Ajker Patrika

পাকিস্তানে নির্বাচনে কারচুপির প্রতিবাদে রাওয়ালপিন্ডি কমিশনারের পদত্যাগ

আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯: ৪৮
পাকিস্তানে নির্বাচনে কারচুপির প্রতিবাদে রাওয়ালপিন্ডি কমিশনারের পদত্যাগ

পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে চলছে একের পর এক নাটকীয়তা। এবার দেশটির রাওয়ালপিন্ডি বিভাগের কমিশনার লিয়াকত আলী চাথা নির্বাচনে কারচুপির প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন। 

আজ শনিবার তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে বলেছেন, রাওয়ালপিন্ডিতে ব্যাপক নির্বাচনী কারচুপিতে দেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় তিনি ‘অনুতপ্ত’ হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে চাথা নিজ শহরবাসীর প্রতি অবিচার করেছেন স্বীকার করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। 

রাওয়ালপিন্ডি বিভাগে জাতীয় পরিষদের ১৩টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে ১১টি পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) প্রার্থী জিতেছেন। বাকি দুটোর মধ্যে একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং অপরটিতে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) প্রার্থী জিতেছে। বিভাগটিতে ২৭টি প্রাদেশিক আসন রয়েছে। যেখানে পিএমএল-এন ১৫টি এবং ১১টি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছে।

চাথা পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর পুলিশ প্রথমে বলেছিল, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু পরে রাওয়ালপিন্ডি পুলিশের মুখপাত্র এই দাবি থেকে সরে এসে জানিয়েছেন, ওই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে কমিশনার চাথা রাওয়ালপিন্ডি বিভাগে কারচুপির দায়ভার নিজের কাঁধে নিয়ে বলেন, ‘আমরা ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিতদের বিজয়ী ঘোষণা করেছি। আমি আমার বিভাগের রিটার্নিং অফিসারদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমার অধীনস্থদের অনেকেই কারচুপির নির্দেশ পেয়ে কেঁদেছেন তখন।’

চাথা দাবি করেন, ‘আজও নির্বাচনী কর্মীরা ব্যালট পেপারে জাল স্ট্যাম্প লাগাচ্ছেন। আমরা দেশের প্রতি অন্যায় করেছি...আমাকে রাওয়ালপিন্ডির কাচেরি চকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনে কারচুপি নিয়ে নানা পোস্ট এবং বিদেশে অবস্থানরত পাকিস্তানিদের পীড়নে আজ শনিবার সকালে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলেও জানান।

চাথা বলেন, ‘এটি অজানা নয় যে কে এই ধরনের অন্যায় করছে এবং এর পেছনে কারা রয়েছে। রাওয়ালপিন্ডিতে যেই ১৩ জাতীয় পরিষদের প্রার্থী হেরেছেন, তাঁরা ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন।’

পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের দাবি প্রত্যাখ্যান
এদিকে, পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) রাওয়ালপিন্ডি কমিশনারের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, কমিশনের কোনো কর্মকর্তা ফলাফল হেরফের করতে তাঁকে নির্দেশ দেননি। 

নির্বাচন কমিশনের বিবৃতি অনুযায়ী, পাকিস্তানের বিভাগীয় কমিশনাররা কোনো জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নন। নির্বাচন পরিচালনায় তাঁদের সরাসরি কোনো ভূমিকা নেই। এরপরও নির্বাচন কমিশন দ্রুত এই অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করবে।

পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী মহসিন নাকভি এই অভিযোগের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। এ জন্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত