ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন

পৃথিবীর উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক উপকরণটি হলো শ্রম। আর নিরলস শ্রমের পরাকাষ্ঠা যারা বহন করেন তাঁরাই শ্রমিক। ইসলামে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা যথাযথভাবে স্বীকৃত। ইবনে মাজাহর হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) ওফাতকালীন যে উপদেশ দিয়েছেন তা হলো, তোমরা নামাজ এবং অধীনস্থদের ব্যাপারে সাবধান থেকো। এখানে অধীনস্থ বলতে কাজের লোক বা শ্রমিক—যারা কারও অধীনে শ্রমের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আঞ্জাম দিয়ে থাকেন তাঁদের বোঝানো হয়েছে।
শ্রমের গুরুত্ব সম্পর্কে একটি ঐতিহাসিক তথ্য খুবই প্রাসঙ্গিক। তা হলো, নবী-রাসুলগণের প্রায় সকলেই প্রত্যক্ষভাবে শ্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। মুসনাদে আহমদের হাদিস মতে, সব নবী-রাসুলই মেষ চড়িয়েছেন; এমনকি শ্রেষ্ঠ নবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজেও মেষ চড়াতেন। শ্রমের অনেক ফজিলতের কথাও হাদিসে এসেছে। বুখারির হাদিস মতে, কারও কাছে হাত পাতার চেয়ে কারও বোঝা বহন করে রোজগার করা উত্তম। কেউ কিছু দিক আর না দিক, কারও কাছে কিছু চাওয়ার চেয়ে নিজ পিঠে করে কাঠের বোঝা নিয়ে বাজারে বিক্রি করা অনেক ভালো। এখানেও সেই শ্রমেরই গুরুত্ব ফুটে ওঠে। বিখ্যাত বুজুর্গ ও ইসলামি পণ্ডিতেরা নিজেদের নামের সঙ্গে আত্তার বা আতর ব্যবসায়ী, খাব্বাজ বা রুটি ব্যবসায়ী, কাত্তান বা তুলা উৎপাদনকারী প্রভৃতি পেশাভিত্তিক উপাধি ধারণ করতে দ্বিধাবোধ করেননি।
আবু দাউদের হাদিস মতে, যে ব্যক্তি আয়-রোজগারের জন্য শ্রম ব্যয় করবে সে যেন আল্লাহর পথে জিহাদে রত রয়েছে। কেউ যদি তার সন্তান বা স্ত্রী অথবা বাবা-মায়ের জীবিকা নির্বাহের জন্য কোনো কাজে লিপ্ত থাকে তবে সে নিঃসন্দেহে আল্লাহর পথেই বিচরণ করছে। তাবরানির হাদিস মতে, ক্লান্ত-শ্রান্ত অবস্থায় যে শ্রমিক সন্ধ্যাযাপন করল, সে নিঃসন্দেহে যাবতীয় অপরাধ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে সন্ধ্যা অতিক্রম করল। একজন শ্রমিকের জন্য এটি সর্বোত্তম এক প্রণোদনা—যা ইসলাম তাকে দিয়েছে।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজেকে শ্রমিক শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করে পৃথিবীর সকল শ্রমিককে ধন্য ও মর্যাদাশীল করেছেন। তিনি তাঁর প্রিয়তমা কন্যা ফাতেমাকে একজন উত্তম শ্রমিকের কাছে পাত্রস্থ করেছিলেন; যিনি শিক্ষা ও বীরত্বের দিক থেকেও ছিলেন সমান পারদর্শী। হজরত আলি (রা.) নিজে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসেবে শ্রমিকের জীবন বেছে নিয়েছিলেন। রাসুল (সা.)-এর সবচেয়ে প্রিয় সাহাবি হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) ছিলেন কাপড়ের ব্যবসায়ী, আল্লাহর নবী দাউদ (আ.) নিজেই শ্রমের বিনিময়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। রাসুলের (সা.) ঘোষণা—সর্বোত্তম খাবার সেটিই, যা নিজের হাতে উপার্জিত। বুখারির ভাষ্যমতে, রাসুল (সা.) কিয়ামতের দিন যাদের প্রতিপক্ষ হবেন তাদের মধ্যে এক শ্রেণি হলো—যারা শ্রমিক নিয়োগ করবে এবং শ্রমিকের মাধ্যমে ষোলো আনা কার্যসিদ্ধি করে নেবে কিন্তু শ্রমিককে তার প্রাপ্য মজুরি দেবে না। রাসুল (সা.) যার বা যাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেকে সাব্যস্ত করবেন তাদের অবস্থা বা পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
এখানে সাহাবি হজরত আবু মাসউদ (রা.)-এর জীবনের একটি ঘটনার অবতারণা করতে পারি। মুসলিম শরিফে বিবৃত আছে, আবু মাসউদ একদিন তাঁর এক ক্রীতদাসের গায়ে হাত তোলেন, তাকে মারধর করেন। এরই মধ্যে তিনি শুনতে পান, ‘হে আবু মাসউদ, তোমার ক্রীতদাসের ওপর তোমার যতটা ক্ষমতা আর প্রভাব রয়েছে, তোমার ওপরে তোমার প্রভুর তার চেয়েও বেশি ক্ষমতা ও প্রভাব রয়েছে।’ মাসউদ (রা.) পেছন ফিরে দেখেন তিনি আর কেউ নন; তিনি হচ্ছেন মানবতার পরম সুহৃদ দয়ার নবী মুহাম্মদ (সা.)। মাসউদ (রা.) খুবই লজ্জিত হলেন এবং অধীনস্থ শ্রমিককে মুক্ত করে দিলেন। দয়াল নবী (সা.) বললেন, ‘তুমি যদি একে মুক্ত না করতে, তবে তুমি নিশ্চিতভাবে জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে।’
আবু দাউদ শরিফের হাদিস মতে, শ্রমিকের কোনো অপরাধ হলে তা ক্ষমা করে দিতে হবে। এক সাহাবি জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘হে রাসুল, শ্রমিকের অপরাধ কয়বার ক্ষমা করব?’ রাসুল (সা.) চুপ থাকলেন। আবারও তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, রাসুল (সা.) আবারও চুপ থাকলেন। তৃতীয়বার যখন জিজ্ঞেস করা হলো যে, ‘শ্রমিককে কয়বার মাফ করব?’ রাসুল (সা.) তখন গাম্ভীর্যের সঙ্গে ঘোষণা করলেন, ‘শ্রমিক যদি দিনে সত্তরবারও অপরাধ করে তবে প্রতিবারই তাকে ক্ষমা করে দাও।’
পাশাপাশি রাসুল (সা.) শ্রমিকের ব্যাপারেও সতর্কবার্তা দিয়েছেন যে, শ্রমিক যেন তার মালিকের কাজে কোনো ফাঁকি না দেয়। বরং রাসুল (সা.) বলেন, ‘সেই শ্রমিক উত্তম, যে তার মালিকের কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে শ্রমিক তার মালিকের হক আদায় করবে এবং আল্লাহর হকও আদায় করবে, মহান আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ পুরস্কার দেবেন। কাজে ফাঁকি দিয়ে অথবা শুধু হাজিরা দিয়ে কাজ না করে যে শ্রমিক মজুরি গ্রহণ করবে, সে নিঃসন্দেহে গর্হিত কাজ করল; এ জন্য তার জবাবদিহি করতে হবে এবং কিয়ামতের দিন তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’
শ্রম এবং শ্রমিকের ব্যাপারে মহানবী (সা.)-এর সবচেয়ে তাৎপর্যমণ্ডিত ঘোষণাটি হলো, ‘শ্রমিক মহান আল্লাহর বন্ধু।’ আমরা রাসুল (সা.)-কে জানি আল্লাহর বন্ধু হিসেবে। অথচ মহানবী (সা.) একজন শ্রমিককে তার শ্রমের মর্যাদা ও গুরুত্ব প্রদান করতে গিয়ে তাকে আল্লাহর বন্ধু হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। রাসুল (সা.)-এর অপর তাগিদটি হলো শ্রমিকের প্রাপ্য নিয়ে। তিনি বলেন, ‘শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই তার প্রাপ্য মজুরি পরিশোধ করে দাও।’
মহানবী (সা.)-এর উল্লিখিত দুটি বাণীতে শ্রম ও শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদার বিষয়টি অভূতপূর্ব স্বীকৃতি পেয়েছে। পবিত্র কোরআনের বাণী অনুযায়ী ইসলামের অন্যতম মূলনীতি হচ্ছে, মহান আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না। সুতরাং শ্রম-ঘণ্টা তথা শ্রমিকের কাজের সময়সীমার ব্যাপারেও সংশ্লিষ্টদের সচেতন থাকার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোনোমতেই অধিক পরিশ্রম বা অধিক সময়ের শ্রম কারও ওপরে চাপিয়ে দেওয়া ইসলামসম্মত নয়।
কোরআনে কারিমে শ্রমকে মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। সুরা বালাদের ৪ নম্বর আয়াতে এরশাদ হচ্ছে—‘সুনিশ্চিতভাবে আমি মানুষকে শ্রম নির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।’ এই শ্রম নির্ভরতা বা শ্রমিকের বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর সব মানুষের মধ্যেই রয়েছে। সুতরাং শ্রম এবং শ্রমিকের পেশাটি একটি সর্বজনীন রূপ নেয়। এ কারণে যেকোনো শ্রমকেই আমাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত এবং শ্রমিকের মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় সম্ভাব্য সকল প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি-রাষ্ট্রের এক অনিবার্য অনুষঙ্গ হওয়া চাই।
লেখক: অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

পৃথিবীর উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক উপকরণটি হলো শ্রম। আর নিরলস শ্রমের পরাকাষ্ঠা যারা বহন করেন তাঁরাই শ্রমিক। ইসলামে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা যথাযথভাবে স্বীকৃত। ইবনে মাজাহর হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) ওফাতকালীন যে উপদেশ দিয়েছেন তা হলো, তোমরা নামাজ এবং অধীনস্থদের ব্যাপারে সাবধান থেকো। এখানে অধীনস্থ বলতে কাজের লোক বা শ্রমিক—যারা কারও অধীনে শ্রমের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আঞ্জাম দিয়ে থাকেন তাঁদের বোঝানো হয়েছে।
শ্রমের গুরুত্ব সম্পর্কে একটি ঐতিহাসিক তথ্য খুবই প্রাসঙ্গিক। তা হলো, নবী-রাসুলগণের প্রায় সকলেই প্রত্যক্ষভাবে শ্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। মুসনাদে আহমদের হাদিস মতে, সব নবী-রাসুলই মেষ চড়িয়েছেন; এমনকি শ্রেষ্ঠ নবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজেও মেষ চড়াতেন। শ্রমের অনেক ফজিলতের কথাও হাদিসে এসেছে। বুখারির হাদিস মতে, কারও কাছে হাত পাতার চেয়ে কারও বোঝা বহন করে রোজগার করা উত্তম। কেউ কিছু দিক আর না দিক, কারও কাছে কিছু চাওয়ার চেয়ে নিজ পিঠে করে কাঠের বোঝা নিয়ে বাজারে বিক্রি করা অনেক ভালো। এখানেও সেই শ্রমেরই গুরুত্ব ফুটে ওঠে। বিখ্যাত বুজুর্গ ও ইসলামি পণ্ডিতেরা নিজেদের নামের সঙ্গে আত্তার বা আতর ব্যবসায়ী, খাব্বাজ বা রুটি ব্যবসায়ী, কাত্তান বা তুলা উৎপাদনকারী প্রভৃতি পেশাভিত্তিক উপাধি ধারণ করতে দ্বিধাবোধ করেননি।
আবু দাউদের হাদিস মতে, যে ব্যক্তি আয়-রোজগারের জন্য শ্রম ব্যয় করবে সে যেন আল্লাহর পথে জিহাদে রত রয়েছে। কেউ যদি তার সন্তান বা স্ত্রী অথবা বাবা-মায়ের জীবিকা নির্বাহের জন্য কোনো কাজে লিপ্ত থাকে তবে সে নিঃসন্দেহে আল্লাহর পথেই বিচরণ করছে। তাবরানির হাদিস মতে, ক্লান্ত-শ্রান্ত অবস্থায় যে শ্রমিক সন্ধ্যাযাপন করল, সে নিঃসন্দেহে যাবতীয় অপরাধ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে সন্ধ্যা অতিক্রম করল। একজন শ্রমিকের জন্য এটি সর্বোত্তম এক প্রণোদনা—যা ইসলাম তাকে দিয়েছে।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজেকে শ্রমিক শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করে পৃথিবীর সকল শ্রমিককে ধন্য ও মর্যাদাশীল করেছেন। তিনি তাঁর প্রিয়তমা কন্যা ফাতেমাকে একজন উত্তম শ্রমিকের কাছে পাত্রস্থ করেছিলেন; যিনি শিক্ষা ও বীরত্বের দিক থেকেও ছিলেন সমান পারদর্শী। হজরত আলি (রা.) নিজে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসেবে শ্রমিকের জীবন বেছে নিয়েছিলেন। রাসুল (সা.)-এর সবচেয়ে প্রিয় সাহাবি হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) ছিলেন কাপড়ের ব্যবসায়ী, আল্লাহর নবী দাউদ (আ.) নিজেই শ্রমের বিনিময়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। রাসুলের (সা.) ঘোষণা—সর্বোত্তম খাবার সেটিই, যা নিজের হাতে উপার্জিত। বুখারির ভাষ্যমতে, রাসুল (সা.) কিয়ামতের দিন যাদের প্রতিপক্ষ হবেন তাদের মধ্যে এক শ্রেণি হলো—যারা শ্রমিক নিয়োগ করবে এবং শ্রমিকের মাধ্যমে ষোলো আনা কার্যসিদ্ধি করে নেবে কিন্তু শ্রমিককে তার প্রাপ্য মজুরি দেবে না। রাসুল (সা.) যার বা যাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেকে সাব্যস্ত করবেন তাদের অবস্থা বা পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
এখানে সাহাবি হজরত আবু মাসউদ (রা.)-এর জীবনের একটি ঘটনার অবতারণা করতে পারি। মুসলিম শরিফে বিবৃত আছে, আবু মাসউদ একদিন তাঁর এক ক্রীতদাসের গায়ে হাত তোলেন, তাকে মারধর করেন। এরই মধ্যে তিনি শুনতে পান, ‘হে আবু মাসউদ, তোমার ক্রীতদাসের ওপর তোমার যতটা ক্ষমতা আর প্রভাব রয়েছে, তোমার ওপরে তোমার প্রভুর তার চেয়েও বেশি ক্ষমতা ও প্রভাব রয়েছে।’ মাসউদ (রা.) পেছন ফিরে দেখেন তিনি আর কেউ নন; তিনি হচ্ছেন মানবতার পরম সুহৃদ দয়ার নবী মুহাম্মদ (সা.)। মাসউদ (রা.) খুবই লজ্জিত হলেন এবং অধীনস্থ শ্রমিককে মুক্ত করে দিলেন। দয়াল নবী (সা.) বললেন, ‘তুমি যদি একে মুক্ত না করতে, তবে তুমি নিশ্চিতভাবে জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে।’
আবু দাউদ শরিফের হাদিস মতে, শ্রমিকের কোনো অপরাধ হলে তা ক্ষমা করে দিতে হবে। এক সাহাবি জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘হে রাসুল, শ্রমিকের অপরাধ কয়বার ক্ষমা করব?’ রাসুল (সা.) চুপ থাকলেন। আবারও তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, রাসুল (সা.) আবারও চুপ থাকলেন। তৃতীয়বার যখন জিজ্ঞেস করা হলো যে, ‘শ্রমিককে কয়বার মাফ করব?’ রাসুল (সা.) তখন গাম্ভীর্যের সঙ্গে ঘোষণা করলেন, ‘শ্রমিক যদি দিনে সত্তরবারও অপরাধ করে তবে প্রতিবারই তাকে ক্ষমা করে দাও।’
পাশাপাশি রাসুল (সা.) শ্রমিকের ব্যাপারেও সতর্কবার্তা দিয়েছেন যে, শ্রমিক যেন তার মালিকের কাজে কোনো ফাঁকি না দেয়। বরং রাসুল (সা.) বলেন, ‘সেই শ্রমিক উত্তম, যে তার মালিকের কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে শ্রমিক তার মালিকের হক আদায় করবে এবং আল্লাহর হকও আদায় করবে, মহান আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ পুরস্কার দেবেন। কাজে ফাঁকি দিয়ে অথবা শুধু হাজিরা দিয়ে কাজ না করে যে শ্রমিক মজুরি গ্রহণ করবে, সে নিঃসন্দেহে গর্হিত কাজ করল; এ জন্য তার জবাবদিহি করতে হবে এবং কিয়ামতের দিন তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’
শ্রম এবং শ্রমিকের ব্যাপারে মহানবী (সা.)-এর সবচেয়ে তাৎপর্যমণ্ডিত ঘোষণাটি হলো, ‘শ্রমিক মহান আল্লাহর বন্ধু।’ আমরা রাসুল (সা.)-কে জানি আল্লাহর বন্ধু হিসেবে। অথচ মহানবী (সা.) একজন শ্রমিককে তার শ্রমের মর্যাদা ও গুরুত্ব প্রদান করতে গিয়ে তাকে আল্লাহর বন্ধু হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। রাসুল (সা.)-এর অপর তাগিদটি হলো শ্রমিকের প্রাপ্য নিয়ে। তিনি বলেন, ‘শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই তার প্রাপ্য মজুরি পরিশোধ করে দাও।’
মহানবী (সা.)-এর উল্লিখিত দুটি বাণীতে শ্রম ও শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদার বিষয়টি অভূতপূর্ব স্বীকৃতি পেয়েছে। পবিত্র কোরআনের বাণী অনুযায়ী ইসলামের অন্যতম মূলনীতি হচ্ছে, মহান আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না। সুতরাং শ্রম-ঘণ্টা তথা শ্রমিকের কাজের সময়সীমার ব্যাপারেও সংশ্লিষ্টদের সচেতন থাকার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোনোমতেই অধিক পরিশ্রম বা অধিক সময়ের শ্রম কারও ওপরে চাপিয়ে দেওয়া ইসলামসম্মত নয়।
কোরআনে কারিমে শ্রমকে মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। সুরা বালাদের ৪ নম্বর আয়াতে এরশাদ হচ্ছে—‘সুনিশ্চিতভাবে আমি মানুষকে শ্রম নির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।’ এই শ্রম নির্ভরতা বা শ্রমিকের বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর সব মানুষের মধ্যেই রয়েছে। সুতরাং শ্রম এবং শ্রমিকের পেশাটি একটি সর্বজনীন রূপ নেয়। এ কারণে যেকোনো শ্রমকেই আমাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত এবং শ্রমিকের মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় সম্ভাব্য সকল প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি-রাষ্ট্রের এক অনিবার্য অনুষঙ্গ হওয়া চাই।
লেখক: অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন

পৃথিবীর উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক উপকরণটি হলো শ্রম। আর নিরলস শ্রমের পরাকাষ্ঠা যারা বহন করেন তাঁরাই শ্রমিক। ইসলামে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা যথাযথভাবে স্বীকৃত। ইবনে মাজাহর হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) ওফাতকালীন যে উপদেশ দিয়েছেন তা হলো, তোমরা নামাজ এবং অধীনস্থদের ব্যাপারে সাবধান থেকো। এখানে অধীনস্থ বলতে কাজের লোক বা শ্রমিক—যারা কারও অধীনে শ্রমের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আঞ্জাম দিয়ে থাকেন তাঁদের বোঝানো হয়েছে।
শ্রমের গুরুত্ব সম্পর্কে একটি ঐতিহাসিক তথ্য খুবই প্রাসঙ্গিক। তা হলো, নবী-রাসুলগণের প্রায় সকলেই প্রত্যক্ষভাবে শ্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। মুসনাদে আহমদের হাদিস মতে, সব নবী-রাসুলই মেষ চড়িয়েছেন; এমনকি শ্রেষ্ঠ নবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজেও মেষ চড়াতেন। শ্রমের অনেক ফজিলতের কথাও হাদিসে এসেছে। বুখারির হাদিস মতে, কারও কাছে হাত পাতার চেয়ে কারও বোঝা বহন করে রোজগার করা উত্তম। কেউ কিছু দিক আর না দিক, কারও কাছে কিছু চাওয়ার চেয়ে নিজ পিঠে করে কাঠের বোঝা নিয়ে বাজারে বিক্রি করা অনেক ভালো। এখানেও সেই শ্রমেরই গুরুত্ব ফুটে ওঠে। বিখ্যাত বুজুর্গ ও ইসলামি পণ্ডিতেরা নিজেদের নামের সঙ্গে আত্তার বা আতর ব্যবসায়ী, খাব্বাজ বা রুটি ব্যবসায়ী, কাত্তান বা তুলা উৎপাদনকারী প্রভৃতি পেশাভিত্তিক উপাধি ধারণ করতে দ্বিধাবোধ করেননি।
আবু দাউদের হাদিস মতে, যে ব্যক্তি আয়-রোজগারের জন্য শ্রম ব্যয় করবে সে যেন আল্লাহর পথে জিহাদে রত রয়েছে। কেউ যদি তার সন্তান বা স্ত্রী অথবা বাবা-মায়ের জীবিকা নির্বাহের জন্য কোনো কাজে লিপ্ত থাকে তবে সে নিঃসন্দেহে আল্লাহর পথেই বিচরণ করছে। তাবরানির হাদিস মতে, ক্লান্ত-শ্রান্ত অবস্থায় যে শ্রমিক সন্ধ্যাযাপন করল, সে নিঃসন্দেহে যাবতীয় অপরাধ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে সন্ধ্যা অতিক্রম করল। একজন শ্রমিকের জন্য এটি সর্বোত্তম এক প্রণোদনা—যা ইসলাম তাকে দিয়েছে।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজেকে শ্রমিক শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করে পৃথিবীর সকল শ্রমিককে ধন্য ও মর্যাদাশীল করেছেন। তিনি তাঁর প্রিয়তমা কন্যা ফাতেমাকে একজন উত্তম শ্রমিকের কাছে পাত্রস্থ করেছিলেন; যিনি শিক্ষা ও বীরত্বের দিক থেকেও ছিলেন সমান পারদর্শী। হজরত আলি (রা.) নিজে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসেবে শ্রমিকের জীবন বেছে নিয়েছিলেন। রাসুল (সা.)-এর সবচেয়ে প্রিয় সাহাবি হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) ছিলেন কাপড়ের ব্যবসায়ী, আল্লাহর নবী দাউদ (আ.) নিজেই শ্রমের বিনিময়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। রাসুলের (সা.) ঘোষণা—সর্বোত্তম খাবার সেটিই, যা নিজের হাতে উপার্জিত। বুখারির ভাষ্যমতে, রাসুল (সা.) কিয়ামতের দিন যাদের প্রতিপক্ষ হবেন তাদের মধ্যে এক শ্রেণি হলো—যারা শ্রমিক নিয়োগ করবে এবং শ্রমিকের মাধ্যমে ষোলো আনা কার্যসিদ্ধি করে নেবে কিন্তু শ্রমিককে তার প্রাপ্য মজুরি দেবে না। রাসুল (সা.) যার বা যাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেকে সাব্যস্ত করবেন তাদের অবস্থা বা পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
এখানে সাহাবি হজরত আবু মাসউদ (রা.)-এর জীবনের একটি ঘটনার অবতারণা করতে পারি। মুসলিম শরিফে বিবৃত আছে, আবু মাসউদ একদিন তাঁর এক ক্রীতদাসের গায়ে হাত তোলেন, তাকে মারধর করেন। এরই মধ্যে তিনি শুনতে পান, ‘হে আবু মাসউদ, তোমার ক্রীতদাসের ওপর তোমার যতটা ক্ষমতা আর প্রভাব রয়েছে, তোমার ওপরে তোমার প্রভুর তার চেয়েও বেশি ক্ষমতা ও প্রভাব রয়েছে।’ মাসউদ (রা.) পেছন ফিরে দেখেন তিনি আর কেউ নন; তিনি হচ্ছেন মানবতার পরম সুহৃদ দয়ার নবী মুহাম্মদ (সা.)। মাসউদ (রা.) খুবই লজ্জিত হলেন এবং অধীনস্থ শ্রমিককে মুক্ত করে দিলেন। দয়াল নবী (সা.) বললেন, ‘তুমি যদি একে মুক্ত না করতে, তবে তুমি নিশ্চিতভাবে জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে।’
আবু দাউদ শরিফের হাদিস মতে, শ্রমিকের কোনো অপরাধ হলে তা ক্ষমা করে দিতে হবে। এক সাহাবি জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘হে রাসুল, শ্রমিকের অপরাধ কয়বার ক্ষমা করব?’ রাসুল (সা.) চুপ থাকলেন। আবারও তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, রাসুল (সা.) আবারও চুপ থাকলেন। তৃতীয়বার যখন জিজ্ঞেস করা হলো যে, ‘শ্রমিককে কয়বার মাফ করব?’ রাসুল (সা.) তখন গাম্ভীর্যের সঙ্গে ঘোষণা করলেন, ‘শ্রমিক যদি দিনে সত্তরবারও অপরাধ করে তবে প্রতিবারই তাকে ক্ষমা করে দাও।’
পাশাপাশি রাসুল (সা.) শ্রমিকের ব্যাপারেও সতর্কবার্তা দিয়েছেন যে, শ্রমিক যেন তার মালিকের কাজে কোনো ফাঁকি না দেয়। বরং রাসুল (সা.) বলেন, ‘সেই শ্রমিক উত্তম, যে তার মালিকের কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে শ্রমিক তার মালিকের হক আদায় করবে এবং আল্লাহর হকও আদায় করবে, মহান আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ পুরস্কার দেবেন। কাজে ফাঁকি দিয়ে অথবা শুধু হাজিরা দিয়ে কাজ না করে যে শ্রমিক মজুরি গ্রহণ করবে, সে নিঃসন্দেহে গর্হিত কাজ করল; এ জন্য তার জবাবদিহি করতে হবে এবং কিয়ামতের দিন তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’
শ্রম এবং শ্রমিকের ব্যাপারে মহানবী (সা.)-এর সবচেয়ে তাৎপর্যমণ্ডিত ঘোষণাটি হলো, ‘শ্রমিক মহান আল্লাহর বন্ধু।’ আমরা রাসুল (সা.)-কে জানি আল্লাহর বন্ধু হিসেবে। অথচ মহানবী (সা.) একজন শ্রমিককে তার শ্রমের মর্যাদা ও গুরুত্ব প্রদান করতে গিয়ে তাকে আল্লাহর বন্ধু হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। রাসুল (সা.)-এর অপর তাগিদটি হলো শ্রমিকের প্রাপ্য নিয়ে। তিনি বলেন, ‘শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই তার প্রাপ্য মজুরি পরিশোধ করে দাও।’
মহানবী (সা.)-এর উল্লিখিত দুটি বাণীতে শ্রম ও শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদার বিষয়টি অভূতপূর্ব স্বীকৃতি পেয়েছে। পবিত্র কোরআনের বাণী অনুযায়ী ইসলামের অন্যতম মূলনীতি হচ্ছে, মহান আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না। সুতরাং শ্রম-ঘণ্টা তথা শ্রমিকের কাজের সময়সীমার ব্যাপারেও সংশ্লিষ্টদের সচেতন থাকার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোনোমতেই অধিক পরিশ্রম বা অধিক সময়ের শ্রম কারও ওপরে চাপিয়ে দেওয়া ইসলামসম্মত নয়।
কোরআনে কারিমে শ্রমকে মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। সুরা বালাদের ৪ নম্বর আয়াতে এরশাদ হচ্ছে—‘সুনিশ্চিতভাবে আমি মানুষকে শ্রম নির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।’ এই শ্রম নির্ভরতা বা শ্রমিকের বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর সব মানুষের মধ্যেই রয়েছে। সুতরাং শ্রম এবং শ্রমিকের পেশাটি একটি সর্বজনীন রূপ নেয়। এ কারণে যেকোনো শ্রমকেই আমাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত এবং শ্রমিকের মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় সম্ভাব্য সকল প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি-রাষ্ট্রের এক অনিবার্য অনুষঙ্গ হওয়া চাই।
লেখক: অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

পৃথিবীর উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক উপকরণটি হলো শ্রম। আর নিরলস শ্রমের পরাকাষ্ঠা যারা বহন করেন তাঁরাই শ্রমিক। ইসলামে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা যথাযথভাবে স্বীকৃত। ইবনে মাজাহর হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) ওফাতকালীন যে উপদেশ দিয়েছেন তা হলো, তোমরা নামাজ এবং অধীনস্থদের ব্যাপারে সাবধান থেকো। এখানে অধীনস্থ বলতে কাজের লোক বা শ্রমিক—যারা কারও অধীনে শ্রমের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আঞ্জাম দিয়ে থাকেন তাঁদের বোঝানো হয়েছে।
শ্রমের গুরুত্ব সম্পর্কে একটি ঐতিহাসিক তথ্য খুবই প্রাসঙ্গিক। তা হলো, নবী-রাসুলগণের প্রায় সকলেই প্রত্যক্ষভাবে শ্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। মুসনাদে আহমদের হাদিস মতে, সব নবী-রাসুলই মেষ চড়িয়েছেন; এমনকি শ্রেষ্ঠ নবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজেও মেষ চড়াতেন। শ্রমের অনেক ফজিলতের কথাও হাদিসে এসেছে। বুখারির হাদিস মতে, কারও কাছে হাত পাতার চেয়ে কারও বোঝা বহন করে রোজগার করা উত্তম। কেউ কিছু দিক আর না দিক, কারও কাছে কিছু চাওয়ার চেয়ে নিজ পিঠে করে কাঠের বোঝা নিয়ে বাজারে বিক্রি করা অনেক ভালো। এখানেও সেই শ্রমেরই গুরুত্ব ফুটে ওঠে। বিখ্যাত বুজুর্গ ও ইসলামি পণ্ডিতেরা নিজেদের নামের সঙ্গে আত্তার বা আতর ব্যবসায়ী, খাব্বাজ বা রুটি ব্যবসায়ী, কাত্তান বা তুলা উৎপাদনকারী প্রভৃতি পেশাভিত্তিক উপাধি ধারণ করতে দ্বিধাবোধ করেননি।
আবু দাউদের হাদিস মতে, যে ব্যক্তি আয়-রোজগারের জন্য শ্রম ব্যয় করবে সে যেন আল্লাহর পথে জিহাদে রত রয়েছে। কেউ যদি তার সন্তান বা স্ত্রী অথবা বাবা-মায়ের জীবিকা নির্বাহের জন্য কোনো কাজে লিপ্ত থাকে তবে সে নিঃসন্দেহে আল্লাহর পথেই বিচরণ করছে। তাবরানির হাদিস মতে, ক্লান্ত-শ্রান্ত অবস্থায় যে শ্রমিক সন্ধ্যাযাপন করল, সে নিঃসন্দেহে যাবতীয় অপরাধ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে সন্ধ্যা অতিক্রম করল। একজন শ্রমিকের জন্য এটি সর্বোত্তম এক প্রণোদনা—যা ইসলাম তাকে দিয়েছে।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজেকে শ্রমিক শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করে পৃথিবীর সকল শ্রমিককে ধন্য ও মর্যাদাশীল করেছেন। তিনি তাঁর প্রিয়তমা কন্যা ফাতেমাকে একজন উত্তম শ্রমিকের কাছে পাত্রস্থ করেছিলেন; যিনি শিক্ষা ও বীরত্বের দিক থেকেও ছিলেন সমান পারদর্শী। হজরত আলি (রা.) নিজে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসেবে শ্রমিকের জীবন বেছে নিয়েছিলেন। রাসুল (সা.)-এর সবচেয়ে প্রিয় সাহাবি হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) ছিলেন কাপড়ের ব্যবসায়ী, আল্লাহর নবী দাউদ (আ.) নিজেই শ্রমের বিনিময়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। রাসুলের (সা.) ঘোষণা—সর্বোত্তম খাবার সেটিই, যা নিজের হাতে উপার্জিত। বুখারির ভাষ্যমতে, রাসুল (সা.) কিয়ামতের দিন যাদের প্রতিপক্ষ হবেন তাদের মধ্যে এক শ্রেণি হলো—যারা শ্রমিক নিয়োগ করবে এবং শ্রমিকের মাধ্যমে ষোলো আনা কার্যসিদ্ধি করে নেবে কিন্তু শ্রমিককে তার প্রাপ্য মজুরি দেবে না। রাসুল (সা.) যার বা যাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেকে সাব্যস্ত করবেন তাদের অবস্থা বা পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
এখানে সাহাবি হজরত আবু মাসউদ (রা.)-এর জীবনের একটি ঘটনার অবতারণা করতে পারি। মুসলিম শরিফে বিবৃত আছে, আবু মাসউদ একদিন তাঁর এক ক্রীতদাসের গায়ে হাত তোলেন, তাকে মারধর করেন। এরই মধ্যে তিনি শুনতে পান, ‘হে আবু মাসউদ, তোমার ক্রীতদাসের ওপর তোমার যতটা ক্ষমতা আর প্রভাব রয়েছে, তোমার ওপরে তোমার প্রভুর তার চেয়েও বেশি ক্ষমতা ও প্রভাব রয়েছে।’ মাসউদ (রা.) পেছন ফিরে দেখেন তিনি আর কেউ নন; তিনি হচ্ছেন মানবতার পরম সুহৃদ দয়ার নবী মুহাম্মদ (সা.)। মাসউদ (রা.) খুবই লজ্জিত হলেন এবং অধীনস্থ শ্রমিককে মুক্ত করে দিলেন। দয়াল নবী (সা.) বললেন, ‘তুমি যদি একে মুক্ত না করতে, তবে তুমি নিশ্চিতভাবে জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে।’
আবু দাউদ শরিফের হাদিস মতে, শ্রমিকের কোনো অপরাধ হলে তা ক্ষমা করে দিতে হবে। এক সাহাবি জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘হে রাসুল, শ্রমিকের অপরাধ কয়বার ক্ষমা করব?’ রাসুল (সা.) চুপ থাকলেন। আবারও তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, রাসুল (সা.) আবারও চুপ থাকলেন। তৃতীয়বার যখন জিজ্ঞেস করা হলো যে, ‘শ্রমিককে কয়বার মাফ করব?’ রাসুল (সা.) তখন গাম্ভীর্যের সঙ্গে ঘোষণা করলেন, ‘শ্রমিক যদি দিনে সত্তরবারও অপরাধ করে তবে প্রতিবারই তাকে ক্ষমা করে দাও।’
পাশাপাশি রাসুল (সা.) শ্রমিকের ব্যাপারেও সতর্কবার্তা দিয়েছেন যে, শ্রমিক যেন তার মালিকের কাজে কোনো ফাঁকি না দেয়। বরং রাসুল (সা.) বলেন, ‘সেই শ্রমিক উত্তম, যে তার মালিকের কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে শ্রমিক তার মালিকের হক আদায় করবে এবং আল্লাহর হকও আদায় করবে, মহান আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ পুরস্কার দেবেন। কাজে ফাঁকি দিয়ে অথবা শুধু হাজিরা দিয়ে কাজ না করে যে শ্রমিক মজুরি গ্রহণ করবে, সে নিঃসন্দেহে গর্হিত কাজ করল; এ জন্য তার জবাবদিহি করতে হবে এবং কিয়ামতের দিন তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’
শ্রম এবং শ্রমিকের ব্যাপারে মহানবী (সা.)-এর সবচেয়ে তাৎপর্যমণ্ডিত ঘোষণাটি হলো, ‘শ্রমিক মহান আল্লাহর বন্ধু।’ আমরা রাসুল (সা.)-কে জানি আল্লাহর বন্ধু হিসেবে। অথচ মহানবী (সা.) একজন শ্রমিককে তার শ্রমের মর্যাদা ও গুরুত্ব প্রদান করতে গিয়ে তাকে আল্লাহর বন্ধু হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। রাসুল (সা.)-এর অপর তাগিদটি হলো শ্রমিকের প্রাপ্য নিয়ে। তিনি বলেন, ‘শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই তার প্রাপ্য মজুরি পরিশোধ করে দাও।’
মহানবী (সা.)-এর উল্লিখিত দুটি বাণীতে শ্রম ও শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদার বিষয়টি অভূতপূর্ব স্বীকৃতি পেয়েছে। পবিত্র কোরআনের বাণী অনুযায়ী ইসলামের অন্যতম মূলনীতি হচ্ছে, মহান আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না। সুতরাং শ্রম-ঘণ্টা তথা শ্রমিকের কাজের সময়সীমার ব্যাপারেও সংশ্লিষ্টদের সচেতন থাকার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোনোমতেই অধিক পরিশ্রম বা অধিক সময়ের শ্রম কারও ওপরে চাপিয়ে দেওয়া ইসলামসম্মত নয়।
কোরআনে কারিমে শ্রমকে মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। সুরা বালাদের ৪ নম্বর আয়াতে এরশাদ হচ্ছে—‘সুনিশ্চিতভাবে আমি মানুষকে শ্রম নির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।’ এই শ্রম নির্ভরতা বা শ্রমিকের বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর সব মানুষের মধ্যেই রয়েছে। সুতরাং শ্রম এবং শ্রমিকের পেশাটি একটি সর্বজনীন রূপ নেয়। এ কারণে যেকোনো শ্রমকেই আমাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত এবং শ্রমিকের মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় সম্ভাব্য সকল প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি-রাষ্ট্রের এক অনিবার্য অনুষঙ্গ হওয়া চাই।
লেখক: অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
৩ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৪ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৮ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:
এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।
দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।
কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:
এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।
দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)
তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’
মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’
ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:
এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।
দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।
কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:
এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।
দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)
তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’
মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’
ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

পৃথিবীর উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক উপকরণটি হলো শ্রম। আর নিরলস শ্রমের পরাকাষ্ঠা যারা বহন করেন তাঁরাই শ্রমিক। ইসলামে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা যথাযথভাবে স্বীকৃত। ইবনে মাজাহর হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) ওফাতকালীন যে উপদেশ দিয়েছেন তা হলো, তোমরা নামাজ এবং অধীনস্থদের ব্যাপারে সাবধান থেকো। এখানে অধীনস্থ
০১ মে ২০২৩
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৪ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৮ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

পৃথিবীর উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক উপকরণটি হলো শ্রম। আর নিরলস শ্রমের পরাকাষ্ঠা যারা বহন করেন তাঁরাই শ্রমিক। ইসলামে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা যথাযথভাবে স্বীকৃত। ইবনে মাজাহর হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) ওফাতকালীন যে উপদেশ দিয়েছেন তা হলো, তোমরা নামাজ এবং অধীনস্থদের ব্যাপারে সাবধান থেকো। এখানে অধীনস্থ
০১ মে ২০২৩
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৮ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

পৃথিবীর উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক উপকরণটি হলো শ্রম। আর নিরলস শ্রমের পরাকাষ্ঠা যারা বহন করেন তাঁরাই শ্রমিক। ইসলামে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা যথাযথভাবে স্বীকৃত। ইবনে মাজাহর হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) ওফাতকালীন যে উপদেশ দিয়েছেন তা হলো, তোমরা নামাজ এবং অধীনস্থদের ব্যাপারে সাবধান থেকো। এখানে অধীনস্থ
০১ মে ২০২৩
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
৩ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৪ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৮ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

পৃথিবীর উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক উপকরণটি হলো শ্রম। আর নিরলস শ্রমের পরাকাষ্ঠা যারা বহন করেন তাঁরাই শ্রমিক। ইসলামে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা যথাযথভাবে স্বীকৃত। ইবনে মাজাহর হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) ওফাতকালীন যে উপদেশ দিয়েছেন তা হলো, তোমরা নামাজ এবং অধীনস্থদের ব্যাপারে সাবধান থেকো। এখানে অধীনস্থ
০১ মে ২০২৩
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
৩ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৪ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে