Ajker Patrika

মিয়ানমারের বন্দরনগরী পাউকতাও দখলের দাবি আরাকান আর্মির

মিয়ানমারের বন্দরনগরী পাউকতাও দখলের দাবি আরাকান আর্মির

জান্তা সৈন্যদের সঙ্গে দুই মাসেরও বেশি সময়ের তীব্র সংঘর্ষের পর বন্দরনগরী পাউকতাও দখলের দাবি করেছে মিয়ানমারের জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। গতকাল বুধবার মধ্যরাতে আরাকান আর্মি বলেছে যে, তারা সম্পূর্ণভাবে পাউকতাওয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী পাউকতাওয়ে প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দার বসবাস। ২০২১ সালের সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই শহরটিতে যুদ্ধবিরতি চলছিল। তবে ভঙ্গুর এই যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত নভেম্বরে পাউকতাওয়ের আংশিক দখল নেয় আরাকান আর্মি।

শহরটির বাসিন্দারা এএফপিকে জানায়, পাউকতাওয়ের আংশিক দখল হারানোর পর থেকেই জান্তা বাহিনী প্রায় প্রতিদিনই শহরটিতে বোমাবর্ষণ করতে কামান এবং জাহাজ ব্যবহার করে আসছে। হেলিকপ্টার থেকেও জান্তা সেনারা গুলি ছুড়েছে বলে জানান বাসিন্দারা।

নিউ গুগল আর্থের ছবিতে দেখা গেছে, পাউকতাও শহরের অনেক এলাকাই সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত। শহরের কেন্দ্রস্থলের একটি ব্লক প্রায় সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। থানার বেশ কয়েকটি ভবনও বিধ্বস্ত। পোতাশ্রয়ের কাছাকাছি বেশ কয়েকটি ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পাউকতাওয়ের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় আরাকান আর্মির দাবি এখনো যাচাই করে দেখতে পারেনি এএফপি।

এএ-এর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এ সপ্তাহের শুরুতে এএফপিকে বলেছিল যে, তাদের যোদ্ধারা শহরে জান্তা বাহিনীকে সম্পূর্ণ নির্মূল করতে ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’
চালাচ্ছে। গত মঙ্গলবার শহরে তীব্র সংঘর্ষের খবর দেয় এএ। বুধবারের বিবৃতিতে বিশদ বিবরণ না দিয়ে তারা বলেছিল যে, রাখাইনের ম্রাউক-উ, মিনবিয়া, কিয়াউকতাও এবং রাথেদাউং শহরে তীব্র সংঘর্ষ চলছে।

তবে পাউকতাওয়ে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের বিষয়ে জান্তা কোনো মন্তব্য করেনি।

যুদ্ধের কারণে পাউকতাওয়ের প্রায় ১৮ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে গত নভেম্বরে জানিয়েছিল জাতিসংঘ। রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তওয়ে থেকে ২৫ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত এই বন্দরনগরী।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৎকালীন নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসে। তার পর থেকেই দেশটিতে বিদ্রোহ-আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। জান্তা বাহিনী ব্যাপক দমন-পীড়ন চালানো শুরু করলে দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে।

সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবর উত্তর মিয়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী—মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মি (এএ) জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মিলিত লড়াই শুরু করে। মাঝে চীনের মধ্যস্থতায় এই তিন গোষ্ঠীর সঙ্গে একবার সমঝোতার চেষ্টা হলেও তা ব্যর্থ হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত