Ajker Patrika

আশা করেছিলাম বিদেশি পর্যটক বেশি হবে

মনজুরুল ইসলাম
আশা করেছিলাম বিদেশি পর্যটক বেশি হবে

শুরু হয়েছে পর্যটন মৌসুম। এ নিয়ে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)-এর সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশীর সঙ্গে কথা বলেছেন ‘আজকের পত্রিকা’র বিশেষ প্রতিনিধি মনজুরুল ইসলাম

প্রশ্ন: নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পর্যটন মৌসুম। কীভাবে ভাবছেন এ মৌসুম নিয়ে?
উত্তর: এ সময়টায় যা চলছে তা আমাদের জন্য বিপর্যয়ই বলতে পারেন। আমরা পর্যটন ব্যবসায়ীরা বছরের আট মাস অপেক্ষা করি এই চার মাসের জন্য। সে সময়ে এসে এই সমস্যা শুরু হলো। কাজেই আমরা চাই, পলিটিক্যাল স্ট্যাবিলিটি হোক। উভয় পক্ষ ছাড় দিয়ে একটা সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করুক। আমাদের পর্যটন-সম্পর্কিত প্রায় ৪০ লাখ জনগণের রুটিরুজি এর সঙ্গে জড়িত, তাদের রুটিরুজি নিশ্চিত হোক।

প্রশ্ন: নভেম্বরের অর্ধেক শেষ। দুই-তিন সপ্তাহে আমাদের পর্যটনস্পটগুলোর অবস্থা কী দেখছেন?
উত্তর: একেবারেই শূন্যের কাছাকাছি। কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন থেকে শুরু করে সুন্দরবন—সব জায়গাতেই আগের যেসব বুকিং ছিল, সেগুলোও বাতিল হয়েছে। আর নতুন কোনো বুকিং তো হয়ইনি। 

প্রশ্ন: এ বছর বিদেশি পর্যটক পাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?
উত্তর: আমরা আশা করেছিলাম বিদেশি পর্যটক বেশি হবে। কারণ ২০২২ সালে বিদেশি টুরিস্ট ভালো পেয়েছি। পরিসংখ্যানটা পাঁচ লাখের মতো। এবার প্রত্যাশা ছিল আরও বেশি টুরিস্ট পাব। কিন্তু অনেক বুকিং ইতিমধ্যেই বাতিল হয়ে গেছে। পরিস্থিতি যদি এভাবেই চলতে থাকে বুকিং আরও বাতিল হতে থাকবে। তখন প্রত্যাশা পূরণ হবে না—এমন আশঙ্কা আমরা বোধ করছি।

প্রশ্ন: আমাদের পর্যটন এলাকায় যে হোটেল-রিসোর্টগুলো আছে, এ সময়টাকে লক্ষ্য করেই তারা জায়গাগুলো সাজায়। কর্মসংস্থানটাও নির্ভর করে এর ওপর। এই যে দুই-তিন মাসের বুকিং বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আপনি বলছেন, কর্মসংস্থানের ওপর এর কী ধরনের প্রভাব পড়বে?
উত্তর: নিশ্চয়ই কর্মসংস্থানের ওপরে এর প্রভাব পড়বে। খণ্ডকালীন যাদের রিক্রুট করে থাকি, তাদের এমন পরিস্থিতিতে আমরা বাদ দেব। আর যাদের রিক্রুট করিনি, তাদের রিক্রুটমেন্ট স্থগিত রাখব। যারা খণ্ডকালীন বা সিজনাল কর্মচারী, তাদের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে।

প্রশ্ন: আপনাদের এবং কর্মচারীদের এই ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কিছু জানিয়েছিলেন কি? 
উত্তর: না। ট্যাক্সেশনের জন্য ছাড় দেওয়ার দাবি আমাদের বরাবরই আছে। কিন্তু এই বিশেষ পরিস্থিতির জন্য আমরা এমন কোনো দাবি করিনি। বিষয়টি আমাদের অবজারভেশনে আছে যে পরিস্থিতি যদি এমন কনটিনিউ করে, তখন আমরা বাধ্য হব  বিষয়গুলো তুলে ধরতে।

প্রশ্ন: অনেক হোটেল বা রিসোর্ট আছে যেগুলো ব্যাংক লোন নিয়ে বা বিভিন্ন জায়গা থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে বিনিয়োগ করে, তাদের কী অবস্থা?
উত্তর: এ অবস্থাটা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো। এমনিতেই লোন অনেক বড় একটা বার্ডেন। কস্ট অনেক। বিজনেস যদি বন্ধ থাকে সে ক্ষেত্রে এটা গলার ফাঁস হয়ে দেখা দেয়। কাজেই এটা আমাদের জন্য প্রচণ্ড চাপ বলা যায়। কারণ ব্যাংক তো আমাকে কোনো ছাড় দেবে না। আমাকে কন্টিনিউ করতে হবে। এটা আসলে অনেক কঠিন, কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে। 

প্রশ্ন: পর্যটন ব্যবসায়ীদের নেতা হিসেবে পর্যটকদের জন্য এই মুহূর্তে আপনার পরামর্শ কী?
উত্তর: এই পরিস্থিতিতে তাদের ভ্রমণ করতে আহ্বান করতে পারি না। কারণ একটা পর্যটন সংগঠন হতে গেলে প্রথম শর্ত, ওখানে আকর্ষণ থাকতে হবে, দুই নম্বর শর্ত নিরাপত্তা থাকতে হবে, তিন নম্বর হলো যোগাযোগব্যবস্থা থাকতে হবে। এখন দুই আর তিন কিন্তু অনুপস্থিত। কাজেই এই পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বা যোগাযোগ না থাকলেও পর্যটনের জন্য আহ্বান জানাতে পারব না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত