Ajker Patrika

ট্রাম্প-সির কথা হলো ফোনে, নিশ্চিত করল চীন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সিএনএন
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সিএনএন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং টেলিফোনে কথা বলেছেন। চীনের ওয়াশিংটন দূতাবাস জানিয়েছে, বিশ্ব অর্থনীতিকে অস্থির করে তোলা শুল্ক নিয়ে মতপার্থক্য নিরসনের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) এই ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়। চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের অনুরোধেই এই আলোচনা হয়েছে। তবে এর বেশি বিস্তারিত তথ্য জানায়নি তারা। হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই গুরুত্বপূর্ণ ফোনালাপ এমন একসময়ে হলো যখন বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দুটির দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গত মে মাসে, জেনেভায় দীর্ঘ আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একে অপরের পণ্যের ওপর থেকে সাময়িকভাবে শুল্ক কমাতে রাজি হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী, ৯০ দিনের আলোচনা চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করবে। অন্যদিকে চীনও তাদের পাল্টা শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করবে। তবে গত ৩০ মে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেন, চীন দুই সপ্তাহ আগের শুল্ক কমানোর চুক্তিটি লঙ্ঘন করেছে। এমন পরিস্থিতিতে এ ফোনালাপ বাণিজ্যযুদ্ধ বন্ধে নতুন আশার সঞ্চার করবে বলছেন বিনিয়োগকারীরা।

জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন ট্রাম্প। এর পর থেকেই দুই দেশ একে অপরের পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করে আসছিল। গত ১২ মে উভয় দেশ ৯০ দিনের জন্য একটি অস্থায়ী চুক্তিতে পৌঁছায়, যেখানে কিছু শুল্ক কমানোর কথা বলা হয়েছিল। এই চুক্তি সাময়িক স্বস্তি দিলেও, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অন্যান্য বড় সমস্যা, যেমন—অবৈধ ফেন্টানিল বাণিজ্য, তাইওয়ানের মর্যাদা ও চীনের রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত, রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতি মডেল নিয়ে উদ্বেগ রয়েই গেছে।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে ট্রাম্প বাণিজ্যযুদ্ধ বাধিয়ে দিয়েছেন। যদিও শেষ মুহূর্তে কিছু সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছেন, তবে তাঁর এই অনিশ্চিত মনোভাব বিশ্বের নেতাদের ও ব্যবসায়ীদের বিভ্রান্ত করেছে। কারণ তাঁর হুটহাট সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্ববাজারের পূর্বাভাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

এদিকে এপ্রিল মাস থেকে চীন হঠাৎ করেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও চুম্বক রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গাড়ি নির্মাতা, কম্পিউটার চিপ প্রস্তুতকারক ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহকারীদের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহে সমস্যা তৈরি হয়েছে। বেইজিং খনিজ রপ্তানিকে একটি চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে দেখছে। যদি এই রপ্তানি বন্ধের কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যায়, তাহলে ট্রাম্পের ওপর অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ বাড়তে পারে।

৯০ দিনের শুল্ক কমানোর চুক্তিটি এখন নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন এবং চিফ ডিজাইন সফটওয়্যার ও অন্যান্য চীনা পণ্যের চালান নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের শুল্কও ৫০ শতাংশে বাড়িয়েছেন। বেইজিং অবশ্য এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে তাদের প্রধান ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ট্রাম্প বারবার বাণিজ্য হুমকি ও শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলেও মাঝে মধ্যেই সেগুলো শেষ মুহূর্তে প্রত্যাহার করেছেন, যা বৈশ্বিক নেতাদের বিভ্রান্ত করেছে এবং ব্যবসায়ীদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

তবে এসব উত্তেজনার মধ্যেও ট্রাম্প সি চিন পিংয়ের প্রশংসা করে বলেছেন, তিনি একজন ‘দৃঢ়’ নেতা এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সক্ষমতা তাঁর আছে, যা মার্কিন প্রেসিডেন্টদের ক্ষেত্রে নেই।

চীন বরাবরই বলে এসেছে, দুই নেতার মধ্যে সরাসরি আলোচনার আগে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি প্রয়োজন। অন্যদিকে ট্রাম্প ও তাঁর উপদেষ্টারা মনে করেন, উচ্চপর্যায়ের এমন কথোপকথনই কেবল কঠিন আলোচনায় অচলাবস্থা কাটাতে পারে।

দুই নেতার সর্বশেষ সরাসরি যোগাযোগ কবে হয়েছিল, তা স্পষ্ট নয়। সর্বশেষ, ট্রাম্প ও সি চিন পিংয়ের সরাসরি সাক্ষাৎ হয়েছিল ২০১৯ সালে জাপানের ওসাকায় অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে। এরপর ২০২৩ সালের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে সি চিন পিং যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছিলেন। তখন সামরিক যোগাযোগ পুনরায় চালু করা ও ফেন্টানিল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে একমত হয় দুই দেশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সংসদ নির্বাচন: মনোনয়নের সংকেত পেয়ে প্রচারে বিএনপির প্রার্থীরা

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

ফখরুলের কণ্ঠ নকলের মাধ্যমে অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগ বিএনপির

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর: সাঁকো বেয়ে উঠতে হয় চার কোটির সেতুতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সুদানে বিদ্রোহী আরএসএফকে চীনা ড্রোন–কামান দিচ্ছে আরব আমিরাত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ০৪
দারফুর অঞ্চলের এল–ফাশেরে আরএসএফ বাহিনীর কিছু সদস্য। ছবি: এএফপি
দারফুর অঞ্চলের এল–ফাশেরে আরএসএফ বাহিনীর কিছু সদস্য। ছবি: এএফপি

সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সম্প্রতি চীনা ড্রোনসহ নানা ধরনের অস্ত্র সুদানের বিদ্রোহী আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) কাছে সরবরাহ বাড়িয়েছে। এমনটাই দাবি করেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এ ছাড়া, মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, আরব আমিরাত আরএসএফ–কে বোমা ও হাউইটজার পাঠাচ্ছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের গোয়েন্দা বিভাগ এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা চলতি বছর অক্টোবর পর্যন্ত এই অস্ত্র সরবরাহ বৃদ্ধির তথ্য পেয়েছে। এই অস্ত্রগুলো সেই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে যাচ্ছে, যাদের বিরুদ্ধে দারফুরে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরবরাহকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে আরব আমিরাতের অর্থায়নে কেনা উন্নত মানের চীনা তৈরি ড্রোন, হালকা অস্ত্র, ভারী মেশিনগান, যানবাহন, কামান, মর্টার এবং গোলাবারুদ। আরএসএফের প্রতি আরব আমিরাতের সমর্থনের বিষয়টি আগেও বহুবার প্রমাণিত হয়েছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এই তথ্যের অনেকটাই লন্ডন থেকে প্রকাশিত মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই-এর আগের প্রতিবেদনগুলোর সঙ্গে মিলে গেছে।

মিডল ইস্ট আই ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জানিয়েছিল, আরব আমিরাত এক জটিল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে লিবিয়া, চাদ, উগান্ডা এবং সোমালিয়ার বিচ্ছিন্ন অঞ্চল হয়ে আরএসএফের কাছে অস্ত্র পাঠাচ্ছে। এ ছাড়া, গত মে মাসে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, আরব আমিরাত চীনের তৈরি জিবি–৫০এ গাইডেড বোমা এবং ১৫৫ মিলিমিটার এইচ-৪ হাউইটজার কামান দারফুরে পাঠাচ্ছে। ওই অঞ্চলে আরএসএফ সে সময় অনেকগুলো শহর অবরোধ করে রেখেছিল।

গত সপ্তাহে আরএসএফ উত্তর দারফুরের শহর এল-ফাশেরে হামলা চালায়। পরে তারা সেখানকার বেসামরিক মানুষদের হত্যার ভিডিও প্রকাশ করে। আরএসএফের এই অভিযানের খবর প্রকাশিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শুরু হওয়া শান্তি আলোচনার ভেঙে যাওয়ার পরপরই।

গত সপ্তাহে আরএসএফ উত্তর দারফুরের শহর এল-ফাশেরে হামলা চালায়। পরে তারা সেখানকার বেসামরিক মানুষদের হত্যার ভিডিও প্রকাশ করে। আরএসএফের এই অভিযানের খবর প্রকাশিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শুরু হওয়া শান্তি আলোচনার ভেঙে যাওয়ার পরপরই।

মিডল ইস্ট আইকে একটি সূত্র জানিয়েছে, আরএসএফের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইউএই এল-ফাশেরের অবরোধ নিয়ে কোনো অবস্থান নেয়নি। শহরটি ৫০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ। আলোচনা গত শুক্রবার ভেঙে পড়ে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্চের পর আরব আমিরাতের অস্ত্র সহায়তা আরও বাড়ে। তখন ইরান, তুরস্ক ও মিসরের সমর্থনে সুদানি সেনাবাহিনী রাজধানী খার্তুমের পুরো নিয়ন্ত্রণ পুনরায় নেয়।

সংবাদমাধ্যমটি জানায় মে মাসে জানায়, আরএসএফ আরব আমিরাতের কাছ থেকে চীনা ড্রোন ব্যবহার করে সরকার-নিয়ন্ত্রিত বন্দরনগরী পোর্ট সুদানে হামলা চালায়। এতে তুর্কি সেনা বিশেষজ্ঞ দলের কয়েকজন আহত হন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের তথ্যানুসারে, এখন আরব আমিরাত আরএসএফকে চীনা সরকারি ঠিকাদার ‘চায়না অ্যারোস্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি করপোরেশন’-এর তৈরি ‘রেইনবো সিরিজ’ ড্রোন সরবরাহ করছে। এর মধ্যে ‘সিএইচ-৯৫’ মডেলের ড্রোন ২৪ ঘণ্টা টানা উড়তে পারে এবং সুনির্দিষ্ট হামলা চালাতে সক্ষম। এটি দূরপাল্লার নজরদারি ও বিমান হামলার জন্য ব্যবহারযোগ্য।

খার্তুমে পরাজয়ের পর আরএসএফ আবার দারফুর অঞ্চলে আক্রমণ শুরু করে। এই অঞ্চলেই আরএসএফের উত্থান—তাদের পূর্বসূরি ছিল ঘোড়সওয়ার ‘জানজাওয়িদ’ মিলিশিয়া। এই বাহিনী ওমর আল বশিরের সরকারের পক্ষে অনারবদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল।

আরএসএফ নেতা মোহাম্মদ হামদান দাগালো, যিনি ‘হেমেদতি’ নামে পরিচিত, আরব আমিরাতের ঘনিষ্ঠ মিত্র। তাঁর ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের কেন্দ্র দুবাইয়ে। হেমেদতি ও তাঁর পরিবার দারফুরের স্বর্ণখনি থেকে উত্তোলিত বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ আরব আমিরাত হয়ে পাচার করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সংসদ নির্বাচন: মনোনয়নের সংকেত পেয়ে প্রচারে বিএনপির প্রার্থীরা

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

ফখরুলের কণ্ঠ নকলের মাধ্যমে অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগ বিএনপির

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর: সাঁকো বেয়ে উঠতে হয় চার কোটির সেতুতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশে আটক সোনালীকে নিয়ে এবার বেকায়দায় মোদি সরকার, ভোটার তালিকায় বাবা-মায়ের নাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ১৪
সোনালী খাতুন ও তাঁর স্বামী দানিশ। ছবি: সংগৃহীত
সোনালী খাতুন ও তাঁর স্বামী দানিশ। ছবি: সংগৃহীত

অবৈধ অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে অন্তঃসত্ত্বা সোনালী খাতুন এবং তাঁর পরিবারকে গত জুনে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করার ঘটনায় নতুন মোড়। সোনালীর বাবা-মা গতকাল শনিবার ভারতের নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্তৃক প্রকাশিত ২০০২ সালের পশ্চিমবঙ্গ ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম খুঁজে পেয়েছেন। এই তথ্য সামনে আসার পর সোনালীর পরিবার প্রশ্ন তুলেছে—তাঁদের মেয়ে ও জামাইকে দেশে ফেরাতে আর কী প্রমাণ লাগবে?

বীরভূম জেলার পাইকর গ্রাম থেকে সোনালীর বাবা ভদু শেখ মোবাইল ফোনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘এখন আমাদের নাম তালিকায় পাওয়া গেছে। আমার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে এবং তার পরিবারকে ঘরে ফেরানোর জন্য আর কী লাগবে? কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, এমনকি বাংলাদেশের একটি আদালতও তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু এখনো কিছুই হয়নি।’

সোনালীর মা জ্যোৎস্না বিবি মেয়ের স্বাস্থ্য নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘ওখানে জেলে আমার মেয়ের কী ধরনের যত্ন হচ্ছে, আমরা জানি না। ওকে ফিরে এসে ভারতেই সন্তান প্রসব করতে হবে। আমরা ওর জন্য খুবই চিন্তিত।’

সোনালীর প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী রঘুনাথ চক্রবর্তী নিশ্চিত করেছেন, সোনালীর বাবা-মায়ের নাম বীরভূম জেলার মুরারাই বিধানসভা কেন্দ্রের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় পাওয়া গেছে। পাইকর গ্রামের পাইকর প্রাথমিক বিদ্যালয়কে তাঁদের ভোটকেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

রঘুনাথ বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও সোনালী এবং তাঁর পরিবার এখনো বাড়ি ফিরতে পারেনি, এটা দুঃখজনক। অন্তঃসত্ত্বা সোনালীর বিষয়টিও উদ্বেগের কারণ।’ তিনি আরও দাবি করেন, এই নতুন তথ্য সোনালী খাতুন দম্পতির মামলাকে আরও শক্তিশালী করেছে। তাঁর মতে, সোনালীর সন্তান যদি বাংলাদেশেও জন্মগ্রহণ করে, তাহলেও সে ‘বংশগতভাবে’ ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবে।

বর্তমানে সোনালী, তাঁর স্বামী দানিশ এবং আট বছরের ছেলে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে কারাগারে বন্দী আছেন। দিল্লি পুলিশ আটক করার পর গত ২৬ জুন তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়। এই পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারটি প্রায় ২০ বছর ধরে দিল্লিতে আবর্জনা কুড়ানোর কাজ করত।

গত সেপ্টেম্বরে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, সোনালী এবং তাঁর পরিবারের পাশাপাশি সুইটি বিবি (৩২) ও তাঁর দুই ছেলে—যাদের একই অভিযোগে একই সময়ে আটক করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল—সবাইকে এক মাসের মধ্যে ভারতে ফিরিয়ে আনতে হবে। যদিও কেন্দ্র সরকার এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছে।

এদিকে, সোনালীর বাবা-মা হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও তাঁদের মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে ‘ব্যর্থ হওয়ায়’ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একটি আদালত অবমাননার মামলাও করেছেন। সোনালীসহ ছয়জনকে ফিরিয়ে আনার জন্য হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা ২৪ অক্টোবর শেষ হয়ে গেছে। এর আগে ৩ অক্টোবর বাংলাদেশের একটি আদালতও তাঁদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে ঘোষণা করে ভারতে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল।

এই ঘটনা সামনে আসতেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস কেন্দ্র সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে। তৃণমূল দাবি করেছে, সোনালীর বাবা-মা ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত ভারতীয় নাগরিক। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে তৃণমূল কংগ্রেস এটিকে নির্বাচনী তালিকার বিশেষ সংশোধন (এসআইআর)-এর নামে ‘বাংলার এবং এর জনগণের ওপর আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছে।

তৃণমূল লিখেছে, ‘যে অন্তঃসত্ত্বা বাঙালি নারীর বাবা-মা ২০০২ সালের নির্বাচনী তালিকায় ভারতীয় নাগরিক হিসেবে নথিভুক্ত, তাঁকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী তকমা দিয়ে নির্বাসিত করা প্রশাসনিক ভুল নয়; এটি জাতীয়তাবাদের নামে একটি নৈতিক পতন।’

তৃণমূল সাংসদ এবং পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের চেয়ারম্যান সমীরুল ইসলাম বলেন, ‘এটি কেন্দ্রের মুখে আরও একটি চপেটাঘাত।...শুধু দরিদ্র বাংলাভাষী পরিযায়ী হওয়ার কারণে তাঁদের অবৈধ বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে দিল্লি থেকে আটক করে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সংসদ নির্বাচন: মনোনয়নের সংকেত পেয়ে প্রচারে বিএনপির প্রার্থীরা

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

ফখরুলের কণ্ঠ নকলের মাধ্যমে অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগ বিএনপির

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর: সাঁকো বেয়ে উঠতে হয় চার কোটির সেতুতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘গ্রে জোনে’ হাজার হাজার রুশ সেনা, কোণঠাসা ইউক্রেনের বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পোকরোভস্ক শহরটি দখলে নিতে পারলে রাশিয়া পুরো অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার প্রচেষ্টায় উল্লেখযোগ্য সুবিধা পেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
পোকরোভস্ক শহরটি দখলে নিতে পারলে রাশিয়া পুরো অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার প্রচেষ্টায় উল্লেখযোগ্য সুবিধা পেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর পোকরোভস্কে রুশসেনারা বড় ধরনের আক্রমণ চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন জেনারেল ওলেক্সান্দর সিরস্কি। এই শীর্ষ সামরিক কমান্ডার আরও জানান, তাঁর সেনারা সেখানে ‘বিরূপ পরিস্থিতি’র মুখোমুখি হয়েছে। হাজার হাজার রুশ সেনা সেখানে অবস্থান নেওয়ায় তাঁরা অবরুদ্ধ অবস্থায় পড়েছে।

‘গ্রে জোন’-এ পরিণত হওয়া পোকরোভস্ক শহর একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন ও সরবরাহ কেন্দ্র। শহরটি দখল করতে পারলে রাশিয়া পুরো অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার প্রচেষ্টায় উল্লেখযোগ্য সুবিধা পেতে পারে।

এদিকে মস্কোর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ইউক্রেনীয় সেনারা আত্মসমর্পণ করছে এবং হেলিকপ্টারে নেমে আসার পর তাদের ১১ জন বিশেষ বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছে। তবে কিয়েভ এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

শনিবার টেলিগ্রামে দেওয়া পোস্টগুলোতে জেনারেল সিরস্কি জানান, পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্ক অঞ্চলে অবস্থানরত সামরিক কমান্ডারদের কাছ থেকে সরাসরি সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে তিনি আবারও ফ্রন্টলাইনে ফিরে গেছেন।

রুশ বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ লাইনে হামলা করতে থাকায় সেগুলো রক্ষায় বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান কমান্ডার।

স্বল্পদৈর্ঘ্য একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সিরস্কি ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা প্রধান কিরিলো বুদানভসহ অন্যান্য কমান্ডারদের সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রের মানচিত্র পর্যালোচনা করছেন। তবে ভিডিওটি কবে এবং কোথায় ধারণ করা হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য পায়নি বিবিসি।

রাশিয়া এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দখল করার চেষ্টা করছে। আর বিশেষ বাহিনী মোতায়েনের এই পদক্ষেপ থেকে বোঝা যায়, কিয়েভ যেকোনো মূল্যে ওই শহরটি ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

বিশেষ বাহিনীর অভিযানের তত্ত্বাবধান করতে ওই গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সামরিক গোয়েন্দা প্রধান কিরিলো বুদানভের অবস্থান নেওয়া সম্পর্কে ইউক্রেনীয় গণমাধ্যম আগেই জানিয়েছিল।

গতকাল শনিবার ইউক্রেনের ৭ম র‍্যাপিড রেসপন্স কর্পস জানিয়েছে, পোকরোভস্কে ইউক্রেনীয় সেনারা তাদের ‘কৌশলগত অবস্থান উন্নত করেছে’, তবে পরিস্থিতি এখনো ‘কঠিন ও পরিবর্তনশীল’।

এর আগে শুক্রবার রাতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেন, পোকরোভস্কের প্রতিরক্ষা এখন ‘অগ্রাধিকারমূলক’ বিষয়।

রাশিয়া-দখলকৃত আঞ্চলিক রাজধানী দোনেৎস্কের পশ্চিমে অবস্থিত এই কৌশলগত শহরটিতে রুশ অগ্রগতির খবর ক্রমেই বাড়ছে।

শুক্রবার রাতে সংবাদ সংস্থাগুলোর সঙ্গে শেয়ার করা কিছু ছবিতে দেখা গেছে, একটি ইউক্রেনীয় ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার পোকরোভস্কের কাছে প্রায় ১০ জন সেনাকে নামাচ্ছে। যদিও ছবিগুলোর স্থান ও সময় যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তারা পোকরোভস্ক শহরের উত্তর-পশ্চিমে ইউক্রেনীয় সামরিক গোয়েন্দা বিশেষ বাহিনীর অবতরণ প্রচেষ্টা নস্যাৎ করেছে এবং হেলিকপ্টার থেকে নেমে আসা ১১ জন সেনাকে হত্যা করেছে।

ইউক্রেনের ওপেন-সোর্স মনিটরিং গ্রুপ ডিপস্টেট অনুমান করছে, পোকরোভস্কের প্রায় অর্ধেক এলাকা এখন ‘গ্রে জোন’-এ পরিণত হয়েছে, যেখানে কোনো পক্ষই সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেই।

দোনেৎস্কের এক সামরিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী ঘেরাও হয়ে পড়েনি, তবে তাদের সরবরাহ লাইনগুলোতে রুশ সেনারা গোলাবর্ষণ করছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (আইএসডব্লিউ) জানিয়েছে, সাম্প্রতিক পাল্টা আক্রমণে পোকরোভস্কের উত্তরে ইউক্রেনীয় বাহিনী সামান্য অগ্রগতি করেছে, তবে শহরটি এখনও মূলত বিতর্কিত ‘ধূসর এলাকা’ হিসেবেই রয়ে গেছে।

মস্কো চাইছে দোনেৎস্ক ও পার্শ্ববর্তী লুহানস্ক অঞ্চল (যা সম্মিলিতভাবে দনবাস নামে পরিচিত) কিয়েভ শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়ার হাতে তুলে দিক, এমনকি সেই অংশগুলোও যেগুলো বর্তমানে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে নেই।

কিয়েভের ধারণা, পোকরোভস্ক দখলের মাধ্যমে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝাতে চায় যে তাদের সামরিক অভিযান সফল হচ্ছে এবং সেই যুক্তিতে পশ্চিমা দেশগুলো যেন রাশিয়ার দাবিগুলো মেনে নেয়।

এদিকে ক্রেমলিনের শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিতে ব্যর্থতার কারণে ওয়াশিংটন ক্রমবর্ধমানভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। এর ফলশ্রুতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে নির্ধারিত শীর্ষ বৈঠকের পরিকল্পনাও বাতিল করেছেন।

জেলেনস্কি প্রকাশ্যে ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছেন, যার মাধ্যমে বর্তমান ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ থামিয়ে সংঘাতটিকে স্থিতাবস্থায় আনার কথা বলা হয়েছে।

তবে পুতিন এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি এখনো সেই দাবিগুলোতেই অনড় রয়েছেন, যেগুলো কিয়েভ ও এর পশ্চিমা মিত্ররা ইউক্রেনের বাস্তবিক আত্মসমর্পণ হিসেবে দেখছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সংসদ নির্বাচন: মনোনয়নের সংকেত পেয়ে প্রচারে বিএনপির প্রার্থীরা

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

ফখরুলের কণ্ঠ নকলের মাধ্যমে অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগ বিএনপির

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর: সাঁকো বেয়ে উঠতে হয় চার কোটির সেতুতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাজ্যে চলতি ট্রেনে ছুরিকাঘাত, গুরুতর আহত ৯

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ০৬
ইংল্যান্ডের কেমব্রিজে চলতি ট্রেনে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি
ইংল্যান্ডের কেমব্রিজে চলতি ট্রেনে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি

ইংল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলের কেমব্রিজের কাছে এক ট্রেনে সিরিজ ছুরিকাঘাতের ঘটনায় ৯ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার একে ‘ভয়াবহ ঘটনা’ আখ্যা দিয়েছেন। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

ব্রিটিশ ট্রান্সপোর্ট পুলিশ জানিয়েছে, পুরো ঘটনার পটভূমি ও উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখতে সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট তদন্তে সহায়তা করছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর ‘প্লেটো’ নামে একটি বিশেষ সতর্ক সংকেত জারি করা হয়। এ সংকেতটি সাধারণত বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা দেখা দিলে দেওয়া হয়। পরে সেটি প্রত্যাহার করা হয়। হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে কিছু জানায়নি পুলিশ।

ব্রিটিশ ট্রান্সপোর্ট পুলিশের প্রধান সুপারিনটেনডেন্ট ক্রিস কেইসি বলেন, ‘ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে তা জানার জন্য জরুরি তদন্ত চলছে। এ মুহূর্তে কোনো অনুমান করা ঠিক হবে না।’

কেমব্রিজশায়ার পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৯ মিনিটে হান্টিংডন স্টেশনে জরুরি কল পেয়ে সশস্ত্র পুলিশ সেখানে পৌঁছায়। তারা ট্রেনটি থামিয়ে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। ইস্ট অব ইংল্যান্ড অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জানায়, ঘটনাস্থলে বড় আকারের উদ্ধার অভিযান চালানো হয়েছে। সেখানে বহু অ্যাম্বুলেন্স, কৌশলগত কর্মকর্তা ও বিপজ্জনক এলাকা উদ্ধার দল পাঠানো হয়েছে। সংস্থাটি নিশ্চিত করেছে, একাধিক আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি দেখেছেন একজন যাত্রী দৌড়ে সবাইকে সতর্ক করছেন—‘ওদের হাতে ছুরি, আমাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।’ প্রত্যক্ষদর্শী আরও বলেন, ওই ব্যক্তির ‘পুরো শরীর রক্তাক্ত’ ছিল। ট্রেন থামার আগেই তিনি মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। পরে দ্রুত তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়।

অন্য কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আহত যাত্রীরা ছুরি হাতে থাকা হামলাকারীর কাছ থেকে দৌড়ে পালাচ্ছিলেন। পরে দেখা যায়, সশস্ত্র পুলিশ স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বড় ছুরি হাতে এক ব্যক্তির দিকে অস্ত্র তাক করেছে। পরে তাঁকে টেজার গান দিয়ে অচল করে আটক করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে জানিয়েছেন, ছয় থেকে আটজন আহত হয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, আহত ব্যক্তিদের সংখ্যা ১২ পর্যন্ত হতে পারে। পুলিশ জানিয়েছে, হামলাটি ঘটেছে ডনকাস্টার থেকে লন্ডন কিংস ক্রসগামী সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটের ট্রেনে, পিটারবোরো স্টেশন ছাড়ার কিছুক্ষণ পর।

প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ‘এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি লেখেন, ‘হান্টিংডনের কাছে ট্রেনে যে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে, তা গভীরভাবে উদ্বেগের। আহতদের প্রতি সহমর্মিতা জানাই এবং জরুরি সেবাদানকারী সব দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এলাকাবাসীকে পুলিশের নির্দেশনা মেনে চলতে অনুরোধ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সংসদ নির্বাচন: মনোনয়নের সংকেত পেয়ে প্রচারে বিএনপির প্রার্থীরা

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

ফখরুলের কণ্ঠ নকলের মাধ্যমে অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগ বিএনপির

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর: সাঁকো বেয়ে উঠতে হয় চার কোটির সেতুতে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত