অনলাইন ডেস্ক
প্রতারক ও জালিয়াতদের কাছে বছরের পর বছর ধরে বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন ছিলেন এফবিআই-এর বিশেষ আর্ট ক্রাইম টিমের সদস্য রনি ওয়াকার। তবে তাঁর আসল পরিচয় ছিল গোপন। তিনি ছিলেন ছদ্মবেশী এক গোয়েন্দা।
রোববার সিএনএন জানিয়েছে, ২০০৭ সালে চুরি হওয়া কয়েকটি শিল্পকর্ম, বিশেষ করে ডাচ শিল্পী রেমব্রান্টের সপ্তদশ শতকের একটি চিত্রকর্ম উদ্ধারে জেরি ক্রিস্টি নামে এক চোরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছিল। সেই ক্রিস্টির আস্থা অর্জন করার জন্য ওয়াকার একজন সম্ভাব্য ক্রেতা এবং শিল্প বিশেষজ্ঞের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ক্রিস্টিকে তিনি বিশ্বাস করাতে পেরেছিলেন, রেমব্রান্টের চোরাই শিল্পকর্মটি তিনি বিক্রি করতে পারবেন।
তবে পরিস্থিতি কিছু জটিল হয়ে ওঠে যখন তিনি ক্রিস্টির সহযোগী ও আর্ট ডিলার কার্ট লিডের মুখোমুখি হন। মূলত ক্রিস্টি একের পর এক চিত্রকর্ম চুরি করতেন, কিন্তু তিনি জানতেন না সেগুলোর মূল্য কত। তবে এগুলোর মূল্য সম্পর্কে পরে তাঁকে ধারণা দিতেন শিল্প সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা রাখা কার্ট। আর কার্ট যেহেতু এই জগতের ঝানু ব্যক্তি ছিলেন, তাই তাঁর কাছে ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও ছিল প্রবল।
এ অবস্থায় শিল্প সম্পর্কে বিপুল অধ্যয়নের মাধ্যমে ওয়াকার তাঁর ছদ্মবেশী পরিচয়ে থেকেই ক্রিস্টি ও কার্টের বিশ্বাস অর্জন করেন এবং চোরাই শিল্পকর্ম বিক্রির নাটক সাজিয়ে অপরাধীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন। ক্রিস্টি এবং কার্ট শত শত মিলিয়ন ডলার মূল্যের বিভিন্ন শিল্পকর্ম চুরি করার পরিকল্পনা করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ওয়াকারের সহযোগিতায় এফবিআই একটি অভিযানের মাধ্যমে সেই চুরি প্রতিহত করে এবং দুই অপরাধীকেই গ্রেপ্তার করে। ওয়াকার গোপনে তাঁদের যেসব কথোপকথন রেকর্ড করেছিলেন, সেগুলোর ভিত্তিতে ২০১১ সালে ক্রিস্টি এবং কার্টের কারাদণ্ড হয়।
আর্ট ক্রাইম টিমের শুরুটা
এফবিআই-এর আর্ট ক্রাইম টিমে ওয়াকারের যোগ দেওয়ার পেছনে রয়েছে ২০০৩ সালে সংঘটিত ইরাকের যুদ্ধের কিছু ঘটনা। সে সময় বাগদাদে জাতীয় জাদুঘর থেকে মাত্র ৩৬ ঘণ্টায় প্রায় ১৫ হাজার নিদর্শন লুট হয়ে যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ২০০৪ সালে এফবিআই বিশেষ আর্ট ক্রাইম টিম গঠন করে।
সেই সময় থেকেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় আগ্রহী ওয়াকার এই দলে অন্তর্ভুক্ত হন। এরপর থেকে তিনি শিল্পকর্ম চুরি, জালিয়াতি ও পাচার প্রতিরোধে কাজ করতে থাকেন। ২০ বছরের মধ্যে এই দল প্রায় ২০ হাজার সাংস্কৃতিক নিদর্শন উদ্ধার করেছে—যার বাজারমূল্য এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
ওয়াকার জানান, শিল্পকর্ম চুরি করা তুলনামূলক সহজ, কিন্তু তা বিক্রি করা কঠিন। চুরি হওয়া নামকরা চিত্রকর্ম যেমন—রেনোয়ার বা ডেগাসের কাজগুলো বাজারে বিক্রি করা প্রায় অসম্ভব। কারণ সেগুলো খুব পরিচিত এবং নজরে পড়ে যায়।
ছদ্মবেশী কাজের কৌশল
ওয়াকার তাঁর ছদ্মবেশী চরিত্রকে বাস্তবিক করে তুলতে গভীর প্রস্তুতি নিতেন। কখনো দামি পোশাক পরে আর্ট ডিলারের মতো সাজতেন। কখনো আবার অনাড়ম্বর ধনী এবং নিখাদ শিল্প সংগ্রাহকের চরিত্রে অভিনয় করতেন। এমনকি তিনি সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে বব রসের মোজা পরতেন।
তাঁর মতে, ভালো ছদ্মবেশ তৈরি করতে নিজের চরিত্রের মধ্যে সত্যতা থাকতে হয়। তিনি বলেন, ‘যত বেশি আপনি জানবেন, তত বেশি বিশ্বাসযোগ্য হবেন।’ তাই তিনি বিভিন্ন শিল্পীর কাজ, তাঁদের উপকরণ ও পদ্ধতি সম্পর্কে গভীরভাবে পড়াশোনা এবং অধ্যয়ন করতেন।
শিল্পী ও শিল্পকর্ম রক্ষার নতুন উদ্যোগ
চলতি বছর এফবিআই থেকে অবসর নেওয়ার পর ওয়াকার প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘আর্ট লেগেসি ইনস্টিটিউট’ (এএলআই)। এটি মূলত জীবিত শিল্পীদের কাজ জালিয়াতি থেকে রক্ষা করার জন্য কাজ করে। তিনি বলেন, ‘শিল্পীদের নিজেদের কাজের নিখুঁত ক্যাটালগ সংরক্ষণ জরুরি, যেন ভবিষ্যতে প্রতারকেরা সুযোগ না পায়।’
এ ছাড়া এএলআই একটি নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে কাজ করছে, যেখানে শিল্পকর্মের অনন্য ‘ডিজিটাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট’ তৈরি করা হবে। এটি হাজার হাজার সূক্ষ্ম পৃষ্ঠতলের বৈশিষ্ট্য রেকর্ড করবে, যা কোনো নকলকারীর পক্ষে নকল করা অসম্ভব।
ওয়াকারের মতে, আজকের দিনের প্রযুক্তি যেমন জালিয়াতিকে সহজ করেছে, তেমনি সেই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেই প্রতিরোধ সম্ভব। তিনি বলেন, ‘জীবিত শিল্পীরা এখন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে। তাই তাঁদের কাজ যথাযথভাবে নথিভুক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রতারক ও জালিয়াতদের কাছে বছরের পর বছর ধরে বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন ছিলেন এফবিআই-এর বিশেষ আর্ট ক্রাইম টিমের সদস্য রনি ওয়াকার। তবে তাঁর আসল পরিচয় ছিল গোপন। তিনি ছিলেন ছদ্মবেশী এক গোয়েন্দা।
রোববার সিএনএন জানিয়েছে, ২০০৭ সালে চুরি হওয়া কয়েকটি শিল্পকর্ম, বিশেষ করে ডাচ শিল্পী রেমব্রান্টের সপ্তদশ শতকের একটি চিত্রকর্ম উদ্ধারে জেরি ক্রিস্টি নামে এক চোরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছিল। সেই ক্রিস্টির আস্থা অর্জন করার জন্য ওয়াকার একজন সম্ভাব্য ক্রেতা এবং শিল্প বিশেষজ্ঞের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ক্রিস্টিকে তিনি বিশ্বাস করাতে পেরেছিলেন, রেমব্রান্টের চোরাই শিল্পকর্মটি তিনি বিক্রি করতে পারবেন।
তবে পরিস্থিতি কিছু জটিল হয়ে ওঠে যখন তিনি ক্রিস্টির সহযোগী ও আর্ট ডিলার কার্ট লিডের মুখোমুখি হন। মূলত ক্রিস্টি একের পর এক চিত্রকর্ম চুরি করতেন, কিন্তু তিনি জানতেন না সেগুলোর মূল্য কত। তবে এগুলোর মূল্য সম্পর্কে পরে তাঁকে ধারণা দিতেন শিল্প সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা রাখা কার্ট। আর কার্ট যেহেতু এই জগতের ঝানু ব্যক্তি ছিলেন, তাই তাঁর কাছে ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও ছিল প্রবল।
এ অবস্থায় শিল্প সম্পর্কে বিপুল অধ্যয়নের মাধ্যমে ওয়াকার তাঁর ছদ্মবেশী পরিচয়ে থেকেই ক্রিস্টি ও কার্টের বিশ্বাস অর্জন করেন এবং চোরাই শিল্পকর্ম বিক্রির নাটক সাজিয়ে অপরাধীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন। ক্রিস্টি এবং কার্ট শত শত মিলিয়ন ডলার মূল্যের বিভিন্ন শিল্পকর্ম চুরি করার পরিকল্পনা করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ওয়াকারের সহযোগিতায় এফবিআই একটি অভিযানের মাধ্যমে সেই চুরি প্রতিহত করে এবং দুই অপরাধীকেই গ্রেপ্তার করে। ওয়াকার গোপনে তাঁদের যেসব কথোপকথন রেকর্ড করেছিলেন, সেগুলোর ভিত্তিতে ২০১১ সালে ক্রিস্টি এবং কার্টের কারাদণ্ড হয়।
আর্ট ক্রাইম টিমের শুরুটা
এফবিআই-এর আর্ট ক্রাইম টিমে ওয়াকারের যোগ দেওয়ার পেছনে রয়েছে ২০০৩ সালে সংঘটিত ইরাকের যুদ্ধের কিছু ঘটনা। সে সময় বাগদাদে জাতীয় জাদুঘর থেকে মাত্র ৩৬ ঘণ্টায় প্রায় ১৫ হাজার নিদর্শন লুট হয়ে যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ২০০৪ সালে এফবিআই বিশেষ আর্ট ক্রাইম টিম গঠন করে।
সেই সময় থেকেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় আগ্রহী ওয়াকার এই দলে অন্তর্ভুক্ত হন। এরপর থেকে তিনি শিল্পকর্ম চুরি, জালিয়াতি ও পাচার প্রতিরোধে কাজ করতে থাকেন। ২০ বছরের মধ্যে এই দল প্রায় ২০ হাজার সাংস্কৃতিক নিদর্শন উদ্ধার করেছে—যার বাজারমূল্য এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
ওয়াকার জানান, শিল্পকর্ম চুরি করা তুলনামূলক সহজ, কিন্তু তা বিক্রি করা কঠিন। চুরি হওয়া নামকরা চিত্রকর্ম যেমন—রেনোয়ার বা ডেগাসের কাজগুলো বাজারে বিক্রি করা প্রায় অসম্ভব। কারণ সেগুলো খুব পরিচিত এবং নজরে পড়ে যায়।
ছদ্মবেশী কাজের কৌশল
ওয়াকার তাঁর ছদ্মবেশী চরিত্রকে বাস্তবিক করে তুলতে গভীর প্রস্তুতি নিতেন। কখনো দামি পোশাক পরে আর্ট ডিলারের মতো সাজতেন। কখনো আবার অনাড়ম্বর ধনী এবং নিখাদ শিল্প সংগ্রাহকের চরিত্রে অভিনয় করতেন। এমনকি তিনি সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে বব রসের মোজা পরতেন।
তাঁর মতে, ভালো ছদ্মবেশ তৈরি করতে নিজের চরিত্রের মধ্যে সত্যতা থাকতে হয়। তিনি বলেন, ‘যত বেশি আপনি জানবেন, তত বেশি বিশ্বাসযোগ্য হবেন।’ তাই তিনি বিভিন্ন শিল্পীর কাজ, তাঁদের উপকরণ ও পদ্ধতি সম্পর্কে গভীরভাবে পড়াশোনা এবং অধ্যয়ন করতেন।
শিল্পী ও শিল্পকর্ম রক্ষার নতুন উদ্যোগ
চলতি বছর এফবিআই থেকে অবসর নেওয়ার পর ওয়াকার প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘আর্ট লেগেসি ইনস্টিটিউট’ (এএলআই)। এটি মূলত জীবিত শিল্পীদের কাজ জালিয়াতি থেকে রক্ষা করার জন্য কাজ করে। তিনি বলেন, ‘শিল্পীদের নিজেদের কাজের নিখুঁত ক্যাটালগ সংরক্ষণ জরুরি, যেন ভবিষ্যতে প্রতারকেরা সুযোগ না পায়।’
এ ছাড়া এএলআই একটি নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে কাজ করছে, যেখানে শিল্পকর্মের অনন্য ‘ডিজিটাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট’ তৈরি করা হবে। এটি হাজার হাজার সূক্ষ্ম পৃষ্ঠতলের বৈশিষ্ট্য রেকর্ড করবে, যা কোনো নকলকারীর পক্ষে নকল করা অসম্ভব।
ওয়াকারের মতে, আজকের দিনের প্রযুক্তি যেমন জালিয়াতিকে সহজ করেছে, তেমনি সেই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেই প্রতিরোধ সম্ভব। তিনি বলেন, ‘জীবিত শিল্পীরা এখন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে। তাই তাঁদের কাজ যথাযথভাবে নথিভুক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা মহাত্মা গান্ধীর একটি দুর্লভ অয়েল পোর্ট্রেট বা তৈলচিত্র লন্ডনে নিলামে বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৮০০ পাউন্ডে বা ২ লাখ ৪ হাজার ৬৪৮ মার্কিন ডলারে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
১৪ মিনিট আগেরাশিয়ার উৎপাদিত পণ্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বাজারে প্রবেশ করাতে চায় মস্কো। আর এ লক্ষ্য মিয়ানমার হয়ে ভারতের ভেতর দিয়ে একটি বাণিজ্য করিডর গঠনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাবের আলোকে মিয়ানমার ও রাশিয়া ভারতকে এই নতুন প্রকল্পে যুক্ত হতে চাপ দিচ্ছে। একই সঙ্গে, এই করিডরের অন্যতম লক্ষ্য...
২ ঘণ্টা আগেভারত আগামী সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৩টি অ্যাপাচি অ্যাটাক হেলিকপ্টার পেতে যাচ্ছে। আগামী ২১ জুলাই ভারত হেলিকপ্টারগুলো হাতে পাবে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পাকিস্তান সীমান্তে মোতায়েন করা হতে পারে এসব হেলিকপ্টার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
৩ ঘণ্টা আগেইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দুর্নীতি মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তার পদোন্নতি আটকে দিয়েছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির। গতকাল মঙ্গলবার তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন। এ নিয়ে পুলিশের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে