Ajker Patrika

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা: ছেলের যত্ন নিতে টানা ৬০ ঘণ্টা জেগে ছিলেন মা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৩, ১৫: ০৩
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা: ছেলের যত্ন নিতে টানা ৬০ ঘণ্টা জেগে ছিলেন মা

জটিল রোগে আক্রান্ত পরিবারদের যথেষ্ট সহযোগিতা দিতে পারছে না যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা। স্বাস্থ্যসেবা খাতে লাগাতার ব্যয় বাড়ানোর পরও কর্মীর স্বল্পতা ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য মানুষ পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছে না। 

কেউ কেউ বলছেন, তাঁরা সেবা করতে করতে এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন যে অসুস্থ স্বজনদের পরিচর্যা নিয়ে খুব উদ্বেগের মধ্যে পড়েছেন। স্বাস্থ্য খাতে সরকারের শত শত কোটি পাউন্ড বিনিয়োগ করার দাবির মধ্যেও বিবিসির প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে। 

ডুশেন মাস্কুলার ডিস্ট্রফি নামে পরিচিত পেশির ক্ষয়রোগে ভুগছেন লিচেস্টারশায়ারের বাসিন্দা ২৪ বছর বয়সী ডিক্ল্যান স্পেনসার। কারও সাহায্য ছাড়া তিনি নড়াচড়া করতে পারেন না। শ্বাস নিতে তাঁর ভেন্টিলেটর প্রয়োজন। দীর্ঘস্থায়ী হৃদ্‌রোগ ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি বেঁচে আছেন। 

ডিক্ল্যানের ঘরে যে ধরনের সেবা প্রয়োজন, অর্থাৎ জটিল রোগীদের হাসপাতালের বাইরে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার কর্মসূচিতেই সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। গত ১০ মাস ধরে ডিক্ল্যানের মা তাঁর দেখাশোনা করছেন। তবে ডিক্ল্যান বলছেন, মা তাঁর সব যত্ন একা করতে পারবেন না। একজনের জন্য এটা বিশাল চাপ। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের অন্তত ১৬ হাজার মানুষ ডিক্ল্যানের মতো অবস্থায় আছে। 

সকালে ও রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ডিক্ল্যানের সাহায্য প্রয়োজন। তাঁর মা অ্যালেক্স রাতে ও তাঁর কাজের সময় ডিক্ল্যানের পরিচর্যাকারী চেয়েছেন। কিন্তু বারবার আবেদন করেও তিনি সাহায্য পাচ্ছেন না। 

ডিক্ল্যানের স্বাস্থ্যের ক্রমাবনতির সঙ্গে সঙ্গে সাহায্যের প্রয়োজনও বেড়ে গেছে। ছেলের খেয়াল রাখার জন্য অ্যালেক্স চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি। কখনো কখনো ডিক্ল্যানের জন্য টানা ৬০ ঘণ্টা জেগে থেকেছেন তিনি। 

অ্যালেক্স বলেন, রাতে ভেন্টিলেটরে কোনো সমস্যা হলে ডিক্ল্যানের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আর তাই তিনি কোনোভাবে স্বস্তিতে থাকতে পারছেন না। 

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সংশ্লিষ্ট ড্যান হার্বার বলেন, এ ধরনের রোগীদে জন্য যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, তাতে অর্থ ও লোকবল—দুটিরই অভাব দেখা দিয়েছে। এই কারণে তাঁরা ঝামেলায় পড়েছেন। 

ডিক্ল্যানের সেবার জন্য প্রতি ঘণ্টায় সরকারের বরাদ্দ প্রায় ১৯ পাউন্ড। তার সেবার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মানুষ প্রয়োজন। কিন্তু তাঁর মা অ্যালেক্স বলেন, ‘ডিক্ল্যানের জীবন সম্পূর্ণ তাঁর সেবাদাতার ওপর নির্ভর করছে। কিন্তু আমাকে এমনসব সহকারী দেওয়া হয়, যারা আমার কাছে কেঁদে বলে, তারা নার্স নয়। এসব তাদের জন্য কঠিন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত