Ajker Patrika

মার্কিন-রাশিয়া শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, বিবিসিকে কিয়েভ

অনলাইন ডেস্ক
পুতিন-ট্রাম্পের আলোচনায় ঠাঁই হয়নি জেলেনস্কির। ছবি: সংগৃহীত
পুতিন-ট্রাম্পের আলোচনায় ঠাঁই হয়নি জেলেনস্কির। ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান শান্তি আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে কিয়েভের এক সরকারি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে। আজ সোমবার সৌদি আরবে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন বিষয়ক বিশেষ দূত কিথ কেলোগ কিয়েভের অংশগ্রহণ থাকবে বলে দাবি করলেও ইউক্রেন সরকারের এক সূত্র প্রত্যাখ্যান করে জানায়, ওই আলোচনায় ইউক্রেনের কোনো প্রতিনিধির উপস্থিতি থাকবে না।

এর আগে কেলোগ ইউরোপকে সৌদি আরবে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়ে বলেন, ‘আগের আলোচনাগুলো ব্যর্থ হয়েছিল অতিরিক্ত পক্ষ জড়িত থাকার কারণে। এটি হয়তো কারও কাছে একটু কঠিন শোনাতে পারে, কারও কাছে বিরক্তিকর লাগতে পারে, কিন্তু আমি একদম সত্য কথা বলছি।’

তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একাধিকবার জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে কোনো শান্তিচুক্তি তিনি মেনে নেবেন না। গতকাল রোববার মার্কিন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ইউক্রেন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হলে, আমি তা কখনোই মেনে নেব না, কখনোই না।

ট্রাম্পও এই বিষয়ে ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছেন। তিনি বলেন, তিনি আশা করেন জেলেনস্কি এই আলোচনায় যুক্ত থাকবেন, তবে কীভাবে তা হবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি। তিনি আরও জানিয়েছেন, ইউরোপীয় দেশগুলোকে ইউক্রেনের জন্য মার্কিন অস্ত্র কেনার অনুমতি দেওয়া হবে।

শান্তি আলোচনা ফলপ্রসূ হবে কি না জানতে চাইলে ট্রাম্প শুধু বলেন, আমরা এটি শেষ করার জন্য কাজ করছি। যুদ্ধের জন্য আগের প্রশাসনের ইউক্রেন নীতিকে দায়ী করেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজও রাশিয়ার আলোচকদের সঙ্গে সৌদি আরবে বৈঠক করবেন।

সৌদি আরবে হতে যাওয়া আলোচনাকে অগুরুত্বপূর্ণ হিসেবে তুলে ধরে মার্কো রুবিও বলেন, একটি বৈঠকই যুদ্ধের সমাধান করতে পারবে না এবং এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মধ্যস্থতাকারী আলোচনা প্রক্রিয়া গঠিত হয়নি, যেখানে ইউক্রেন, রাশিয়া এবং তৃতীয় পক্ষ যুক্ত থাকবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বোঝা যাবে পুতিন সত্যিই শান্তি চাচ্ছেন কি না।

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে নিজের অবস্থান পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সপ্তাহে ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। দীর্ঘ ৯০ মিনিটের এই ফোনালাপের পর মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে তিন বছর ধরে চলা নীরবতার সম্পর্ক পাল্টে গিয়েছে।

মার্কিন মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ নিশ্চিত করেছেন, তিনি রোববার সন্ধ্যায় সৌদি আরবে যাচ্ছেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে প্রথম সরাসরি আলোচনা হবে।

গতকাল রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, স্টিভ উইটকফ এরই মধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা করেছেন। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে তাদের এই আলোচনা।

উইটকফ বলেছেন, মার্কিন কর্মকর্তারা আলাদাভাবে ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন এবং ইউক্রেন আলোচনার অংশ–তবে তিনি স্পষ্ট করেননি, কিয়েভ সরাসরি সৌদি আরবে উপস্থিত থাকবে কি না।

মার্কিন-রুশ শান্তি আলোচনায় ইউরোপীয় নেতাদের ডাকা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আজ ইউরোপীয় নেতারা প্যারিসে এক বৈঠকে অংশ নেবেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ তড়িঘড়ি করে এই বৈঠক ডেকেছেন। ইউরোপীয় দেশগুলোর আশঙ্কা, তাদের এই শান্তি আলোচনার বাইরে রেখে দেওয়া হচ্ছে।

প্যারিসে বৈঠকে থাকবেন—যুক্তরাজ্যের কিয়ার স্টারমার, ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক রুট, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন। আজ বিকেলে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নিরাপত্তা নিয়ে এই অনানুষ্ঠানিক বৈঠক বসবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত