ফিচার ডেস্ক
প্রতিবছর শত শত মানুষ এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার জন্য যান। এই যাত্রায় প্রতিবছর বিভিন্ন ঘটনার নীরব সাক্ষী হয়ে থাকে পৃথিবীর এই সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। ২০১৯ সালের এক ছবিতে দেখা যায়, শত শত পর্বতারোহী এক সরু ঢালে সারিতে দাঁড়িয়ে আছেন চূড়ায় ওঠার অপেক্ষায়। দৃশ্যটি যেন এক সতর্কবার্তা। এভারেস্টে দিন দিন ভিড় বাড়ছে। সেখানে অভিজ্ঞদের পাশাপাশি অনভিজ্ঞরাও ভিড় জমাচ্ছে। ফল—অতিরিক্ত ভিড় আর মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি।
২০২৩ সালের সামিট মৌসুমে চূড়ায় উঠতে গিয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়। এক মৌসুমে মৃত্যুর এটি রেকর্ড। ২০২৪ সালে ৯০০ জন পান সামিটের অনুমতিপত্র। তাঁদের মধ্যে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়।
৮ হাজার মিটার ওপরে ভয়ংকর ‘ডেথ জোন’ শুরু হয়। সেখানে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ সমুদ্রপৃষ্ঠের এক-তৃতীয়াংশ মাত্র। এই উচ্চতায় শরীরের কোষ ধীরে ধীরে মরে যেতে শুরু করে। মস্তিষ্ক ও ফুসফুসে তরল জমে। ফলে দেখা দেয় হ্যালুসিনেশন এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর আশঙ্কা তৈরি হয়।
উচ্চতার সঙ্গে শরীরের প্রতিক্রিয়া
» ৫ হাজার মিটার ওপরে: মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা ও বমি ভাব শুরু হয়।
» ৬ হাজার মিটার ওপরে: ডিহাইড্রেশন, নাক দিয়ে রক্ত পড়া ও হ্যালুসিনেশন দেখা দিতে পারে।
» ৭ হাজার মিটার ওপরে: হাত, পা, নাক, কান বা ঠোঁটে মারাত্মক ফ্রস্টবাইটের ঝুঁকি তৈরি হয়।
» ৮ হাজার মিটার ওপরে: ডেথ জোন। অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্ক ফুলে যায় এবং নিচের সব ঝুঁকি আরও মারাত্মক হয়ে ওঠে।
এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার প্রতিটি পদক্ষেপ যেন এক যুদ্ধ। প্রতিটি নিশ্বাসের জন্য লড়তে হয় সেখানে।
প্রকৃতি নয়, বিপদ এখন মানুষের তৈরি
অক্সিজেনের অভাব ছাড়াও রয়েছে তুষারধস, গভীর বরফ খাত, ঘণ্টায় শত কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া এবং মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ঠান্ডার ঝুঁকি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন বড় বিপদ হলো ভিড়। ডেথ জোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার কারণে অক্সিজেন শেষ হয়ে যেতে থাকে। শরীর জমে যায় ঠান্ডায়, আর সামান্য ভুলই হয়ে ওঠে মৃত্যুফাঁদ।
আবর্জনার পাহাড়ে ঢাকা
বাণিজ্যিক অভিযানের দাপটে আরেকটি ভয়াবহ সমস্যা তৈরি হয়েছে। তা হলো প্রতি মৌসুমে পড়ে থাকে টন টন বর্জ্য। সেগুলোর মধ্যে আছে ব্যবহৃত অক্সিজেন সিলিন্ডার, ছেঁড়া তাঁবু, ক্যানজাত খাবার, এমনকি মানববর্জ্যও। পরিচ্ছন্নতার বিভিন্ন উদ্যোগ সত্ত্বেও এভারেস্টকে এখন অনেকে ‘বিশ্বের সর্বোচ্চ আবর্জনার স্তূপ’ বলছেন।
২০২৪ সালে নেপাল সেনাবাহিনী এভারেস্ট, লোৎসে ও নুপসে থেকে ১১ টন বর্জ্য, ৪টি মৃতদেহ এবং একটি কঙ্কাল উদ্ধার করে।
নতুন নিয়ম, পুরোনো প্রশ্ন
বিপর্যয় মোকাবিলায় নেপালের সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে পর্বতারোহণের অনুমতিপত্র সীমিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। ২০২৪ সাল থেকে বিদেশিদের জন্য প্রধান মৌসুমে (মার্চ-মে) অনুমতিপত্রের ফি ৩৬ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ হাজার ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের অনেকে সন্দিহান এই ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে। কারণ, এভারেস্ট অভিযানেই ব্যয় হয় ১ লাখ ডলারের বেশি। তাই কয়েক হাজার ডলার বাড়ানোয় অর্থবান অভিযাত্রীদের উৎসাহ কমবে না। হিমালয়ান রেসকিউ অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্য বলেছেন, ‘সমস্যা শুধু সংখ্যায় নয়, দক্ষতা আর অভিজ্ঞতার ঘাটতিতেও। তাই এভারেস্টের চূড়ায় যাঁরা উঠতে চান, তাঁদের জন্য যোগ্যতার ক্ষেত্রে ভিন্ন নিয়ম থাকা উচিত।’
মানবের জয় বনাম প্রকৃতির সীমা
মানুষের জয় করার প্রবল ইচ্ছা ও প্রকৃতির সহনশীলতার সীমা—এই দুইয়ের মধ্যে এখন দাঁড়িয়ে আছে এভারেস্ট। স্থিতিশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটন ব্যবস্থা না গড়ে তুললে ঝুঁকিতে পড়বে শুধু প্রকৃতি নয়, সেই সঙ্গে প্রাণও হারাবেন অনেক স্বপ্নবাজ অভিযাত্রী।
সূত্র: বিবিসি
প্রতিবছর শত শত মানুষ এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার জন্য যান। এই যাত্রায় প্রতিবছর বিভিন্ন ঘটনার নীরব সাক্ষী হয়ে থাকে পৃথিবীর এই সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। ২০১৯ সালের এক ছবিতে দেখা যায়, শত শত পর্বতারোহী এক সরু ঢালে সারিতে দাঁড়িয়ে আছেন চূড়ায় ওঠার অপেক্ষায়। দৃশ্যটি যেন এক সতর্কবার্তা। এভারেস্টে দিন দিন ভিড় বাড়ছে। সেখানে অভিজ্ঞদের পাশাপাশি অনভিজ্ঞরাও ভিড় জমাচ্ছে। ফল—অতিরিক্ত ভিড় আর মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি।
২০২৩ সালের সামিট মৌসুমে চূড়ায় উঠতে গিয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়। এক মৌসুমে মৃত্যুর এটি রেকর্ড। ২০২৪ সালে ৯০০ জন পান সামিটের অনুমতিপত্র। তাঁদের মধ্যে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়।
৮ হাজার মিটার ওপরে ভয়ংকর ‘ডেথ জোন’ শুরু হয়। সেখানে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ সমুদ্রপৃষ্ঠের এক-তৃতীয়াংশ মাত্র। এই উচ্চতায় শরীরের কোষ ধীরে ধীরে মরে যেতে শুরু করে। মস্তিষ্ক ও ফুসফুসে তরল জমে। ফলে দেখা দেয় হ্যালুসিনেশন এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর আশঙ্কা তৈরি হয়।
উচ্চতার সঙ্গে শরীরের প্রতিক্রিয়া
» ৫ হাজার মিটার ওপরে: মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা ও বমি ভাব শুরু হয়।
» ৬ হাজার মিটার ওপরে: ডিহাইড্রেশন, নাক দিয়ে রক্ত পড়া ও হ্যালুসিনেশন দেখা দিতে পারে।
» ৭ হাজার মিটার ওপরে: হাত, পা, নাক, কান বা ঠোঁটে মারাত্মক ফ্রস্টবাইটের ঝুঁকি তৈরি হয়।
» ৮ হাজার মিটার ওপরে: ডেথ জোন। অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্ক ফুলে যায় এবং নিচের সব ঝুঁকি আরও মারাত্মক হয়ে ওঠে।
এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার প্রতিটি পদক্ষেপ যেন এক যুদ্ধ। প্রতিটি নিশ্বাসের জন্য লড়তে হয় সেখানে।
প্রকৃতি নয়, বিপদ এখন মানুষের তৈরি
অক্সিজেনের অভাব ছাড়াও রয়েছে তুষারধস, গভীর বরফ খাত, ঘণ্টায় শত কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া এবং মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ঠান্ডার ঝুঁকি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন বড় বিপদ হলো ভিড়। ডেথ জোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার কারণে অক্সিজেন শেষ হয়ে যেতে থাকে। শরীর জমে যায় ঠান্ডায়, আর সামান্য ভুলই হয়ে ওঠে মৃত্যুফাঁদ।
আবর্জনার পাহাড়ে ঢাকা
বাণিজ্যিক অভিযানের দাপটে আরেকটি ভয়াবহ সমস্যা তৈরি হয়েছে। তা হলো প্রতি মৌসুমে পড়ে থাকে টন টন বর্জ্য। সেগুলোর মধ্যে আছে ব্যবহৃত অক্সিজেন সিলিন্ডার, ছেঁড়া তাঁবু, ক্যানজাত খাবার, এমনকি মানববর্জ্যও। পরিচ্ছন্নতার বিভিন্ন উদ্যোগ সত্ত্বেও এভারেস্টকে এখন অনেকে ‘বিশ্বের সর্বোচ্চ আবর্জনার স্তূপ’ বলছেন।
২০২৪ সালে নেপাল সেনাবাহিনী এভারেস্ট, লোৎসে ও নুপসে থেকে ১১ টন বর্জ্য, ৪টি মৃতদেহ এবং একটি কঙ্কাল উদ্ধার করে।
নতুন নিয়ম, পুরোনো প্রশ্ন
বিপর্যয় মোকাবিলায় নেপালের সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে পর্বতারোহণের অনুমতিপত্র সীমিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। ২০২৪ সাল থেকে বিদেশিদের জন্য প্রধান মৌসুমে (মার্চ-মে) অনুমতিপত্রের ফি ৩৬ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ হাজার ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের অনেকে সন্দিহান এই ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে। কারণ, এভারেস্ট অভিযানেই ব্যয় হয় ১ লাখ ডলারের বেশি। তাই কয়েক হাজার ডলার বাড়ানোয় অর্থবান অভিযাত্রীদের উৎসাহ কমবে না। হিমালয়ান রেসকিউ অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্য বলেছেন, ‘সমস্যা শুধু সংখ্যায় নয়, দক্ষতা আর অভিজ্ঞতার ঘাটতিতেও। তাই এভারেস্টের চূড়ায় যাঁরা উঠতে চান, তাঁদের জন্য যোগ্যতার ক্ষেত্রে ভিন্ন নিয়ম থাকা উচিত।’
মানবের জয় বনাম প্রকৃতির সীমা
মানুষের জয় করার প্রবল ইচ্ছা ও প্রকৃতির সহনশীলতার সীমা—এই দুইয়ের মধ্যে এখন দাঁড়িয়ে আছে এভারেস্ট। স্থিতিশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটন ব্যবস্থা না গড়ে তুললে ঝুঁকিতে পড়বে শুধু প্রকৃতি নয়, সেই সঙ্গে প্রাণও হারাবেন অনেক স্বপ্নবাজ অভিযাত্রী।
সূত্র: বিবিসি
বিদেশ ভ্রমণের আনন্দ ধরে রাখতে চাইলে কিছুটা পরিকল্পনা, সময়জ্ঞান ও সচেতনতা প্রয়োজন। দীর্ঘ সারি, লাগেজের ঝামেলা, সময়মতো না পৌঁছানো, এমনকি বোর্ডিং পাস হারানোর মতো সাধারণ ভুল যাত্রাকে করে তুলতে পারে বিরক্তিকর। কিছু ছোট প্রস্তুতি ও সচেতনতা পুরো ভ্রমণ অভিজ্ঞতাকে বদলে দিতে পারে।...
২ ঘণ্টা আগেএভারেস্ট জয়ের আগ্রহ অনেকের থাকে। প্রতিবছর এখানে আরোহীর সংখ্যা বাড়ে। যদিও নেপাল সরকার কিছু নীতি নির্ধারণ করে দিয়েছে। যেমন আগে অন্তত ৭ হাজার মিটার কোনো পর্বতারোহণের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৫ ঘণ্টা আগেবিশ্ব পর্যটনশিল্পের অন্যতম আয়োজন স্কিফট গ্লোবাল ফোরাম ইস্টের চতুর্থ আসর এবার বসবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে। ভ্রমণ প্ল্যাটফর্ম স্কিফটের সঙ্গে এটি যৌথভাবে আয়োজন করছে আবুধাবির সংস্কৃতি ও পর্যটন বিভাগ। এটি অনুষ্ঠিত হবে চলতি মাসের ২৯ ও ৩০ তারিখ।
৫ ঘণ্টা আগেএককথায় প্রশ্নটির উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। কেননা ইস্তাম্বুলের কিছু বিষয় আছে ব্যয়বহুল, আবার কিছু বিষয় আছে তুলনামূলক খুবই সস্তা। আবার কিছু বিষয় আছে ফেয়ার প্রাইজ।
৭ ঘণ্টা আগে