শারে আল মুতানাব্বি
মুসলমানদের মধ্যে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশে বাগদাদ নগরীর যুগান্তকারী ভূমিকা রয়েছে। আব্বাসি আমলে মুসলিম বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠা এ নগরী এখনো ইসলামের সোনালি অতীতের বহু স্মৃতিচিহ্ন বহন করে চলেছে। শারে আল মুতানাব্বি এক ঐতিহাসিক বাজার, যা কেবল বাগদাদ কিংবা ইরাক নয়, গোটা আরব বিশ্বে বই বিপণনের জন্য বিখ্যাত। লিখেছেন ইজাজুল হক।
ইজাজুল হক, ঢাকা
আরব বিশ্বে একটি প্রবাদ আছে—কায়রো লেখে, বৈরুত প্রকাশ করে আর বাগদাদ পড়ে। মূলত শারে আল মুতানাব্বির কারণেই এ প্রবাদে বাগদাদের নাম জুড়ে গেছে। পুরোনো বাগদাদে অবস্থিত শারে আল মুতানাব্বির শিকড় আব্বাসি আমলে। বাগদাদের প্রথম বইয়ের বাজার এটি। সেকালের বই বিক্রেতারা এখানে জড়ো হতেন। কালের পরিক্রমায় অসংখ্য রাজনৈতিক উত্থান-পতনের মধ্যে এখনো টিকে আছে শারে আল মুতানাব্বি।
শারে আল মুতানাব্বি নামটি ১৯৩২ সালে বাদশাহ প্রথম ফয়সালের দেওয়া। বাজারের বর্তমান কাঠামোটি তিনি তৈরি করেন এবং আব্বাসি আমলের বিখ্যাত কবি আবু-তাইয়েব আল মুতানাব্বির (৯১৫-৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দ) নামে বাজারটির নামকরণ করেন।
বাজারের প্রবেশপথে খিলানযুক্ত কারুকাজ করা একটি সুদৃশ্য ফটক রয়েছে। এতে সোনালি হরফে খোদাই করা আছে কবি আল মুতানাব্বির দুটি পঙ্ক্তি। কয়েক কিলোমিটারজুড়ে অবস্থিত এ বাজারে বইয়ের দোকানের পাশাপাশি ছাপাখানা, কফিশপ, ক্লাব, সরকারি অফিসসহ অনেক স্থাপনা রয়েছে। বাজারের শেষ প্রান্তে দজলা নদীর পাড়ে রয়েছে কবি আল মুতানাব্বির চমৎকার এক ভাস্কর্য।
শারে আল মুতানাব্বিকে বলা হয় বাগদাদের লেখক, কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদদের তীর্থস্থান। দজলার পাড়ে গড়ে ওঠা মেসোপটেমিয়া সভ্যতা থেকে শুরু করে আধুনিক ইরাকের উত্থান-পতনের রাজসাক্ষী এ জায়গা। কত রাজা-বাদশাহ এসেছেন, গেছেন! কত প্রতাপশালী শাসকের পদতলে পিষ্ট হয়েছে বাগদাদ! রাজবংশের শাসন, কমিউনিস্ট শাসন, বাথ পার্টির শাসন, মার্কিন আগ্রাসন—কত পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে এ নগরী! তবে শারে আল মুতানাব্বি এখনো টিকে আছে।
শাসকদের দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে শারে আল মুতানাব্বির বইয়ের বাজারের কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে সব কালেই। অনেক বই নিষিদ্ধ হয়েছে সময়ে সময়ে। অনেক প্রেস বন্ধ হয়ে গেছে। তবে বাগদাদের প্রতিবাদী চরিত্রকে বদলানো যায়নি। এ বাজারের অলিগলিতে সব সময় বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের আনাগোনা ছিল। এ বাজারের কোনো এক আড্ডা থেকে উঠে এসেছে এ জনপদের ভবিষ্যৎ তৈরির বিপ্লবী কোনো সিদ্ধান্ত।
লেখক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদদের জন্য এখানে গড়ে উঠেছে বিখ্যাত কিছু কফিশপ। সেসবের মধ্যে শাবান্দর ক্যাফে অন্যতম। বাজারের শেষ প্রান্তের শতবর্ষী এ ক্যাফে এখনো বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক মানুষের আনাগোনায় মুখর থাকে। ইরাকের অনেক প্রেসিডেন্ট এসব কফিশপে নির্দ্বিধায় যাতায়াত করতেন।
শারে আল মুতানাব্বিতে বইয়ের দোকান ও ছাপাখানা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে ভাসমান দোকান। এসব দোকান এখনো অনেকটা অরক্ষিত বলা যায়। রাতের আঁধারে দোকানের বইপত্রের কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকলেও কেউ চুরি করে না। তাই তো ইরাকিরা বলে—পাঠক কখনো চুরি করে না, চোর কখনো পড়ে না।
২০০৭ সালে ইরাকে মার্কিন আগ্রাসন চলাকালে এক গাড়িবোমা হামলায় শারে আল মুতানাব্বি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ২৬ জন নিহত হয়। এরপর দীর্ঘদিন বাজারটি বন্ধ ছিল। পরে নুরি আল-মালিকির আমলে তা সংস্কার করে আবার চালু করা হয়। ফলে নতুন জীবন পায় ইরাকি বুদ্ধিবৃত্তির এ আঁতুড়ঘর।
সারা বছরই শিল্পসাহিত্য-সংশ্লিষ্ট আয়োজন চলতে থাকে এ বাজারে। বইমেলা, শিল্পকর্ম প্রদর্শনী, সাহিত্য আড্ডা, সেমিনার, কনফারেন্স, সভা, সমিতিসহ হাজারো উৎসব আলো ছড়ায় এখানে। বই যে পৃথিবী পাল্টে দিতে পারে, তারই প্রমাণ হয়ে স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সাক্ষী শারে আল মুতানাব্বি।
আরব বিশ্বে একটি প্রবাদ আছে—কায়রো লেখে, বৈরুত প্রকাশ করে আর বাগদাদ পড়ে। মূলত শারে আল মুতানাব্বির কারণেই এ প্রবাদে বাগদাদের নাম জুড়ে গেছে। পুরোনো বাগদাদে অবস্থিত শারে আল মুতানাব্বির শিকড় আব্বাসি আমলে। বাগদাদের প্রথম বইয়ের বাজার এটি। সেকালের বই বিক্রেতারা এখানে জড়ো হতেন। কালের পরিক্রমায় অসংখ্য রাজনৈতিক উত্থান-পতনের মধ্যে এখনো টিকে আছে শারে আল মুতানাব্বি।
শারে আল মুতানাব্বি নামটি ১৯৩২ সালে বাদশাহ প্রথম ফয়সালের দেওয়া। বাজারের বর্তমান কাঠামোটি তিনি তৈরি করেন এবং আব্বাসি আমলের বিখ্যাত কবি আবু-তাইয়েব আল মুতানাব্বির (৯১৫-৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দ) নামে বাজারটির নামকরণ করেন।
বাজারের প্রবেশপথে খিলানযুক্ত কারুকাজ করা একটি সুদৃশ্য ফটক রয়েছে। এতে সোনালি হরফে খোদাই করা আছে কবি আল মুতানাব্বির দুটি পঙ্ক্তি। কয়েক কিলোমিটারজুড়ে অবস্থিত এ বাজারে বইয়ের দোকানের পাশাপাশি ছাপাখানা, কফিশপ, ক্লাব, সরকারি অফিসসহ অনেক স্থাপনা রয়েছে। বাজারের শেষ প্রান্তে দজলা নদীর পাড়ে রয়েছে কবি আল মুতানাব্বির চমৎকার এক ভাস্কর্য।
শারে আল মুতানাব্বিকে বলা হয় বাগদাদের লেখক, কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদদের তীর্থস্থান। দজলার পাড়ে গড়ে ওঠা মেসোপটেমিয়া সভ্যতা থেকে শুরু করে আধুনিক ইরাকের উত্থান-পতনের রাজসাক্ষী এ জায়গা। কত রাজা-বাদশাহ এসেছেন, গেছেন! কত প্রতাপশালী শাসকের পদতলে পিষ্ট হয়েছে বাগদাদ! রাজবংশের শাসন, কমিউনিস্ট শাসন, বাথ পার্টির শাসন, মার্কিন আগ্রাসন—কত পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে এ নগরী! তবে শারে আল মুতানাব্বি এখনো টিকে আছে।
শাসকদের দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে শারে আল মুতানাব্বির বইয়ের বাজারের কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে সব কালেই। অনেক বই নিষিদ্ধ হয়েছে সময়ে সময়ে। অনেক প্রেস বন্ধ হয়ে গেছে। তবে বাগদাদের প্রতিবাদী চরিত্রকে বদলানো যায়নি। এ বাজারের অলিগলিতে সব সময় বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের আনাগোনা ছিল। এ বাজারের কোনো এক আড্ডা থেকে উঠে এসেছে এ জনপদের ভবিষ্যৎ তৈরির বিপ্লবী কোনো সিদ্ধান্ত।
লেখক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদদের জন্য এখানে গড়ে উঠেছে বিখ্যাত কিছু কফিশপ। সেসবের মধ্যে শাবান্দর ক্যাফে অন্যতম। বাজারের শেষ প্রান্তের শতবর্ষী এ ক্যাফে এখনো বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক মানুষের আনাগোনায় মুখর থাকে। ইরাকের অনেক প্রেসিডেন্ট এসব কফিশপে নির্দ্বিধায় যাতায়াত করতেন।
শারে আল মুতানাব্বিতে বইয়ের দোকান ও ছাপাখানা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে ভাসমান দোকান। এসব দোকান এখনো অনেকটা অরক্ষিত বলা যায়। রাতের আঁধারে দোকানের বইপত্রের কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকলেও কেউ চুরি করে না। তাই তো ইরাকিরা বলে—পাঠক কখনো চুরি করে না, চোর কখনো পড়ে না।
২০০৭ সালে ইরাকে মার্কিন আগ্রাসন চলাকালে এক গাড়িবোমা হামলায় শারে আল মুতানাব্বি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ২৬ জন নিহত হয়। এরপর দীর্ঘদিন বাজারটি বন্ধ ছিল। পরে নুরি আল-মালিকির আমলে তা সংস্কার করে আবার চালু করা হয়। ফলে নতুন জীবন পায় ইরাকি বুদ্ধিবৃত্তির এ আঁতুড়ঘর।
সারা বছরই শিল্পসাহিত্য-সংশ্লিষ্ট আয়োজন চলতে থাকে এ বাজারে। বইমেলা, শিল্পকর্ম প্রদর্শনী, সাহিত্য আড্ডা, সেমিনার, কনফারেন্স, সভা, সমিতিসহ হাজারো উৎসব আলো ছড়ায় এখানে। বই যে পৃথিবী পাল্টে দিতে পারে, তারই প্রমাণ হয়ে স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সাক্ষী শারে আল মুতানাব্বি।
তওবা মানে ক্ষমা চেয়ে সঠিক পথে ফিরে আসা। তওবা মানে নিজের ভুল স্বীকার করে প্রায়শ্চিত্ত গড়ার চেষ্টা করা। সহজে বললে—পাপের পথ ছেড়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসা, তাঁর নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করা এবং ভবিষ্যতে সেই পাপে না ফেরার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা করা।
৪ ঘণ্টা আগেজীবনের প্রয়োজনে আমরা কখনো কখনো ঋণগ্রস্ত হই। ঋণগ্রস্ত হওয়া জীবন নানা সময় কুফল ডেকে আনে। ঋণের চাপ উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা তৈরি করে। নবী করিম (সা.)-এর শেখানো কিছু দোয়ার মাধ্যমে আমরা ঋণ থেকে মুক্তি পেতে পারি।
১ দিন আগেসুখময় পরিবার জীবনের অমূল্য সম্পদ। সুখী সংসারকে বলা হয় দুনিয়ার জান্নাত। পরিবার আমাদের আশ্রয়, ভালোবাসা ও সাহসের উৎস। পরিবারে একে অপরের পাশে থাকলে সব বাধা সহজে অতিক্রম করা যায়। ছোঁয়া যায় ভালোবাসার আকাশ। মাখা যায় সুখের আবেশ। এ ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) হতে পারেন উত্তম আদর্শ। কীভাবে তিনি পারিবারিক ও...
২ দিন আগেজুমার দিন মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে আল্লাহর বিশেষ রহমত বর্ষিত হয়। ইসলামে জুমার দিন সপ্তাহের সেরা হিসেবে বিবেচিত। নবী করিম (সা.) বলেন, পৃথিবীতে যত দিন সূর্য উদিত হবে, তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো জুমার দিন। (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)। অন্য এক হাদিসে তিনি বলেন, দিবসসমূহের মধ্যে...
২ দিন আগে