ফারুক মেহেদী
লকডাউন সফল হচ্ছে কি না, লকডাউন ছাড়া আর কি বিকল্প ছিল? এতে অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়ছে? জীবন-জীবিকায় ভারসাম্য রাখা যায় কীভাবে? এসব বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী।
আজকের পত্রিকা: লকডাউন কী সফলভাবে হচ্ছে? না হলে কেন হচ্ছে না বলে মনে করেন?
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ: লকডাউন দিয়েছি। তবে যাঁরা অসহায় তাঁদের ঠিকমতো খাবারও দিচ্ছি না। জীবিকার প্রয়োজনে তাঁকে তো বের হতে হচ্ছে। এর ফলে স্বাস্থ্যবিধি মানায় অবজ্ঞা তৈরি হচ্ছে। এটা নীতির দুর্বলতা। কারণ, আমরা তাঁকে এমন কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারিনি যে তুমি বাড়িতে থাকো, আমি তোমার খাবার পৌঁছে দেব। সক্ষমতা নেই বলেই এ কথাটা তো বলা যায়নি। সামর্থ্য যেহেতু নেই সুতরাং লকডাউনের উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে না। আর এবার গ্রামের মানুষও আক্রান্ত হচ্ছে। এর ফলে সেখানে কৃষিকাজসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রভাব পড়ছে।
আজকের পত্রিকা: কী করলে লকডাউন দেওয়ার প্রয়োজন হতো না?
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ: খুব সহজে যেন মানুষ করোনা সংক্রমণের পরীক্ষাটা করতে পারে তার ব্যবস্থা সরকার নিতে পারত। ধরে নিচ্ছি ২০ শতাংশ মানুষ সংক্রমিত। আর বাকি ৮০ শতাংশ ভালো আছে। এখন ৮০ শতাংশ ভালোকে ২০ শতাংশ সংক্রমিতের মধ্যে রেখে দিয়ে তাকে বলছি যে তুমি ভালো হও স্বাস্থ্যবিধি মানো, এটা হয় না। উচিত ছিল ত্বরিত ও নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা। আমি যদি ৮০ শতাংশকে আলাদা করতে পারতাম আর ২০ শতাংশকে আইসোলেশনে বাধ্য করা যেত, তাহলে তাদের ব্যবস্থাপনা আরও সহজ হতো। বাকি ৮০ শতাংশ সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পেত। তাদের বলতে পারতাম, তোমরা স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কর। এখন শতভাগ লোককেই আমি সন্দেহের মধ্যে রাখছি।
আজকের পত্রিকা: করোনার সঙ্গে আমাদের সহাবস্থান কি সম্ভব?
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ: আমি মনে করি ভালো স্বাস্থ্যবিধি পালন করে কিন্তু আমাদের মতো অর্থনীতি সচল রাখা যায় এবং সচল রাখতে হবে। করোনার সঙ্গে সহাবস্থানে থাকতে হবে। প্রতিদিন এভাবে করোনা থেকে দূরে থেকে অর্থনীতিকে হুমকিতে ফেলা যাবে না। সেই সক্ষমতা আমাদের নেই। অর্থনীতিকে সচল না রাখলে আমার অন্য সব কার্যক্রমও স্থবির হয়ে যাবে। আমার সহনীয় ক্ষমতা, ধৈর্য কমে যাবে। এর ফলে বড় প্রভাব পড়বে রাজস্ব আয়ে। তাই অর্থনীতি সচল রাখতে গেলেই মানুষকে পৃথক করতে হবে। অর্থনীতি সচল থাকলে রাজস্ব আয়সহ সবকিছুই গতি পাবে।
আজকের পত্রিকা: স্বাস্থ্য খাতে মানুষের আস্থা ফেরানো যাচ্ছে?
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ: আস্থা তৈরি করার মতে স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তোলা গেল কি না, এটা এখন বড় প্রশ্ন। কেন মানুষকে এত টেনশনে পড়তে হচ্ছে যে, হাসপাতালে গেলে চিকিৎসা পাব কিনা? ভেন্টিলেশন, অক্সিজেন ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা। এ কাজগুলো তো সরকার করার কথা। এ খাতে যদি স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা আনতে পারত তাহলে মানুষের মধ্যে স্বস্তি থাকত। প্রয়োজনে মানুষকে রেশনিংয়ের আওতায় এনে রেশন দেওয়া। রেশনিং করলে আমরা ব্যর্থ হয়ে গেলাম, এটা মনে করার বিষয় নয়; এখন এটা ভাবারও সময় নয়। মানুষের আস্থা তৈরি করতে প্রয়োজনে ফিল্ড হাসপাতাল করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: লকডাউনের ক্ষতি পোষাতে ব্যবসায়ীরা আবারও সুযোগ চায়। কীভাবে দেখছেন বিষয়টা?
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ: করোনার বিষয়টি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সুবিধাবাদী সিন্ডিকেটের পক্ষে যাচ্ছে। তাদের অনেকে করোনাকে দেখিয়ে ঠিকই সুবিধা নিয়ে নিচ্ছে। এই যে প্রণোদনা দেওয়া হলো, এখানেও নানান দুর্বলতা ছিল। যাঁরা পাওয়ার কথা, তাঁদের অনেকেই পাননি। ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে দেওয়া হলো। এখন অনেক বড় ব্যবসায়ী বলছেন, আমি তো ঋণ শোধ করতে পারব না। এটা দেওয়া উচিত ছিল যে একেবারেই অপারগ তাঁকে। এখন নানান বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। অপচয় ও অপব্যবহার হচ্ছে। ফলে এ টাকা ফেরত আসাও ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রেই ফেরত আসবে না। তাই ফ্রি হিসেবে তা সত্যিকার যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত তাঁদের দেওয়া উচিত ছিল। পদ্ধতিটা অন্তর্ভুক্তিমূলক হচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: জীবন ও জীবিকায় ভারসাম্য রক্ষা করা যায় কীভাবে?
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ: সমস্যার মৌলিক জায়গায় যেতে হবে। এমন কৌশল ঠিক করতে হবে, যাতে আমার অর্থনীতি ঠিক থাকবে, আবার মানুষের জীবনও বাঁচবে। কারণ, মানুষকে বাদ দিয়ে আমার অর্থনীতি হবে না। মানুষ না বাঁচলে কিসের জীবিকা? আবার জীবিকা না থাকলে মানুষ বাঁচবে কি করে? এ জায়গায় একটা ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
লকডাউন সফল হচ্ছে কি না, লকডাউন ছাড়া আর কি বিকল্প ছিল? এতে অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়ছে? জীবন-জীবিকায় ভারসাম্য রাখা যায় কীভাবে? এসব বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী।
আজকের পত্রিকা: লকডাউন কী সফলভাবে হচ্ছে? না হলে কেন হচ্ছে না বলে মনে করেন?
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ: লকডাউন দিয়েছি। তবে যাঁরা অসহায় তাঁদের ঠিকমতো খাবারও দিচ্ছি না। জীবিকার প্রয়োজনে তাঁকে তো বের হতে হচ্ছে। এর ফলে স্বাস্থ্যবিধি মানায় অবজ্ঞা তৈরি হচ্ছে। এটা নীতির দুর্বলতা। কারণ, আমরা তাঁকে এমন কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারিনি যে তুমি বাড়িতে থাকো, আমি তোমার খাবার পৌঁছে দেব। সক্ষমতা নেই বলেই এ কথাটা তো বলা যায়নি। সামর্থ্য যেহেতু নেই সুতরাং লকডাউনের উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে না। আর এবার গ্রামের মানুষও আক্রান্ত হচ্ছে। এর ফলে সেখানে কৃষিকাজসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রভাব পড়ছে।
আজকের পত্রিকা: কী করলে লকডাউন দেওয়ার প্রয়োজন হতো না?
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ: খুব সহজে যেন মানুষ করোনা সংক্রমণের পরীক্ষাটা করতে পারে তার ব্যবস্থা সরকার নিতে পারত। ধরে নিচ্ছি ২০ শতাংশ মানুষ সংক্রমিত। আর বাকি ৮০ শতাংশ ভালো আছে। এখন ৮০ শতাংশ ভালোকে ২০ শতাংশ সংক্রমিতের মধ্যে রেখে দিয়ে তাকে বলছি যে তুমি ভালো হও স্বাস্থ্যবিধি মানো, এটা হয় না। উচিত ছিল ত্বরিত ও নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা। আমি যদি ৮০ শতাংশকে আলাদা করতে পারতাম আর ২০ শতাংশকে আইসোলেশনে বাধ্য করা যেত, তাহলে তাদের ব্যবস্থাপনা আরও সহজ হতো। বাকি ৮০ শতাংশ সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পেত। তাদের বলতে পারতাম, তোমরা স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কর। এখন শতভাগ লোককেই আমি সন্দেহের মধ্যে রাখছি।
আজকের পত্রিকা: করোনার সঙ্গে আমাদের সহাবস্থান কি সম্ভব?
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ: আমি মনে করি ভালো স্বাস্থ্যবিধি পালন করে কিন্তু আমাদের মতো অর্থনীতি সচল রাখা যায় এবং সচল রাখতে হবে। করোনার সঙ্গে সহাবস্থানে থাকতে হবে। প্রতিদিন এভাবে করোনা থেকে দূরে থেকে অর্থনীতিকে হুমকিতে ফেলা যাবে না। সেই সক্ষমতা আমাদের নেই। অর্থনীতিকে সচল না রাখলে আমার অন্য সব কার্যক্রমও স্থবির হয়ে যাবে। আমার সহনীয় ক্ষমতা, ধৈর্য কমে যাবে। এর ফলে বড় প্রভাব পড়বে রাজস্ব আয়ে। তাই অর্থনীতি সচল রাখতে গেলেই মানুষকে পৃথক করতে হবে। অর্থনীতি সচল থাকলে রাজস্ব আয়সহ সবকিছুই গতি পাবে।
আজকের পত্রিকা: স্বাস্থ্য খাতে মানুষের আস্থা ফেরানো যাচ্ছে?
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ: আস্থা তৈরি করার মতে স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তোলা গেল কি না, এটা এখন বড় প্রশ্ন। কেন মানুষকে এত টেনশনে পড়তে হচ্ছে যে, হাসপাতালে গেলে চিকিৎসা পাব কিনা? ভেন্টিলেশন, অক্সিজেন ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা। এ কাজগুলো তো সরকার করার কথা। এ খাতে যদি স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা আনতে পারত তাহলে মানুষের মধ্যে স্বস্তি থাকত। প্রয়োজনে মানুষকে রেশনিংয়ের আওতায় এনে রেশন দেওয়া। রেশনিং করলে আমরা ব্যর্থ হয়ে গেলাম, এটা মনে করার বিষয় নয়; এখন এটা ভাবারও সময় নয়। মানুষের আস্থা তৈরি করতে প্রয়োজনে ফিল্ড হাসপাতাল করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: লকডাউনের ক্ষতি পোষাতে ব্যবসায়ীরা আবারও সুযোগ চায়। কীভাবে দেখছেন বিষয়টা?
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ: করোনার বিষয়টি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সুবিধাবাদী সিন্ডিকেটের পক্ষে যাচ্ছে। তাদের অনেকে করোনাকে দেখিয়ে ঠিকই সুবিধা নিয়ে নিচ্ছে। এই যে প্রণোদনা দেওয়া হলো, এখানেও নানান দুর্বলতা ছিল। যাঁরা পাওয়ার কথা, তাঁদের অনেকেই পাননি। ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে দেওয়া হলো। এখন অনেক বড় ব্যবসায়ী বলছেন, আমি তো ঋণ শোধ করতে পারব না। এটা দেওয়া উচিত ছিল যে একেবারেই অপারগ তাঁকে। এখন নানান বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। অপচয় ও অপব্যবহার হচ্ছে। ফলে এ টাকা ফেরত আসাও ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রেই ফেরত আসবে না। তাই ফ্রি হিসেবে তা সত্যিকার যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত তাঁদের দেওয়া উচিত ছিল। পদ্ধতিটা অন্তর্ভুক্তিমূলক হচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: জীবন ও জীবিকায় ভারসাম্য রক্ষা করা যায় কীভাবে?
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ: সমস্যার মৌলিক জায়গায় যেতে হবে। এমন কৌশল ঠিক করতে হবে, যাতে আমার অর্থনীতি ঠিক থাকবে, আবার মানুষের জীবনও বাঁচবে। কারণ, মানুষকে বাদ দিয়ে আমার অর্থনীতি হবে না। মানুষ না বাঁচলে কিসের জীবিকা? আবার জীবিকা না থাকলে মানুষ বাঁচবে কি করে? এ জায়গায় একটা ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
বাংলাদেশি তরুণ ওমর আহমেদ বর্তমানে বেলজিয়ামের ইএএসপিডি ব্রাসেলসের ইইউ প্রজেক্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত। বেলজিয়ামে উন্নয়ন সংস্থাগুলোর কাজ, বাংলাদেশিদের সুযোগ ও প্রস্তুতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন নাদিম মজিদ।
২২ মার্চ ২০২৫ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব একজন প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ এবং জননীতি বিশ্লেষক। তিনি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। সম্প্রতি তথ্য খাতসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অর্চি হক।
১৭ মার্চ ২০২৫অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ মাস পূর্ণ হচ্ছে ৮ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ে দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেছেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আজকের পত্রিকার বাণিজ্য সম্পাদক শাহ আলম খান।
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়ে ধারণ করা জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র একটি পর্বে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সাক্ষাৎকারে তাঁর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত অংশ আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫