Ajker Patrika

অস্ত্রসমর্পণের গুঞ্জন উড়িয়ে দিল হিজবুল্লাহ

অনলাইন ডেস্ক
হিজবুল্লাহ প্রধান নাঈম কাশেম। ছবি: এএফপি
হিজবুল্লাহ প্রধান নাঈম কাশেম। ছবি: এএফপি

অস্ত্রসমর্পণ করছে না ইরান সমর্থিত লেবানিজ সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। গত শুক্রবার হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন গোষ্ঠীটির প্রধান নাঈম কাশেম। ইসরায়েলের আগ্রাসী আচরণ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত হিজবুল্লাহ কোনো আলোচনায় বসবে না বলেও জানান তিনি।

বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং ইসরায়েলি সেনারা লেবাননের আকাশসীমা লঙ্ঘন বন্ধ না করা পর্যন্ত অস্ত্রসমর্পণ না করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকবে হিজবুল্লাহ। নাঈম কাশেম বলেন, ‘কাউকে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিতে দেওয়া হবে না। এই অস্ত্রগুলোই লেবানিজদের প্রাণ এবং স্বাধীনতা। যখন আমাদের মাথার ওপর দিয়ে শত্রুপক্ষের যুদ্ধবিমান উড়ে যাচ্ছে এবং আমাদের দক্ষিণাঞ্চল তাদের দখলে রয়েছে, তখন কেউ কীভাবে আশা করে যে আমরা আলোচনায় বসব?’

তাঁর ভাষ্য—এমন পরিস্থিতিতে আলোচনায় বসতে বাধ্য করা হিজবুল্লাহর আত্মসমর্পণের সমতুল্য। কাশেম বলেন, ‘এর অর্থ আলোচনা নয়, বরং আত্মসমর্পণই। আগে ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহার করুক, লেবাননের আকাশসীমায় যুদ্ধবিমান নিয়ে ওড়া বন্ধ করুক। এরপর আমরা আলোচনার টেবিলে বসব, তার আগে নয়।’

এর আগে গত ৮ এপ্রিল বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছিল, অস্ত্রসমর্পণের আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে হিজবুল্লাহ। এক জ্যেষ্ঠ নেতার বারত দিয়ে খবরটি জানানো হলেও তাঁর নাম প্রকাশ করা হয়নি। পরে, এ বিষয়ে হিজবুল্লাহর মিডিয়া অফিসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে রয়টার্স। তবে, তাতে সাড়া মেলেনি।

হিজবুল্লাহ প্রধান আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে, তার সব শর্তই ৫ মাস ধরে মেনে চলেছে হিজবুল্লাহ। কিন্তু ইসরায়েল বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে বারবার শর্ত ভেঙে হামলা চালিয়েছে। গত নভেম্বরে ইসরায়েল–হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। কিন্তু, এরপরও এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে নিহত হয়েছে অন্তত ৭১ জন বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে ১৪ জন শিশু ও নারী। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

ইসরায়েলের হামলায় হিজবুল্লাহর সাবেক প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ ও তাঁর উত্তরসূরি হাশেম শাফিদ্দিনের মৃত্যুর পর গত বছরের ২৯ অক্টোবর থেকে গোষ্ঠীটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নাঈম কাশেম।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হলে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে রকেট হামলা চালায় ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটি। তাদের ভাষ্য—গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদ জানানো তাদের মানবিক, নৈতিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব। পরে, দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনার একপর্যায়ে লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। ১৪ মাস ধরে চলা ওই সংঘাতে প্রাণ হারান অন্তত ৪ হাজার লেবানিজ, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক। যদিও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু কেবল হিজবুল্লাহর ঘাঁটি ও সামরিক অবকাঠামো।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি আগ্রাসনে লেবাননে যে পরিমাণ অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে তা পুনর্নির্মাণ করতে ১১ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত