হুসাইন আহমদ, ঢাকা

অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কারের আলোচনায় স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধান বাতিল বা পুনর্লিখনের প্রস্তাব তুলেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। বিষয়টি নানামুখী আলোচনা ও তর্ক-বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রনেতাদের কেউ কেউ ‘বাহাত্তরের সংবিধানের কবর রচনার’ কথা বলে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আজ রোববার রাজধানীতে একটি আলোচনা সভায় গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নাগরিক কোয়ালিশনের আয়োজনে ‘সংবিধান সংস্কারে নাগরিক জোটের ৭ প্রস্তাব’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন আসিফ নজরুল। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আলোকচিত্রী ও নাগরিক কোয়ালিশনের সহ-আহ্বায়ক শহিদুল আলম। সাতটি প্রস্তাব তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন অর্থনীতিবিদ ও লেখক জিয়া হাসান।
প্রস্তাবিত সাতটি বিষয় ছিল : নিম্নকক্ষের ভোটের আনুপাতিক ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন, সাংবিধানিক নিয়োগ পদ্ধতির সংস্কার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কার্যকরী ভূমিকা ও প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর চালু, নারীদের সরাসরি নির্বাচনের সুযোগ বৃদ্ধি ও জুলাই সনদকে ভিত্তি করে একটি নতুন সাংবিধানিক রূপরেখা প্রণয়ন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, জাতীয় সংসদ সংবিধান সংশোধন করে, সাংবিধানিক পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে বহুদিন লাগতে পারে। কোনো দেশে ৮-৯ বছরও লেগেছে। এর মধ্যে সংসদ প্রয়োজনে বাহাত্তরের সংবিধান সংশোধন করবে। নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সংসদ সংবিধান পরিচালক হিসেবে কাজ করবে।
জুলাই সনদ, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সংসদের উচ্চকক্ষ, প্রধান বিচারপতির ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা। তাঁর সেই বক্তব্যের চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরা হলো:—
বাহাত্তরের সংবিধান ও সংসদের ভূমিকা
নাগরিক জোটের প্রস্তাব বাস্তবায়নের পথরেখা ‘খুবই ভালো হয়েছে’ মন্তব্য করে নিজের বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন আসিফ নজরুল। আইন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর নজির আছে। এটা খুবই সাংবিধানিক ও বৈধ পদ্ধতি। সংসদই সংবিধান পরিষদের কাজ করবে। নেপাল, শ্রীলঙ্কাতে তা-ই হয়েছে। তবে সংসদ সংবিধান প্রণয়নে খুব অল্প সময় দিতে পারে। সপ্তাহে দুদিন সংবিধান পরিষদের কাজ করে। একটা সংবিধান পরিষদ যে জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ, সে তার সম্পূর্ণ সময়ের খুব বেশি হলে ৫০ শতাংশ সময় এখানে দিতে পারবে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এরকম একটা সংবিধান পরিষদ ৯০ দিনে সংবিধান রচনা করে ফেলবে, এটা মনে হচ্ছে একটু উচ্চাশা। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ৯০ দিনের মধ্যে যদি তারা করতে না পারে, তাহলে এক্সিস্টিং কনস্টিটিউশন কন্টিনিউ করবে? এখানে হচ্ছে আমার আপত্তি! শোনেন, জাতীয় সংসদ সংবিধান সংশোধন করে, সংবিধান পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে এমন উদাহরণ আছে, আট-নয় বছর লেগেছে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে বহুদিন লাগতে পারে। এখন এই পর্যন্ত আমি বাহাত্তরের সংবিধান কন্টিনিউ করব?
তাঁর প্রস্তাব হলো— আগামী নির্বাচন হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জাতীয় সংসদই সংবিধান পরিষদ হিসেবে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ করবে। নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বাহাত্তরের সংবিধান চলবে। সংসদ এতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনবে।
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘এটা আপনাদের ইনক্লুড করতে হবে যে গণপরিষদ হিসেবে যখন সে কাজ করবে, সে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ করতে থাকবে। ওটা করতে আমার ধারণা দু-তিন বছর লাগতে পারে। এই দু-তিন বছর কি আমি বাহাত্তরের সংবিধান বহন করব? এই দু-তিন বছরের জন্য তারা যখন জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ করবে, তখন তারা সংসদের কিছু ফান্ডামেন্টাল এমেন্ডমেন্ট আনবে।’
এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, উচ্চ আদালতের বিকেন্দ্রীকরণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সংসদ সদস্যদের ৮৯ দিন পর্যন্ত সংসদে অনুপস্থিত থাকার সুযোগের মতো মৌলিক বিষয়ে পরিবর্তন আনার ‘সমাজে বহু বছর যাবৎ ঐক্য আছে’ বলে আইন উপদেষ্টা মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এই ফান্ডামেন্টাল জিনিসগুলা যেটা আমরা সবাই সারা জীবন ধরে বলে আসছি— এগুলো জাতীয় সংসদ পরিবর্তন করতেই থাকবে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন কবে হবে— এ জন্য আমি বাহাত্তরের বোঝা কেন বহন করব? এটা আপনাদের অবশ্যই ইনক্লুড করতে হবে।’
জুলাই সনদের ভূমিকা নিয়ে সংশয়
জুলাই সনদ নিয়ে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে মত দেন আসিফ নজরুল। তাঁর মতে, সবাই এই সনদের সবকিছুর সঙ্গে একমত হবেন—এমন আশা বাস্তবসম্মত নয়।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘দ্বিতীয় যে পথরেখাটা দিয়েছেন, সেখানে আমার মনে হচ্ছে, টু মাচ এমফেসিস দেওয়া হয়েছে জুলাই সনদের ওপর। জুলাই সনদে কি এত কিছুই থাকবে? এটা কি সংবিধানের ভিত্তি হবে? তাহলে জুলাই সনদ হবে নাকি আমার সন্দেহ আছে! জুলাই সনদের ওপর অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে... মনে হচ্ছে, আমরা এটা ধরেই নিয়েছি, সবাই জুলাই সনদের ওপর অনেক কিছুর বিষয়ে একমত হবে। এটা এত সহজ হবে না, হয়তো এমন হতে পারে জুলাই সনদের মোস্ট ফান্ডামেন্টাল জিনিস রাখা সম্ভব হতে পারে। এটা একটু ভেবে দেখেন! বাট নতুন চিন্তা, খুবই ভালো।’
উচ্চকক্ষ গঠনের যুক্তি ও ঝুঁকি
উচ্চকক্ষকে অত্যন্ত ক্ষমতাধর করে তোলার প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে যে ফ্রাঙ্কলি স্পিকিং.. উচ্চকক্ষকে অনেক বেশি ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, এত ক্ষমতাই যদি উচ্চকক্ষকে দেন, তাহলে উচ্চকক্ষে বিএনপি-জামায়াত এবং নাহিদের দল তাদেরকেই নিয়োগ দেবে, যারা দলদাস হবে। আমার কাছে মনে হয়েছে উচ্চকক্ষের ওপর অনেক বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটাকে আপনারা একটু রেশনালাইজ করার চেষ্টা করেন, সবকিছু তারা করতে পারবে কি না।
নতুন কমিশনের পরিবর্তে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করার আহ্বান
আসিফ নজরুল নতুন নতুন কমিশন গঠনের পরিবর্তে উচ্চ আদালত ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোকে কার্যকর করার ওপর জোর দেন। বিশেষ করে, স্বরাষ্ট্র, আইন ও অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোর সভাপতিত্ব বিরোধী দলের হাতে দিলে জবাবদিহি নিশ্চিত করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুন নতুন অনেক কমিশনের প্রস্তাব করা হয়েছে এখানে। আমাদের এখানে তো অলরেডি অনেক কমিশন আছে। আমরা সব সময় যে জিনিসটা বিশ্বাস করি কি আমরা যখন কোনো সংস্কার ভাবনাতেই যাই। আমরা সব সময়, ‘নতুন নতুন কমিশন করতে হবে’ করি। আপনি খেয়াল করে দেখেন, আমরা ছোটবেলা থেকে বলেছি, সরকারের তিনটা অর্গান থাকবে— একটা হচ্ছে এক্সিকিউটিভ, একটা হচ্ছে জুডিশিয়ারি, একটা হচ্ছে সংসদ। আমাদের এখানে সবচেয়ে ফান্ডামেন্টাল যে দুইটা জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান আছে, সবচেয়ে আদিম ফান্ডামেন্টাল একটা হচ্ছে উচ্চ আদালত, আরেকটা হচ্ছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘উচ্চ আদালত আর সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে যদি ঠিকমতো গঠন করা যায়, ক্ষমতা দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের এত নতুন নতুন কমিশন লাগে না। আমাদের যে নতুন কমিশনগুলো হয়েছে, দেখেন ইনফরমেশন কমিশন, তারপরে যে আমাদের নতুন কমিশন হয়েছে আপনার হিউম্যান রাইটস কমিশন, কম্পিটিশন কমিশন, কী রেজাল্ট দিয়েছে? আপনারা বরং এক্সিস্টিং যে প্রতিষ্ঠান আছে, সেটাকে আরও কত বেগবান করা যায়...। আপনারা যেমন স্থায়ী কমিটির কথা বলেছেন, স্থায়ী কমিটির ক্ষেত্রে কয়েকটা কমিটির কথা বলেছেন, ওটা যেন অবশ্যই হেডেড বাই বিরোধী দলের নেতা হয়।’
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নয়, ক্ষমতা হ্রাস
নাগরিক জোটের প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বছর করার প্রস্তাব জনপ্রিয় হলেও সেটি একনায়কতন্ত্র প্রতিরোধে যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেন আসিফ নজরুল। প্রধানমন্ত্রীর সংবিধানগত ক্ষমতা হ্রাস করাকেই তিনি বেশি গুরুত্ব দেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আরেকটা জিনিস একটু বলি যে, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ যে দুই বছর আপনারা বলেন— এটা খুব জনপ্রিয় দাবি, আমারও দাবি। আমি দেখলাম যেকোনো একটা সময়.. সম্ভবত সালাহউদ্দিন ভাই বা বিএনপির একজনই কোথাও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বছর পৃথিবীর কোন দেশে আছে? আপনি প্রধানমন্ত্রী দুই বছর বললেই শুধু হবে না, কনভিন্সিং আর্গুমেন্ট করতে হবে তো যে, পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে সেটা বের করেন, বের করে তারপর দেখেন হয় কি না। কারণ প্রধানমন্ত্রী দুই বছরের মেয়াদ কিন্তু কোথাও নাই আসলে। আপনি ইন্ডিয়া বলেন, ইউকে বলেন, কোথাও কিন্তু নাই।’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে যে সিস্টেম, দুই বছর দুইটা মেয়াদও যদি রাখেন, একনায়কতন্ত্র সম্ভব। ধরেন দুই মেয়াদের জন্য সালাহউদ্দিন ভাই প্রধানমন্ত্রী হলেন, ধরেন তারপরে দুই মেয়াদে হবে উনার স্ত্রী, তারপরে দুই মেয়াদে হবে উনার সন্তান। শুধু দুই মেয়াদ সলিউশন না। সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট একটা জিনিস প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাটা কমায় দেন। আমি সব সময় একটা জিনিস বলি, ফান্ডামেন্টাল একটা জিনিস, ভারতে বলে যে রাষ্ট্রপতি ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ক্যাবিনেটের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। আর আমাদের এখানে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। ফলে এই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাটাকে এড্রেস করেন, মেয়াদটাও নির্দিষ্ট দরকার আছে। কিন্তু কনভিন্সিং আর্গুমেন্টে এস্টাবলিশ করতে হবে।’
প্রধান বিচারপতির ‘অসীম’ ক্ষমতার সমালোচনা
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানে একটা মাত্র ব্যক্তিকে স্বাধীনভাবে নিয়োগ করা যায়, চিফ জাস্টিস। রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে নিয়োগ করতে পারে এবং বাংলাদেশের সংবিধানে চিফ জাস্টিসের অসীম ক্ষমতা! আপনারা শুধু প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা দেখেন। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সবচেয়ে দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি হচ্ছে চিফ জাস্টিস। চিফ জাস্টিস কি করতে পারেন, ইতিহাস তো আপনাদের মনে আছে। যাই হোক, একজন চিফ জাস্টিসের কারণে আমাদের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। উনার আবার অন্য রকমভাবে কন্ট্রিবিউশন আছে। তা আমি যে জিনিসটা বলতে চাচ্ছি, চিফ জাস্টিসের যে ক্ষমতা, এই চিফ জাস্টিসের ক্ষমতা আপনার অসীম!’
তাঁর মতে, এটি এককেন্দ্রিক ক্ষমতা, যা রাজনৈতিক অপব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি করে। সংবিধান বিষয়ে ২০-২৫ বছরের অধ্যাপনার কথা তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক বলেন, ‘শুধুমাত্র এই কারণে.... শুধুমাত্র এই কারণে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান বিচারপতি— এই দুইটা পদেই দাস শ্রেণির লোকদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এত ক্ষমতা প্রধান বিচারপতির! যেকোনো বেঞ্চ উনি ভেঙে দিতে পারেন একা! যেকোনো বেঞ্চ পুনর্গঠন করতে পারেন!’
এই ক্ষমতার দলীয় অপব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এসে করবে কী? আওয়ামী লীগপন্থী যে জাজগুলো আছে, ওদের সবচেয়ে আনইম্পর্টেন্ট বেঞ্চ দেবে বা বেঞ্চই দেবে না। আর নিজেদের রিক্রুট যারা আছে, তাদেরকে ফান্ডামেন্টাল রাইটস শোনার বা ক্রিমিনাল জুরিসডিকশনের বেঞ্চ, ওগুলি দেবে। বাকিগুলোকে সিভিল ম্যাটার, কোম্পানি ম্যাটার এরকম... নয়তো বেঞ্চই দেবে না। একটা লোক পুরো বাংলাদেশের সমস্ত মানুষের মানবাধিকারের বিচার কন্ট্রোল করতে পারেন, একটা লোক, জাস্ট চিফ জাস্টিস।’
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, সংবিধান সংস্কার একটি দীর্ঘ, জটিল এবং বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া। এখানে আবেগ নয়, বাস্তবতা ও আইনি ভারসাম্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। জুলাই সনদ কিংবা উচ্চকক্ষ— সবকিছুর ওপর অতিরিক্ত নির্ভর না করে একটি অন্তর্বর্তী সাংবিধানিক রূপরেখার মাধ্যমে ধাপে ধাপে সংস্কারের পথে এগোনোর আহ্বান জানান তিনি।

অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কারের আলোচনায় স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধান বাতিল বা পুনর্লিখনের প্রস্তাব তুলেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। বিষয়টি নানামুখী আলোচনা ও তর্ক-বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রনেতাদের কেউ কেউ ‘বাহাত্তরের সংবিধানের কবর রচনার’ কথা বলে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আজ রোববার রাজধানীতে একটি আলোচনা সভায় গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নাগরিক কোয়ালিশনের আয়োজনে ‘সংবিধান সংস্কারে নাগরিক জোটের ৭ প্রস্তাব’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন আসিফ নজরুল। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আলোকচিত্রী ও নাগরিক কোয়ালিশনের সহ-আহ্বায়ক শহিদুল আলম। সাতটি প্রস্তাব তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন অর্থনীতিবিদ ও লেখক জিয়া হাসান।
প্রস্তাবিত সাতটি বিষয় ছিল : নিম্নকক্ষের ভোটের আনুপাতিক ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন, সাংবিধানিক নিয়োগ পদ্ধতির সংস্কার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কার্যকরী ভূমিকা ও প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর চালু, নারীদের সরাসরি নির্বাচনের সুযোগ বৃদ্ধি ও জুলাই সনদকে ভিত্তি করে একটি নতুন সাংবিধানিক রূপরেখা প্রণয়ন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, জাতীয় সংসদ সংবিধান সংশোধন করে, সাংবিধানিক পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে বহুদিন লাগতে পারে। কোনো দেশে ৮-৯ বছরও লেগেছে। এর মধ্যে সংসদ প্রয়োজনে বাহাত্তরের সংবিধান সংশোধন করবে। নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সংসদ সংবিধান পরিচালক হিসেবে কাজ করবে।
জুলাই সনদ, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সংসদের উচ্চকক্ষ, প্রধান বিচারপতির ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা। তাঁর সেই বক্তব্যের চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরা হলো:—
বাহাত্তরের সংবিধান ও সংসদের ভূমিকা
নাগরিক জোটের প্রস্তাব বাস্তবায়নের পথরেখা ‘খুবই ভালো হয়েছে’ মন্তব্য করে নিজের বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন আসিফ নজরুল। আইন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর নজির আছে। এটা খুবই সাংবিধানিক ও বৈধ পদ্ধতি। সংসদই সংবিধান পরিষদের কাজ করবে। নেপাল, শ্রীলঙ্কাতে তা-ই হয়েছে। তবে সংসদ সংবিধান প্রণয়নে খুব অল্প সময় দিতে পারে। সপ্তাহে দুদিন সংবিধান পরিষদের কাজ করে। একটা সংবিধান পরিষদ যে জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ, সে তার সম্পূর্ণ সময়ের খুব বেশি হলে ৫০ শতাংশ সময় এখানে দিতে পারবে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এরকম একটা সংবিধান পরিষদ ৯০ দিনে সংবিধান রচনা করে ফেলবে, এটা মনে হচ্ছে একটু উচ্চাশা। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ৯০ দিনের মধ্যে যদি তারা করতে না পারে, তাহলে এক্সিস্টিং কনস্টিটিউশন কন্টিনিউ করবে? এখানে হচ্ছে আমার আপত্তি! শোনেন, জাতীয় সংসদ সংবিধান সংশোধন করে, সংবিধান পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে এমন উদাহরণ আছে, আট-নয় বছর লেগেছে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে বহুদিন লাগতে পারে। এখন এই পর্যন্ত আমি বাহাত্তরের সংবিধান কন্টিনিউ করব?
তাঁর প্রস্তাব হলো— আগামী নির্বাচন হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জাতীয় সংসদই সংবিধান পরিষদ হিসেবে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ করবে। নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বাহাত্তরের সংবিধান চলবে। সংসদ এতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনবে।
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘এটা আপনাদের ইনক্লুড করতে হবে যে গণপরিষদ হিসেবে যখন সে কাজ করবে, সে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ করতে থাকবে। ওটা করতে আমার ধারণা দু-তিন বছর লাগতে পারে। এই দু-তিন বছর কি আমি বাহাত্তরের সংবিধান বহন করব? এই দু-তিন বছরের জন্য তারা যখন জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ করবে, তখন তারা সংসদের কিছু ফান্ডামেন্টাল এমেন্ডমেন্ট আনবে।’
এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, উচ্চ আদালতের বিকেন্দ্রীকরণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সংসদ সদস্যদের ৮৯ দিন পর্যন্ত সংসদে অনুপস্থিত থাকার সুযোগের মতো মৌলিক বিষয়ে পরিবর্তন আনার ‘সমাজে বহু বছর যাবৎ ঐক্য আছে’ বলে আইন উপদেষ্টা মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এই ফান্ডামেন্টাল জিনিসগুলা যেটা আমরা সবাই সারা জীবন ধরে বলে আসছি— এগুলো জাতীয় সংসদ পরিবর্তন করতেই থাকবে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন কবে হবে— এ জন্য আমি বাহাত্তরের বোঝা কেন বহন করব? এটা আপনাদের অবশ্যই ইনক্লুড করতে হবে।’
জুলাই সনদের ভূমিকা নিয়ে সংশয়
জুলাই সনদ নিয়ে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে মত দেন আসিফ নজরুল। তাঁর মতে, সবাই এই সনদের সবকিছুর সঙ্গে একমত হবেন—এমন আশা বাস্তবসম্মত নয়।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘দ্বিতীয় যে পথরেখাটা দিয়েছেন, সেখানে আমার মনে হচ্ছে, টু মাচ এমফেসিস দেওয়া হয়েছে জুলাই সনদের ওপর। জুলাই সনদে কি এত কিছুই থাকবে? এটা কি সংবিধানের ভিত্তি হবে? তাহলে জুলাই সনদ হবে নাকি আমার সন্দেহ আছে! জুলাই সনদের ওপর অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে... মনে হচ্ছে, আমরা এটা ধরেই নিয়েছি, সবাই জুলাই সনদের ওপর অনেক কিছুর বিষয়ে একমত হবে। এটা এত সহজ হবে না, হয়তো এমন হতে পারে জুলাই সনদের মোস্ট ফান্ডামেন্টাল জিনিস রাখা সম্ভব হতে পারে। এটা একটু ভেবে দেখেন! বাট নতুন চিন্তা, খুবই ভালো।’
উচ্চকক্ষ গঠনের যুক্তি ও ঝুঁকি
উচ্চকক্ষকে অত্যন্ত ক্ষমতাধর করে তোলার প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে যে ফ্রাঙ্কলি স্পিকিং.. উচ্চকক্ষকে অনেক বেশি ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, এত ক্ষমতাই যদি উচ্চকক্ষকে দেন, তাহলে উচ্চকক্ষে বিএনপি-জামায়াত এবং নাহিদের দল তাদেরকেই নিয়োগ দেবে, যারা দলদাস হবে। আমার কাছে মনে হয়েছে উচ্চকক্ষের ওপর অনেক বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটাকে আপনারা একটু রেশনালাইজ করার চেষ্টা করেন, সবকিছু তারা করতে পারবে কি না।
নতুন কমিশনের পরিবর্তে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করার আহ্বান
আসিফ নজরুল নতুন নতুন কমিশন গঠনের পরিবর্তে উচ্চ আদালত ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোকে কার্যকর করার ওপর জোর দেন। বিশেষ করে, স্বরাষ্ট্র, আইন ও অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোর সভাপতিত্ব বিরোধী দলের হাতে দিলে জবাবদিহি নিশ্চিত করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুন নতুন অনেক কমিশনের প্রস্তাব করা হয়েছে এখানে। আমাদের এখানে তো অলরেডি অনেক কমিশন আছে। আমরা সব সময় যে জিনিসটা বিশ্বাস করি কি আমরা যখন কোনো সংস্কার ভাবনাতেই যাই। আমরা সব সময়, ‘নতুন নতুন কমিশন করতে হবে’ করি। আপনি খেয়াল করে দেখেন, আমরা ছোটবেলা থেকে বলেছি, সরকারের তিনটা অর্গান থাকবে— একটা হচ্ছে এক্সিকিউটিভ, একটা হচ্ছে জুডিশিয়ারি, একটা হচ্ছে সংসদ। আমাদের এখানে সবচেয়ে ফান্ডামেন্টাল যে দুইটা জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান আছে, সবচেয়ে আদিম ফান্ডামেন্টাল একটা হচ্ছে উচ্চ আদালত, আরেকটা হচ্ছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘উচ্চ আদালত আর সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে যদি ঠিকমতো গঠন করা যায়, ক্ষমতা দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের এত নতুন নতুন কমিশন লাগে না। আমাদের যে নতুন কমিশনগুলো হয়েছে, দেখেন ইনফরমেশন কমিশন, তারপরে যে আমাদের নতুন কমিশন হয়েছে আপনার হিউম্যান রাইটস কমিশন, কম্পিটিশন কমিশন, কী রেজাল্ট দিয়েছে? আপনারা বরং এক্সিস্টিং যে প্রতিষ্ঠান আছে, সেটাকে আরও কত বেগবান করা যায়...। আপনারা যেমন স্থায়ী কমিটির কথা বলেছেন, স্থায়ী কমিটির ক্ষেত্রে কয়েকটা কমিটির কথা বলেছেন, ওটা যেন অবশ্যই হেডেড বাই বিরোধী দলের নেতা হয়।’
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নয়, ক্ষমতা হ্রাস
নাগরিক জোটের প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বছর করার প্রস্তাব জনপ্রিয় হলেও সেটি একনায়কতন্ত্র প্রতিরোধে যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেন আসিফ নজরুল। প্রধানমন্ত্রীর সংবিধানগত ক্ষমতা হ্রাস করাকেই তিনি বেশি গুরুত্ব দেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আরেকটা জিনিস একটু বলি যে, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ যে দুই বছর আপনারা বলেন— এটা খুব জনপ্রিয় দাবি, আমারও দাবি। আমি দেখলাম যেকোনো একটা সময়.. সম্ভবত সালাহউদ্দিন ভাই বা বিএনপির একজনই কোথাও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বছর পৃথিবীর কোন দেশে আছে? আপনি প্রধানমন্ত্রী দুই বছর বললেই শুধু হবে না, কনভিন্সিং আর্গুমেন্ট করতে হবে তো যে, পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে সেটা বের করেন, বের করে তারপর দেখেন হয় কি না। কারণ প্রধানমন্ত্রী দুই বছরের মেয়াদ কিন্তু কোথাও নাই আসলে। আপনি ইন্ডিয়া বলেন, ইউকে বলেন, কোথাও কিন্তু নাই।’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে যে সিস্টেম, দুই বছর দুইটা মেয়াদও যদি রাখেন, একনায়কতন্ত্র সম্ভব। ধরেন দুই মেয়াদের জন্য সালাহউদ্দিন ভাই প্রধানমন্ত্রী হলেন, ধরেন তারপরে দুই মেয়াদে হবে উনার স্ত্রী, তারপরে দুই মেয়াদে হবে উনার সন্তান। শুধু দুই মেয়াদ সলিউশন না। সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট একটা জিনিস প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাটা কমায় দেন। আমি সব সময় একটা জিনিস বলি, ফান্ডামেন্টাল একটা জিনিস, ভারতে বলে যে রাষ্ট্রপতি ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ক্যাবিনেটের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। আর আমাদের এখানে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। ফলে এই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাটাকে এড্রেস করেন, মেয়াদটাও নির্দিষ্ট দরকার আছে। কিন্তু কনভিন্সিং আর্গুমেন্টে এস্টাবলিশ করতে হবে।’
প্রধান বিচারপতির ‘অসীম’ ক্ষমতার সমালোচনা
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানে একটা মাত্র ব্যক্তিকে স্বাধীনভাবে নিয়োগ করা যায়, চিফ জাস্টিস। রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে নিয়োগ করতে পারে এবং বাংলাদেশের সংবিধানে চিফ জাস্টিসের অসীম ক্ষমতা! আপনারা শুধু প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা দেখেন। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সবচেয়ে দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি হচ্ছে চিফ জাস্টিস। চিফ জাস্টিস কি করতে পারেন, ইতিহাস তো আপনাদের মনে আছে। যাই হোক, একজন চিফ জাস্টিসের কারণে আমাদের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। উনার আবার অন্য রকমভাবে কন্ট্রিবিউশন আছে। তা আমি যে জিনিসটা বলতে চাচ্ছি, চিফ জাস্টিসের যে ক্ষমতা, এই চিফ জাস্টিসের ক্ষমতা আপনার অসীম!’
তাঁর মতে, এটি এককেন্দ্রিক ক্ষমতা, যা রাজনৈতিক অপব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি করে। সংবিধান বিষয়ে ২০-২৫ বছরের অধ্যাপনার কথা তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক বলেন, ‘শুধুমাত্র এই কারণে.... শুধুমাত্র এই কারণে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান বিচারপতি— এই দুইটা পদেই দাস শ্রেণির লোকদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এত ক্ষমতা প্রধান বিচারপতির! যেকোনো বেঞ্চ উনি ভেঙে দিতে পারেন একা! যেকোনো বেঞ্চ পুনর্গঠন করতে পারেন!’
এই ক্ষমতার দলীয় অপব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এসে করবে কী? আওয়ামী লীগপন্থী যে জাজগুলো আছে, ওদের সবচেয়ে আনইম্পর্টেন্ট বেঞ্চ দেবে বা বেঞ্চই দেবে না। আর নিজেদের রিক্রুট যারা আছে, তাদেরকে ফান্ডামেন্টাল রাইটস শোনার বা ক্রিমিনাল জুরিসডিকশনের বেঞ্চ, ওগুলি দেবে। বাকিগুলোকে সিভিল ম্যাটার, কোম্পানি ম্যাটার এরকম... নয়তো বেঞ্চই দেবে না। একটা লোক পুরো বাংলাদেশের সমস্ত মানুষের মানবাধিকারের বিচার কন্ট্রোল করতে পারেন, একটা লোক, জাস্ট চিফ জাস্টিস।’
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, সংবিধান সংস্কার একটি দীর্ঘ, জটিল এবং বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া। এখানে আবেগ নয়, বাস্তবতা ও আইনি ভারসাম্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। জুলাই সনদ কিংবা উচ্চকক্ষ— সবকিছুর ওপর অতিরিক্ত নির্ভর না করে একটি অন্তর্বর্তী সাংবিধানিক রূপরেখার মাধ্যমে ধাপে ধাপে সংস্কারের পথে এগোনোর আহ্বান জানান তিনি।
হুসাইন আহমদ, ঢাকা

অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কারের আলোচনায় স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধান বাতিল বা পুনর্লিখনের প্রস্তাব তুলেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। বিষয়টি নানামুখী আলোচনা ও তর্ক-বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রনেতাদের কেউ কেউ ‘বাহাত্তরের সংবিধানের কবর রচনার’ কথা বলে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আজ রোববার রাজধানীতে একটি আলোচনা সভায় গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নাগরিক কোয়ালিশনের আয়োজনে ‘সংবিধান সংস্কারে নাগরিক জোটের ৭ প্রস্তাব’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন আসিফ নজরুল। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আলোকচিত্রী ও নাগরিক কোয়ালিশনের সহ-আহ্বায়ক শহিদুল আলম। সাতটি প্রস্তাব তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন অর্থনীতিবিদ ও লেখক জিয়া হাসান।
প্রস্তাবিত সাতটি বিষয় ছিল : নিম্নকক্ষের ভোটের আনুপাতিক ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন, সাংবিধানিক নিয়োগ পদ্ধতির সংস্কার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কার্যকরী ভূমিকা ও প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর চালু, নারীদের সরাসরি নির্বাচনের সুযোগ বৃদ্ধি ও জুলাই সনদকে ভিত্তি করে একটি নতুন সাংবিধানিক রূপরেখা প্রণয়ন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, জাতীয় সংসদ সংবিধান সংশোধন করে, সাংবিধানিক পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে বহুদিন লাগতে পারে। কোনো দেশে ৮-৯ বছরও লেগেছে। এর মধ্যে সংসদ প্রয়োজনে বাহাত্তরের সংবিধান সংশোধন করবে। নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সংসদ সংবিধান পরিচালক হিসেবে কাজ করবে।
জুলাই সনদ, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সংসদের উচ্চকক্ষ, প্রধান বিচারপতির ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা। তাঁর সেই বক্তব্যের চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরা হলো:—
বাহাত্তরের সংবিধান ও সংসদের ভূমিকা
নাগরিক জোটের প্রস্তাব বাস্তবায়নের পথরেখা ‘খুবই ভালো হয়েছে’ মন্তব্য করে নিজের বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন আসিফ নজরুল। আইন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর নজির আছে। এটা খুবই সাংবিধানিক ও বৈধ পদ্ধতি। সংসদই সংবিধান পরিষদের কাজ করবে। নেপাল, শ্রীলঙ্কাতে তা-ই হয়েছে। তবে সংসদ সংবিধান প্রণয়নে খুব অল্প সময় দিতে পারে। সপ্তাহে দুদিন সংবিধান পরিষদের কাজ করে। একটা সংবিধান পরিষদ যে জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ, সে তার সম্পূর্ণ সময়ের খুব বেশি হলে ৫০ শতাংশ সময় এখানে দিতে পারবে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এরকম একটা সংবিধান পরিষদ ৯০ দিনে সংবিধান রচনা করে ফেলবে, এটা মনে হচ্ছে একটু উচ্চাশা। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ৯০ দিনের মধ্যে যদি তারা করতে না পারে, তাহলে এক্সিস্টিং কনস্টিটিউশন কন্টিনিউ করবে? এখানে হচ্ছে আমার আপত্তি! শোনেন, জাতীয় সংসদ সংবিধান সংশোধন করে, সংবিধান পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে এমন উদাহরণ আছে, আট-নয় বছর লেগেছে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে বহুদিন লাগতে পারে। এখন এই পর্যন্ত আমি বাহাত্তরের সংবিধান কন্টিনিউ করব?
তাঁর প্রস্তাব হলো— আগামী নির্বাচন হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জাতীয় সংসদই সংবিধান পরিষদ হিসেবে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ করবে। নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বাহাত্তরের সংবিধান চলবে। সংসদ এতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনবে।
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘এটা আপনাদের ইনক্লুড করতে হবে যে গণপরিষদ হিসেবে যখন সে কাজ করবে, সে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ করতে থাকবে। ওটা করতে আমার ধারণা দু-তিন বছর লাগতে পারে। এই দু-তিন বছর কি আমি বাহাত্তরের সংবিধান বহন করব? এই দু-তিন বছরের জন্য তারা যখন জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ করবে, তখন তারা সংসদের কিছু ফান্ডামেন্টাল এমেন্ডমেন্ট আনবে।’
এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, উচ্চ আদালতের বিকেন্দ্রীকরণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সংসদ সদস্যদের ৮৯ দিন পর্যন্ত সংসদে অনুপস্থিত থাকার সুযোগের মতো মৌলিক বিষয়ে পরিবর্তন আনার ‘সমাজে বহু বছর যাবৎ ঐক্য আছে’ বলে আইন উপদেষ্টা মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এই ফান্ডামেন্টাল জিনিসগুলা যেটা আমরা সবাই সারা জীবন ধরে বলে আসছি— এগুলো জাতীয় সংসদ পরিবর্তন করতেই থাকবে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন কবে হবে— এ জন্য আমি বাহাত্তরের বোঝা কেন বহন করব? এটা আপনাদের অবশ্যই ইনক্লুড করতে হবে।’
জুলাই সনদের ভূমিকা নিয়ে সংশয়
জুলাই সনদ নিয়ে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে মত দেন আসিফ নজরুল। তাঁর মতে, সবাই এই সনদের সবকিছুর সঙ্গে একমত হবেন—এমন আশা বাস্তবসম্মত নয়।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘দ্বিতীয় যে পথরেখাটা দিয়েছেন, সেখানে আমার মনে হচ্ছে, টু মাচ এমফেসিস দেওয়া হয়েছে জুলাই সনদের ওপর। জুলাই সনদে কি এত কিছুই থাকবে? এটা কি সংবিধানের ভিত্তি হবে? তাহলে জুলাই সনদ হবে নাকি আমার সন্দেহ আছে! জুলাই সনদের ওপর অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে... মনে হচ্ছে, আমরা এটা ধরেই নিয়েছি, সবাই জুলাই সনদের ওপর অনেক কিছুর বিষয়ে একমত হবে। এটা এত সহজ হবে না, হয়তো এমন হতে পারে জুলাই সনদের মোস্ট ফান্ডামেন্টাল জিনিস রাখা সম্ভব হতে পারে। এটা একটু ভেবে দেখেন! বাট নতুন চিন্তা, খুবই ভালো।’
উচ্চকক্ষ গঠনের যুক্তি ও ঝুঁকি
উচ্চকক্ষকে অত্যন্ত ক্ষমতাধর করে তোলার প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে যে ফ্রাঙ্কলি স্পিকিং.. উচ্চকক্ষকে অনেক বেশি ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, এত ক্ষমতাই যদি উচ্চকক্ষকে দেন, তাহলে উচ্চকক্ষে বিএনপি-জামায়াত এবং নাহিদের দল তাদেরকেই নিয়োগ দেবে, যারা দলদাস হবে। আমার কাছে মনে হয়েছে উচ্চকক্ষের ওপর অনেক বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটাকে আপনারা একটু রেশনালাইজ করার চেষ্টা করেন, সবকিছু তারা করতে পারবে কি না।
নতুন কমিশনের পরিবর্তে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করার আহ্বান
আসিফ নজরুল নতুন নতুন কমিশন গঠনের পরিবর্তে উচ্চ আদালত ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোকে কার্যকর করার ওপর জোর দেন। বিশেষ করে, স্বরাষ্ট্র, আইন ও অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোর সভাপতিত্ব বিরোধী দলের হাতে দিলে জবাবদিহি নিশ্চিত করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুন নতুন অনেক কমিশনের প্রস্তাব করা হয়েছে এখানে। আমাদের এখানে তো অলরেডি অনেক কমিশন আছে। আমরা সব সময় যে জিনিসটা বিশ্বাস করি কি আমরা যখন কোনো সংস্কার ভাবনাতেই যাই। আমরা সব সময়, ‘নতুন নতুন কমিশন করতে হবে’ করি। আপনি খেয়াল করে দেখেন, আমরা ছোটবেলা থেকে বলেছি, সরকারের তিনটা অর্গান থাকবে— একটা হচ্ছে এক্সিকিউটিভ, একটা হচ্ছে জুডিশিয়ারি, একটা হচ্ছে সংসদ। আমাদের এখানে সবচেয়ে ফান্ডামেন্টাল যে দুইটা জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান আছে, সবচেয়ে আদিম ফান্ডামেন্টাল একটা হচ্ছে উচ্চ আদালত, আরেকটা হচ্ছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘উচ্চ আদালত আর সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে যদি ঠিকমতো গঠন করা যায়, ক্ষমতা দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের এত নতুন নতুন কমিশন লাগে না। আমাদের যে নতুন কমিশনগুলো হয়েছে, দেখেন ইনফরমেশন কমিশন, তারপরে যে আমাদের নতুন কমিশন হয়েছে আপনার হিউম্যান রাইটস কমিশন, কম্পিটিশন কমিশন, কী রেজাল্ট দিয়েছে? আপনারা বরং এক্সিস্টিং যে প্রতিষ্ঠান আছে, সেটাকে আরও কত বেগবান করা যায়...। আপনারা যেমন স্থায়ী কমিটির কথা বলেছেন, স্থায়ী কমিটির ক্ষেত্রে কয়েকটা কমিটির কথা বলেছেন, ওটা যেন অবশ্যই হেডেড বাই বিরোধী দলের নেতা হয়।’
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নয়, ক্ষমতা হ্রাস
নাগরিক জোটের প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বছর করার প্রস্তাব জনপ্রিয় হলেও সেটি একনায়কতন্ত্র প্রতিরোধে যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেন আসিফ নজরুল। প্রধানমন্ত্রীর সংবিধানগত ক্ষমতা হ্রাস করাকেই তিনি বেশি গুরুত্ব দেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আরেকটা জিনিস একটু বলি যে, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ যে দুই বছর আপনারা বলেন— এটা খুব জনপ্রিয় দাবি, আমারও দাবি। আমি দেখলাম যেকোনো একটা সময়.. সম্ভবত সালাহউদ্দিন ভাই বা বিএনপির একজনই কোথাও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বছর পৃথিবীর কোন দেশে আছে? আপনি প্রধানমন্ত্রী দুই বছর বললেই শুধু হবে না, কনভিন্সিং আর্গুমেন্ট করতে হবে তো যে, পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে সেটা বের করেন, বের করে তারপর দেখেন হয় কি না। কারণ প্রধানমন্ত্রী দুই বছরের মেয়াদ কিন্তু কোথাও নাই আসলে। আপনি ইন্ডিয়া বলেন, ইউকে বলেন, কোথাও কিন্তু নাই।’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে যে সিস্টেম, দুই বছর দুইটা মেয়াদও যদি রাখেন, একনায়কতন্ত্র সম্ভব। ধরেন দুই মেয়াদের জন্য সালাহউদ্দিন ভাই প্রধানমন্ত্রী হলেন, ধরেন তারপরে দুই মেয়াদে হবে উনার স্ত্রী, তারপরে দুই মেয়াদে হবে উনার সন্তান। শুধু দুই মেয়াদ সলিউশন না। সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট একটা জিনিস প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাটা কমায় দেন। আমি সব সময় একটা জিনিস বলি, ফান্ডামেন্টাল একটা জিনিস, ভারতে বলে যে রাষ্ট্রপতি ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ক্যাবিনেটের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। আর আমাদের এখানে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। ফলে এই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাটাকে এড্রেস করেন, মেয়াদটাও নির্দিষ্ট দরকার আছে। কিন্তু কনভিন্সিং আর্গুমেন্টে এস্টাবলিশ করতে হবে।’
প্রধান বিচারপতির ‘অসীম’ ক্ষমতার সমালোচনা
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানে একটা মাত্র ব্যক্তিকে স্বাধীনভাবে নিয়োগ করা যায়, চিফ জাস্টিস। রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে নিয়োগ করতে পারে এবং বাংলাদেশের সংবিধানে চিফ জাস্টিসের অসীম ক্ষমতা! আপনারা শুধু প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা দেখেন। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সবচেয়ে দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি হচ্ছে চিফ জাস্টিস। চিফ জাস্টিস কি করতে পারেন, ইতিহাস তো আপনাদের মনে আছে। যাই হোক, একজন চিফ জাস্টিসের কারণে আমাদের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। উনার আবার অন্য রকমভাবে কন্ট্রিবিউশন আছে। তা আমি যে জিনিসটা বলতে চাচ্ছি, চিফ জাস্টিসের যে ক্ষমতা, এই চিফ জাস্টিসের ক্ষমতা আপনার অসীম!’
তাঁর মতে, এটি এককেন্দ্রিক ক্ষমতা, যা রাজনৈতিক অপব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি করে। সংবিধান বিষয়ে ২০-২৫ বছরের অধ্যাপনার কথা তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক বলেন, ‘শুধুমাত্র এই কারণে.... শুধুমাত্র এই কারণে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান বিচারপতি— এই দুইটা পদেই দাস শ্রেণির লোকদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এত ক্ষমতা প্রধান বিচারপতির! যেকোনো বেঞ্চ উনি ভেঙে দিতে পারেন একা! যেকোনো বেঞ্চ পুনর্গঠন করতে পারেন!’
এই ক্ষমতার দলীয় অপব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এসে করবে কী? আওয়ামী লীগপন্থী যে জাজগুলো আছে, ওদের সবচেয়ে আনইম্পর্টেন্ট বেঞ্চ দেবে বা বেঞ্চই দেবে না। আর নিজেদের রিক্রুট যারা আছে, তাদেরকে ফান্ডামেন্টাল রাইটস শোনার বা ক্রিমিনাল জুরিসডিকশনের বেঞ্চ, ওগুলি দেবে। বাকিগুলোকে সিভিল ম্যাটার, কোম্পানি ম্যাটার এরকম... নয়তো বেঞ্চই দেবে না। একটা লোক পুরো বাংলাদেশের সমস্ত মানুষের মানবাধিকারের বিচার কন্ট্রোল করতে পারেন, একটা লোক, জাস্ট চিফ জাস্টিস।’
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, সংবিধান সংস্কার একটি দীর্ঘ, জটিল এবং বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া। এখানে আবেগ নয়, বাস্তবতা ও আইনি ভারসাম্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। জুলাই সনদ কিংবা উচ্চকক্ষ— সবকিছুর ওপর অতিরিক্ত নির্ভর না করে একটি অন্তর্বর্তী সাংবিধানিক রূপরেখার মাধ্যমে ধাপে ধাপে সংস্কারের পথে এগোনোর আহ্বান জানান তিনি।

অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কারের আলোচনায় স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধান বাতিল বা পুনর্লিখনের প্রস্তাব তুলেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। বিষয়টি নানামুখী আলোচনা ও তর্ক-বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রনেতাদের কেউ কেউ ‘বাহাত্তরের সংবিধানের কবর রচনার’ কথা বলে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আজ রোববার রাজধানীতে একটি আলোচনা সভায় গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নাগরিক কোয়ালিশনের আয়োজনে ‘সংবিধান সংস্কারে নাগরিক জোটের ৭ প্রস্তাব’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন আসিফ নজরুল। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আলোকচিত্রী ও নাগরিক কোয়ালিশনের সহ-আহ্বায়ক শহিদুল আলম। সাতটি প্রস্তাব তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন অর্থনীতিবিদ ও লেখক জিয়া হাসান।
প্রস্তাবিত সাতটি বিষয় ছিল : নিম্নকক্ষের ভোটের আনুপাতিক ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন, সাংবিধানিক নিয়োগ পদ্ধতির সংস্কার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কার্যকরী ভূমিকা ও প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর চালু, নারীদের সরাসরি নির্বাচনের সুযোগ বৃদ্ধি ও জুলাই সনদকে ভিত্তি করে একটি নতুন সাংবিধানিক রূপরেখা প্রণয়ন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, জাতীয় সংসদ সংবিধান সংশোধন করে, সাংবিধানিক পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে বহুদিন লাগতে পারে। কোনো দেশে ৮-৯ বছরও লেগেছে। এর মধ্যে সংসদ প্রয়োজনে বাহাত্তরের সংবিধান সংশোধন করবে। নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সংসদ সংবিধান পরিচালক হিসেবে কাজ করবে।
জুলাই সনদ, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সংসদের উচ্চকক্ষ, প্রধান বিচারপতির ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা। তাঁর সেই বক্তব্যের চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরা হলো:—
বাহাত্তরের সংবিধান ও সংসদের ভূমিকা
নাগরিক জোটের প্রস্তাব বাস্তবায়নের পথরেখা ‘খুবই ভালো হয়েছে’ মন্তব্য করে নিজের বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন আসিফ নজরুল। আইন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর নজির আছে। এটা খুবই সাংবিধানিক ও বৈধ পদ্ধতি। সংসদই সংবিধান পরিষদের কাজ করবে। নেপাল, শ্রীলঙ্কাতে তা-ই হয়েছে। তবে সংসদ সংবিধান প্রণয়নে খুব অল্প সময় দিতে পারে। সপ্তাহে দুদিন সংবিধান পরিষদের কাজ করে। একটা সংবিধান পরিষদ যে জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ, সে তার সম্পূর্ণ সময়ের খুব বেশি হলে ৫০ শতাংশ সময় এখানে দিতে পারবে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এরকম একটা সংবিধান পরিষদ ৯০ দিনে সংবিধান রচনা করে ফেলবে, এটা মনে হচ্ছে একটু উচ্চাশা। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ৯০ দিনের মধ্যে যদি তারা করতে না পারে, তাহলে এক্সিস্টিং কনস্টিটিউশন কন্টিনিউ করবে? এখানে হচ্ছে আমার আপত্তি! শোনেন, জাতীয় সংসদ সংবিধান সংশোধন করে, সংবিধান পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে এমন উদাহরণ আছে, আট-নয় বছর লেগেছে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে বহুদিন লাগতে পারে। এখন এই পর্যন্ত আমি বাহাত্তরের সংবিধান কন্টিনিউ করব?
তাঁর প্রস্তাব হলো— আগামী নির্বাচন হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জাতীয় সংসদই সংবিধান পরিষদ হিসেবে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ করবে। নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বাহাত্তরের সংবিধান চলবে। সংসদ এতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনবে।
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘এটা আপনাদের ইনক্লুড করতে হবে যে গণপরিষদ হিসেবে যখন সে কাজ করবে, সে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ করতে থাকবে। ওটা করতে আমার ধারণা দু-তিন বছর লাগতে পারে। এই দু-তিন বছর কি আমি বাহাত্তরের সংবিধান বহন করব? এই দু-তিন বছরের জন্য তারা যখন জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ করবে, তখন তারা সংসদের কিছু ফান্ডামেন্টাল এমেন্ডমেন্ট আনবে।’
এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, উচ্চ আদালতের বিকেন্দ্রীকরণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সংসদ সদস্যদের ৮৯ দিন পর্যন্ত সংসদে অনুপস্থিত থাকার সুযোগের মতো মৌলিক বিষয়ে পরিবর্তন আনার ‘সমাজে বহু বছর যাবৎ ঐক্য আছে’ বলে আইন উপদেষ্টা মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এই ফান্ডামেন্টাল জিনিসগুলা যেটা আমরা সবাই সারা জীবন ধরে বলে আসছি— এগুলো জাতীয় সংসদ পরিবর্তন করতেই থাকবে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন কবে হবে— এ জন্য আমি বাহাত্তরের বোঝা কেন বহন করব? এটা আপনাদের অবশ্যই ইনক্লুড করতে হবে।’
জুলাই সনদের ভূমিকা নিয়ে সংশয়
জুলাই সনদ নিয়ে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে মত দেন আসিফ নজরুল। তাঁর মতে, সবাই এই সনদের সবকিছুর সঙ্গে একমত হবেন—এমন আশা বাস্তবসম্মত নয়।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘দ্বিতীয় যে পথরেখাটা দিয়েছেন, সেখানে আমার মনে হচ্ছে, টু মাচ এমফেসিস দেওয়া হয়েছে জুলাই সনদের ওপর। জুলাই সনদে কি এত কিছুই থাকবে? এটা কি সংবিধানের ভিত্তি হবে? তাহলে জুলাই সনদ হবে নাকি আমার সন্দেহ আছে! জুলাই সনদের ওপর অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে... মনে হচ্ছে, আমরা এটা ধরেই নিয়েছি, সবাই জুলাই সনদের ওপর অনেক কিছুর বিষয়ে একমত হবে। এটা এত সহজ হবে না, হয়তো এমন হতে পারে জুলাই সনদের মোস্ট ফান্ডামেন্টাল জিনিস রাখা সম্ভব হতে পারে। এটা একটু ভেবে দেখেন! বাট নতুন চিন্তা, খুবই ভালো।’
উচ্চকক্ষ গঠনের যুক্তি ও ঝুঁকি
উচ্চকক্ষকে অত্যন্ত ক্ষমতাধর করে তোলার প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে যে ফ্রাঙ্কলি স্পিকিং.. উচ্চকক্ষকে অনেক বেশি ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, এত ক্ষমতাই যদি উচ্চকক্ষকে দেন, তাহলে উচ্চকক্ষে বিএনপি-জামায়াত এবং নাহিদের দল তাদেরকেই নিয়োগ দেবে, যারা দলদাস হবে। আমার কাছে মনে হয়েছে উচ্চকক্ষের ওপর অনেক বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটাকে আপনারা একটু রেশনালাইজ করার চেষ্টা করেন, সবকিছু তারা করতে পারবে কি না।
নতুন কমিশনের পরিবর্তে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করার আহ্বান
আসিফ নজরুল নতুন নতুন কমিশন গঠনের পরিবর্তে উচ্চ আদালত ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোকে কার্যকর করার ওপর জোর দেন। বিশেষ করে, স্বরাষ্ট্র, আইন ও অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোর সভাপতিত্ব বিরোধী দলের হাতে দিলে জবাবদিহি নিশ্চিত করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুন নতুন অনেক কমিশনের প্রস্তাব করা হয়েছে এখানে। আমাদের এখানে তো অলরেডি অনেক কমিশন আছে। আমরা সব সময় যে জিনিসটা বিশ্বাস করি কি আমরা যখন কোনো সংস্কার ভাবনাতেই যাই। আমরা সব সময়, ‘নতুন নতুন কমিশন করতে হবে’ করি। আপনি খেয়াল করে দেখেন, আমরা ছোটবেলা থেকে বলেছি, সরকারের তিনটা অর্গান থাকবে— একটা হচ্ছে এক্সিকিউটিভ, একটা হচ্ছে জুডিশিয়ারি, একটা হচ্ছে সংসদ। আমাদের এখানে সবচেয়ে ফান্ডামেন্টাল যে দুইটা জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান আছে, সবচেয়ে আদিম ফান্ডামেন্টাল একটা হচ্ছে উচ্চ আদালত, আরেকটা হচ্ছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘উচ্চ আদালত আর সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে যদি ঠিকমতো গঠন করা যায়, ক্ষমতা দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের এত নতুন নতুন কমিশন লাগে না। আমাদের যে নতুন কমিশনগুলো হয়েছে, দেখেন ইনফরমেশন কমিশন, তারপরে যে আমাদের নতুন কমিশন হয়েছে আপনার হিউম্যান রাইটস কমিশন, কম্পিটিশন কমিশন, কী রেজাল্ট দিয়েছে? আপনারা বরং এক্সিস্টিং যে প্রতিষ্ঠান আছে, সেটাকে আরও কত বেগবান করা যায়...। আপনারা যেমন স্থায়ী কমিটির কথা বলেছেন, স্থায়ী কমিটির ক্ষেত্রে কয়েকটা কমিটির কথা বলেছেন, ওটা যেন অবশ্যই হেডেড বাই বিরোধী দলের নেতা হয়।’
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নয়, ক্ষমতা হ্রাস
নাগরিক জোটের প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বছর করার প্রস্তাব জনপ্রিয় হলেও সেটি একনায়কতন্ত্র প্রতিরোধে যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেন আসিফ নজরুল। প্রধানমন্ত্রীর সংবিধানগত ক্ষমতা হ্রাস করাকেই তিনি বেশি গুরুত্ব দেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আরেকটা জিনিস একটু বলি যে, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ যে দুই বছর আপনারা বলেন— এটা খুব জনপ্রিয় দাবি, আমারও দাবি। আমি দেখলাম যেকোনো একটা সময়.. সম্ভবত সালাহউদ্দিন ভাই বা বিএনপির একজনই কোথাও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বছর পৃথিবীর কোন দেশে আছে? আপনি প্রধানমন্ত্রী দুই বছর বললেই শুধু হবে না, কনভিন্সিং আর্গুমেন্ট করতে হবে তো যে, পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে সেটা বের করেন, বের করে তারপর দেখেন হয় কি না। কারণ প্রধানমন্ত্রী দুই বছরের মেয়াদ কিন্তু কোথাও নাই আসলে। আপনি ইন্ডিয়া বলেন, ইউকে বলেন, কোথাও কিন্তু নাই।’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে যে সিস্টেম, দুই বছর দুইটা মেয়াদও যদি রাখেন, একনায়কতন্ত্র সম্ভব। ধরেন দুই মেয়াদের জন্য সালাহউদ্দিন ভাই প্রধানমন্ত্রী হলেন, ধরেন তারপরে দুই মেয়াদে হবে উনার স্ত্রী, তারপরে দুই মেয়াদে হবে উনার সন্তান। শুধু দুই মেয়াদ সলিউশন না। সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট একটা জিনিস প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাটা কমায় দেন। আমি সব সময় একটা জিনিস বলি, ফান্ডামেন্টাল একটা জিনিস, ভারতে বলে যে রাষ্ট্রপতি ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ক্যাবিনেটের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। আর আমাদের এখানে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। ফলে এই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাটাকে এড্রেস করেন, মেয়াদটাও নির্দিষ্ট দরকার আছে। কিন্তু কনভিন্সিং আর্গুমেন্টে এস্টাবলিশ করতে হবে।’
প্রধান বিচারপতির ‘অসীম’ ক্ষমতার সমালোচনা
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানে একটা মাত্র ব্যক্তিকে স্বাধীনভাবে নিয়োগ করা যায়, চিফ জাস্টিস। রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে নিয়োগ করতে পারে এবং বাংলাদেশের সংবিধানে চিফ জাস্টিসের অসীম ক্ষমতা! আপনারা শুধু প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা দেখেন। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সবচেয়ে দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি হচ্ছে চিফ জাস্টিস। চিফ জাস্টিস কি করতে পারেন, ইতিহাস তো আপনাদের মনে আছে। যাই হোক, একজন চিফ জাস্টিসের কারণে আমাদের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। উনার আবার অন্য রকমভাবে কন্ট্রিবিউশন আছে। তা আমি যে জিনিসটা বলতে চাচ্ছি, চিফ জাস্টিসের যে ক্ষমতা, এই চিফ জাস্টিসের ক্ষমতা আপনার অসীম!’
তাঁর মতে, এটি এককেন্দ্রিক ক্ষমতা, যা রাজনৈতিক অপব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি করে। সংবিধান বিষয়ে ২০-২৫ বছরের অধ্যাপনার কথা তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক বলেন, ‘শুধুমাত্র এই কারণে.... শুধুমাত্র এই কারণে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান বিচারপতি— এই দুইটা পদেই দাস শ্রেণির লোকদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এত ক্ষমতা প্রধান বিচারপতির! যেকোনো বেঞ্চ উনি ভেঙে দিতে পারেন একা! যেকোনো বেঞ্চ পুনর্গঠন করতে পারেন!’
এই ক্ষমতার দলীয় অপব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এসে করবে কী? আওয়ামী লীগপন্থী যে জাজগুলো আছে, ওদের সবচেয়ে আনইম্পর্টেন্ট বেঞ্চ দেবে বা বেঞ্চই দেবে না। আর নিজেদের রিক্রুট যারা আছে, তাদেরকে ফান্ডামেন্টাল রাইটস শোনার বা ক্রিমিনাল জুরিসডিকশনের বেঞ্চ, ওগুলি দেবে। বাকিগুলোকে সিভিল ম্যাটার, কোম্পানি ম্যাটার এরকম... নয়তো বেঞ্চই দেবে না। একটা লোক পুরো বাংলাদেশের সমস্ত মানুষের মানবাধিকারের বিচার কন্ট্রোল করতে পারেন, একটা লোক, জাস্ট চিফ জাস্টিস।’
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, সংবিধান সংস্কার একটি দীর্ঘ, জটিল এবং বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া। এখানে আবেগ নয়, বাস্তবতা ও আইনি ভারসাম্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। জুলাই সনদ কিংবা উচ্চকক্ষ— সবকিছুর ওপর অতিরিক্ত নির্ভর না করে একটি অন্তর্বর্তী সাংবিধানিক রূপরেখার মাধ্যমে ধাপে ধাপে সংস্কারের পথে এগোনোর আহ্বান জানান তিনি।

বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
২ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
২ ঘণ্টা আগে
বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
৯ ঘণ্টা আগে
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘Ensuring Justice: The Role of the Judiciary in Addressing Enforced Disappearances’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির উদ্যোগে এবং ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় আসিফ নজরুল বলেন, ‘অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রায় লেখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকেরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাঁদের শিল্পকর্মই তাঁদের রায়।
তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। কমিশন এরই মধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘Ensuring Justice: The Role of the Judiciary in Addressing Enforced Disappearances’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির উদ্যোগে এবং ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় আসিফ নজরুল বলেন, ‘অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রায় লেখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকেরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাঁদের শিল্পকর্মই তাঁদের রায়।
তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। কমিশন এরই মধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক রূপান্তরের প্রেক্ষাপটে সংবিধান সংস্কার নিয়ে উত্থাপিত বিতর্কে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন— সংবিধান পুনর্লিখন নয়, ধাপে ধাপে বাস্তবভিত্তিক সংশোধনই সময়োপযোগী পথ। তিনি ৭২-এর সংবিধানের ভার বহনের যুক্তি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও ক্ষমতার ভারসাম্য, প্রধান
১১ মে ২০২৫
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
২ ঘণ্টা আগে
বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
৯ ঘণ্টা আগে
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১ দিন আগেসিনেটে শুনানিতে ট্রাম্প–মনোনীত রাষ্ট্রদূত
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা বলেন ক্রিস্টেনসেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মমোনীত এই কূটনীতিক বলেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে সামরিক সহযোগিতা, সামুদ্রিক কর্মকাণ্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে সম্পৃক্ততাসহ চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরবনে। পাশাপাশি সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারত্ব ঘনিষ্ঠ করার জন্য কাজ করারও প্রতিশ্রুতি দেন ক্রিস্টেনসেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেন। সিনেট কমিটির অনুমোদনের পরই তাঁর নিয়োগ চূড়ান্ত হবে। এই মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে চার রাষ্ট্রদূত প্রার্থী লিখিত বিবৃতি তুলে ধরেন। পরে তাঁরা সিনেট সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরে নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর জন পিটার রিকেটস শুনানিতে বলেন, ‘আমরা এখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মুখে। বাংলাদেশ ও চীনের সামরিক সহযোগিতা দ্রুত বাড়ছে। যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন রাখার জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি কৌশলগত সাবমেরিন ঘাঁটি আধুনিকায়ন করেছে চীন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার চীনের তৈরি ২০টি জে-১০ যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নতুন সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ও দূরপাল্লার রাডার কেনার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ পেলে চীনা সামরিক সরঞ্জামের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাতে বাংলাদেশের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে ক্রিস্টেনসেন কীভাবে কাজ করবেন, তা জানতে চান সিনেটর রিকেটস।

জবাবে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব নিয়ে আপনাদের মতো উদ্বেগ আমারও। রাষ্ট্রদূত নিয়োগ আমি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থেকে চীনের কার্যক্রমের ঝুঁকি ব্যাখ্যা করব। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা তুলে ধরব, যা দুই দেশের সামরিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।’
এ সময় সিনেটর রিকেটস বলেন, ‘এই শুনানির আগের দিনই সিনেট পররাষ্ট্র কমিটি সর্বসম্মতভাবে ‘থিংক টোয়াইস অ্যাক্ট’ পাস করেছে। এই আইন যুক্তরাষ্ট্রকে পূর্ণাঙ্গ কৌশল নিতে বাধ্য করবে, যাতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশকে চীনা অস্ত্র কেনা থেকে বিরত রাখা যায়। আমরা আশা করি, আপনিও এই আইনের সহায়তা নিয়ে কাজ করবেন। তাহলে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধ সম্ভব হবে।’
তাঁর এই মন্তব্যের সূত্র ধরে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘সামরিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চমূল্যের সামরিক সরঞ্জামের বিকল্প হিসেবে মিত্রদেশগুলোর তৈরি সাশ্রয়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা বাংলাদেশকে জানাতে পারি। পাশাপাশি যৌথ সামরিক মহড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্ল্যাটফর্মগুলোকে অন্যান্য মিত্র বাহিনীর সঙ্গে আরও সমন্বিত ও কার্যকর করতে পারি।’
শুনানির শুরুতে লিখিত বিবৃতিতে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে যে গণআন্দোলন হয়েছিল, তা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সরকারকে পতন ঘটায়। আগামী বছর বাংলাদেশের জনগণ ভোটে যাবে, যা দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের যাত্রায় পাশে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অনেক সময় তাঁর প্রাপ্য মনোযোগ পায় না, বড় প্রতিবেশীদের আড়ালে গুরুত্ব হারিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রসেবায় আমার দুই দশকের অভিজ্ঞতা, যার মধ্যে ঢাকার কর্মকালও রয়েছে। তাই, আমি বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থান বাংলাদেশকে উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার করে তুলেছে।’

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা বলেন ক্রিস্টেনসেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মমোনীত এই কূটনীতিক বলেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে সামরিক সহযোগিতা, সামুদ্রিক কর্মকাণ্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে সম্পৃক্ততাসহ চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরবনে। পাশাপাশি সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারত্ব ঘনিষ্ঠ করার জন্য কাজ করারও প্রতিশ্রুতি দেন ক্রিস্টেনসেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেন। সিনেট কমিটির অনুমোদনের পরই তাঁর নিয়োগ চূড়ান্ত হবে। এই মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে চার রাষ্ট্রদূত প্রার্থী লিখিত বিবৃতি তুলে ধরেন। পরে তাঁরা সিনেট সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরে নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর জন পিটার রিকেটস শুনানিতে বলেন, ‘আমরা এখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মুখে। বাংলাদেশ ও চীনের সামরিক সহযোগিতা দ্রুত বাড়ছে। যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন রাখার জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি কৌশলগত সাবমেরিন ঘাঁটি আধুনিকায়ন করেছে চীন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার চীনের তৈরি ২০টি জে-১০ যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নতুন সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ও দূরপাল্লার রাডার কেনার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ পেলে চীনা সামরিক সরঞ্জামের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাতে বাংলাদেশের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে ক্রিস্টেনসেন কীভাবে কাজ করবেন, তা জানতে চান সিনেটর রিকেটস।

জবাবে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব নিয়ে আপনাদের মতো উদ্বেগ আমারও। রাষ্ট্রদূত নিয়োগ আমি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থেকে চীনের কার্যক্রমের ঝুঁকি ব্যাখ্যা করব। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা তুলে ধরব, যা দুই দেশের সামরিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।’
এ সময় সিনেটর রিকেটস বলেন, ‘এই শুনানির আগের দিনই সিনেট পররাষ্ট্র কমিটি সর্বসম্মতভাবে ‘থিংক টোয়াইস অ্যাক্ট’ পাস করেছে। এই আইন যুক্তরাষ্ট্রকে পূর্ণাঙ্গ কৌশল নিতে বাধ্য করবে, যাতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশকে চীনা অস্ত্র কেনা থেকে বিরত রাখা যায়। আমরা আশা করি, আপনিও এই আইনের সহায়তা নিয়ে কাজ করবেন। তাহলে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধ সম্ভব হবে।’
তাঁর এই মন্তব্যের সূত্র ধরে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘সামরিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চমূল্যের সামরিক সরঞ্জামের বিকল্প হিসেবে মিত্রদেশগুলোর তৈরি সাশ্রয়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা বাংলাদেশকে জানাতে পারি। পাশাপাশি যৌথ সামরিক মহড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্ল্যাটফর্মগুলোকে অন্যান্য মিত্র বাহিনীর সঙ্গে আরও সমন্বিত ও কার্যকর করতে পারি।’
শুনানির শুরুতে লিখিত বিবৃতিতে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে যে গণআন্দোলন হয়েছিল, তা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সরকারকে পতন ঘটায়। আগামী বছর বাংলাদেশের জনগণ ভোটে যাবে, যা দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের যাত্রায় পাশে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অনেক সময় তাঁর প্রাপ্য মনোযোগ পায় না, বড় প্রতিবেশীদের আড়ালে গুরুত্ব হারিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রসেবায় আমার দুই দশকের অভিজ্ঞতা, যার মধ্যে ঢাকার কর্মকালও রয়েছে। তাই, আমি বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থান বাংলাদেশকে উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার করে তুলেছে।’

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক রূপান্তরের প্রেক্ষাপটে সংবিধান সংস্কার নিয়ে উত্থাপিত বিতর্কে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন— সংবিধান পুনর্লিখন নয়, ধাপে ধাপে বাস্তবভিত্তিক সংশোধনই সময়োপযোগী পথ। তিনি ৭২-এর সংবিধানের ভার বহনের যুক্তি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও ক্ষমতার ভারসাম্য, প্রধান
১১ মে ২০২৫
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
২ ঘণ্টা আগে
বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
৯ ঘণ্টা আগে
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১ দিন আগেউত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি

বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ ও ই-গেট পরিদর্শন শেষে বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল গেটে সাংবাদিকদের তিনি এই তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অব্যবস্থাপনার বিষয়টি তদন্তের জন্য আমরা চারটি দেশকে ইনভাইট করেছি। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও তুরস্ককে আসতে বলেছি। তাদের স্পেশালিস্ট আমরা আনতে চাচ্ছি। তারা তদন্ত করে কারণটা কী এবং কে দায়ী বের করবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দরের ভেতরে চারটি ইউনিট আছে। চারটি ইউনিটই কাজ করছে। আমরা আশা করছিলাম তাড়াতাড়ি কন্ট্রোলে আসবে। কন্ট্রোলে আসতে একটু সময় লাগছে। যেহেতু বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থা চিন্তা করতে হয়। যেহেতু দাহ্য পদার্থ খুব বেশি ছিল। অনেক সময় বাতাস থাকলে নেভাতে সময় লাগে।’
কার্গো ভিলেজে বিশেষায়িত ফায়ার সার্ভিস ইউনিট কেন ছিল না—এই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আগুন নেভানোর জন্য বিমানে যে ইউনিট থাকে, সেটা কার্গো ভিলেজেও কাজ করতে পারে। এটিতে কোনো অসুবিধা নাই।’
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, ‘আগুন নেভাতে কেউ ফেল করেনি। কিন্তু সময় লাগছে। ফেল করলে সব জ্বলে যেত। ওই দিন রাত ৯টার সময় বিমানবন্দর চালু করে দিয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দর অথরিটির চারটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট আছে। সেগুলো ৩০ সেকেন্ডের ভেতরে চলে আসছিল। ফায়ার সার্ভিসের যে ইউনিটগুলো আছে, তার একটি দিয়াবাড়ির মেট্রোরেলের ওখানে, আরেকটি কুর্মিটোলায়। সেগুলো ২০ মিনিটের ভেতরে চলে আসছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘যেখানে আগুন ধরেছে, সেখানে কেমিক্যাল ও গার্মেন্টস ম্যাটেরিয়াল ছিল। দাহ্য পদার্থ খুব বেশি ছিল। যার কারণে আগুনটা ছড়িয়ে গেছে তাড়াতাড়ি। কন্ট্রোল করতে সময় নিয়েছে।’
১৮ অক্টোবর বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট-সংলগ্ন আমদানি কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টায় রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু পুরোপুরি নির্বাপণ হয় ২৬ ঘণ্টা পর ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টার দিকে।
আরও খবর পড়ুন:

বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ ও ই-গেট পরিদর্শন শেষে বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল গেটে সাংবাদিকদের তিনি এই তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অব্যবস্থাপনার বিষয়টি তদন্তের জন্য আমরা চারটি দেশকে ইনভাইট করেছি। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও তুরস্ককে আসতে বলেছি। তাদের স্পেশালিস্ট আমরা আনতে চাচ্ছি। তারা তদন্ত করে কারণটা কী এবং কে দায়ী বের করবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দরের ভেতরে চারটি ইউনিট আছে। চারটি ইউনিটই কাজ করছে। আমরা আশা করছিলাম তাড়াতাড়ি কন্ট্রোলে আসবে। কন্ট্রোলে আসতে একটু সময় লাগছে। যেহেতু বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থা চিন্তা করতে হয়। যেহেতু দাহ্য পদার্থ খুব বেশি ছিল। অনেক সময় বাতাস থাকলে নেভাতে সময় লাগে।’
কার্গো ভিলেজে বিশেষায়িত ফায়ার সার্ভিস ইউনিট কেন ছিল না—এই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আগুন নেভানোর জন্য বিমানে যে ইউনিট থাকে, সেটা কার্গো ভিলেজেও কাজ করতে পারে। এটিতে কোনো অসুবিধা নাই।’
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, ‘আগুন নেভাতে কেউ ফেল করেনি। কিন্তু সময় লাগছে। ফেল করলে সব জ্বলে যেত। ওই দিন রাত ৯টার সময় বিমানবন্দর চালু করে দিয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দর অথরিটির চারটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট আছে। সেগুলো ৩০ সেকেন্ডের ভেতরে চলে আসছিল। ফায়ার সার্ভিসের যে ইউনিটগুলো আছে, তার একটি দিয়াবাড়ির মেট্রোরেলের ওখানে, আরেকটি কুর্মিটোলায়। সেগুলো ২০ মিনিটের ভেতরে চলে আসছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘যেখানে আগুন ধরেছে, সেখানে কেমিক্যাল ও গার্মেন্টস ম্যাটেরিয়াল ছিল। দাহ্য পদার্থ খুব বেশি ছিল। যার কারণে আগুনটা ছড়িয়ে গেছে তাড়াতাড়ি। কন্ট্রোল করতে সময় নিয়েছে।’
১৮ অক্টোবর বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট-সংলগ্ন আমদানি কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টায় রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু পুরোপুরি নির্বাপণ হয় ২৬ ঘণ্টা পর ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টার দিকে।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক রূপান্তরের প্রেক্ষাপটে সংবিধান সংস্কার নিয়ে উত্থাপিত বিতর্কে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন— সংবিধান পুনর্লিখন নয়, ধাপে ধাপে বাস্তবভিত্তিক সংশোধনই সময়োপযোগী পথ। তিনি ৭২-এর সংবিধানের ভার বহনের যুক্তি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও ক্ষমতার ভারসাম্য, প্রধান
১১ মে ২০২৫
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
২ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
২ ঘণ্টা আগে
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১ দিন আগেঅষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) ও রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আজ বিকেলে অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীনগর এলাকায় বাড়িসংলগ্ন বিলের পাশে খেলা করছিল মিশকাত (৫), মাহিন (৬) ও সাত্তার তানিল মিয়া (৫)। হঠাৎ সবার অজান্তে তিন শিশু বিলে পড়ে ডুবে যায়।
খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বিল থেকে মিশকাত ও মাহিনকে উদ্ধার করা হয়। পরে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পেয়ে অষ্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অপর শিশু তানিলের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে মাহিনের চাচা মোবারক হোসেন বলেন, প্রতিদিনের মতো তিন শিশু খেলাধুলা করছিল। কিন্তু কখন যে বিলের পানিতে ডুবে গেল, কেউ বোঝেনি। পরে তাদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে পানিতে প্রথমে দুজন, পরে অন্যজনকে পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে দেওঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন বলেন, দুঃখজনক খবর, একই বাড়ির তিনটা শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
অপর দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নে একই দিন বিকেলে উত্তর পারুয়া গ্রামের একটি পুকুরে পড়ে মারা যায় তিন শিশু। তারা হলো সুমাইয়া আক্তার (৫), হাবীবা আক্তার (৬) ও জান্নাত আক্তার (৫)।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেলে খেলার ছলে তারা তিনজনই বাড়ির পাশে পুকুরে যায়। কিছুক্ষণ পর না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে পারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একতেহার হোসেন বলেন, ‘তিনটি নিষ্পাপ শিশুর এমন মৃত্যুর ঘটনা আমাদের সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় খেলা করার সময় পানিতে পড়ে ছয় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নে ঘটনা দুটি ঘটে। এতে ওইসব এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আজ বিকেলে অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীনগর এলাকায় বাড়িসংলগ্ন বিলের পাশে খেলা করছিল মিশকাত (৫), মাহিন (৬) ও সাত্তার তানিল মিয়া (৫)। হঠাৎ সবার অজান্তে তিন শিশু বিলে পড়ে ডুবে যায়।
খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বিল থেকে মিশকাত ও মাহিনকে উদ্ধার করা হয়। পরে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পেয়ে অষ্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অপর শিশু তানিলের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে মাহিনের চাচা মোবারক হোসেন বলেন, প্রতিদিনের মতো তিন শিশু খেলাধুলা করছিল। কিন্তু কখন যে বিলের পানিতে ডুবে গেল, কেউ বোঝেনি। পরে তাদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে পানিতে প্রথমে দুজন, পরে অন্যজনকে পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে দেওঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন বলেন, দুঃখজনক খবর, একই বাড়ির তিনটা শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
অপর দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নে একই দিন বিকেলে উত্তর পারুয়া গ্রামের একটি পুকুরে পড়ে মারা যায় তিন শিশু। তারা হলো সুমাইয়া আক্তার (৫), হাবীবা আক্তার (৬) ও জান্নাত আক্তার (৫)।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেলে খেলার ছলে তারা তিনজনই বাড়ির পাশে পুকুরে যায়। কিছুক্ষণ পর না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে পারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একতেহার হোসেন বলেন, ‘তিনটি নিষ্পাপ শিশুর এমন মৃত্যুর ঘটনা আমাদের সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক রূপান্তরের প্রেক্ষাপটে সংবিধান সংস্কার নিয়ে উত্থাপিত বিতর্কে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন— সংবিধান পুনর্লিখন নয়, ধাপে ধাপে বাস্তবভিত্তিক সংশোধনই সময়োপযোগী পথ। তিনি ৭২-এর সংবিধানের ভার বহনের যুক্তি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও ক্ষমতার ভারসাম্য, প্রধান
১১ মে ২০২৫
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
২ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
২ ঘণ্টা আগে
বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
৯ ঘণ্টা আগে