Ajker Patrika

এভারেস্ট অভিযানে ড্রোন

ফিচার ডেস্ক  
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৪, ০৮: ৫৩
Thumbnail image

সর্বোচ্চ পর্বতচূড়া অভিযানে নতুন যুগে প্রবেশ করতে চলেছে পৃথিবী। ইতিমধ্যে গত এপ্রিল মাসে তার সফল টেকনিক্যাল মহড়াও শেষ হয়ে গেছে। এতে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ভবিষ্যতে এভারেস্ট অভিযানে শেরপাদের কষ্ট কমাবে ড্রোনের ব্যবহার।

এভারেস্ট অভিযানে এবার যোগ হলো ড্রোন। গত এপ্রিল মাসে ফ্লাইকার্ট ৩০ নামে একটি ড্রোন এভারেস্টের বেসক্যাম্প থেকে ক্যাম্প ১-এ সফলভাবে কিছু সরঞ্জাম বয়ে নিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, ড্রোন পরিষেবা চালু করার মাধ্যমে এভারেস্টে আরোহণ, উদ্ধার অভিযান এবং পরিবেশ সুরক্ষা প্রচেষ্টার বিভিন্ন কাজ আরও সহজ হয়ে যাবে।

বেইজিংভিত্তিক সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, পরীক্ষামূলক সে যাত্রায় ড্রোনটি বহন করে তিনটি অক্সিজেনের বোতল এবং দেড় কিলোগ্রাম অন্যান্য সরঞ্জাম। ফিরতি পথে ফ্লাইকার্ট ৩০ সঙ্গে বয়ে আনে অভিযাত্রীদের ফেলে আসা বর্জ্য। পরীক্ষামূলক এই অভিযান পরিচালনা করেছিল প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ডিজেআই। সহায়তায় ছিল নেপালি প্রতিষ্ঠান এয়ারলিফ্ট, ভিডিও প্রযোজনা সংস্থা এইটকেআরএডব্লিউ এবং স্থানীয় গাইডরা।

ড্রোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ডিজেআই দাবি করেছে, হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রা এবং প্রবল বাতাস সত্ত্বেও রাউন্ড ট্রিপের সময় ড্রোনটি প্রায় ৬ হাজার ২০০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছেছিল। যাত্রা শেষেও এর ৪৩ শতাংশ ব্যাটারিশক্তি অবশিষ্ট ছিল বলে জানা যায়। প্রযুক্তিগত ব্যাখ্যা থেকে বোঝা যায়, ফ্লাইকার্ট ৩০ নামের এই ড্রোনগুলো তৈরি করা হয়েছে দুর্গম এলাকায় ভারী সরঞ্জাম পরিবহনের জন্য। এগুলোর সর্বোচ্চ বহনক্ষমতা ১৫ কিলোগ্রাম বা ৩৩ পাউন্ড। এ ড্রোনগুলো মাইনাস ১৫ ডিগ্রি থেকে ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় কাজ করতে সক্ষম। বিশেষ এ ড্রোনগুলোর আছে হোভার স্ট্যাবিলিটি, বায়ু প্রতিরোধক্ষমতা, নিম্ন তাপমাত্রায় কাজ করা এবং ভারী ওজন বহনের ক্ষমতা।

এ ড্রোনগুলো মূলত পর্বতারোহীদের নিরাপত্তা ও সহায়তার জন্য তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিজেআই। এতে শেরপাদের কাজ অনেকটা কমিয়ে আনা যাবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। অক্সিজেনের বোতল, গ্যাসের ক্যানিস্টার, তাঁবু, খাবার এবং দড়ির মতো জিনিসপত্র সরবরাহ করতে শেরপাদের মৌসুমে ৩০ বার পর্যন্ত বরফে ঢাকা হিমালয়ের দুর্গম পথ অতিক্রম করতে হয়। প্রতিবছর অনেক শেরপা এ কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারান। এ ছাড়া সঠিক সময়ে সঠিক লোকেশন না জানার কারণে অনেক সময় আটকে পড়া পর্বতারোহীদের উদ্ধারকাজে বিলম্ব ঘটে বলে প্রাণহানির ঝুঁকি  বাড়ে। ড্রোনের সঠিক ব্যবহারে প্রাণহানির ঝুঁকি কমিয়ে আনা এবং অভিযাত্রীদের ফেলে আসা বর্জ্য দ্রুত অপসারণ সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান।

সফল পরীক্ষার পর এভারেস্টের দক্ষিণে ডেলিভারি অপারেশন স্থাপনের জন্য নেপাল সরকার একটি স্থানীয় ড্রোন পরিষেবা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সংস্থা জানিয়েছে, এই পরিষেবা সফলভাবে চালু হলে ড্রোনগুলো এভারেস্টে মানুষের প্রভাব কমিয়ে আনবে। এই বিশাল পর্বতে আরোহণের সঙ্গে জড়িত সবার নিরাপত্তা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যোগ করবে নতুন মাত্রা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত