ফারুক মেহেদী
লকডাউন কীভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতি বাড়াচ্ছে? উৎপাদন ও সেবা খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব কেমন? বিনিয়োগে কি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে? এসব বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী।
আজকের পত্রিকা: বর্তমান লকডাউনে অর্থনীতির কী ক্ষতি হচ্ছে?
ড. জাহিদ হোসেন: এ ধরনের লকডাউন আমাদের মতো দেশের অর্থনীতির চাকা একদম বন্ধ করে দেয়। এখানে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় অর্থনীতির মূল খাত আর এখানে যাঁরা কাজ করেন তাঁরা। বিভিন্ন জরিপ অনুযায়ী, লকডাউনের ক্ষতির মাত্রাটা ওঠানামা করে। মানে একেক লকডাউনে একেক রকম ক্ষতি। এর ফলে গড়ে ৩০–৪০ বা ৫০ শতাংশের মতো আয় কমে যায়। এতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান এবং তাদের ব্যবসাটাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এবার আমরা প্রথম দেখলাম যে পোশাকসহ অর্থনীতির মূল খাতগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হলো।
আজকের পত্রিকা: অর্থনৈতিক ক্ষতি করেও কী লকডাউন সফল হচ্ছে?
ড. জাহিদ হোসেন: সংক্রমণ বেড়ে গেলে স্বাস্থ্য খাত এ চাপ সামাল দিতে পারে না। তখনই লকডাউনের মতো কঠোর পথে যেতে হয়। লকডাউন সময় কেনার মতো একটা ব্যাপার। মৌলিক ধারণা হচ্ছে, ওই সময়ে সংক্রমণের হারটা কমে যাবে। তবে বর্তমান লকডাউনের সময়ের সংক্রমণের হারটা দেখেন। এখন ৩০ শতাংশের কাছাকাছি এবং তা বাড়ছে। অর্থনীতিতে লোকসান হবে জেনেও লকডাউন দেওয়া হচ্ছে সংক্রমণের হারটা কমিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে অর্থনীতি সচল রাখার জন্য। স্বাস্থ্যের এ লক্ষ্যটা অর্জন না হলে, লকডাউনের ফলে অর্থনীতির ক্ষতির বিনিময়ে আমরা কী পেলাম, সেটা পরিষ্কার হওয়া দরকার।
আজকের পত্রিকা: অর্থনীতিতে ক্ষতির মাত্রাটা কেমন?
ড. জাহিদ হোসেন: সেটা আসলে খাতভিত্তিক নানা রকম হতে পারে। আমরা বিভিন্ন জরিপে যেটা দেখেছি, লকডাউনের সময় ক্ষুদ্র ও মাঝারিশিল্পের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। এটা উপখাত অনুযায়ী, ৪০-৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত হয়। তখন তাদের বিক্রি কমে যায়। তারা তখন খরচ কমানোর চেষ্টা করে। কর্মচারীদের বেতন কমায়, এ সময়ে অনেকের চাকরি চলে যায়।
আজকের পত্রিকা: কোন কোন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়?
ড. জাহিদ হোসেন: সরাসরি এর নেতিবাচক প্রভাব জিডিপিতে পড়ে। অর্থনীতির বড় খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতি হয় কৃষির। পশুপালন, মৎস্য চাষ, ডেইরি খাত তাদের ব্যবসা ও সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়।
আজকের পত্রিকা: সেবা খাতের প্রভাবটা কেমন?
ড. জাহিদ হোসেন: সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় সেবা খাতে। গ্রাহকের সেবাটা এক দিন পরে দিতে পারে না সেবা প্রদানকারী। এটা পরের দিন কাভার করার সুযোগ নেই। যেমন পরিবহন খাত। প্রচুর কর্মসংস্থান এ খাতে। যেদিন বাস ট্রাক চলছে না, ওই দিন তো হারিয়ে গেল। পরের দিন ট্রাক চললে সেটা তো পরের দিনের আয়। এটাকে তো আগের দিনের আয় হিসেবে পাবেন না। সেবা খাত দেশের জিডিপির ৫৪ শতাংশ।
আজকের পত্রিকা: বিনিয়োগে কী প্রভাব পড়ে?
ড. জাহিদ হোসেন: দেশের ঋণপ্রবাহের তথ্য দেখলেই বোঝা যায় বিনিয়োগের কী নাজুক অবস্থা। সাড়ে ৭ শতাংশ ঋণের প্রবৃদ্ধি প্রথম ১১ মাসে। এটা তো প্রণোদনাসহ আরও পদক্ষেপের কারণে হয়েছে। এসব না থাকলে অবস্থা আরও খারাপ হতো। সরকারি নানা সুবিধা দেওয়ায় তা পুনঃ তফসিলির মতো হয়ে যাচ্ছে। কাজেই নতুন ঋণ খুব একটা যাচ্ছে না। এর মাধ্যমেই বিনিয়োগের চিত্রটা জানা যায়। যন্ত্রপাতির আমদানির চিত্র দেখলেও বলা যায় অবস্থা কেমন।
আজকের পত্রিকা: আমরা ঠিকমতো লকডাউন কার্যকর করতে পারছি না কেন?
ড. জাহিদ হোসেন: লকডাউনের ভালো আর মন্দা দুটো দিক আছে। ভালো দিক হলো স্বাস্থ্যের দিক থেকে। এর ফলে জীবন রক্ষা করা যাচ্ছে। সংক্রমণ কমাবে। আমাদের দেশে লকডাউন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। এখানে মানুষের চলাচল বন্ধ হচ্ছে না। কেউ প্রয়োজনে, কেউ নানা অজুহাতে বের হচ্ছে। এটা ঠিকমতো না করলে সুফল মিলবে না।
আজকের পত্রিকা: ক্ষতি পোষানোর মতো অবস্থা কি সরকারের আছে?
ড. জাহিদ হোসেন: সরকারের রাজস্ব আয়ে সমস্যা আছে। সরকার বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ এদিক-সেদিক করে মোটামুটি বাজেট ঘাটতি ৬ শতাংশের কাছাকাছিই রাখবে। কিন্তু সেটা সাময়িক ব্যবস্থা হবে। তা দিয়ে অর্থনীতির ক্ষতি পোষানো যাবে না। লকডাউনটা কঠোর, মানে কঠোরভাবেই করতে হবে। না হলে জনস্বাস্থ্যও ঠিক রাখা যাবে না, আবার অর্থনীতিরও ক্ষতি হবে–এটা কাম্য নয়।
লকডাউন কীভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতি বাড়াচ্ছে? উৎপাদন ও সেবা খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব কেমন? বিনিয়োগে কি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে? এসব বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী।
আজকের পত্রিকা: বর্তমান লকডাউনে অর্থনীতির কী ক্ষতি হচ্ছে?
ড. জাহিদ হোসেন: এ ধরনের লকডাউন আমাদের মতো দেশের অর্থনীতির চাকা একদম বন্ধ করে দেয়। এখানে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় অর্থনীতির মূল খাত আর এখানে যাঁরা কাজ করেন তাঁরা। বিভিন্ন জরিপ অনুযায়ী, লকডাউনের ক্ষতির মাত্রাটা ওঠানামা করে। মানে একেক লকডাউনে একেক রকম ক্ষতি। এর ফলে গড়ে ৩০–৪০ বা ৫০ শতাংশের মতো আয় কমে যায়। এতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান এবং তাদের ব্যবসাটাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এবার আমরা প্রথম দেখলাম যে পোশাকসহ অর্থনীতির মূল খাতগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হলো।
আজকের পত্রিকা: অর্থনৈতিক ক্ষতি করেও কী লকডাউন সফল হচ্ছে?
ড. জাহিদ হোসেন: সংক্রমণ বেড়ে গেলে স্বাস্থ্য খাত এ চাপ সামাল দিতে পারে না। তখনই লকডাউনের মতো কঠোর পথে যেতে হয়। লকডাউন সময় কেনার মতো একটা ব্যাপার। মৌলিক ধারণা হচ্ছে, ওই সময়ে সংক্রমণের হারটা কমে যাবে। তবে বর্তমান লকডাউনের সময়ের সংক্রমণের হারটা দেখেন। এখন ৩০ শতাংশের কাছাকাছি এবং তা বাড়ছে। অর্থনীতিতে লোকসান হবে জেনেও লকডাউন দেওয়া হচ্ছে সংক্রমণের হারটা কমিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে অর্থনীতি সচল রাখার জন্য। স্বাস্থ্যের এ লক্ষ্যটা অর্জন না হলে, লকডাউনের ফলে অর্থনীতির ক্ষতির বিনিময়ে আমরা কী পেলাম, সেটা পরিষ্কার হওয়া দরকার।
আজকের পত্রিকা: অর্থনীতিতে ক্ষতির মাত্রাটা কেমন?
ড. জাহিদ হোসেন: সেটা আসলে খাতভিত্তিক নানা রকম হতে পারে। আমরা বিভিন্ন জরিপে যেটা দেখেছি, লকডাউনের সময় ক্ষুদ্র ও মাঝারিশিল্পের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। এটা উপখাত অনুযায়ী, ৪০-৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত হয়। তখন তাদের বিক্রি কমে যায়। তারা তখন খরচ কমানোর চেষ্টা করে। কর্মচারীদের বেতন কমায়, এ সময়ে অনেকের চাকরি চলে যায়।
আজকের পত্রিকা: কোন কোন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়?
ড. জাহিদ হোসেন: সরাসরি এর নেতিবাচক প্রভাব জিডিপিতে পড়ে। অর্থনীতির বড় খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতি হয় কৃষির। পশুপালন, মৎস্য চাষ, ডেইরি খাত তাদের ব্যবসা ও সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়।
আজকের পত্রিকা: সেবা খাতের প্রভাবটা কেমন?
ড. জাহিদ হোসেন: সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় সেবা খাতে। গ্রাহকের সেবাটা এক দিন পরে দিতে পারে না সেবা প্রদানকারী। এটা পরের দিন কাভার করার সুযোগ নেই। যেমন পরিবহন খাত। প্রচুর কর্মসংস্থান এ খাতে। যেদিন বাস ট্রাক চলছে না, ওই দিন তো হারিয়ে গেল। পরের দিন ট্রাক চললে সেটা তো পরের দিনের আয়। এটাকে তো আগের দিনের আয় হিসেবে পাবেন না। সেবা খাত দেশের জিডিপির ৫৪ শতাংশ।
আজকের পত্রিকা: বিনিয়োগে কী প্রভাব পড়ে?
ড. জাহিদ হোসেন: দেশের ঋণপ্রবাহের তথ্য দেখলেই বোঝা যায় বিনিয়োগের কী নাজুক অবস্থা। সাড়ে ৭ শতাংশ ঋণের প্রবৃদ্ধি প্রথম ১১ মাসে। এটা তো প্রণোদনাসহ আরও পদক্ষেপের কারণে হয়েছে। এসব না থাকলে অবস্থা আরও খারাপ হতো। সরকারি নানা সুবিধা দেওয়ায় তা পুনঃ তফসিলির মতো হয়ে যাচ্ছে। কাজেই নতুন ঋণ খুব একটা যাচ্ছে না। এর মাধ্যমেই বিনিয়োগের চিত্রটা জানা যায়। যন্ত্রপাতির আমদানির চিত্র দেখলেও বলা যায় অবস্থা কেমন।
আজকের পত্রিকা: আমরা ঠিকমতো লকডাউন কার্যকর করতে পারছি না কেন?
ড. জাহিদ হোসেন: লকডাউনের ভালো আর মন্দা দুটো দিক আছে। ভালো দিক হলো স্বাস্থ্যের দিক থেকে। এর ফলে জীবন রক্ষা করা যাচ্ছে। সংক্রমণ কমাবে। আমাদের দেশে লকডাউন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। এখানে মানুষের চলাচল বন্ধ হচ্ছে না। কেউ প্রয়োজনে, কেউ নানা অজুহাতে বের হচ্ছে। এটা ঠিকমতো না করলে সুফল মিলবে না।
আজকের পত্রিকা: ক্ষতি পোষানোর মতো অবস্থা কি সরকারের আছে?
ড. জাহিদ হোসেন: সরকারের রাজস্ব আয়ে সমস্যা আছে। সরকার বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ এদিক-সেদিক করে মোটামুটি বাজেট ঘাটতি ৬ শতাংশের কাছাকাছিই রাখবে। কিন্তু সেটা সাময়িক ব্যবস্থা হবে। তা দিয়ে অর্থনীতির ক্ষতি পোষানো যাবে না। লকডাউনটা কঠোর, মানে কঠোরভাবেই করতে হবে। না হলে জনস্বাস্থ্যও ঠিক রাখা যাবে না, আবার অর্থনীতিরও ক্ষতি হবে–এটা কাম্য নয়।
বাংলাদেশি তরুণ ওমর আহমেদ বর্তমানে বেলজিয়ামের ইএএসপিডি ব্রাসেলসের ইইউ প্রজেক্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত। বেলজিয়ামে উন্নয়ন সংস্থাগুলোর কাজ, বাংলাদেশিদের সুযোগ ও প্রস্তুতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন নাদিম মজিদ।
২২ মার্চ ২০২৫ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব একজন প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ এবং জননীতি বিশ্লেষক। তিনি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। সম্প্রতি তথ্য খাতসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অর্চি হক।
১৭ মার্চ ২০২৫অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ মাস পূর্ণ হচ্ছে ৮ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ে দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেছেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আজকের পত্রিকার বাণিজ্য সম্পাদক শাহ আলম খান।
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়ে ধারণ করা জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র একটি পর্বে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সাক্ষাৎকারে তাঁর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত অংশ আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫