Ajker Patrika

পুতিন থামো—কিয়েভে বড় হামলার পর ট্রাম্পের হুংকার

অনলাইন ডেস্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সিএনএন
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সিএনএন

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এখানেই থামতে বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বৃহস্পতিবার রাতে সিএনএন জানিয়েছে, সর্বশেষ এই হামলাটি ছিল গত গ্রীষ্মের পর কিয়েভে সবচেয়ে প্রাণঘাতী—যা ৯ মাসের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে মনে করা হচ্ছে।

রাশিয়া এদিন ইউক্রেনের উদ্দেশ্যে ৭০টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১৪৫টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে। এগুলোর বেশির ভাগই কিয়েভকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছিল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই এই হামলা চালানো হয়েছে।

হামলার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, ‘আমি কিয়েভে রাশিয়ার হামলায় সন্তুষ্ট নই। এটা একেবারেই অপ্রয়োজনীয় এবং সময়ও খুব খারাপ। ভ্লাদিমির, থামো! প্রতি সপ্তাহে ৫ হাজার সেনা মারা যাচ্ছে। শান্তিচুক্তি সম্পন্ন হোক!’

ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা সংস্থা জানিয়েছে, হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত এবং ৯০ জন আহত হয়েছেন। আরও অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এই হামলায় কিয়েভের ১৩টি স্থানে আঘাত হানে রুশ বাহিনী—যার মধ্যে রয়েছে আবাসিক ভবন এবং সাধারণ নাগরিক অবকাঠামো। গত বছরের জুলাইয়ে কিয়েভে এই ধরনের হামলা চালানো হয়েছিল। সে সময় অন্তত ৩৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল।

হামলার মুহূর্তে জেলেনস্কি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ছিলেন। হামলার খবর পেয়ে তিনি সফর সংক্ষিপ্ত করেই দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তিনি বলেন, ‘এই হামলার লক্ষ্য ছিল মূলত যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দেওয়া। আমরা সব সময় পরিষ্কার ভাষায় বলেছি—ইউক্রেন একটি পূর্ণ যুদ্ধবিরতির পরই কূটনৈতিক আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘এই লড়াই আমাদের টিকে থাকার প্রশ্ন। এখনো পর্যন্ত আমি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে কঠোর কোনো আন্তর্জাতিক চাপ বা নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ দেখতে পাচ্ছি না।’

এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘আমরা উচ্চ-নির্ভুল সম্পন্ন দূর-পাল্লার বিমান, স্থল ও সমুদ্রভিত্তিক অস্ত্র এবং ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা, মহাকাশ, অস্ত্র উৎপাদন ও গোলাবারুদ কারখানাগুলোতে হামলা চালিয়েছি। সব লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা হয়েছে।’

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘পুতিন একদিকে শান্তির কথা বলেন, অন্যদিকে বোমা ফেলেন ও হত্যা করেন। এটি এক বিরাট মিথ্যা।’

তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে স্মরণ করিয়ে দেন, এই যুদ্ধে আগ্রাসনকারী রাশিয়া, আর আগ্রাসনের শিকার ইউক্রেন।

হামলার সময় কিয়েভে ছয় ঘণ্টা ধরে বিমান হামলার সাইরেন বাজে। শহরের বাসিন্দা ইরিনা ডজেন বলেছেন, ‘বিস্ফোরণে ঘুম ভেঙে গেলে প্রথমেই ভয় লাগে। আমরা করিডরে আশ্রয় নিই এবং আত্মীয়স্বজনদের ফোন করতে থাকি।’

ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লিমেঙ্কো জানিয়েছেন, কিয়েভের এসভিয়াতোশিন অঞ্চলে ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা মানুষদের উদ্ধারে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে প্রকৌশলী, দমকল কর্মী এবং প্রশিক্ষিত কুকুর।

এ ছাড়া ইউক্রেনের আরও আটটি অঞ্চলেও রাশিয়ার সমন্বিত হামলা হয়েছে—যার মধ্যে রয়েছে ঝিতোমির, দিনিপ্রো, খারকিভ, পোলটাভা, খমেলনিতস্কি, সুমি ও জাপোরিঝিয়া।

এই হামলার কিছুক্ষণ আগে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে ক্রিমিয়া ইস্যুতে বিতর্ক তীব্র হয়। ট্রাম্প জানান, জেলেনস্কির বক্তব্য শান্তিচুক্তির পথে অন্তরায়। এমন উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে যুদ্ধ থামানো আরও কঠিন হয়ে পড়ে।

মার্কিন প্রশাসনের একটি প্রস্তাবে বলা হয়েছে—শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়ার দখলে থাকা ক্রিমিয়াকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আনা হচ্ছে। এমন হলে বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের দশ বছরের নীতির বিরুদ্ধে যাবে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী আন্তর্জাতিক সীমান্ত অখণ্ডতার নীতিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করবে।

জেলেনস্কি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘ক্রিমিয়া ইস্যুতে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এটি আমাদের সংবিধানের পরিপন্থী।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাবির সিন্ডিকেটে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের চূড়ান্ত অনুমোদন

শ্বশুরকে জামাতার ফোন: ‘আপনার মেয়েকে মাইরা ফেলছি, লাশ নিয়ে যান’

টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ দিতে ব্যর্থ দুদক: আইনজীবী

স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে গেলেন ইমামতি করতে

ঐতিহাসিক শিমলা চুক্তি বাতিল করল পাকিস্তান, এর প্রভাব কী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত