Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত মেনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করবে না ইরান

অনলাইন ডেস্ক
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ছবি: এএফপি
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ছবি: এএফপি

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করবে না ইরান—আজ বুধবার এক ভাষণে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে পারমাণবিক বিরোধ নিরসনের লক্ষ্যে চলমান আলোচনার মধ্যে এ বক্তব্য দিলেন খামেনি।

মার্কিন প্রস্তাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সম্পূর্ণ বন্ধ বা সীমিত করার শর্তে তেহরানের ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। কিন্তু খামেনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব আমাদের জাতির আত্মনির্ভরতার বিশ্বাস এবং “আমরা পারি” নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’ ইরান যে পরমাণু প্রযুক্তি নিয়ে এগোচ্ছে তা যে স্বাধীন জ্বালানি নীতিরই অংশ, সে কথাও স্পষ্ট করে দেন তিনি।

খামেনি বলেন, ‘স্বাধীনতা মানে আমেরিকা কিংবা তার মতো কারও সবুজ সংকেতের জন্য অপেক্ষা করা নয়।’ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা স্পষ্ট করে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব ইসলামি বিপ্লবের আদর্শের শতভাগ বিরোধী।’

খামেনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তেহরান তার সিদ্ধান্তের জন্য ওয়াশিংটনের অনুমোদন চায় না। তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করে, যৌক্তিক অবস্থান (র‍্যাশনালিটি) মানে আমেরিকার কাছে নতজানু হওয়া। এটার মানেই হলো অত্যাচারী শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ। এটাই কি যৌক্তিক?’ তিনি প্রশ্ন তোলেন—‘ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করবে কি না—সে বিষয়ে আপনারা কেন হস্তক্ষেপ করছেন? আপনাদের বলার কোনো এখতিয়ার নেই।’

এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানও বলেন, বৈজ্ঞানিক ও পারমাণবিক অধিকার থেকে সরে আসবে না ইরান। তবে তিনি আবারও পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের কথা অস্বীকার করে বলেন, যারা ইরানকে দোষ দিচ্ছে, তারাই আসলে গণবিধ্বংসী অস্ত্র ছড়িয়ে দিচ্ছে এবং মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করছে।

তেহরান বহুদিন ধরেই দাবি করে আসছে, ইরান কেবলই শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক উদ্দেশেই পারমাণবিক প্রযুক্তি অর্জনে আগ্রহী। তারা যে কোনো অস্ত্র কর্মসূচিতে জড়িত নয় সেটিও বারবার বলে এসেছে। তবে পশ্চিমা শক্তিগুলোর অভিযোগ, ইরান গোপনে পরমাণু বোমা তৈরির পথে এগোচ্ছে। আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষের প্রধান স্টিভ উইটকফ বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনো ধরনের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণকেই মেনে নিতে নারাজ। তাঁর মতে, এটি একটি ‘রেড লাইন’ বা অলঙ্ঘনীয় সীমারেখা।

এমন এক প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের একটি গোপন প্রতিবেদনে দেখা যায়, ইরান গত তিন মাসে উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বাড়িয়েছে ৫০ শতাংশ। এই ইউরেনিয়াম এখন এমন একপর্যায়ে রয়েছে, যা পরমাণু অস্ত্র তৈরির মাত্রার কাছাকাছি—তবে এখনো চূড়ান্ত অস্ত্র-মানের (প্রায় ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধকরণ) নিচে। তবুও এটি শান্তিপূর্ণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যেটুকু (সাধারণত ৩ থেকে ৪ শতাংশ) প্রয়োজন, তার চেয়ে অনেক বেশি।

তেহরান অবশ্য আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা এটিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন অভিযোগের পুনরাবৃত্তি’ বলে অভিহিত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত