Ajker Patrika

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েল 

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা চালিয়ে গত ছয় মাসে অন্তত ৩২ হাজার ৯১৬ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী (আইডিএফ)। একই সময়ে আহত হয়েছেন ৭৫ হাজার ৪৯৪ জন। তবে শুধু গাজার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার। ছড়িয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে।

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর গত ডিসেম্বর থেকেই মাঝেমধ্যে লেবানন সীমান্তের ওপারে হিজবুল্লাহর অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছিল দেশটি। সর্বশেষ ইসরায়েল সিরিয়ায়ও ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার বিমান হামলা চালিয়ে সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের দূতাবাস গুঁড়িয়ে দেয় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনী আইডিএফ। এ ঘটনায় ইরানের শীর্ষস্থানীয় তিন কমান্ডারসহ অন্তত ১১ জন নিহত হন।

দামেস্কের ইরানি দূতাবাসে হামলার দিনই গাজায় আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তা সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের গাড়িতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার দেইর আল-বালাহে চালানো এই হামলায় সংস্থাটির অন্তত ৭ জন নিহত হন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, পোল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের নাগরিকেরাও রয়েছেন। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনার মুখে পড়েছে ইসরায়েল।

এদিকে, সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসির গুপ্তচর ও প্যারা মিলিশিয়া শাখা আল-কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদী ও তাঁর সহযোগী জেনারেল মোহাম্মদ হাদি হাজি-রাহিমী অন্যতম।

সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে হামলার পর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত। পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষাবিষয়ক পার্লামেন্টারি কমিটির এক বৈঠকে তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী বহুমুখী ফ্রন্টে যুদ্ধে করছে। তাঁর ভাষায়, ‘শত্রুদের শক্তি বৃদ্ধি থামিয়ে দিতে প্রতিদিন সব জায়গায় কাজ করব আমরা। ইসরায়েলের লক্ষ্য হলো, পুরো মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের জন্য হুমকিস্বরূপ যে কাউকে এটা স্পষ্ট করে দেওয়া যে, এ ধরনের পদক্ষেপের জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে।’ 

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেছেন, এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার ইরানের রয়েছে। আর এ প্রতিক্রিয়ার ধরন ও হামলার শাস্তি সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তেহরান। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি মিশন বলেছে, এই হামলা জাতিসংঘের সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং কূটনৈতিক ও কনস্যুলার চত্বর রক্ষার মূলনীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এর চূড়ান্ত জবাব দেওয়ার অধিকার তেহরানের রয়েছে। 

এদিকে লেবাননের ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার গোষ্ঠীটি এক বিবৃতিতে বলেছে, এ ধরনের হামলা চালিয়ে ইসরায়েলবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলন থেকে তাদের বিরত রাখা যাবে না; বরং এর ফলে প্রতিরোধযোদ্ধাদের মধ্যে প্রতিশোধস্পৃহা আরও জোরদার হবে। 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এ ধরনের হামলা আঞ্চলিক প্রতিপক্ষের সঙ্গে ইসরায়েলের লড়াইকে নতুন মাত্রা দেবে। দৃশ্যত ইরান ও তাদের মিত্রদের ওপর চাপ বাড়াতেই দামেস্কের ইরানি দূতাবাসে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত