Ajker Patrika

লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর আরেক জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত

লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর আরেক জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর এক শীর্ষ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। তাঁর নাম মোহাম্মদ নাসের। গতকাল বুধবার ইসরায়েলি হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন বলে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

এই ঘটনার জবাবে ইসরায়েলে শতাধিক রকেট হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ নেতা মোহাম্মদ নাসের দক্ষিণ-পশ্চিম লেবানন থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলায় নিয়োজিত একটি ইউনিটের কমান্ডার ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে বেশ কিছু হামলা পরিচালিত হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লেবাননের দুটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননের টায়ার শহরের কাছে বিমান হামলায় নিহত নাসের হিজবুল্লাহর অন্যতম জ্যেষ্ঠ কমান্ডার। ইসরায়েলি এই হামলায় নাসের ছাড়াও আরেক যোদ্ধা ও এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত বলেছেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে দৈনন্দিন হামলা জোরদার করছে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে যে কোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত ইসরায়েল।’ যদিও সমঝোতার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গ্যালান্ত।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামাসের হামলার পরপরই গাজায় আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। তখন থেকে গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে প্রায় প্রতিদিনই সংঘাত চলছে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি সেনাদের মধ্যে। হিজবুল্লাহ ঘোষণা দিয়েছে, ইসরায়েল গাজা আক্রমণ বন্ধ করলে তারা ইসরায়েল সীমান্তে আর হামলা চালাবে না।

এদিকে, নাসেরের মৃত্যুর ঘটনাকে পরিকল্পিত ‘হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিহিত করে পাল্টা হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তের কাছে অবস্থিত এক ইসরায়েলি সেনা ঘাঁটিতে অন্তত ১০০টি কাতিউশা রকেট ও ইরানের তৈরি ফালাক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

ইসরায়েলের গণমাধ্যম চ্যানেল—১২ জানিয়েছে, লেবানন থেকে উত্তর ইসরায়েলে কয়েক ডজন রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে বেশ কিছু অংশে বিমান হামলার সাইরেনের শব্দ শোনা গেছে।

এর আগে, গত জুনে ইসরায়েলের হামলায় নিহত হন হিজবুল্লাহ কমান্ডার তালেব আবদুল্লাহ। সে সময় তালেব হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে হিজবুল্লাহ ড্রোন ও শতাধিক রকেট নিক্ষেপ করে ইসরায়েলে।

হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ নেতা হাসান ফাদলাল্লাহ বলেছেন, ‘নাসের জানতেন যে, তিনি ইসরায়েলি টার্গেট কিন্তু তারপরও যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়েননি। তিনি ৯ মাস যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন। হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের এই অপরাধের জন্য কঠিন জবাব দেবে। তখন শক্ররা বুঝতে পারবে হিজবুল্লাহর হাত কতটা লম্বা।

উভয় পক্ষের এমন হামলা, পাল্টা–হামলায় উভয় সীমান্তে পাশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফলে কয়েক হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে বাধ্য হয়েছে চলে যেতে। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় ৩০০ জনেরও বেশি হিজবুল্লাহ যোদ্ধা ও ৪৭ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। আর হিজবুল্লাহর হামলায় ১৮ সেনা ও ১০ বেসামরিক ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত