Ajker Patrika

ইউরোপের প্রাচীন পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়

মইনুল হাসান, ফ্রান্স
ইউরোপের প্রাচীন  পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়

বলা হয়ে থাকে, ইউনিভার্সিটি বা বিশ্ববিদ্যালয় ধারণাটির উদ্ভব হয়েছিল ইউরোপের মাটিতে। এটাও বলা হয়, বিশ্বের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছিল ইউরোপে। মানবসভ্যতার উন্নয়ন ও উৎকর্ষ সাধনে শিক্ষা, গবেষণা, ইতিহাস, দর্শনচর্চার বিকল্প নেই। অথচ একটি সময় ছিল, যখন এমন সুসংগঠিত বিদ্যাপীঠের অস্তিত্ব ছিল না। ইউরোপে হাজার বছরের প্রাচীন বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আজও সেগুলো সমান দ্যুতি ছড়াচ্ছে, আলোকিত করছে জগৎ। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছেন এখন।

বোলোগনা বিশ্ববিদ্যালয়
ইতালির বোলোগনায় অবস্থিত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছিল ১০৮৮ সালে। বলা হয়, ইউরোপের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় এটি। আজও একটি মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষালয় হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে বোলোগনা বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা 
প্রায় ৮০ হাজার। রেডিওর আবিষ্কারক মার্কনি এবং স্কুডেরিয়া ফেরারির প্রতিষ্ঠাতা এনজো ফেরারি এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছিলেন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় 
ইউরোপের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম করলে এ প্রতিষ্ঠানকে মোটেই এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। যতটুকু জানা যায়, ১০৯৬ সাল থেকে পরিচিতি লাভ করে আজও একটি মর্যাদাপূর্ণ বিদ্যাপীঠ হিসেবে সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে সক্ষম হয়েছে অক্সফোর্ড। টাইমস হায়ার এডুকেশনের বিবেচনায়, ২০১৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত একনাগাড়ে সাত বছর বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করে আছে। বর্তমানে অক্সফোর্ডে ১৬০টি দেশের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছেন ২৮ জন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, ৩০ জন আন্তর্জাতিক নেতা, ৫৫ জন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী এবং ১২০ জন অলিম্পিক পদক বিজয়ী।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন।সালামানকা বিশ্ববিদ্যালয়
স্পেনের এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয় ১১৩৪ সালে। জ্ঞান-বিজ্ঞানচর্চার এমন উজ্জ্বল পাদপীঠকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ২৮ হাজার ইনস্টিটিউট। দেশ-বিদেশের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী-গবেষক সালামানকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যস্ত সময় কাটান জ্ঞানচর্চা করে। এ প্রতিষ্ঠানে পড়া অনেক গুণী শিক্ষার্থীর অন্যতম পানামার প্রেসিডেন্ট অ্যারিস্টিডেস রায়ো।

প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়
এই প্রাচীন বিদ্যাপীঠ ফ্রান্সের প্যারিসে স্থাপিত হয়েছিল ১১৬০ সালে। মধ্যযুগ থেকেই ধর্মতত্ত্ব ও দর্শনচর্চার তীর্থ ছিল প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়। তবে ১৭৯৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় এক শতাব্দী পর ১৮৯৬ সালে আবার চালু হয় এটি। ১৯৭০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ১২টি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভক্ত করা হয়। বিভিন্ন দেশের প্রায় ৫২ হাজার ছাত্রছাত্রী এবং ৪ হাজার ৫০০ শিক্ষক-গবেষক এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন মেরি এবং পিয়েরে কুরি। এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অর্জন 
করেছেন ৪৯টি নোবেল পুরস্কার।

পাদোয়া বিশ্ববিদ্যালয়
এটি ইতালির আরেকটি প্রাচীন বিদ্যাপীঠ। স্থাপিত হয়েছিল ১২২২ সালে। এর দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস মুখর হয় দেশ-বিদেশের শিক্ষার্থী,পণ্ডিত, গবেষকদের দৃপ্ত পদচারণে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫৮ হাজার। শতাব্দীর পর শতাব্দী ইউরোপের গণ্ডি ছাড়িয়ে এ প্রতিষ্ঠানের দীপ্তি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। বিশ্ববিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিকোলাস কোপার্নিকাস ছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত