চলে গেলাম। সেখানে দুটি নদী দুদিকে বেরিয়ে গেছে—একটি শীতলক্ষ্যা, অন্যটি ধলেশ্বরী। এখানে অসংখ্য বাল্কহেড আর মাদার ভ্যাসেলের টার্মিনাল। ধলেশ্বরী ধরে এগিয়ে গিয়ে পড়লাম বুড়িগঙ্গায়। সে পথে সদরঘাট।
টানা ১০ ঘণ্টার যাত্রা। পথে নৌকাতেই রান্না ও খাওয়া। সদরঘাটের দিকে যতই এগিয়ে চলেছি, পানির রং ততই কালো হয়ে উঠছে। বুঝতে পারছি, বহু ব্যবহারে জীর্ণ বুড়িগঙ্গা। কিন্তু নদী থেকে রাজধানী শহর দেখতে সুন্দর।

তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা। কুরুলিয়া নদী যেখানে তিতাসের সঙ্গে মিলিত হলো, সেটাই গোকর্ণ গ্রাম তথা এখনকার গোকর্ণ ঘাট—অদ্বৈত মল্লবর্মণের জন্মভিটা। এখন আর বস্তুগত চিহ্ন নেই, আছে স্মৃতি। শোনা গেল, তাঁর দূরসম্পর্কের এক নাতি আছেন সেখানে। আর কেউ নেই। মল্লবাবু বহু আগে তখনকার রাজধানী শহর কলকাতায় চলে গিয়েছিলেন, ভাগ্যের অন্বেষণে। আমরা যেমন এখন দূরদূরান্ত থেকে রাজধানী ঢাকায় এসে ভিড় জমাই।
এখানে নদীর ওপর মস্ত প্রাচীরঘেরা গুদাম। সেটির ছোট ছোট মিনারে বসে আছে তিনটি বালক আর একটি কাক। অদ্বৈত মল্লবর্মণ একদিন সম্ভবত এই বালকদের মতোই ছিলেন—দুরন্ত। অথবা এই বালকেরাই হয়তো তাঁর কিশোর, সুবল, অনন্ত কিংবা বনমালীদের এই প্রজন্মের সংস্করণ।
কেমন ছিল অদ্বৈতের তিতাস? তিনি লিখেছেন, ‘তার কূলজোড়া জল, বুকভরা ঢেউ, প্রাণভরা উচ্ছ্বাস। স্বপ্নের ছন্দে সে বহিয়া যায়। ভোরের হাওয়ায় তার তন্দ্রা ভাঙ্গে, দিনের সূর্য তাকে তাতায়; রাতে চাঁদ ও তাঁরারা তাকে নিয়া ঘুম পাড়াইতে বসে, কিন্তু পারে না।’ বর্ষা থেকে হেমন্ত তিতাস হয়তো তেমনই থাকে। অন্তত হেমন্তের তিতাস দেখে তাই মনে হলো। কিন্তু বছরের বাকি সময় সে যক্ষ্মার রোগী—শুনেছি তার বুকে তখন গরু চরে।
গোকর্ণ ঘাট ছাড়তেই তিতাসের আকার সাগরের মতো! সঙ্গে মিশেছে হাওর। স্থানীয়দের সহায়তা ছাড়া চেনার উপায় নেই—কোনটা হাওর আর কোনটা নদী। এই বিশাল বিস্তারেই বসতি ছিল অদ্বৈত মল্লবর্মণের। নইলে তেমন নভেল লেখা যায়!
আমরা এগিয়ে চলেছি। সূর্য তখনো কুয়াশা আর মেঘের সঙ্গে লড়াই করছে। সকাল আটটাও বাজেনি। আমাদের পাড়ি দিতে হবে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ। তিতাস থেকে বুড়িগঙ্গা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকার সদরঘাট। এত দীর্ঘ পথ এর আগে কখনো পাড়ি দিইনি নৌকায়। ভয়, উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ—সব একসঙ্গে ঘিরে আছে। কারণ, সামনে পাড়ি দিতে হবে মেঘনা—দ্য গ্রেট মেঘনা!
নদীর নাম পাগলা। তিতাসের শরীর থেকে বেরিয়ে ডানে চলে গেছে। এখানে গ্রামের নাম রসুলপুর, রতনপুর ইত্যাদি। নদী থেকে আটপৌরে দৃশ্যের বাইরে গ্রাম বা শহর দেখা যায়। তার একটা মজা আছে। তবে নদীতে বসে জলজ জীবন দেখাই দস্তুর। তাই দেখতে দেখতে আমরা এগিয়ে চলেছি।
পাগলা নদী পেরিয়ে গেলাম। তিতাস এখানে বেশ প্রশস্ত। আমাদের উল্টো দিক থেকে অনেক নৌকা আসছে। গতিতে আমাদের পেছনে ফেলেও এগিয়ে যাচ্ছে অনেক নৌকা। তার বেশির ভাগই মালবাহী। প্রচুর কচুরিপানা। তাতে এখনো ফুল ফোটেনি। কৌতূহলী হয়ে দেখলাম, সেগুলো মূলত ঘের। মাছ ধরার প্রাকৃতিক ব্যবস্থা। ছোট ছোট নৌকায় জেলেরা সেগুলোতে মাছ ধরছে।
আমরা এগিয়ে চলেছি সদরঘাটের দিকে। ইঞ্চি ইঞ্চি করে দূরত্ব কমছে। কমলে কী হবে, এ পথ ফুরোতে সময় লাগবে পাক্কা দশ ঘণ্টা। মোবাইল ফোনের ঘড়ি দেখি—মাত্র ঘণ্টাখানেক এগিয়েছি। শোনা গেল, সামনেই মেঘনা। উত্তেজনার পারদ বাড়ল খানিক।
এই যাত্রার আয়োজন করেছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নদী রক্ষা আন্দোলনের অনন্যসাধারণ সংগঠন ‘তরী’। তাদের দাবি, পুরোনো এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া নৌপথ আবার সচল করতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার? আইইউসিএনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬০ সালে দেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার। পরের তিন দশকে তা কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার কিলোমিটারে। বিআইডব্লিউটিএর তথ্য, ষাটের দশকে নদীপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪ হাজার কিলোমিটার। গত ছয় দশকে তা নেমে এসেছে মাত্র ৬ হাজার কিলোমিটারে। শুকনো মৌসুমে তা-ও কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৩৪৭ কিলোমিটারে। তরীর দাবি, নৌপথগুলো পুনরুদ্ধার করতে হবে, দেশ বাঁচাতে। সেই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ঢাকা থেকে ট্রেনযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সেখান থেকে নৌকাযোগে ঢাকা উদ্দেশে যাত্রা।
জায়গাটা বিশাল। চারদিকে পানি আর পানি। বাল্কহেডের সংখ্যা যেন বেড়ে গেছে হঠাৎ করে। মাছ ধরার নৌকাগুলোর আকারও বদলেছে। বোটের অভিজ্ঞরা জানালেন, আমরা মেঘনায় চলে এসেছি। অর্থাৎ তিতাস পাড়ি দেওয়া শেষ। এখন আমাদের মেঘনা পাড়ি দিতে হবে।
অথই জলে এখানে ভাসছে প্লাস্টিকের তৈরি দিকনির্দেশক। রাতে তাতে বাতি জ্বলে। বড় বড় ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বাল্কহেডে ভরা হচ্ছে। শত শত বাল্কহেড সেই বালু নিয়ে পাড়ি দিচ্ছে বিভিন্ন দিকে। বেশির ভাগের গন্তব্য ঢাকা। আমাদের বোট এগিয়ে চলেছে। মহাসড়কে যেমন বাস-ট্রাক আর ছোট ছোট ব্যক্তিগত গাড়ির সারি থাকে, এখানে বাল্ডহেডের সারিও অনেকটা তেমনই। একটার পেছনে একটা, শত শত! মাঝি দক্ষ হাতে বোট সামলে চলেছেন। মাঝে কদাচিৎ দেখা যাচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকা আর স্পিডবোট। কোথাও ঘাটে বাঁধা দেখলাম পুরোনো এক গয়না নৌকা। একসময় এগুলো নদীপথে দাপিয়ে বেড়াত পণ্য নিয়ে। এখন সে বিগত যৌবনা।
মেঘনা এক পবিত্র নদী। বরাক উপত্যকার সুরমা ও কুশিয়ারা এক হয়ে যে প্রবাহ তৈরি করেছে, তার নাম কালনী। ভাটিতে এর নাম মেঘনা। তাতে এসে মিশেছে হিমালয়ের মানস সরোবরের জল, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র হয়ে। তারও ভাটিতে মেঘনার সঙ্গে মিলেছে পদ্মা। তারপর চলে গেছে সাগরপানে। আমরা এই পদ্মাসঙ্গমের আগেই হাতের ডানে চলে গেলাম। সেখানে দুটি নদী দুদিকে বেরিয়ে গেছে—একটি শীতলক্ষ্যা, অন্যটি ধলেশ্বরী। এখানে অসংখ্য বাল্কহেড আর মাদার ভ্যাসেলের টার্মিনাল। ধলেশ্বরী ধরে এগিয়ে গিয়ে পড়লাম বুড়িগঙ্গায়। সে পথে সদরঘাট।
টানা ১০ ঘণ্টার যাত্রা। পথে নৌকাতেই রান্না ও খাওয়া। সদরঘাটের দিকে যতই এগিয়ে চলেছি, পানির রং ততই কালো হয়ে উঠছে। বুঝতে পারছি, বহু ব্যবহারে জীর্ণ বুড়িগঙ্গা। কিন্তু নদী থেকে রাজধানী শহর দেখতে সুন্দর।

অথচ তিনি একজন সফল প্রকৌশলী কিংবা একজন ডুবুরিও হতে পারতেন। তাঁর জন্ম হয়েছিল জলের কাছাকাছি, চলনবিল এলাকায়। তিনি এখন পুরোদস্তুর পর্বতারোহী এবং পর্যটক—দুটোই এখন তাঁর নেশা ও পেশা। সম্ভবত তিনিই প্রথম বাংলাদেশি, যিনি পেশা হিসেবে এক্সপেডিশন লিডারের পদ বেছে নিয়েছেন কোনো প্রতিষ্ঠানে।
২৫ জানুয়ারি ২০২৪
প্রতিবছর, অক্টোবরের শেষ শনি ও রোববার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই ছোট্ট নির্জন গ্রামের নৈঃশব্দ্য ভেঙে ভিড় করে বহু মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে দেশ-বিদেশের মরিচপ্রেমীরা এখানে ভিড় করেন—বসে এক মহা মিলনমেলা। ৫৬ বছর ধরে, অর্থাৎ ১৯৬৯ সাল থেকে এমনটাই চলে আসছে। এমন জাঁকজমক আর জমজমাট আয়োজনের কেন্দ্রে আছে এই বিশেষ...
২ ঘণ্টা আগে
যাঁরা প্রতিদিন ওয়ার্কআউট করেন, তাঁদের মনে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়, প্রতিদিনই কি চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত? আবার কী করে চুল বাঁধলে ব্যায়ামের ফলে চুলের গোড়ায় বেশি ঘাম জমবে না, এ নিয়েও অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। আন্তর্জাতিক ‘ভোগ’ ম্যাগাজিন...
৩ ঘণ্টা আগে
শহরের অলিগলিতে এখন কতবেল মাখা বিক্রি হচ্ছে। ঝাল বাড়িয়ে জম্পেশ করে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন থাহলে ঘরেই তৈরি করে নিন জিবে জল আনা কতবেল মাখা। আপনাদের জন্য একটু ভিন্ন স্বাদের কতবেল মাখার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন ‘সেরা রাঁধুনি ১৪২৭’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার্সআপ...
৪ ঘণ্টা আগে