Ajker Patrika

ভাঙা সেতু নিয়ে উত্তপ্ত গুজরাটের রাজনীতি

কলকাতা প্রতিনিধি
ভাঙা সেতু নিয়ে উত্তপ্ত গুজরাটের রাজনীতি

ভারতের গুজরাট রাজ্যের মরবিতে কেব্‌ল সেতু ভেঙে পড়ে ১৪১ জনের মৃত্যুতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গন। বিরোধীদের দাবি, অবিলম্বে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করতে হবে। তাদের অভিযোগের তীর বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের দিকে। শাসকদল ব্যস্ত ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে সেতু দুর্ঘটনার ‘ক্ষত’ সারাতে। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও মঙ্গলবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যেতে পারেন। 

মাচু নদীর ওপর দেড় শ বছরের পুরোনো ঝুলন্ত সেতু দুর্ঘটনায় সোমবার নাগাদ মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪১ জনে। রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী এখন পর্যন্ত ১৭৭ জনকে জীবন্ত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে নিহতদের পরিবারকে ৪ লাখ রুপি এবং আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকেও নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ রুপি করে দেওয়া হবে। 

ভারতে বিজেপি তাদের প্রচারে উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুজরাট মডেলের কথা বলেন। দলের প্রধান দুই মুখ নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ গুজরাটেরই সন্তান। সামনেই গুজরাট বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে সদ্য মেরামতের পর আবারও চালু হওয়া সেতু ভেঙে এত মানুষের মৃত্যু বিজেপি নেতৃত্বকে বিপাকে ফেলেছে। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সেতুটি গত ২৬ অক্টোবর মেরামতের পর খুলে দেওয়া হয় জনগণের জন্য অভিযোগ, কোনো ছাড়পত্র ছাড়াই খুলে দেওয়া হয় সেতুটি। সে কারণেই গত রোববার সন্ধ্যায় ছট পূজার সময় প্রায় ৫০০ মানুষ সেতুটিতে ভিড় করলে, ঘটে দুর্ঘটনা। 

গুজরাটের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ব্রিজেশ মির্জা এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের দায় স্বীকার করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভি জানিয়েছেন ক্রিমিনাল কেস দায়ের করে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী উদ্ধারকাজে দলীয় নেতা–কর্মীদের হাত লাগাতে নির্দেশ দিয়েছেন। নবনির্বাচিত কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেও রাজনীতি ভুলে দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। তবে তিনি দাবি তুলেছেন, ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করতে হবে। 

তবে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং এক টুইটে বলেছেন, ‘এটি আদৌ কী ঈশ্বরের কাজ নাকি পেছনে রয়েছে কোনো প্রতারণা?’ তাঁর লক্ষ্য বিজেপি নেতৃত্ব। আম আদমি পার্টির রাজ্যসভা সদস্য সুশীল গুপ্তাও সেতু ভাঙার জন্য বিজেপিকেই দায়ী করেছেন। তৃণমূলের এমপি ডা. শান্তনু সেনের অভিযোগ, ‘এর পেছনে দুর্নীতি রয়েছে।’ তিনিও ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দাবি করেন। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ, ‘গুজরাটে সেতু ভাঙলে প্রধানমন্ত্রী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন, তদন্ত হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এসব হয় না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত