Ajker Patrika

অপারেশন সিঁদুরে নিহতের মধ্যে কান্দাহার হাইজ্যাকের মাস্টারমাইন্ড, দাবি ভারতের

অনলাইন ডেস্ক
পাকিস্তানে হামলার ব্রিফিংয়ে নেতৃত্ব দিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। ছবি: পিটিআই
পাকিস্তানে হামলার ব্রিফিংয়ে নেতৃত্ব দিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। ছবি: পিটিআই

গত ২২ এপ্রিল ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে দীর্ঘদিনের অস্থিরতা। ওই হামলায় ২৫ পর্যটক ও একজন স্থানীয় গাইড নিহত হন। একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করলেও পরে তারা অস্বীকার করে। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে; তবে ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে।

এরপর থেকে দেশ দুটি একের পর এক পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। প্রথমে এটি কূটনৈতিক পর্যায়ে থাকলেও দ্রুত সামরিক সংঘাতের দিকে মোড় নেয়। তবে গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ভারত-পাকিস্তান।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেহেলগাম হামলার পর দেশজুড়ে জনরোষ ছড়িয়ে পড়লে ভারত সরকার কূটনৈতিকভাবেও কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়। ২৪ এপ্রিল রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তের পর বন্ধ করে দেওয়া হয় ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিচুক্তি, বাতিল করা হয় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা এবং বন্ধ করে দেওয়া হয় সীমান্তের আটারি-ওয়াঘা সমন্বিত চেকপোস্ট।

এরপর গত ৩০ এপ্রিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তিন বাহিনীর প্রধান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে তিনি ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ অভিযানের স্বাধীনতা দেন। তবে পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হতে থাকলে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক শেষে ৭ মে সীমান্তের ওপারে পাকিস্তান ও পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করার ঘোষণা দেয় ভারত।

ভারতের দাবি, ৭ মে তারা পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে ৯টি স্থানে হামলা চালায়। এতে লস্কর-ই-তাইয়েবা ও জইশ-ই-মুহাম্মদের সদর দপ্তর ধ্বংস হয়ে যায় এবং নিহত হয় অন্তত ১০০ সন্ত্রাসী। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলা এবং ১৯৯৯ সালে আইসি-৮১৪ বিমান ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন শীর্ষ জঙ্গি।

ভারত আরও দাবি করে, অপারেশন সিঁদুরে জইশ-ই-মুহাম্মদের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহারের শ্যালক মোহাম্মদ ইউসুফ আজহারও নিহত হয়েছেন। তিনি ১৯৯৯ সালের আইসি-৮১৪ বিমান ছিনতাইয়ের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। সেই ঘটনায় ভারতীয় একটি বিমান ছিনতাই করে আফগানিস্তানের কান্দাহারে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর যাত্রীদের জিম্মি করে মাসুদ আজহারের মুক্তি দাবি করে সন্ত্রাসীরা। এভাবেই জেল থেকে ছাড়া পান মাসুদ আজহার। ঘটনাটি কান্দাহার হাইজ্যাক নামে পরিচিত।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আরও চার শীর্ষ জঙ্গি হলেন—লস্করের মুদাসসার খাদিয়ান খাস ও খালিদ ওরফে আবু আকাশা এবং জইশের হাফিজ মোহাম্মদ জালিল ও মোহাম্মদ হাসান খান।

তবে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ এসব সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যদের নিহতের বিষয়টি কেবল ভারতীয় গণমাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে। অন্য কোনো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে তেমন কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে যাচাই করাও সম্ভব হয়নি। তবে এর আগে বিবিসিসহ বেশ কিছু গণমাধ্যম ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ সদস্য এবং ৪ ঘনিষ্ঠ সহযোগীর নিহত হওয়ার খবর প্রকাশ করে।

মাসুদ আজহারের নামে প্রচারিত ওই বিবৃতির বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জইশ-ই-মুহাম্মদের সদর দপ্তর বাহাওয়ালপুরের জামিয়া মসজিদ ‘সুবহান আল্লাহ’-তে হামলায় যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর বড় বোন ও তাঁর স্বামী, এক ভাগনে ও তাঁর স্ত্রী, এক ভাগনি এবং পরিবারের পাঁচ শিশু।

৫৬ বছর বয়সী মাসুদ আজহার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক ঘোষিত সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত। তিনি ২০০১ সালে ভারতের সংসদে হামলা, ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলা, ২০১৬ সালের পাঠানকোট হামলা, ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলাসহ ভারতে একাধিক সন্ত্রাসী হামলার ষড়যন্ত্রে জড়িত বলে অভিযোগ আছে।

তিনি পাকিস্তানে আছেন কি না, বিষয়টি যদিও রহস্য, তবে ইসলামাবাদ বারবার তাঁর সম্পর্কে তথ্য থাকার কথা অস্বীকার করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কাও ঢাকায় এসিসির সভা বর্জন করল

মুক্তি পেয়ে আ.লীগ নেতার ভিডিও বার্তা, বেআইনি বলল বিএনপি

গাড়ি কেনার টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে মারধর, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে মামলা

সালাহউদ্দিনকে নিয়ে বিষোদ্‌গার: চকরিয়ায় এনসিপির পথসভার মঞ্চে বিএনপির হামলা-ভাঙচুর

যুদ্ধবিমানের ২৫০ ইঞ্জিন কিনছে ভারত, ফ্রান্সের সঙ্গে ৬১ হাজার কোটি রুপির চুক্তি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত