Ajker Patrika

যত ফিলিস্তিনির মুক্তি, প্রায় ততজন গ্রেপ্তার

আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৯: ২৪
যত ফিলিস্তিনির মুক্তি, প্রায় ততজন গ্রেপ্তার

টানা প্রায় সাত সপ্তাহ ধরে চলা হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞের পর গাজায় গতকাল বুধবার ষষ্ঠ দিনের মতো যুদ্ধবিরতি চলছিল। এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি জিম্মিমুক্তির বিনিময়ে দেশটির কারাগার থেকে তিন গুণ ফিলিস্তিনির মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি। হামাস বলেছে, যুদ্ধবিরতি চলাকালে অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম থেকে বহু ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

প্যালেস্টেনিয়ান প্রিজনার্স সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি চলাকালে চার দিনে ১৫০ জন ফিলিস্তিনি মুক্তি পেয়েছে। এর মধ্যে ১১৭ জন শিশু এবং ৩৩ জন নারী। এ সময় ১৩৩ জন ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই চার দিনে হামাস মুক্তি দেয় ৬৯ জিম্মিকে। এর মধ্যে ইসরায়েলি ৫১ জন এবং অন্য দেশের নাগরিক ১৮ জন।

প্যালেস্টেনিয়ান প্রিজনার্স সোসাইটির মুখপাত্র আমানি সারাহনেহ বলেন, ‘যত দিন পর্যন্ত ইসরায়েলি দখলদারত্ব বহাল থাকবে, তত দিন ফিলিস্তিনি গ্রেপ্তার বন্ধ হবে না।...এই গ্রেপ্তারের ঘটনা ৭ অক্টোবরের পর শুরু হয়েছে এমন নয়, এটি নিত্যদিনের বিষয়।’ এমনকি যুদ্ধবিরতির প্রথম চার দিনে কয়েদি মুক্তির চেয়ে বেশিসংখ্যক ফিলিস্তিনি গ্রেপ্তার হলেও অবাক হতেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়। এতে ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। জিম্মি করা হয় ২৪০ জনকে। এরপর ওই দিনই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে টানা ৫১ দিন ধরে ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের পর কাতারের মধ্যস্থতায় গত শুক্রবার এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এর আগে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়, যাদের বেশির ভাগই শিশু ও নারী।

৭ অক্টোবরের আগে ইসরায়েলি কারাগারে ছিল ৫ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি। হামলার পরবর্তী দুই সপ্তাহে ধরপাকড় বাড়ায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ইসরায়েলের কারাগারে ফিলিস্তিনি কয়েদি প্রায় দ্বিগুণ হয় এবং সংখ্যায় তা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

ফিলিস্তিনি কয়েদিদের আইনজীবী ও পর্যবেক্ষণকারী বিভিন্ন সংস্থা বলেছে, ৭ অক্টোবরের পর পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম থেকে ৩ হাজার ২৯০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

যুদ্ধবিরতি শুরুর পর ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্ত ফিলিস্তিনিদের স্বাগত জানাতে রামাল্লার সড়কে ভিড় দেখা যায়। কিন্তু মুক্তি পেলেও তাঁদের শঙ্কা কাটেনি। কারণ পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে, ইসরায়েল কারামুক্তদের ফের গ্রেপ্তারই করে, তা কয়েক দিন, সপ্তাহ, মাস কিংবা বছর পেরোলেও। ২০১১ সালের ইসরায়েল-হামাসের বন্দিবিনিময়ের ইতিহাস অন্তত তা-ই বলে। এবার যুদ্ধবিরতিতে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা পুরনায় গ্রেপ্তার হবে না—এর নিশ্চয়তা ইসরায়েলের কাছ থেকে পাওয়া গেছে কি না, তা বলতে পারেননি প্যালেস্টেনিয়ান প্রিজোনার্স সোসাইটির মুখপাত্র আমানি সারাহনেহ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত