Ajker Patrika

ইউক্রেন নিয়ে জরুরি আলোচনা, লন্ডনে জড়ো হচ্ছেন ইউরোপের নেতারা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৫, ১৯: ৫৮
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ব্রিটিশ জেলেনস্কিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার। ছবি: এএফপি
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ব্রিটিশ জেলেনস্কিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার। ছবি: এএফপি

ট্রাম্প-জেলেনস্কির ব্যর্থ বৈঠক এবং যুক্তরাষ্ট্রের নীতিগত পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন বাড়ানো ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করতে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ইউরোপের নেতারা। আজ রোববার (২ মার্চ) এই সম্মেলনে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের এক ডজনের বেশি নেতা অংশ নেবেন। বৈঠকের মূল লক্ষ্য হচ্ছে—নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করা এবং ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন আবারও নিশ্চিত করা।

সম্মেলনটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যখন গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ এবং ব্যর্থ একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আল জাজিরা জানিয়েছে, ইউরোপীয় নেতারা বৈঠকে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা আরও বাড়ানোর পাশাপাশি রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা করবেন। এ ছাড়া দীর্ঘস্থায়ী শান্তিচুক্তি, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রুশ আগ্রাসন প্রতিহত করার উপায় এবং কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে পরিকল্পনা করবেন তাঁরা।

ফ্রান্স, জার্মানি, ডেনমার্ক, ইতালি, তুরস্ক, ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে অংশ নেবেন।

আগামী বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে অনুষ্ঠেয় আরেকটি সম্মেলনের আগেই এই বৈঠক হতে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, ব্রাসেলসের সম্মেলনে ইউক্রেনসহ পুরো ইউরোপের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করতে একটি নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করবে ইউরোপীয় কমিশন।

উল্লেখ্য, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের এক দিন পর গতকাল শনিবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পৌঁছান জেলেনস্কি। সেখানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। দুই নেতা একত্রে ২ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারের একটি ঋণচুক্তিও ঘোষণা করেন। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে এই অর্থ ব্যবহৃত হবে। আর এই অর্থ আসবে রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ থেকে।

গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে বৈঠকে জেলেনস্কি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। ইউক্রেনকে দেওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় জেলেনস্কিকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলে আক্রমণ করেন ট্রাম্প এবং সতর্ক করেন, জেলেনস্কির অবস্থান বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

তবে আলোচনা সত্ত্বেও জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি এক্স মাধ্যমে লেখেন, ‘কঠিন আলোচনা সত্ত্বেও আমরা কৌশলগত অংশীদার হিসেবে থাকব। তবে সততা ও সরাসরি কথা বলা আমাদের পারস্পরিক লক্ষ্য বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।।’

ট্রাম্পের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে চাইছেন এবং ইউক্রেন সংকট সমাধানে নিজেকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উপস্থাপন করছেন। ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির বিষয়ে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে। তবে এ-সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য দেননি তিনি।

বৈঠকের পর জেলেনস্কি হোয়াইট হাউস ত্যাগ করার কিছুক্ষণ পরই ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন—ইউক্রেনের নেতা শান্তির জন্য প্রস্তুত নন।

এ নিয়ে পরে ইউরোপের নেতারা দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানান। জার্মানির ভবিষ্যৎ চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ এক্স-এ লিখেছেন, ‘আমরা ভালো এবং কঠিন সময়ে ইউক্রেনের পাশে থাকব। এই যুদ্ধে আক্রমণকারী ও আক্রান্তকে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়।’

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, ‘তিনি এই সংঘাতে ভুক্তভোগী ও হামলাকারীকে পাল্টে দিচ্ছেন, যা এক নতুন অন্ধকার যুগের সূচনা করতে পারে।’

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ‘এই যুদ্ধের একমাত্র আগ্রাসী রাশিয়া। আর ইউক্রেনীয়রা ভুক্তভোগী।’

পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক ইউক্রেনকে সমর্থন জানিয়ে লিখেছেন, ‘প্রিয় ইউক্রেনীয় বন্ধুরা। আপনারা একা নন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত