Ajker Patrika

কিরগিজস্তানে হোস্টেলে হামলা, আতঙ্কে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৯ মে ২০২৪, ১২: ১৫
Thumbnail image

কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে বিরোধের জের ধরে বিদেশি শিক্ষার্থীদের হোস্টেলে ঢুকে হামলা চালিয়েছে স্থানীয়রা। এতে ভারত ও পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও আতঙ্কে রয়েছেন। বিদেশি শিক্ষার্থীদের হামলা থেকে বাঁচতে বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

কিরগিজস্তানের ভারতীয় দূতাবাস সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিদেশি নাগরিক এবং কিরগিজস্তানের স্থানীয়—উভয় ব্যক্তিদের আটক করার জন্য কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং জনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর কিরগিজস্তানের রাজধানীতে বসবাসকারী সব ভারতীয় ছাত্রদের দূতাবাসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশকেকের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার সূত্রপাত গত ১৩ মে। এদিন কিরগিজস্তানের স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় মিসর ও আরবের কয়েকটি দেশের শিক্ষার্থীদের। আহত হন কিরগিজস্তানের এক শিক্ষার্থী। এর জেরে গত ১৬ মে রাত থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা শুরু করে স্থানীয়রা। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়। পরে শিক্ষার্থীরা বাঁচার আকুতি জানাতে থাকেন। শুক্রবার রাতে দূতাবাসে ফোন করে নিরাপত্তা ও সাহায্য চান এক ভারতীয়।

বিশকেকে কী ঘটছে
পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার একাধিক ঘটনার পর গতকাল শনিবার কিরগিজস্তানে ছাত্রদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে পাকিস্তান। কিরগিজ পুলিশ বলেছে যে, তারা সহিংসতা দমন করার জন্য মধ্য এশিয়ার দেশটির রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে একত্রিত করেছে। সেখানে শত শত কিরগিজ ভারতীয়, পাকিস্তানি এবং বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আবাসস্থলে হামলা চালিয়েছে।

টাইমস অব সেন্ট্রাল এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় এবং বিদেশিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় জড়ো হয়েছিল বিপুলসংখ্যক বিক্ষুব্ধ জনতা। পরিস্থিতি সামলাতে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।

তবে সামাজিক প্ল্যাটফর্মগুলোতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, পরিস্থিতি সামলাতে বেগ পেতে হয়েছে পুলিশকে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের হোস্টেলে দরজা ভেঙে ঢুকে স্থানীয়রা শিক্ষার্থীদের মারধর করছে।

পাকিস্তান বলেছে যে, তারা সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জরুরি হটলাইন স্থাপন করেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এক বিবৃতিতে এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, যে পাকিস্তানি নাগরিক অবিলম্বে দেশ ত্যাগ করতে চান ইসলামাবাদ তাদের ফিরিয়ে আনবে।

সামাজিক প্ল্যাটফর্মগুলোর পোস্টে দাবি করা হয়েছিল যে, সহিংসতায় ৩ পাকিস্তানি ছাত্র নিহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন নারীকে ধর্ষণ করা হচ্ছে। তবে পাকিস্তান সরকার এই ধরনের কোনো খবরের সত্যতা স্বীকার করেনি। পাকিস্তানি দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের কথিত মৃত্যু এবং ধর্ষণের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা হলেও আমরা এখনো পর্যন্ত কোনো নিশ্চিত রিপোর্ট পাইনি।’

উত্তেজনা বাড়ার কারণ কী
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, কিরগিজ এবং বিদেশি যেমন, পাকিস্তানি ও মিসরীয় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ভিডিওগুলো ভাইরাল হওয়ার পর উত্তেজনা বেড়ে যায়। গত ১৩ মে ঘটে যাওয়া এই সংঘর্ষের ঘটনায় বিদেশি শিক্ষার্থীরা স্থানীয়দের আতিথেয়তার রীতিকে স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করেছে বলে ধারণা কিরগিজদের। এ ঘটনায় ৩ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।

বিশকেকে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলগুলোতে থাকেন বেশ কিছু সংখ্যক ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের শিক্ষার্থী। বিক্ষুব্ধ জনতা সেই হোস্টেলগুলোতেই হামলা চালিয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত