Ajker Patrika

সংঘাতের ৪ দিন পর মালয়েশিয়ায় আলোচনায় বসছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৫, ২১: ০৩
বিবাদপূর্ণ সীমান্ত অঞ্চলের কাছাকাছি টহলরত কম্বোডিয়ার সেনারা। ছবি: বিবিসি
বিবাদপূর্ণ সীমান্ত অঞ্চলের কাছাকাছি টহলরত কম্বোডিয়ার সেনারা। ছবি: বিবিসি

চার দিন ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সীমান্ত সংঘর্ষ অবসানে এবার শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে হাঁটছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। আগামীকাল সোমবার (২৮ জুলাই) মালয়েশিয়ায় দুই দেশের মধ্যে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। থাই সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাইয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নেবে।

বিবিসি জানিয়েছে, এই শান্তি উদ্যোগের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল শনিবার তিনি দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। আজ রোববার নিজের ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে দেওয়া বার্তায় ট্রাম্প জানান, দ্রুত আলোচনায় বসে অবশেষে যুদ্ধবিরতি ও শান্তির পথ খুঁজে বের করতে দুই দেশ সম্মত হয়েছে।

দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত সেনা ও বেসামরিক নাগরিক মিলে অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছে। দুই দেশেরই সীমান্ত এলাকাগুলো ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে হাজার হাজার মানুষ।

তবে ট্রাম্পের অনুরোধের পরও আজ রাতেও গোলাবর্ষণ চলেছে। কম্বোডিয়া জানিয়েছে, তারা বিনা শর্তে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত। প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত বলেছেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিশ্চিত করেছি, আমরা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে রাজি। তাঁর মধ্যস্থতা অনেক প্রাণ রক্ষা করবে।’

অন্যদিকে থাইল্যান্ড বলেছে, তারা মূলত সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে আগ্রহী। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে তারা নীতিগতভাবে একমত, তবে কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে ‘সত্যিকার আন্তরিকতা’ দেখাতে হবে।

সাম্প্রতিক সংঘর্ষের সূত্রপাত নিয়ে থাই সেনারা দাবি করেছেন, কম্বোডিয়ার ড্রোন সীমান্ত এলাকায় তাঁদের নজরদারি করছিল। পাল্টা অভিযোগে কম্বোডিয়া জানায়, অতীতের চুক্তি লঙ্ঘন করে থাই সেনারা একটি খেমার-হিন্দু মন্দিরের দিকে গেলে তা সংঘাতের দিকে গড়ায়।

সংঘর্ষের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে এই সীমান্তবিরোধের সূত্রটি লুকিয়ে রয়েছে উনবিংশ শতকে। ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনের সেই সময়ে দুই দেশের সীমান্ত চিহ্নিতকরণ নিয়ে শত বছরের বিবাদ চলছে।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম আগেই দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এবার সেই প্রস্তাবের ভিত্তিতেই আলোচনা হতে যাচ্ছে কুয়ালালামপুরে।

এদিকে ট্রাম্প জানিয়েছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার পরই তিনি আবারও দুই দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে ইচ্ছুক। তবে যুদ্ধ চলাকালে এ বিষয়ে কথা বলার উপযুক্ত সময় নয় বলেই মনে করেন তিনি। কারণ, ১ আগস্ট থেকে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৬ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হতে যাচ্ছে।

এই মুহূর্তে যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আলোচনার সফলতা নির্ভর করছে দুই দেশের আন্তরিকতা ও পারস্পরিক বিশ্বাসের ওপর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত