Ajker Patrika

মাত্র এক সপ্তাহে রাশিয়াকে যেভাবে চমকে দিল ইউক্রেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
একটি রুশ বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলার চিত্র। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট
একটি রুশ বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলার চিত্র। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট

ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ভাসিল মালিউক যখন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির কাছে ‘অপারেশন স্পাইডারস ওয়েব’-এর পরিকল্পনা পেশ করেন, তখন অনেকের কাছেই তা রূপকথার মতোই মনে হয়েছিল। এই অপারেশনের লক্ষ্য ছিল, রাশিয়ার পাঁচটি বিমানঘাঁটিতে একযোগে আঘাত হানা। হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এসব ঘাঁটিগুলোর নিরাপত্তা বেষ্টনী আবার খুব কঠোর। এ ছাড়া রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের গর্বের কের্চ সেতু ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ রেলপথ ছিল ইউক্রেনের সপ্তাহব্যাপী হামলার গৌণ লক্ষ্যবস্তু।

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক দ্য টাইমস জানিয়েছে, ইউক্রেনের পরিকল্পনার পরিসর ছিল বিপুল। এই পরিকল্পনার অংশ ছিল ১১৭টি আত্মঘাতী ড্রোন, যেগুলো দূরবর্তী বিমানঘাঁটিগুলোতে আঘাত হানবে এবং এর নিয়ন্ত্রণে থাকবে এআই প্রযুক্তি ও হাতেকলমে কমান্ডের সমন্বয়। এ ক্ষেত্রে শনাক্ত না হয়ে ড্রোনগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

পরিকল্পনার সূক্ষ্মতা ও সাহস

রাশিয়ার সীমান্ত পেরিয়ে ভেতরে ঢুকে এই অপারেশনের বাস্তবায়ন ছিল খুবই বিপজ্জনক। তবে ইউক্রেনের গুপ্তচরেরা কাঠের নকল কেবিন তৈরি করে সেগুলোর ভেতরে ড্রোন ও বিস্ফোরক লুকিয়ে পাঠাতে সক্ষম হন। ট্রাকের সঙ্গে যুক্ত কেবিনগুলোর ছাদে ছিল সৌর প্যানেলের। তবে এই সৌর প্যানেলের নিচেই রাখা ছিল ড্রোনগুলো। একটি রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে ছাদটি সরে গেলেই ড্রোনগুলো উন্মুক্ত হয়ে যায়।

রাশিয়ার বিশাল লজিস্টিকস ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে ইউক্রেনের এসবিইউ (সিকিউরিটি সার্ভিস অব ইউক্রেন) কিছু রুশ ট্রাকচালককে ব্যবহার করে কেবিনগুলো দেশটির ভেতরে পৌঁছে দেয়। পরে চেলিয়াবিনস্ক শহরের একটি গুদামে ড্রোনগুলো জোড়া লাগানো হয় এবং হামলার জন্য এগুলোকে প্রস্তুত করা হয়।

ড্রোন, এআই এবং যুদ্ধের নতুন বাস্তবতা

‘ফার্স্ট কনটাক্ট’ ও ‘নর্ডা ডায়নামিকস’-এর মতো ইউক্রেনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো মিলে নতুন ধরনের এআই চালিত ড্রোন তৈরি করেছে। এগুলো নিজেরাই টার্গেট শনাক্ত করে হামলা চালাতে পারে। এই এআইকে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে সোভিয়েত যুগের বিমানের মডেল দিয়ে, যাতে এগুলো রাশিয়ার কৌশলগত বোমারু বিমান শনাক্ত করতে পারে।

এসব ড্রোনের বিস্ফোরক শক্তি স্বল্প হলেও নির্ভুলভাবে আঘাত হানার ক্ষমতা ছিল। ইন্টারনেটের মাধ্যমে রাশিয়ান মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ড্রোনগুলো পরিচালিত হয়েছে।

আঘাত ও প্রভাব

অপারেশনের সময় ড্রোনগুলো বোমারু বিমানগুলোর দুর্বল অংশ—যেমন ফুয়েল ট্যাংক বা রাডার ডোম—লক্ষ্য করে আঘাত হানে। ইভানোভো ঘাঁটিতে রাশিয়ার এ-৫০ ‘মেইনস্টে’ রাডার বিমানে আঘাত হানা হয়, যার মূল্য প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার। এই বিমানগুলো রাশিয়ার আকাশসীমা নজরদারিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ইউক্রেনের দাবি, তারা ৩৯টি রুশ বিমান ধ্বংস করেছে, যার মধ্যে রয়েছে টু-৯৫, টু-১৬০, টু-২২ এম ৩ এবং কিছু পরিবহন বিমান। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, প্রকৃত সংখ্যা ২০ টির মতো, যার মধ্যে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে প্রায় ১০ টি।

সাহসী চর এবং অপারেশনের ‘ডিজে’ নায়ক

দুর্ধর্ষ এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে উঠে এসেছে ৩৭ বছর বয়সী ইউক্রেনীয় নাগরিক আর্তেম টিমোফেইভের নাম। একসময় তিনি কিয়েভে ডিজে হিসেবে কাজ করতেন। চেলিয়াবিনস্কে তিনিই একটি কার্গো কোম্পানি খোলেন, যেখানে ট্রাক ব্যবহার করে ড্রোনবাহী কেবিন হামলার স্থানগুলোতে পাঠানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, হামলার পর তিনি কাজাখস্তানে পালিয়ে গেছেন।

আক্রমণের ধারা অব্যাহত

বিমানঘাঁটিতে হামলার কয়েক দিনের মধ্যেই ইউক্রেন সমুদ্রপথে মাইন বসিয়ে কের্চ সেতুতে আরও একবার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ছাড়া রাশিয়ার দুটি রেলসেতুও ধ্বংস হয়, যেখানে সাতজন রুশ নাগরিক নিহত হন।

এমন পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাগুলোকে ‘সন্ত্রাসবাদ’ বলে অভিহিত করেন পুতিন।

ফলাফল ও ভবিষ্যৎ বার্তা

‘অপারেশন স্পাইডারস ওয়েব’ শুধু রাশিয়ার বিমান সক্ষমতায় আঘাতই করেনি, বরং ইউক্রেনের মনোবলে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছে। যুদ্ধ যখন অনিশ্চিত মোড় নিচ্ছিল, তখন এই সাফল্য যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতিকে আবার জাগিয়ে তুলেছে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই অপারেশন প্রমাণ করেছে—উন্নত প্রযুক্তি, কৌশলী পরিকল্পনা আর অদম্য সাহস দিয়ে ছোট একটি দেশও একটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের কৌশলগত শক্তিকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

সখীপুরে ইয়াবাসহ শ্রমিক দল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে বহিষ্কার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জর্জিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ১১
জর্জিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি গারিবাশভিলি। ছবি: এএফপি
জর্জিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি গারিবাশভিলি। ছবি: এএফপি

জর্জিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি গারিবাশভিলির বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দেশটির রাজধানী তিবলিসির একটি আদালত প্রসিকিউশনের আবেদন মঞ্জুর করে তাঁকে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪০০ ডলার জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন।

বিচারক একা বারবাকাদজে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন এবং তাঁর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। জামিনের অর্থ পরিশোধের জন্য তিনি ৩০ দিন সময় পেয়েছেন বলে জানিয়েছে কিয়েভ পোস্ট।

শুনানির সময় আদালতে কোনো বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান গারিবাশভিলি। বিচারক তাঁকে কোনো বিবৃতি দিতে চান কি না জানতে চাইলে জবাবে তিনি বলেন, ‘কিছুই না।’

পরে তাঁর আইনজীবী আমিরান গিগুয়াশভিলি সাংবাদিকদের জানান, তাঁর মক্কেল কারও বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য দেননি।

প্রসিকিউটর জেনারেল জিওর্গি গভারামিদজের মতে, ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী উভয় পদে দায়িত্ব পালনের সময় ‘গোপন ও অবৈধ ব্যবসায়িক কার্যকলাপে’ যুক্ত ছিলেন গারিবাশভিলি।

তদন্তকারীদের অভিযোগ, জর্জিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘বিশেষভাবে বিপুল পরিমাণ অবৈধ আয়’ করেছেন এবং কোম্পানি ও মধ্যস্থতাকারীদের একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সেই অর্থ পাচার করেছেন।

গতকাল প্রসিকিউটর জেনারেল গভারামিদজে বলেন, মন্ত্রী পদে থাকাকালে গারিবাশভিলি গোপনে এবং আড়ালে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন এবং অবৈধ উৎস থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন। একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি তাঁর আয় ও ব্যয় উভয়ই ঘোষণা করতে বাধ্য ছিলেন।

জর্জিয়ার দণ্ডবিধির ১৯৪ ধারার ৩(জি) উপধারায় দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ৯ থেকে ১২ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে গারিবাশভিলির।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

সখীপুরে ইয়াবাসহ শ্রমিক দল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে বহিষ্কার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এশিয়া সফরে কিমের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের জল্পনা, উত্তর কোরিয়াকে ‘পারমাণবিক শক্তি’ আখ্যা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ০৮
প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এশিয়া সফরের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার প্রাক্কালে উত্তর কোরিয়াকে ‘একপ্রকার পারমাণবিক শক্তি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের জল্পনা চলছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এয়ারফোর্স ওয়ান বিমানে ট্রাম্পকে সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে উত্তর কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি তিনি মানতে প্রস্তুত কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন: ‘আমি মনে করি তারা একপ্রকার পারমাণবিক শক্তি। যখন আপনারা বলেন তাদের পারমাণবিক শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে, আমি বলব—তাদের প্রচুর পারমাণবিক অস্ত্র আছে।’

ট্রাম্পের এ মন্তব্যটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, কিম জং-উন গত মাসেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগের ‘বিভ্রান্তিকর’ দাবি ত্যাগ করে, তবে তিনি আলোচনার জন্য প্রস্তুত। উত্তর কোরিয়া এর আগে একাধিকবার নিজেদের একটি ‘পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।

ট্রাম্প আগামী বুধবার এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) ফোরামে যোগ দিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন অভ্যন্তরীণভাবে কিম জং-উনের সঙ্গে একটি বৈঠক আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা করছে। ট্রাম্প নিজেও আশা প্রকাশ করেছেন, তিনি সম্ভবত এ বছরই কিমের সঙ্গে আবারও দেখা করবেন।

গতকাল শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রকরণ মন্ত্রী চুং ডং-ইয়ং বলেন, আগামী সপ্তাহে কোরিয়া উপদ্বীপে সফরের সময় কিমের সঙ্গে ট্রাম্পের সাক্ষাতের জোর সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে একজন ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের জানান, এই সফরসূচিতে কোনো বৈঠক ‘তালিকায় নেই’।

দুই নেতার বৈঠকের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাতিসংঘ কমান্ড জয়েন্ট সিকিউরিটি এরিয়ায় (জেএসএ) চলতি অক্টোবরের শেষ নাগাদ থেকে নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে।

মন্ত্রী চুং জানিয়েছেন, গত বছর প্রথমবার জেএসএ-এর কাছাকাছি এলাকায় উত্তর কোরিয়ার কর্মীদের ‘সাজসজ্জা’ করতে দেখা গেছে। তারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, আগাছা পরিষ্কার করা এবং ফুলের টব গোছানোর কাজ করেছে। এটি সাধারণত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের আগে দেখা যায়।

ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে কিমের সঙ্গে তিনবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেছিলেন। তাঁদের শেষ বৈঠকটি ২০১৯ সালে দুই কোরিয়ার সীমান্ত বিভাজনকারী পানমুনজমে (জেএসএ) হয়েছিল। সেই সময় ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার মাটিতে কয়েক কদম হেঁটেছিলেন। উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখা প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট তিনি।

তবে উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্রাগারের কতটা ত্যাগ করতে ইচ্ছুক এবং বিনিময়ে কী পাবে—এ বিষয় নিয়ে মতানৈক্যের কারণে সেই আলোচনা শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

সখীপুরে ইয়াবাসহ শ্রমিক দল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে বহিষ্কার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাটডাউনে বন্ধুর উপহারের টাকায় সেনাবাহিনীর বেতন দিয়েছেন, দাবি ট্রাম্পের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

শাটডাউনের সময় এক ‘বন্ধু’র দেওয়া টাকায় সেনাবাহিনীর বেতন দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তহবিলের ঘাটতি মেটাতে প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনকে ওই বন্ধু ১৩০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

ওই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করেননি ট্রাম্প। তিনি বলেন, তাঁর ওই বন্ধু প্রচার বা পরিচয় প্রকাশ হোক চান না। সেনাবাহিনীর প্রতি ভালোবাসা থেকে তিনি এই অনুদান দিয়েছেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘একেই বলে দেশপ্রেম।’

গতকাল শুক্রবার বিজনেস ইনসাইডারকে দেওয়া এক বিবৃতিতে পেন্টাগন অনুদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, সামরিক বিভাগ ‘সাধারণ উপহার গ্রহণের ক্ষমতা’ (general gift acceptance authority) অনুযায়ী এক নাম-পরিচয় প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক দাতার কাছ থেকে ১৩০ মিলিয়ন ডলারের অনুদান পেয়েছে।

পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল জানান, সেনাসদস্যদের বেতন ও সুবিধার পেছনে ব্যয় করার শর্তে এই অনুদান দেওয়া হয়েছে।

এই অনুদান নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই পেন্টাগনের এই অর্থ রাখা এবং ব্যয় করা আইনত বৈধ কি না।

কর্নেল ল’ স্কুলের তথ্যানুযায়ী, কোনো সংস্থা বা দপ্তর যদি কোনো উৎস থেকে এ ধরনের অনুদান পায়, তবে ‘যত দ্রুত সম্ভব কোনো কর্তন বা দাবি ছাড়া সেই অর্থ কোষাগারে জমা দিতে হবে।’

মার্কিন সংবিধানের অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন ক্লজ (Appropriations Clause)-এও বলা আছে, ‘আইন অনুযায়ী বরাদ্দ করা না হলে কোনো অর্থ কোষাগার থেকে তোলা যাবে না।’ অর্থাৎ, পেন্টাগনকে এই ১৩০ মিলিয়ন ডলার কোষাগারে জমা দিতে হবে এবং অর্থ ব্যবহারের জন্য কংগ্রেসের অনুমোদন বা বরাদ্দ প্রয়োজন হবে।

সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবা আইন (Affordable Care Act)-এর জন্য ভর্তুকি অব্যাহত রাখা হবে কিনা, এই বিষয়ে মতপার্থক্যের কারণে কংগ্রেস একটি অর্থায়ন বিল পাস করতে ব্যর্থ হওয়ায় গত ১ অক্টোবর সরকার শাটডাউন হয়ে যায়। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ট্রাম্প চলতি অর্থবছরের অবশিষ্ট তহবিল ব্যবহারের অনুমোদন দিলে সেনাসদস্যরা বেতন পেতে শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

সখীপুরে ইয়াবাসহ শ্রমিক দল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে বহিষ্কার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ক্যারিবীয় সাগরে এবার বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরি পাঠালেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ১২
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে উন্নত বিমানবাহী রণতরী ‘ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড’। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে উন্নত বিমানবাহী রণতরী ‘ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড’। ছবি: সংগৃহীত

মাদক কার্টেলগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ক্রমেই জোরদার করছে ট্রাম্প প্রশাসন। এবার মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন গতকাল শুক্রবার ঘোষণা করেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে উন্নত বিমানবাহী রণতরি ‘ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড’ ক্যারিবীয় সাগরে মোতায়েন করছে।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমধ্যসাগরে চলমান সামরিক যান মোতায়েন শেষ করার কাছাকাছি সময়ে ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ডকে ক্যারিবীয় অঞ্চলে, বিশেষ করে ভেনেজুয়েলার উপকূলের দিকে আনা হচ্ছে। সুপারক্যারিয়ারটির সঙ্গে রয়েছে কয়েক ডজন স্টিলথ ফাইটার জেট ও নজরদারি বিমান, সেই সঙ্গে অন্যান্য সহগামী যুদ্ধজাহাজ তো থাকছেই।

ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপকে ক্যারিবীয় সাগরে পাঠানোর ঘটনাটি প্রশাসনের সামরিক অভিযানের পরিধি বাড়ানোর সবচেয়ে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত। এর আগে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের দিকে আসা সন্দেহভাজন ছোট মাদকবাহী নৌকায় আঘাত হানা হচ্ছিল, কিন্তু এখন স্থলভিত্তিক লক্ষ্যবস্তুতেও হামলা চালানোর পরিকল্পনার কথা বলছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

এই সুপারক্যারিয়ারে থাকা ডজনখানেক এফ-১৮ সুপার হর্নেট জেট বিমান যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণ সক্ষমতা বাড়াবে এবং ভেনেজুয়েলার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোতে আঘাত হানার সক্ষমতা দেবে। বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তারা বলছেন, এর ফলে মার্কিন বিশেষ আভিযানিক দল বা ড্রোনগুলোর জন্য স্থলভিত্তিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করার পথ প্রশস্ত হবে।

পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই বর্ধিত নৌ উপস্থিতি অবৈধ কার্যকলাপ এবং অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত, পর্যবেক্ষণ এবং প্রতিহত করার মার্কিন সক্ষমতাকে জোরদার করবে। এসব অপতৎপরতা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং পশ্চিম গোলার্ধে মার্কিন উপস্থিতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।’

এই বর্ধিত মার্কিন সামরিক উপস্থিতির তীব্র সমালোচনা করেছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। শুক্রবার দিনের শেষে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে তারা আর কখনো কোনো যুদ্ধে জড়াবে না, আর এখন তারা একটা যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করছে।’

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন কয়েক সপ্তাহ ধরে মাদক কার্টেলগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে। ইতিমধ্যে কমপক্ষে ৯টি সন্দেহভাজন মাদক পাচারকারী নৌকায় হামলা চালানো হয়েছে।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার বলেন, তাঁর সামরিক অভিযানের পরবর্তী পর্যায় হবে স্থল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা। ট্রাম্প বলেন, ‘স্থলই হবে পরবর্তী (লক্ষ্য)।’

তবে কোন দেশের কোন লক্ষ্যবস্তুতে যুক্তরাষ্ট্র আঘাত হানতে চায়, সে বিষয়ে ট্রাম্প কিছু বলেননি। যদিও তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে প্রশাসনের পরিকল্পনা সম্পর্কে কংগ্রেসকে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

মাদক কার্টেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবেন কি না জানতে চাইলে ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, তিনি হামলা চালিয়ে যাবেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি যারা আমাদের দেশে মাদক আনছে, আমরা শুধু তাদের মেরে ফেলব, ঠিক আছে? আমরা তাদের মেরে ফেলব।’

গত ৩ সেপ্টেম্বর একটি নৌকায় প্রথম হামলার কথা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে আরও হামলার কথা জানানো হলেও নিহতের সংখ্যা এবং নৌকাগুলোতে মাদক ছিল—এই দাবি ছাড়া আর কোনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে প্রশাসন হামলার আইনি ন্যায্যতা দিয়েছে। দ্য গার্ডিয়ানের রিপোর্ট অনুযায়ী, তারা দাবি করছে, এই নৌকাগুলো চিহ্নিত সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। যুক্তরাষ্ট্র এই গোষ্ঠীর সঙ্গে ‘সশস্ত্র সংঘাতে’ জড়িত।

তবে প্রশাসন এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেয়নি যে নৌকায় হামলায় নিহত ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার করছিলেন। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত সূত্রগুলো জানিয়েছে, কংগ্রেসের কাছে ব্রিফিংয়ে পেন্টাগনের কর্মকর্তারা বলেছেন, ট্রাম্প যেহেতু নৌকাগুলোকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে দেখা কার্টেলগুলোর সম্পদ হিসেবে চিহ্নিত করছেন, তাই সেগুলোতে হামলা বৈধ।

এই সামরিক অভিযানে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাও (সিআইএ) জড়িত। ট্রাম্প ১৫ অক্টোবর নিশ্চিত করেছেন, তিনি ভেনেজুয়েলায় সিআইএর তথাকথিত ‘গোপন কার্যক্রমের’ অনুমোদন দিয়েছেন। দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বিমান হামলায় ব্যবহৃত গোয়েন্দা তথ্যের একটি বড় অংশ সিআইএ সরবরাহ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

সখীপুরে ইয়াবাসহ শ্রমিক দল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে বহিষ্কার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত