Ajker Patrika

খামেনি ওয়ার রুম থেকে সরাসরি যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন: বাঘের কালিবফ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৫, ২২: ১১
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ছবি: এএফপি
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ছবি: এএফপি

ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের কালিবফ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ১২ দিনের সংঘাতে ওয়ার রুম থেকে সরাসরি যুদ্ধ পরিচালনার দিকনির্দেশনা দিয়েছেন ইসলামি বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি আরও বলেন, ‘১৯৮০-এর দশকে ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধের সময় খামেনি যেমন ভূমিকা রেখেছিলেন, এবারও তেমন দিকনির্দেশনা দিয়ে তিনি যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন।’ খবর তেহরান টাইমসের।

গত ১৩ জুন ভোরবেলা যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যে ইসরায়েল তেহরানের আবাসিক এলাকার ভবনগুলোতে বিমান হামলা শুরু করে। এই হামলায় ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ জেনারেল নিহত হন। ইসরায়েলের উদ্দেশ্য ছিল, ইরান যেন দ্রুত প্রতিশোধ নিতে না পারে।

তেহরান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, যতক্ষণ পরমাণু আলোচনা চলবে, ততক্ষণ যুদ্ধ হবে না। কিন্তু সেই আলোচনার কয়েক দিন আগেই ইসরায়েল হঠাৎ হামলা চালায়। গত ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি এই সংঘাতে যোগ দেয় এবং ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায়।

গালিবফ বলেন, ‘জেনারেলদের হত্যার ৩-৪ ঘণ্টা পরেই নেতা (খামেনি) নতুন কমান্ডার নিয়োগ দেন। তিনি তাঁদের ডেকে পাঠান, নিজে নির্দেশনা দেন এবং যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠান।’

এরপর আয়াতুল্লাহ খামেনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। ইসরায়েলি হামলার কয়েক ঘণ্টা পরেই তিনি একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ইসরায়েলকে তাদের অপরাধের জন্য মূল্য দিতে হবে এবং তারা ‘শোচনীয়’ অবস্থায় পড়বে।

তেহরান টাইমসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুদ্ধের প্রথম দিন থেকেই ইরান প্রতিশোধ নিতে শুরু করে। দখলকৃত ইসরায়েলি এলাকাগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্রের পর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থানগুলোতেও আঘাত হানে। ইরানের এই হামলা যুদ্ধের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

প্রথম দিকে ইরান ইসরায়েলের হামলায় তাদের ক্ষয়ক্ষতি লুকানোর চেষ্টা করলেও, যুদ্ধ চলাকালীন ও পরে এই খবরগুলো প্রকাশিত হয়। অন্যদিকে, বিভিন্ন হিব্রু গণমাধ্যম ইসরায়েলের হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির যে তথ্য প্রকাশ করে, বাস্তবে সেটা ছিল আরও বেশি। একজন সাবেক মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, তেল আবিবের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্য টেলিগ্রাফের একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অন্তত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আরও কিছু তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়েও ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে এবং এটি মেরামত করতে কয়েক মাস লাগবে। এ ছাড়া, আম্মান ও মোসাদ সদর দপ্তর, ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট এবং হাইফার তেল শোধনাগার ও বিদ্যুৎকেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

গালিবফ তাঁর সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইসরায়েল প্রকাশ্যে যা স্বীকার করেছে, তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে, আমাদের ৯০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে তাদের লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে।’ তিনি আরও দাবি করেন, ইসরায়েলে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা সম্ভবত ৫০০-এ পৌঁছেছে। আর সরকারিভাবে জানানো হয়েছে মাত্র ২৯ জন!

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনার বিষয়ে গালিবফ বলেন, ‘যখন আলোচনা চলছিল, তখন ইরানের ওপর মার্কিন হামলা চালানো উচিত হয়নি। আমেরিকান আগ্রাসনের জবাবে, ইরান এই অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন সামরিক ঘাঁটি—কাতারের আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়। লক্ষ্যবস্তুতে ছোড়া ১৪টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ৬টি সঠিক জায়গায় আঘাত হানে।’ যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, সব ক্ষেপণাস্ত্র আটকে দেওয়া হয়েছে এবং একটি খোলা জায়গায় পড়েছে। তবে এপির একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আল উদেইদে অন্তত একটি গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন সরঞ্জামবাহী ভবন ধ্বংস হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইলট ইচ্ছা করে বিধ্বস্ত করান এয়ার ইন্ডিয়ার সেই ড্রিমলাইনার: বিশেষজ্ঞ

তবে কি ধরে নেব, মবের পেছনে সরকারের প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় আছে: তারেক রহমান

৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি: পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা অবরোধ বৈষম্যবিরোধীদের

ইসরায়েল রাষ্ট্রের পতনের ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ করেছিলেন আইনস্টাইন

মিটফোর্ডে নৃশংস হত্যাকাণ্ড: ‘আমি জড়িত না, ফাঁইসা গেছি’— অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতা রবিনের দাবি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত