Ajker Patrika

অভিবাসনপ্রত্যাশীর ঢল ঠেকাতে বয়স নির্ধারণে কঠোর হচ্ছে ইতালি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০: ১৭
Thumbnail image

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বয়স যাচাইয়ে কঠোরতা আরোপ করতে যাচ্ছে ইতালি। যারা নিজেদের বয়স ১৮ বছরের নিচে বলে মিথ্যা দাবি করে, তাদের নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এর আগে উত্তর আফ্রিকা থেকে ইউরোপে আসা অভিবাসীদের ঢল ঠেকাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তিউনিসিয়ার মধ্যে চুক্তির পরও এই পদক্ষেপ নিয়েছে ইতালি। 

আজ বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। 

এ বছর ইতালিতে আসা ১ লাখ ৩৩ হাজার ১৩৯ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর মধ্যে ১১ হাজার ৬৫০ জনই অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং সঙ্গীহীন, যা গত বছরের একই সময়ে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীর তুলনায় দ্বিগুণ। ইতালির আইন অনুসারে, ১৮ বছরের কম বয়সী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফেরত পাঠানো যাবে না।

২০১৭ সালের আইন অনুসারে, ইতালি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মনস্তাত্ত্বিক পর্যবেক্ষণ করে তাদের বয়স নির্ধারণ করে। তবে গতকাল বুধবার পাস হওয়া নতুন আইন অনুযায়ী, কবজির হাড়ের এক্স-রে করে আরও দ্রুত বয়স নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। 

এ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা বলছেন, বয়স নির্ধারণের জন্য কবজির হাড়ের এক্স-রে পদ্ধতির ব্যবহার খুবই অনির্ভরযোগ্য। 

দ্য টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইতালির সেভ দ্য চিলড্রেনের ডেটা অ্যান্ড পলিসির গবেষণা প্রধান আন্তোনেল্লা ইনভারনো বলেন, ‘সব গবেষণাই বলছে, এক্সরের মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে বয়স নির্ধারণ করা যায় না। এতে দুই বছর ব্যবধানের মতো ভুল হতে পারে।’ 

তবে অন্য গবেষকেরা বলছেন, মাড়ির দাঁত ও কণ্ঠাস্থি এক্সরে করে তুলনামূলক বেশি নির্ভরযোগ্যভাবে বয়স নির্ধারণ করা যায়। 

ইউনিভার্সিটি অব মিলানের ফরেনসিক মেডিসিনের একজন অধ্যাপক ক্রিস্টিনা কাত্তানেও বলেন, ‘বয়স নির্ধারণের জন্য কণ্ঠাস্থির পরীক্ষাই সবচেয়ে উত্তম। কারণ, মানবদেহে কণ্ঠাস্থি সবার শেষে তৈরি হয়। তবে, এতে জাতিগত ভিন্নতা বিবেচনায় রাখতে হবে। এর পরও একটি বয়সের ধারণা পাওয়া যায়।’ 

নতুন আইন অনুসারে, ১৬ বছরের বেশি তবে অপ্রাপ্তবয়স্কদের রাখা হবে প্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসীদের সঙ্গে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ইতালিজুড়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, এর আগে ২১ হাজার সঙ্গীহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসনপ্রত্যাশী, বিশেষ করে মিসরীয়রা এ ধরনের শিবির থেকে নিখোঁজ হয়েছে। 

ইতালির সিনেটর সান্দ্রা জাম্পা বলেন, ‘অনুপ্রবেশের পরপরই অপ্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসীদের রক্ষা করা খুবই জরুরি। বিকেল ৪টার পর শহরের বড় বড় মার্কেটে গেলে দেখা যাবে মিসরীয় শিশুরা কাজ করছে।’ 

উত্তর আফ্রিকা থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীর ঢল ক্রমেই বাড়তে থাকায় ইতালি এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া এ বিষয়ে নিজের দল ও জোটের প্রধান মাতেও সালভিনির কাছ থেকে চাপের মুখে পড়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। 

চলতি সপ্তাহে ল্যাম্পেদুসা দ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন মেলোনি। ইতালির ল্যাম্পেদুসা দ্বীপে গত কয়েক সপ্তাহে আফ্রিকা থেকে মধ্য ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশী এসেছে। দ্বীপটিতে এখন ‘জটিল’ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। 

ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দের লিয়েন বলেছেন, ‘ইউরোপের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বর্তমান সময়ের যুগান্তকারী চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার সামর্থ্যের ওপর। অবৈধ অভিবাসনের চ্যালেঞ্জ অবশ্যই এগুলোর একটি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত