Ajker Patrika

নিষেধাজ্ঞা ভেঙে আল-আকসায় ঢুকে পড়ল ইসরায়েলিরা, ফিলিস্তিনিদের মারধর

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৭ মে ২০২৫, ১৩: ৩১
জেরুজালেম মার্চে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ও কট্টর ডানপন্থী নেতা ইতামার বেন-গভির। ছবি: এএফপি
জেরুজালেম মার্চে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ও কট্টর ডানপন্থী নেতা ইতামার বেন-গভির। ছবি: এএফপি

আবারও নিষেধাজ্ঞা ভেঙে আল-আকসা মসজিদ কম্পাউন্ডে প্রবেশ করল ইসরায়েলিরা। গতকাল সোমবার এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘জেরুজালেম দিবস’-এর মিছিল চলাকালীন উগ্রবাদী ইহুদিরা এ কাণ্ড করেছে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে ছয় দিনের যুদ্ধের পর জেরুজালেমের নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে চলে যাওয়ার দিনকে ‘জেরুজালেম দিবস’ হিসেবে উদ্‌যাপন করে কট্টরপন্থী ইহুদিরা।

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, আল-আকসা মসজিদ কম্পাউন্ডের ভেতরে প্রবেশ করে কমপক্ষে ২ হাজার ইসরায়েলি। এর মধ্যে ছিলেন ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী কট্টর ডানপন্থী নেতা ইতামার বেন-গভিরও। ইসলাম ধর্মে তৃতীয় পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত এই মসজিদে উপস্থিত হয়ে সামাজিক মাধ্যম এক্সে একটি ভিডিও পোস্ট করেন তিনি। ওই ভিডিওতে তাঁর সঙ্গে ইসরায়েলি পার্লামেন্টের সদস্য ইৎজাক ক্রুজার এবং নেগেভ ও গালিলি অঞ্চলের মন্ত্রী ইৎজাক ভাসেরলফকেও দেখা যায়। ভিডিওতে বেন-গভির বলেন, ‘প্রার্থনা করেছি যেন এই যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করতে পারি। পাশাপাশি হামাসের হাতে জিম্মি সবাইকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ফেরত আনা এবং শিন বেতের নতুন প্রধানের সফলতা চেয়েছি।’

আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুরাতন জেরুজালেমের মুসলিম কোয়ার্টারের পাশ দিয়ে ‘জেরুজালেম মার্চ’ নামে শোভাযাত্রা করে ইসরায়েলিরা। এ সময় তারা ‘আরব নিপাত যাক’, ‘তোদের বসতি জ্বলুক’—এ ধরনের স্লোগান দেয়। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের বেশির ভাগই জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরে বসবাসকারী দখলদার ইসরায়েলি। আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে তারা ওই অঞ্চলের অবৈধ বাসিন্দা হিসেবে চিহ্নিত।

এর আগেও পুলিশি নিরাপত্তায় আল-আকসা কম্পাউন্ডের ভেতরে প্রবেশ করেছিলেন বেন-গভির। বেন-গভিরের এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে উসকানিমূলক আখ্যা দিয়েছে বিভিন্ন মহল।

১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করলেও, আন্তর্জাতিক চাপের কারণে ইসরায়েল ঘোষণা দেয়, ইসলাম ধর্মীয় স্থানগুলোর প্রশাসন মুসলিম কর্তৃপক্ষের অধীনেই থাকবে, যদিও নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে ইসরায়েলের হাতে। এই ব্যবস্থাকে বলা হয় ‘স্থিতাবস্থার নীতি’। এর আওতায়, আল-আকসা চত্বরে শুধু মুসলিমদেরই প্রার্থনার অনুমতি আছে, সেখানে অমুসলিমদের প্রবেশ সীমিত এবং প্রার্থনা নিষিদ্ধ। এই চত্বরের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে জর্ডান সরকারের নিযুক্ত ইসলামিক ওয়াকফ কাউন্সিলের হাতে। ওয়াকফ কর্তৃপক্ষ এর তত্ত্বাবধান করে থাকে। এই মসজিদ চত্বরকে ধর্মীয় পবিত্রতা ও মুসলিম অধিকার রক্ষার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৯৪ সালে ইসরায়েল ও জর্ডানের মধ্যকার শান্তিচুক্তিতেও এই দায়িত্বের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

ইসরায়েলি সুপ্রিম কোর্টও আল-আকসা চত্বরে ইহুদিদের প্রার্থনায় নিষেধাজ্ঞার পক্ষে রায় দিয়েছে। এ ছাড়া, জাতিসংঘসহ অধিকাংশ আন্তর্জাতিক সংস্থা পূর্ব জেরুজালেমকে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে এবং সেখানে ইসরায়েলের হস্তক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হয়।

গতকালের শোভাযাত্রা থেকে হামলা করা হয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর সদর দপ্তরেও। ইউএনআরডব্লিউএর পশ্চিম তীরের সমন্বয়ক রোলান্ড ফ্রেডরিক বলেন, ‘পুলিশের সামনেই কয়েক ডজন ইসরায়েলি বিক্ষোভকারী সদর দরজা টপকে ইউএনআরডব্লিউএ কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন পার্লামেন্ট সদস্য ইউলিয়া মালিনভস্কি। ইউএনআরডব্লিউএর ওপর ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের মূল হোতা তিনিই।’

এ ছাড়া, স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের ওপরও আক্রমণ চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলিরা। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে বেশ কয়েকটি ভিডিও—যেগুলোতে দেখা যায়, ইসরায়েলি পতাকা হাতে বেশ কয়েকজন কিশোর ফিলিস্তিনি দোকানিদের হয়রানি করছে। এ ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুরো এলাকায় মোতায়েন ছিল অতিরিক্ত কয়েক হাজার সশস্ত্র পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রফেসর আনোয়ারা আ.লীগের লোক হলে এত অপমান নিয়ে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হতো না: ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময়

রাশিয়া-পাকিস্তান চুক্তি: দক্ষিণ এশিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্যে নতুন মোড়ের ইঙ্গিত

ফারুক কেন নিঃসঙ্গ হলেন

বৃষ্টির রাতে সব গরু নিয়ে বাগানে চোর, তবে...

ছাত্রদল সভাপতির পদ হারানোর গুঞ্জন, সম্পাদক বললেন প্রোপাগান্ডা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত