ঈদে রিসোর্টে বাস
শিবব্রত বর্মন
উঠান জুড়ে একটা বড়ই গাছ। দুপুরের রোদে-হাওয়ায় তিরতির করে কাঁপছে পাতা। শানবাঁধানো ছায়ায় ঝরে পড়া বড়ই। শৈশবের গ্রামের বাড়ির উঠানের কথা মনে করিয়ে দেয়। কিন্তু আমি বসে আছি সমুদ্রের ধারে একটি নির্জন কটেজে, যার নাম ‘ব্লু রেডিও’। সামনে নিচু দেয়ালের ওপারে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত। জায়গাটা হিমছড়ি পেরিয়ে প্যাঁচার দ্বীপ অংশে। আমি বসে আছি মারমেইড বিচ রিসোর্টের কটেজে।
এ রকম ব্যতিক্রমী আর কৌতুহলকাড়া নাম এক একটা কটেজের। পাশেই আরেকটা কটেজের নাম ‘আইস লেমন ফ্যামিলি’। আরেকটা কটেজের নাম ‘সল্ট ওয়াটার কেক’।
মারমেইডের নাম অনেক দিন ধরেই শুনেছি। এবার এসে বুঝতে পারলাম, বন্ধুবান্ধবেরা কেন বলে অবকাশকে নীরবতা আর নিভৃতির হাতে সঁপে দিতে চাইলে এর চেয়ে ভালো জায়গা আর হয় না। কক্সবাজার শহর সংলগ্ন বিচের শোরগোল ছাড়িয়ে এ জায়গাটা অনেকখানি দূরে। একবার এর নিচু দেয়ালঘেরা চৌহদ্দিতে প্রবেশ করলে পেছনে পড়ে থাকে জগতের যাবতীয় কোলাহল, ব্যস্ততা আর অবসাদ। একই সঙ্গে যেন বিদায় নেয় ঘড়ির কাঁটাও। মারমেইডের ভেতরে সময় গড়ায় প্রহরের হিসাব ধরে।
আমরা যে কটেজে উঠেছিলাম, সেটায় উঠান জুড়ে বড়ইতলার পাশে একটা জাকুজি পন্ড। প্রশস্ত বারান্দায় বসে সামনে দিগন্ত জোড়া সমুদ্র চোখে পড়ে। উঠান পেরিয়ে কোমর সমান নিচু গেট ঠেলে সৈকতের দিকে এগিয়ে দেখি আদিগন্ত নিভৃত চরাচর। সামনে একটা খাল বা নদী– রেজু খাল। বালিয়াড়ির মধ্যে যেন পড়ে আছে নদীটা। তার ওপারে নীল সমুদ্র শান্ত হয়ে বসে আছে সারাটা দুপুর। রেজু খাল এখানেই এসে সাগরের সঙ্গে মিশে গেছে।
মারমেইড একটা গ্রামই যেন– আয়তনে এবং চেহারায়। কটেজগুলোর মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে যাওয়া পথ। পথের দুপাশে নানারকম শিল্পকর্ম। সুফি শিল্পী রনি আহম্মেদের ভাস্কর্য আর নানারকম ইনস্টলেশন চারদিকে ছড়ানো। দেয়ালে দেয়ালে তারই চিত্রকর্মের নানান পরিচিত মোটিফ। রিসোর্টের মাঝখানে এক বিশাল কংক্রিটের কচ্ছপ– ‘দ্য কসমিক টার্টল’। সেটার দিকে তাকিয়ে মনে হয় মহাবিশ্বের এক গূঢ় রহস্য নিয়ে বসে আছে এক মৌন সন্ন্যাসী।
মারমেইডের এ বিচ রিসোর্টকে দুটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। এক দিকে ছড়ানো গ্রামের মহল্লার মতো কটেজ। আরেকদিকে সার্ভিস এলাকা। সেখানে একটা প্রশস্ত রেস্তোরাঁ। তার বাইরে ছড়ানো চত্বরে কয়েকটি ছাউনিতে বিভিন্ন আইটেমের খাবার। রেস্তোরাঁর স্থাপত্য নজর কাড়ল। এর একপাশের দেয়াল আসলে সমুদ্রগামী জাহাজের জানালা। কড়িকাঠ এবং থামগুলো পুরোনো জাহাজের পরিত্যক্ত উপকরণ। পুরো রিসোর্ট জুড়েই জাহাজের নানান উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীতে। আর গাছপালা? বেশির ভাগ গাছই এখানে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠেছে। রিসোর্টের লোকজন কেবল সেগুলোকে যত্ন করেছে নিয়মিত।
সমুদ্রের দিকে মুখ করা খোলা মাঠে ছড়ানো কয়েকটা খোলা বাংলো ঘরে আসন পাতা। তাতে বসে থেকে অলস আড্ডায় সময় কেটে যায়। খাল বেয়ে নৌকা নিয়ে ভেসে যাওয়া যায় উজানে বা ভাটিতে। ভাটির দিকে কিছু দূর গেলে চোখে পড়ে এই বিচ রিসোর্টেরই আগের উদ্যোগ– মারমেইড ইকো রিসোর্ট। আরও উজানে গেলে টিলার ওপর একটা রেস্তোরাঁ।
বিকেলে বিচের দিকে মুখ করে খোলা মাঠে চেয়ার পেতে বসে চা খেতে খেতে সূর্যাস্ত দেখছিলাম। একটা টকটকে লাল বলয় ডুবে যাওয়ার আগে বিদায় জানাচ্ছে। দূরে অলস ভেসে চলা নৌকাগুলোর গায়ে কে যেন লেপে দিয়েছে লাল রং।
উল্টোদিকে একটা চাঁদ উঠে আসছে। পূর্ণিমার আরও কয়েক দিন বাকি। একটু আফসোস হলো, যখন জানলাম, পূর্ণিমায় একটা বিশেষ আয়োজন থাকে রিসোর্টের। রাতের বেলা নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন অতিথিরা। খালের মধ্যে চলে আলোর নানারকম খেলা।
খোলা মাঠে বসে থেকে ভুলেই যাচ্ছিলাম, কোথায় আছি। যেন সব লোকালয় ছাড়িয়ে আসা পৃথিবীর এক নিভৃত গ্রামে বসে আছি, যে গ্রামের কোনো নাম নেই, ভৌগোলিক অবস্থান নেই।
উঠান জুড়ে একটা বড়ই গাছ। দুপুরের রোদে-হাওয়ায় তিরতির করে কাঁপছে পাতা। শানবাঁধানো ছায়ায় ঝরে পড়া বড়ই। শৈশবের গ্রামের বাড়ির উঠানের কথা মনে করিয়ে দেয়। কিন্তু আমি বসে আছি সমুদ্রের ধারে একটি নির্জন কটেজে, যার নাম ‘ব্লু রেডিও’। সামনে নিচু দেয়ালের ওপারে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত। জায়গাটা হিমছড়ি পেরিয়ে প্যাঁচার দ্বীপ অংশে। আমি বসে আছি মারমেইড বিচ রিসোর্টের কটেজে।
এ রকম ব্যতিক্রমী আর কৌতুহলকাড়া নাম এক একটা কটেজের। পাশেই আরেকটা কটেজের নাম ‘আইস লেমন ফ্যামিলি’। আরেকটা কটেজের নাম ‘সল্ট ওয়াটার কেক’।
মারমেইডের নাম অনেক দিন ধরেই শুনেছি। এবার এসে বুঝতে পারলাম, বন্ধুবান্ধবেরা কেন বলে অবকাশকে নীরবতা আর নিভৃতির হাতে সঁপে দিতে চাইলে এর চেয়ে ভালো জায়গা আর হয় না। কক্সবাজার শহর সংলগ্ন বিচের শোরগোল ছাড়িয়ে এ জায়গাটা অনেকখানি দূরে। একবার এর নিচু দেয়ালঘেরা চৌহদ্দিতে প্রবেশ করলে পেছনে পড়ে থাকে জগতের যাবতীয় কোলাহল, ব্যস্ততা আর অবসাদ। একই সঙ্গে যেন বিদায় নেয় ঘড়ির কাঁটাও। মারমেইডের ভেতরে সময় গড়ায় প্রহরের হিসাব ধরে।
আমরা যে কটেজে উঠেছিলাম, সেটায় উঠান জুড়ে বড়ইতলার পাশে একটা জাকুজি পন্ড। প্রশস্ত বারান্দায় বসে সামনে দিগন্ত জোড়া সমুদ্র চোখে পড়ে। উঠান পেরিয়ে কোমর সমান নিচু গেট ঠেলে সৈকতের দিকে এগিয়ে দেখি আদিগন্ত নিভৃত চরাচর। সামনে একটা খাল বা নদী– রেজু খাল। বালিয়াড়ির মধ্যে যেন পড়ে আছে নদীটা। তার ওপারে নীল সমুদ্র শান্ত হয়ে বসে আছে সারাটা দুপুর। রেজু খাল এখানেই এসে সাগরের সঙ্গে মিশে গেছে।
মারমেইড একটা গ্রামই যেন– আয়তনে এবং চেহারায়। কটেজগুলোর মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে যাওয়া পথ। পথের দুপাশে নানারকম শিল্পকর্ম। সুফি শিল্পী রনি আহম্মেদের ভাস্কর্য আর নানারকম ইনস্টলেশন চারদিকে ছড়ানো। দেয়ালে দেয়ালে তারই চিত্রকর্মের নানান পরিচিত মোটিফ। রিসোর্টের মাঝখানে এক বিশাল কংক্রিটের কচ্ছপ– ‘দ্য কসমিক টার্টল’। সেটার দিকে তাকিয়ে মনে হয় মহাবিশ্বের এক গূঢ় রহস্য নিয়ে বসে আছে এক মৌন সন্ন্যাসী।
মারমেইডের এ বিচ রিসোর্টকে দুটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। এক দিকে ছড়ানো গ্রামের মহল্লার মতো কটেজ। আরেকদিকে সার্ভিস এলাকা। সেখানে একটা প্রশস্ত রেস্তোরাঁ। তার বাইরে ছড়ানো চত্বরে কয়েকটি ছাউনিতে বিভিন্ন আইটেমের খাবার। রেস্তোরাঁর স্থাপত্য নজর কাড়ল। এর একপাশের দেয়াল আসলে সমুদ্রগামী জাহাজের জানালা। কড়িকাঠ এবং থামগুলো পুরোনো জাহাজের পরিত্যক্ত উপকরণ। পুরো রিসোর্ট জুড়েই জাহাজের নানান উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীতে। আর গাছপালা? বেশির ভাগ গাছই এখানে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠেছে। রিসোর্টের লোকজন কেবল সেগুলোকে যত্ন করেছে নিয়মিত।
সমুদ্রের দিকে মুখ করা খোলা মাঠে ছড়ানো কয়েকটা খোলা বাংলো ঘরে আসন পাতা। তাতে বসে থেকে অলস আড্ডায় সময় কেটে যায়। খাল বেয়ে নৌকা নিয়ে ভেসে যাওয়া যায় উজানে বা ভাটিতে। ভাটির দিকে কিছু দূর গেলে চোখে পড়ে এই বিচ রিসোর্টেরই আগের উদ্যোগ– মারমেইড ইকো রিসোর্ট। আরও উজানে গেলে টিলার ওপর একটা রেস্তোরাঁ।
বিকেলে বিচের দিকে মুখ করে খোলা মাঠে চেয়ার পেতে বসে চা খেতে খেতে সূর্যাস্ত দেখছিলাম। একটা টকটকে লাল বলয় ডুবে যাওয়ার আগে বিদায় জানাচ্ছে। দূরে অলস ভেসে চলা নৌকাগুলোর গায়ে কে যেন লেপে দিয়েছে লাল রং।
উল্টোদিকে একটা চাঁদ উঠে আসছে। পূর্ণিমার আরও কয়েক দিন বাকি। একটু আফসোস হলো, যখন জানলাম, পূর্ণিমায় একটা বিশেষ আয়োজন থাকে রিসোর্টের। রাতের বেলা নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন অতিথিরা। খালের মধ্যে চলে আলোর নানারকম খেলা।
খোলা মাঠে বসে থেকে ভুলেই যাচ্ছিলাম, কোথায় আছি। যেন সব লোকালয় ছাড়িয়ে আসা পৃথিবীর এক নিভৃত গ্রামে বসে আছি, যে গ্রামের কোনো নাম নেই, ভৌগোলিক অবস্থান নেই।
পান্তা খাওয়ার আমাদের প্রাচীন সংস্কৃতি। তবে বৈশাখের প্রথম দিন সকালে পান্তা খাওয়া শহুরে সংস্কৃতির নতুন সংযোজন। বাংলাদেশে এ খাবার প্রায় সারা বছর খাওয়া হয়। পান্তা শরীরের জন্য উপকারী। এতে ভিটামিন বি থাকে। তবে এর পরিমাণ এবং উৎস ফারমেনটেশন প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে। সাধারণ ভাতে (বিশেষ করে সাদা চালে) ভি
২ দিন আগেএখন রোদের যে তাপ তাতে ত্বকের সঙ্গে ঘামছে মাথার ত্বক বা স্ক্য়াল্পও। সে কারণে ঘাম জমে আঠালো ও রুক্ষ হয়ে যায় চুল। তার গোড়ায় দীর্ঘক্ষণ ঘাম জমে থাকলে ঠান্ডা লেগে মাথাব্যথা তো হতেই পারে, সঙ্গে হতে পারে মাথার ত্বকে চুলকানি। এ ছাড়া ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে দেখা দিতে পারে নানান সমস্যা। গরমে এই সমস্যা কমবেশি
৩ দিন আগেদক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করা দেশের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম। ২০২৪ সালে দেশটিতে প্রায় ১ কোটি ৭৫ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটন বাজারে ভিয়েতনামের এমন আধিপত্য দীর্ঘদিনের, যেটিকে আরও এগিয়ে নিতে চাচ্ছে দেশটির সরকার।
৪ দিন আগেবিশাল মরুভূমি, নীল সমুদ্র আর উঁচু পাহাড়ঘেরা সৌদি আরব এখন রোমাঞ্চপ্রেমী পর্যটকদের নতুন গন্তব্য। দেশটির ভৌগোলিক বৈচিত্র্য এতটাই যে সেখানে মরুভূমিতে বালুর ঢেউয়ে গাড়ি চালানো যায়, সমুদ্রে ডাইভিং করা যায়, আবার চাইলে পাহাড়ের মাঝে হারিয়েও যাওয়া যায়।
৪ দিন আগে