Ajker Patrika

মাখোঁর মুখে স্ত্রীর আঘাত, পেছনে ক্রেমলিনের হাত!

অনলাইন ডেস্ক
বিতর্কিত সেই মুহূর্তটি ভাইরাল ভিডিও থেকে নেওয়া
বিতর্কিত সেই মুহূর্তটি ভাইরাল ভিডিও থেকে নেওয়া

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর মুখে সজোরে হাত চালাচ্ছেন তাঁর স্ত্রী ব্রিজিত মাখোঁ—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এই ভিডিওর বিষয়বস্তু সারা বিশ্বে নেটিজেনদের মধ্যে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। আর এই ঢেউয়ে যোগ দিয়েছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও। তারা ঠাট্টা করে বলেছে, ‘এর পেছনেও কী ক্রেমলিনের হাত ছিল?’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, গতকাল সোমবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এবং তাঁর স্ত্রী ব্রিজিত মাখোঁর বিমান থেকে নামার একটি ভিডিও নিয়ে হাসিঠাট্টা করেছেন। ভিডিওটি রাতারাতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা টেলিগ্রামে লিখেছেন, ভিয়েতনামের হ্যানয় সফরে যাওয়ার সময় মাখোঁ তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে ‘ডানহাতে একটি আঘাত’ পেয়েছেন। জাখারোভা বলেন, তবে মাখোঁর উপদেষ্টারা হয়তো সেখানে ঠিক কী ঘটেছিল তার ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

জাখারোভা বলেন, ‘ফার্স্ট লেডি কি তাঁর স্বামীকে গালে আলতো চাপড় দিয়ে চাঙা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তা করতে গিয়ে কতটা জোর দিতে হবে সেই হিসাবে ভুল করেছিলেন? তিনি কি তাকে টিস্যু এগিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ভুল করে ফেলেছিলেন? কিংবা তিনি কি তাঁর কলার ঠিক করতে গিয়ে প্রিয় মুখটিতে হাত দিয়ে ফেলেছিলেন?’ তিনি আরও বলেন, ‘এখানে হয়তো আরও একটি ইঙ্গিত দেওয়া যায় যে, এতে ক্রেমলিনের হাত ছিল?’

ভিডিও ক্লিপটিতে দেখা যায়, বিমানের দরজা খুলতেই প্রথমে মাখোঁকে দেখা যায়। পরক্ষণেই দরজার আড়ালে থাকা ব্রিজিত তাঁর হাত দুটি দিয়ে মাখোঁর মুখে জোরে ধাক্কা মারেন। ঘটনাটি দেখে অনেকে এটিকে আকস্মিক ধাক্কা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। মুহূর্তের জন্য মাখোঁ বিস্মিত হলেও দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে হাত নেড়ে অভিবাদন জানান।

ভিডিওটিতে আরও দেখা যায়, মাখোঁ তার স্ত্রীর হাতের কাছ থেকে মুখ সরিয়ে নিচ্ছেন। অনেকে মনে করছেন, এই বিষয়টিকে দুজনের মধ্যে ঝগড়ার অংশ হিসাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। তবে মাখোঁ তার স্ত্রীর সঙ্গে ‘ঝগড়ার’ কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, আমরা ‘যেমনটা প্রায়ই করি, তেমনি ঠাট্টা করছিলাম।’

এই ঘটনার পর প্রথমে ফরাসি প্রেসিডেন্টের বাসভবন এলিসি প্রাসাদ অস্বীকার করলেও পরে এক সূত্র মারফত এটিকে গুরুত্বহীন বলে দাবি করেছে। ওই সূত্র সিএনএনকে বলেছে, ‘এটি ছিল একধরনের ব্যক্তিগত মুহূর্ত—যেখানে প্রেসিডেন্ট ও তাঁর স্ত্রী সফরের শুরুতে শেষবারের মতো একে অপরকে খুনসুটি করে চাঙা করছিলেন।’

সূত্রটি আরও বলে, এই সামান্য বিষয়কেই ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকেরা বড় করে তুলতে দেরি করেনি। ফরাসি কর্তৃপক্ষের মতে, রুশপন্থী অনলাইন ট্রলগুলো ভিডিওটিকে ভুল ব্যাখ্যা করে বিতর্ক ছড়াতে তৎপর হয়ে ওঠে। রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর ইউক্রেনকে নিয়ে ইউরোপীয় অবস্থান গঠনে মাখোঁ একজন অগ্রণী নেতা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। এই প্রেক্ষাপটে হ্যানয়ের ওই ঘটনা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা শুরু হয়েছে।

এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে আরও একটি প্রচারণা শুরু হয়েছিল। সে সময় দাবি করা হয়, পোল্যান্ড থেকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভগামী একটি ট্রেনে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্ৎজ ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বসে কোকেন সেবন করছিলেন মাখোঁ।

ওই প্রচারণার উৎস ছিল রুশপন্থী একাধিক অ্যাকাউন্ট। সে সময় ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল, ট্রেনে তিন নেতা যখন বসে ছিলেন, তখন ক্যামেরার সামনে মাখোঁ একটি দলা পাকানো টিস্যু বা রুমাল হাতে তুলে নিচ্ছেন। রুশপন্থী অ্যাকাউন্টগুলো ওই বস্তুকে ‘কোকেনের প্যাকেট’ বলে দাবি করে। পরে এই বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় এলিসি প্রাসাদ থেকে বলা হয়েছিল, ‘এটি একটি রুমাল। নাক ঝাড়ার জন্য। যখন ইউরোপীয় ঐক্য অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে, তখন বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা একটি রুমালকেও মাদকে রূপান্তর করে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত